ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে গ্রাফিক ডিজাইন শিখার প্রতি আগ্রহটা একটু বেশি দেখা যায়। হুমম, অনলাইনে সুযোগ রয়েছেও অনেক। ভাল মানের ডিজাইনারদের চাহিদা মার্কেটপ্লেসগুলোতে অনেক বেশি। কাজ শিখার পর অনেকদিন প্রাকটিস করার পর যে কেউ ভালমানের ডিজাইনার হতে পারে। ডিজাইনার হয়ে কেউ জন্মায় না। অনেক প্রাকটিস যে কাউকে ডিজাইনার বানাতে পারে।
♦ ডিজাইন প্রতিযোগিতা: শুধুমাত্র বিভিন্ন ডিজাইন প্রতিযোগীতাতে অংশগ্রহণ করে আয় করা যায় এরকম অনেক মার্কেটপ্লেস রয়েছে। এসব মার্কেটপ্লেসে কোন বায়ার তাদের প্রয়োজনীয় ডিজাইন যোগাড় করার জন্য প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
প্রতিযোগীতাতে অংশগ্রহনকারী যে ডিজাইনারের ডিজাইন পছন্দ হবে, নির্দিষ্ট সময় শেষে তাকে পুরস্কৃত করা হয়।
সাধারণত ৩০০ডলার থেকে ১২০০ডলার পযন্ত পুরস্কার দেওয়া হয়।
এরকম বিখ্যাত সাইটের নাম: 99designs.com
♦ ডিজাইন বিক্রি: কিছু মার্কেটপ্লেস আছে, যেখানে নিজের করা ডিজাইন জমা রাখা যায়। সেখানে বিভিন্ন বায়ার এসে তাদের পছন্দ অনুযায়ি ডিজাইনটি কিনে থাকে। একটা ডিজাই্ন একের অধিক যতবার ইচ্ছে বিক্রি হতে পারে। অর্থাৎ আপনার একটা ডিজাইন অনেকবার বিক্রি হয়ে আপনাকে এনে দিচ্ছে বসে বসে ইনকাম।
এরকম বিখ্যাত সাইটের নাম: graphicriver.net
♦ বিড করে কাজ যোগাড়: অনেক মার্কেটপ্লেস রয়েছে যেখানে বায়ার তার কাজে বর্ণনা করে টিউন করে। ফ্রিল্যান্সাররা সেখানে কাজটি করতে চেয়ে আবেদন করে, যাকে বিড করা বুঝায়। এখানে পোর্টফলিও শক্তিশালী না থাকার কারনে নতুনদের জন্য কাজ পাওয়াটা কষ্টদায়ক হয়ে থাকে।
এরকম বিখ্যাত সাইটের নাম: upwork.com
♦ গিগ বিক্রির মাধ্যমে আয়: ফ্রিল্যান্সাররা তাদের সার্ভিসের কথা উল্লেখ করে রাখে যাকে গিগ বলে। এসব গিগ পড়ে বিভিন্ন বায়ার তাদের পছন্দ অনুযায়ি অর্ডার দিয়ে থাকে। একটা গিগেই হাজার হাজার বার অর্ডার আসতে পারে। বিড করার জন্য টেনশন করতে হয়না।
এরকম বিখ্যাত সাইটের নাম: fiverr.com
এছাড়াও আরো অনেক রকম ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলো থেকেও অনলাইনে আয় করা সম্ভব হয়।
যেমন: গেঞ্জি কিংবা অন্যান্য গিফট আইটেম ডিজাইন করে সেগুলোর বিক্রি থেকেও ভাল আয় করার মত অনলাইনে সাইট রয়েছে।
♦ ধাপঃ ১
অনলাইনে বিভিন্ন টিউটোরিয়ালগুলো খুজে বের করুন, সেগুলো পড়ুন কিংবা ভিডিও হলে দেখুন।
ইউটিউবে সার্চ করে ভাল ভিডিও সোর্স খুজে বের করতে পারবেন।
দেখে দেখে ৫টি প্রজেক্ট করুন এবং আপনার দক্ষতাকে আরও বৃদ্ধি করতে পারেন।
গ্রাফিক ডিজাইন শিখার জন্য ইংরেজিতে সবচাইতে বিখ্যাত ওয়েবসাইট:
১) http://www.lynda.com/
২) http://tutsplus.com/
♦ ধাপঃ ২
অনেক কিছু শিখতে হবে। যদি আপনার কম্পিউটার সম্পর্কে প্রাথমিক কিছু জ্ঞান থেকে থাকে, তাহলে ইতিমধ্যে হয়ত অনেক কিছুই আপনার জানা আছে।
কি কি শিখতে হবে, তার কিছু এখানে উল্লেখ করছি।
- স্ক্যালিং: আপনার ইচ্ছেমত ছবিকে বড় এবং ছোট করা জানতে হবে।
- নির্দিষ্ট এলাকাকে কালার, টেক্সচার দিয়ে ফিল আপ করা শিখতে হবে।
- ছবির কালার এবং অন্য ধরনের কিছু পরিবর্তন করা শিখুন।
- বিভিন্ন কাজের জন্য ভিন্ন ভিন্ন ফরম্যাটে ছবিকে সংরক্ষণ করুন।
- ছবির একটি নির্দিষ্ট অংশকে ডিলিট করা কিংবা ব্যাকগ্রাউন্ড রিমুভ করা শিখুন।
- ছবিকে ক্রপ (crop) করা, আউটলাইন, এডজ ডিটেকশন করুন।
- কপি ও পেস্ট, ড্র্যাগ ও ড্রপ, ডুপলিকেট করা শিখুন।
- ছবিকে ফ্লিপ (Flip) করা, বিভিন্ন অ্যাংগেলে রোটেট করা (rotate) করা
