গুগলের অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম আসার পর, স্মার্টফোন মানেই বড়লোকি ব্যাপার-স্যাপার, সেই দিনের অবসান হয়েছে। কয়েক মাস আগে পত্রিকায় পড়েছিলাম, বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া স্মার্ট ফোন স্যামসাং গ্যালাক্সি ওয়াই, যার দাম বর্তমানে ১৩ হাজারের কম। সিমফোনী সর্বনিম্ন ৭ হাজার টাকায় অ্যান্ড্রয়েড চালিত স্মার্ট ফোন বাজারে ছাড়ার পর, বলতে গেলে অধিকাংশ মুঠোফোন ব্যবহারকারীর নাগালে চলে এসেছে স্মার্ট ফোন। বাংলাদেশী কোম্পানি ওয়ালটন ‘প্রিমো’ বাজারে ছেড়ে সে যাত্রায় শামিল হয়েছে। সম্প্রতি আরেকটা কোম্পানি আরো কম দামে শীঘ্রই বাজারে স্মার্ট ফোন ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে। এসব কারণে বলা যায়, হঠাৎ করেই বাংলাদেশে স্মার্টফোন ব্যবহারকারী বেড়ে গেছে।
অ্যান্ড্রয়েড চালিত স্মার্টফোন যে কারণে অন্য সকল স্মার্টফোনকে জনপ্রিয়তায় ছাড়িয়ে গেছে, সেটা হলো এর তুলনামূলক কম দাম এবং লাখ লাখ অ্যাপ্লিকেশন। এসব অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোডের জন্য কর্তৃপক্ষীয় ওয়েবসাইট হচ্ছে গুগল প্লে স্টোর, যেটা আগে অ্যান্ড্রয়েড মার্কেট নামে পরিচিত ছিল। তবে আরো অনেক ওয়েবসাইট আছে যেগুলো থেকে অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করা যায়। তবে সেগুলো গুগল স্বীকৃতি দেয় না।
এতো লম্বা ভূমিকা করলাম এজন্য, বাংলাদেশের অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের অধিকাংশ নতুন। ফলে লাখ লাখ অ্যাপ্লিকেশনের মধ্য থেকে প্রয়োজনীয় অ্যাপসগুলো বেছে নিতে তাদের দ্বিধায় পড়তে হয়। তাছাড়া বাংলাদেশে ইউটিউব বন্ধের প্রভাবে গুগলের অধিকাংশ সেবাই মাঝে মধ্যে নানা প্রতিবন্ধকতায় পড়ে। প্রায় সময় প্লে স্টোরে লগইন করা যায় না। ফলে অ্যাপ্লিকেশনও ডাউনলোড করা যায় না।
আমি এখন প্রয়োজনীয় কয়েকটা অ্যাপ্লিকেশন সম্পর্কে বলবো। সবশেষে নিচে সবগুলো অ্যাপ্লিকেশনের ডাউনলোড লিংক দিয়ে দিয়েছি। এগুলো আমার বক্স অ্যাকাউন্টে আপলোড করা। কোন সমস্যা ছাড়াই সরাসরি ডাউনলোড করতে পারবেন। পিসি থেকে ডাউনলোড করলে আপনার ফোনের এসডি কার্ডে নিয়ে নিতে পারবেন।
Android Assistant:
চরম একটা অ্যাপ্লিকেশন। এই একটা অ্যাপ্লিকেশন দিয়েই আপনি অনেকগুলো কাজ করতে পারবেন, যেগুলো করতে আপনি হয়তো এতোদিন একাধিক অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে এসেছেন। আমার মতো যারা অ্যান্ট্রি লেভেল ইউজার, তাদের ডিভাইসে ইন্টারনাল মেমোরি কম থাকে। এই এপ্লিকেশন আপনার মেমোরি অনেকখানি সেভ করবে। অ্যাপ্লিকেশন ব্যাকআপ ও রিস্টোর, অ্যাপ্লিকেশন এসডি কার্ডে ট্রান্সফার, অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল ও আনইনস্টল, ক্যাশ ও সিস্টেম ক্লিনসহ আরো অনেক ধরনের কাজ করতে পারবেন এটা দিয়ে।
Battery:
আপনার ডিভাইসের ব্যাটারির চার্জ কত পাসের্ন্ট আছে, ডিভাইসের কোন প্রোগ্রাম কতটুকু চার্জ নিচ্ছে, ডিভাইসের টেম্পারেচার এইসব জানতে পারবেন এটা দিয়ে। নোটিফিকেশন সেটিং অ্যাকটিভ রাখলে উপরে নোটিফিকেশন বারে ব্যাটারির চার্জ কত পাসের্ন্ট আছে তা প্রদর্শন করবে।
Blocker:
এই অ্যাপ্লিকেশন দিয়ে যে কোন নম্বরের কল, এসএমস ব্লক করে রাখতে পারবেন। টাকা খরচ করে মোবাইল অপারেটরগুলোর ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস চালু রাখতে হবে না। আমি এটা দিয়ে বাংলালিংকের ২২২২, ৫৮৫৮ ব্লক করে রেখেছি...
