গেমস জোন [পর্ব-৩০৩] : কিছু বেস্ট পিসি গেমস যেগুলো আপনার এই জীবনে একবার হলেও খেলা উচিৎ

টিউন বিভাগ গেমস
প্রকাশিত
জোসস করেছেন

গেমস জোন

আগেরকার দিনে গেমস বলতে কম্পিউটার গেমসকেই বুঝানো হতো। কিন্তু বর্তমানে মোবাইলেও শক্তিশালি হার্ডওয়্যার ব্যবহৃত হচ্ছে বিধায় এখন আমরা স্মার্টফোনেও কম্পিউটার কোয়ালিটির গেমস খেলতে পারছি। কিন্তু তাই বলে কি কম্পিউটার এক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকবে? কখনোই নয়। বরং সকল প্লাটফর্মের থেকে কম্পিউটার হলো গেমিং এর জন্য সবথেকে বেস্ট প্লাটফর্ম। আর আমি গেমার টিউনার গেমওয়ালা অনেকদিন পর গেমস জোনের আরেকটি পর্ব নিয়ে এলাম। আসলে গেমস জোনের ৩০০ তম পর্বে আজকের এই টিউনটি করার ইচ্ছে ছিলো কিন্তু আরো কিছু রিসার্চ এবং আমার অনার্সর ফাইনাল পরীক্ষার কারণে আর হাতে সময় করে উঠতে পারিনি। তো আর দেরী কেন? তো চলো দেখে নেই কম্পিউটার গেমসের বেস্ট কিছু গেমসগুলোকে।

Warhammer: Vermintide 2

সিরিজের প্রথম গেমটিতে প্রায় ২০০ ঘন্টার মতো খেলার পর সিরিজের এই নতুন গেমটি তেমন খারাপ বানায়নি নির্মাতারা। অনলাইন এই গেমটিতে Left 4 Dead সিরিজের আভা তুমি পাবে। যেখানে তুমি এবং আরো ৩টি অন্য প্লেয়ার কিংবা bots মিলে একত্রে কাজ করে প্রতিটি লেভেল তোমার টিমকে পার করতে হবে। আর তোমার টিমে তুমিই হবে টিম লিডার।

Warhammer: Vermintide 2 গেমটিতে আরো রয়েছে ক্যারেক্টার ক্যারিয়ার পাথ, যেখানে তুমি তোমার নিজের ইচ্ছে মতো প্লে স্টাইল এবং বিভিন্ন স্কিল ট্রি এর সমন্নয়ে গেমটি খেলতে পারবে। গেমটি একটি ফাস্ট পারসন একশন ধাঁচের গেম। গেমটিতে তোমাকে তোমার টিম নিয়ে Chaos Army এবং ইঁদুর-মানুষ সংমিশ্রিত এক প্রজাতি যার নাম Skaven তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে। গেমটিতে প্রায় ১৫টি ভিন্ন ক্যারিয়ার পাথ রয়েছে যার মানে হলো গেমটি ১৫টি আলাদা ভাবে খেলা যাবে। গেমটি ২০১৮ সালের ৮ই মার্চে বিশ্বব্যাপী মুক্তি দেওয়া হয়।

গেমটি খেলতে হলে তোমাকে কোর আই ৩, ২ গিগাবাইট গ্রাফিক্স কার্ড, ৬ গিগাবাইট র‌্যাম, ৬৪ বিটের উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম, ডাইরেক্ট এক্স ১১ এবং ৪৫ গিগাবাইট ফ্রি হার্ডডিক্স স্পেস এর প্রয়োজন হবে।

Final Fantasy XV

আসলে ফাইনাল ফ্যানটাসি সিরিজটি কিন্তু মূলত কম্পিউটারের জন্য বানানো হয়নি। কিন্তু অরিজিনাল সিরিজের থেকে এই পিসি সংষ্করণটি আরো বেশি জটিল এবং ভালো হয়েছে। মানে পিসি পোর্টিং নির্মাতারা অনেক ভালোভাবে বানাতে পেরেছেন। অরিজিনাল সিরিজের RPG স্টাইলের গেম-প্লে এতে রয়েছে এবং নতুন ফিচার হিসেবে গেমটিতে রয়েছে রিয়েল টাইম কমবাট টেরেটোরি। যার মাধ্যমে গেমটি তোমার খেলতে বেশ ভালোই লাগবে। তবে গেমটির একটি প্যাড়াময় ব্যাপার হলো এর সাইজ। গেমটি তোমার হার্ডডিক্সের ১৪৮ গিগাবাইট জায়গা দখল করে রাখবে!

Final Fantasy XV একটি একশন রোল প্লেয়িং ভিডিও গেম যেটি নির্মাণ এবং মুক্তি দিয়েছে স্কোয়ার ইনিক্স। গেমটি কোম্পানির ফাইনাল ফ্যান্টাসি সিরিজের ১৫তম প্রধান সংস্করণ। গেমটির মূলত ২০১৬ সালে প্লে-স্টেশন ৪ এবং এক্সবক্স ওয়ানের জন্য মুক্তি দেওয়া হলেও পরবর্তীতে ২০১৮ সালে মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ভিক্তিক পিসিতে চলে আসে। আর গেমটির পিসি সংস্করণে স্কোয়ার ইনিক্স তাদের Luminous Studio এর গ্রাফিক্স ইঞ্জিন ভার্সন ২.০ ব্যবহার করেছে। আর তাই গেমটি ভালোভাবে খেলতে হলে তোমার চাই একটি হাই বাজেট গেমিং পিসি। গেমটির পিসি সংষ্করণে তুমি অরিজিনাল সংস্করণের সকল ফিচার, ফাস্ট পারসন মোড, ৪কে রেজুলেশন সহ বোনাস হিসেবে উন্নত মানের গ্রাফিক্স কোয়ালিটি পাবে।