- মুভ (move), নাডজ (Nudge) এর বিষয় জানতে হবে।
- নতুন লেয়ার তৈরি এবং লেয়ারের বিভিন্ন ইফেক্ট জানা থাকতে হবে।
- প্রয়োজন অনুযায়ি কালার ব্যবহার করা জানা জরুরী
- গ্রে স্ক্যাল (gray scale) কিংবা ছবিকে সাদাকালো কিংবা ছবিকে নেগেটিভ করা জানতে হবে।
- টেক্সচার, শ্যাডো এবং অন্যান্য স্পেশাল ইফেক্ট (টিউনারাইজ (Posterize), পিক্সেলাইজ (Pixelize), অ্যামবুস(Emboss), ব্লার (Blur), শার্পেন ৯ Sharpen) ইত্যাদি ব্যাপারে জানা থাকতে হবে।
- বর্ডার (Borders) তৈরি, স্ক্যাল ব্যবহার।
- ব্যাকগ্রাউন্ড (Background), ফরগ্রাউন্ড (foreground) সম্পর্কে ধারণা
- আইকন এবং লোগো তৈরি
- পেজ লেআউট তৈরি, কলাম তৈরি করা শিখতে হবে।
- লেখার সাইজ পরিবর্তন, বোল্ড, ইটালিক ইত্যাদি করা জানতে হবে।
♦ ধাপঃ৩
নিজের ব্যক্তিগত কিংবা আশেপাশের অন্যদের প্রফেশনাল কাজগুলো ফ্রি করে দিন। অনেকগুলো রিয়েল প্রজেক্ট করলে মোটামুটি কনফিডেন্ট তৈরি হবে।
♦ ধাপঃ৪
ধাপঃ২ এবং ধাপঃ ৩ এর পর আপনি মোটমুটি কাজ শিখে গেছেন। এবার আপনাকে কনটেস্টে অংশগ্রহন করতে হবে। যদিও কনটেস্টে জয় লাভ করা কষ্টকর। কিন্তু আপনি শুধু জেতার জন্য কনটেস্টে অংশগ্রহণ করবেননা। প্রতিযোগিতার বাজার দেখে নিজেকে আরও দক্ষ করা এবং নিজের দক্ষতাকে সবার সামনে প্রকাশ করার জন্য অনলাইনে বিভিন্ন কনটেস্টে অংশগ্রহণ করুন।
♦ ধাপঃ৫
আপনার করা ডিজাইনকে অনলাইনে বিভিন্ন সাইটে (behance.net, dribble.com) কিংবা নিজের তৈরি করা ব্লগের মাধ্যমে মানুষের কাছে প্রকাশ করুন।
আপনি যদি এভাবে না শিখতে পারেন, তাদের জন্য বাংলাদেশে বর্তমানে অনেক মানসম্মত ট্রেনিং সেন্টার রয়েছে, সেগুলোতেও ভর্তি হতে পারেন।
গ্রাফিক ডিজাইনার হতে আগ্রহীদের জন্য গাইডলাইন দেওয়ার ব্যাপারে একটি বিশেষ সেমিনার আয়োজন করা হয়েছে। দেশ সেরা ফ্রিল্যান্সারদের কাছ হতে গাইডলাইন পেতে সেমিনারটিতে অংশগ্রহণ করুন।
বিজনেস কার্ড, ফ্লাইয়ার ডিজাইন, ব্লুশিয়ার (বাই ফোল্ড, ট্রাইফোল্ড), ব্যানার (ওয়েব ব্যানার, বিল বোর্ড, পেপার অ্যাড), ইমেজ রিটাচ, ইমেজ ম্যানিপুলেশন, ফেসবুক কভার ছবি, বুক কভার ডিজাইন, স্টেশনারী ডিজাইন (লোগো ডিজাইন, আইকন ডিজাইন, লেটারহেড ডিজাইন, ইনভেলাপ, টি-শার্ট, ক্যালেন্ডার ডিজাইন), প্রোডাক্ট প্যাকেজিং, ওয়েব টেমপ্লেট ডিজাইন, ইনফো গ্রাফিক, অ্যাপস ডিজাইন।
আরো অনেক গাইডলাইন পাওয়ার জন্য অনেকেই অনুরোধ করে। সেজন্য প্রায় সময়ই আমার অফিসে বিশেষ সেমিনার, ওয়ার্কশপ, আড্ডার আয়োজন করে সবাইকে গাইড করার চেষ্টা করে যা্চ্ছি। আগামী ৯তারিখ, শুক্রবার গ্রাফিক ডিজাইনার হতে আগ্রহীদের জন্য ফ্রি সেমিনার আয়োজন করেছি।
গ্রাফিক ডিজাইন সম্পর্কিত বিভিন্ন টিপস পেতে নিচের গ্রুপে জয়েন করুন।
https://www.facebook.com/groups/beside.designer/
এ গ্রুপে অনলাইনের মাধ্যমেই গ্রাফিক শিখানোর চেষ্টা করব।
আমি মোঃ ইকরাম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 102 টি টিউন ও 130 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
নিজেকে অনলাইন ব্রান্ড এক্সপার্ট হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করলেও গ্রাফিকস, ওয়েবডিজাইন এবং অ্যানিমেশন বিষয়েও প্রচুর কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। লার্নিং এন্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। ব্লগিংটা নেশার কারনে করি। নিজের ব্লগের লিংকঃ http://genesisblogs.com/
Thanks for good and important post for graphic designer.