Dolphin Browser:
আমার মতে অ্যান্ড্রয়েডের জন্য সেরা ব্রাউজার এটা। সেটিংস থেকে ‘টেক্সট অ্যানকোডিং’ এ গিয়ে ইউনিকোড সিলেক্ট করে রাখলে ঝকঝকে তকতকে বাংলা পড়া যায়। লোডিং টাইমও অনেক কম।
Dr.Web Anti-virus Light ও ESET Security:
চমৎকার দুইটা অ্যান্টিভাইরাস। ইসেট একমাসের ট্রায়াল ভার্শন। ড. ওয়েব ফ্রি ভার্শন। যার যেটা লাগে ডাউনলোড করে নেন।
File Hide Expert:
নামেই পরিচয়। যে কোন ফাইল কিংবা ফোল্ডার লুকিয়ে রাখতে পারবেন। তবে সাবধান, অসর্তকতাবশত `sd card’ ফোল্ডারটা আবার হাইড করে ফেলেন না যেন।
Flashlight:
আপনার ক্যামেরার ফ্লাশকে টর্চ লাইট হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। যাদের ক্যামেরায় ফ্লাশ নেই, তারা ডিসপ্লেকে ফ্লাশলাইট হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন।
Fring
ফ্রি কথা বলার অসাধারণ সফটওয়ার। প্রতি ঘণ্টায় সর্বোর্চ্চ ৬-৭ মেগাবাইট খরচ হবে। আমি মাঝে মধ্যে দেশের বাইরে কল করি এটা দিয়ে।
LoderDroid:
পিসিতে যেমন আইডিএম, তেমনি অ্যান্ড্রয়েডে লোডার ড্রয়েড। আমার কাছে এখন পর্যন্ত আইডিএম এর সবচেয়ে ভালো বিকল্প।
Mayabi Keyboard:
যারা কম্পিউটারে অভ্র দিয়ে ফোনেটিক ব্যবহার করেন, অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে তাদের জন্য এই সফটওয়ারটা আশীর্বাদ। অবশ্য কিছুদিন আগে ‘রিদ্মিক কীবোর্ড’ নামে আরেকটা অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করেছেন বুয়েটের এক শিক্ষার্থী। ওই অ্যাপসে ইউনিজয় লে আউট কাজ করে। আমার ডিভাইসে রিদ্মিক সাপোর্ট করে না বিধায় আপাতত আপনাদের দিতে পারলাম না।
Music Folder Player:
এসডি কার্ডের যে ফোল্ডারে যেসব মিউজিক রেখেছেন, এই অ্যাপ্লিকেশন দিয়ে সে অনুযায়ী গান প্লে করতে পারবেন। যারা অ্যালবাম কিংবা আর্টিস্ট অনুযায়ী গান সাজিয়ে রাখেন, তাদের জন্য বেশ কাজের একটা সফটওয়ার।
MX Player:
ভিডিও প্লে করার জন্য নিঃসন্দেহে সেরা সফটওয়ার। এইটার উপরে কোন সফটওয়ার নাই।
NeoReader:
কিউ আর কোড, বারকোডসহ চার ধরনের কোড রিড করতে পারে এই অ্যাপ্লিকেশনটা।
RepliGo Reader:
আপনারা যারা নিচের ডাউনলোড লিংকে প্রবেশ করবেন, তারা লক্ষ্য করবেন শুরুতেই ‘অ্যাডোবি রিডার’ অ্যাপ্লিকেশনটি রয়েছে। অবাক হতে পারেন, অ্যাডোবির কথা আমি কেন বলিনি। আমার ডিভাইসে বাই ডেফল্ট অ্যাডোবি দেওয়া ছিল, তারপরও আমি এই RepliGo Reader ব্যবহার করি। কারণটা হলো, অ্যান্ট্রি লেভেলের অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে অ্যাডোবি দিয়ে, বিশেষ করে বাংলা পিডিএফ, বই হ্যাং হয়ে যায়। কিন্তু একই বই RepliGo দিয়ে স্মোথলি পড়া যায়।
RepliGo কিন্তু পেইড অ্যাপস!!! পাক্কা এক রাত জেগে নেট ঘেঁটে এটা নামিয়েছি। আপনারা এখন এটা একদম ফ্রি ব্যবহার করতে পারবেন।
uTorrent:
টরেন্ট সম্পর্কে আমার নিজের ধারণা খুব কম। যারা টরেন্ট ব্যবহার করেন, তাদের জন্য হয়তো এটা কাজে লাগবে।
এই সবগুলো অ্যাপ্লিকেশন সরাসরি পিসি কিংবা অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে ডাউনলোড করতে পারবেন আমার বক্স অ্যাকাউন্ট থেকে। মিডিয়াফায়ারের মতোই বক্সও একটা অনলাইন ফাইল স্টোরেজ। বরং মিডিয়াফায়ারের চেয়েও আরো সিম্পল মনে হয় আমার কাছে।
ডাউনলোড লিংক: https://www.box.com/s/ncvfucad9x1mvhfrpogs/1/475494952
আমি মাসউদুল আলম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 41 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আপনার কাছে কি samsun galaxy GT-S5300 call recorder pro. পাওয়া যাবে কি?