ভারতে আগামী ১ জুলাই থেকে বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে উচ্চাভিলাষী করনীতি গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স (জিএসটি)। এর আওতায় সেবা খাত হিসেবে টেলিকম খাতের ওপর ১৮ শতাংশ করারোপ করা হচ্ছে। দেশটির টেলিকম খাতের কোম্পানিগুলো মনে করছে, জিএসটির আওতায় করারোপ করা হলে এ খাত হুমকির মুখে পড়বে। তাই সম্ভাব্য হুমকির বিষয়গুলো আন্তঃমন্ত্রণালয় গ্রুপের (আইএমজি) বৈঠকে তুলে ধরার পরিকল্পনা করেছে টেলিকম কোম্পানিগুলোর সংগঠন সিওএআই। খবর ইকোনমিক টাইমস।
সেলুলার অপারেশনস অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার (সিওএআই) মতে, ভারতে খাতটি ঋণভারে জর্জরিত। এরই মধ্যে প্রায় ৫ কোটি রুপি ঋণ রয়েছে। এখন জিএসটির আওতায় ১৫ শতাংশের বেশি করারোপ করা হলে এ খাত হুমকির মুখে পড়বে।
সংগঠনের ডিরেক্টর জেনারেল রাজন ম্যাথুস বলেন, ‘সামনের মাসে আইএমজির বৈঠকে প্রেজেন্টেশন দেবে সিওএআই। এতে জিএসটির আওতায় ১৮ শতাংশ করারোপের পরিপ্রেক্ষিতে ঋণগ্রস্ত এ খাতের কোম্পানিগুলোর হতাশার কথা তুলে ধরা হবে।’
সিওএআইয়ের সদস্য ভারতের বড় বড় টেলিকম কোম্পানি। এতে রয়েছে ভারতী এয়ারটেল, ভোডাফোন ইন্ডিয়া, আইডিয়া সেলুলার, রিলায়েন্স জিও ইনফোকমের মতো কোম্পানি।
জিএসটির আওতায় দেশটির টেলিকম খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে গত মাসে পূর্বাভাস দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া। এর পর আন্তঃমন্ত্রণালয় প্যানেল এ খাতের সম্ভাব্য ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের নির্দেশ দেয়। এর জেরেই সিওএআই আইএমজির বৈঠকে ক্ষতির দিকটি তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ম্যাথুসের মতে, ভারতে টেলিকম খাত আগে থেকেই উচ্চহারে কর পরিশোধকারী একটি খাত হিসেবে পরিচিত। এ খাতের কোম্পানিগুলো আয়ের ৩০ শতংশ পর্যন্ত কর দিয়ে থাকে। এর মধ্যে তরঙ্গ ব্যবহারের চার্জ ও লাইসেন্স ফি অন্তর্ভুক্ত। পাশাপাশি এ খাতে তীব্র প্রতিযোগিতা বিদ্যমান। এখন জিএসটির আওতায় করারোপ করা হলে এ প্রতিযোগিতা আরো বাড়বে।
তার মতে, জিএসটি কার্যকরের ফলে টেলিকম কোম্পানিগুলোর মধ্যে মূল্যবৃদ্ধির যুদ্ধ শুরু হবে। টকটাইমের মূল্য বাড়বে। প্রকারান্তরে তা সেলফোন কোম্পানিগুলোর গ্রাহক সংখ্যা কমিয়ে দেবে।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে ভারতের টেলিকম কোম্পানিগুলো মুনাফার ৮ শতাংশ হারে লাইসেন্স ফি ও ৩ শতাংশ হারে তরঙ্গ ব্যবহারের চার্জ সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে থাকে। আসছে ১ জুলাই থেকে জিএসটি কার্যকর হলে ১৮ শতাংশ হারে সার্ভিস কর দিতে হবে।
সম্প্রতি কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগরে অনুষ্ঠিত জিএসটি কাউন্সিলের সর্বভারতীয় বৈঠকে পণ্যের পাশাপাশি সেবা খাতকেও এর আওতায় আনা হয়। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। অংশ নেন সব রাজ্যের প্রতিনিধিরা।
নতুন কর কাঠামোর ৫ শতাংশ, ১২ শতাংশ, ১৮ শতাংশ ও ২৮ শতাংশ করসীমার মধ্যে মাত্র পাঁচটি সেবাখাতকে সর্বোচ্চ করসীমার আওতায় ফেলা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পাঁচতারা হোটেল, সিনেমার টিকিট, রেসিং, ক্যাসিনো ও রেসিংয়ের ওপর বাজি ধরা। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবাকে কর অব্যাহতির আওতায় রাখা হয়েছে।
অধিকাংশ সেবা ১৮ শতাংশ করসীমার মধ্যে রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাংকিং ও বীমার মতো আর্থিক সেবা, টেলিকম, তথ্যপ্রযুক্তি, সম্পদ নিলামসহ সরকারি সেবা এবং যে রেস্টুরেন্টগুলোয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ বা পানীয়র ব্যবস্থা রয়েছে সেগুলো। ই-কমার্স কোম্পানিগুলোর ওপর ১ শতাংশ হারে কর ধার্য করা হয়েছে।
সূত্র: বণিক বার্তা
আমি মোঃ ফাহাদ হোসাইন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 7 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 13 টি টিউন ও 1 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।