গেমটি খেলার জন্য তোমার কম্পিউটারে নুন্যতম কোর আই ৫ ৩.৩ গিগাহার্জ প্রসেসর, এনভিডিয়া জিফোর্স জিটিএক্স ৭৬০ কিংবা এএমডি রাডিয়ন আরএক্স ৪৮০ ৪ গিগাবাইট গ্রাফিক্স কার্ড, ৮ গিগাবাইট র‌্যাম, ৬৪ বিটের উইন্ডোজ সেভেন অপারেটিং সিস্টেম, ডাইরেক্ট এক্স ১১, এবং প্রায় ১৫৫ গিগাবাইটের ফ্রি হার্ডডিক্স স্পেস এর দরকার পড়বে।

Dota 2

এটা আমার ফেবারেট এবং সবথেকে বেশি খেলা একটি পিসি গেমস। ডটা ২! গেমটির ব্যাপারে কি আর বলবো, এটার নেশা একবার কাউকে পেয়ে গেলেই হলো! ডটা ২ হচ্ছে একটি ফ্রি MOBA (multiplayer online battle arena) ধাঁচের ভিডিও গেম যেটি নির্মাণ এবং প্রকাশ করেছে Valve Corporation হ্যাঁ যে কোম্পানিটি তাদের হাফ লাইফ গেম সিরিজের জন্য বিখ্যাত। ডটা ২ গেমটিতে ৫ জন করে একটি টিম মিলে একটি ম্যাপে ২টি টিম নিজের মধ্যে যুদ্ধ করবে। গেমটির মূল অবজেক্টটিভ হলো বিপরীত টিমের মূল বেইস বা The Ancient কে ভেঙ্গে দেওয়া। আর এই ৫ জনের টিমে এক এক জন এক একটি হিরো পছন্দ করে খেলতে পারবে। আর প্রতিটি হিরোর আলাদা স্টাইল এবং পাওয়ারস রয়েছে। হিরোর সাথে তোমার টিম এবং বিপরীত টিমেও থাকবে Creeps। এই ক্রিপস আর বিপরীত টিমের হিরোদের মেরে তুমি এক্সপেরিয়েন্স পয়েন্ট এবং গোল্ড অর্জন করতে পারবে যা দিয়ে তুমি ইনগেম আইটেম এবং তোমার হিরোর পাওয়ারআপ বেছে নিতে পারবে।

ডটা ২ একটি কমপ্লেক্স গেম। এটি নতুন কেউ প্রথম প্রথম শিখতে বেশ কয়েক দিন লেগে যাবে। আর প্রতি বছরই বিশ্বে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গেমিং টুর্নামেন্ট হচ্ছে এই ডটা ২ গেমটি ঘিরে। ডটা ২ গেমটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০০৯ সালে এবং গেমটি প্রথম মুক্তি পায় ২০১৩ সালের জুলাই মাসে। গেমটির ডিজিটাল ডিস্ট্রিবিউশন প্লাটফর্ম Steam য়ে তুমি ফ্রিতে ডাউনলোড করে খেলতে পারবে।

ডটা ২ খেলতে হলে হাই এন্ড পিসির প্রয়োজন পড়ে না। তবে তোমার একটি স্টেবল ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে। ডুয়াল কোর প্রসেসর, ৪ গিগাবাইট র‌্যাম, ১ গিগাবাইট নরমাল গ্রাফিক্স কার্ড, ডাইরেক্ট এক্স ৯ এবং ২৬ গিগাবাইট ফ্রি হার্ডডিক্স স্পেস থাকলেই তুমি ডটা ২ তোমার পিসিতে খেলতে পারবে। ডটা ২ নিয়ে বিস্তারিত চেইন টিউন করার ইচ্ছে আছে এবং আমি সেটা সময় বের করে অবশ্যই শুরু করবো।

PUBG

ইদানিং অনলাইন গেমিং কমিউনিটিতে একটি নাম হঠাৎ করেই আলোচনায় এসে পড়ছে যেটা হলো পাবজি! মানে এরা PlayerUnknow's Battlegrounds গেমটির কথা বলছে। এটি বর্তমানে Steam এর সবথেকে জনপ্রিয় একটি গেম। যার প্লেয়ারের সংখ্যা ডটা ২, সিএস গো কেও ছাড়িয়ে গিয়েছে। মাত্র কিছুদিন আগে গত বছরের ডিসেম্বরে মুক্তি পাওয়া এই গেমটি ইতিমধ্যেই এত সুনাম ও প্লেয়ার পেলো কোথা থেকে? কারণ গেমটির গেম-প্লে। একটি সেইফ এরিয়াতে তোমাকে লাস্ট ম্যান স্ট্যাডিং হিসেবে বেঁচে থাকতে হবে শত্রুদের হাত থেকে যেখানে সেইফ এরিয়ার সাইজ ধীরে ধীরে ছোট হতে থাকবে। তবে গেমটির গ্রাফিক্স অপটিমাইজিং ইস্যু এবং মূলত চীনের হ্যাকারদের জন্য গেমটি ‍Steam এ নেগেটিভ রিভিউও পাচ্ছে। তবে Steam এর তৃতীয় সর্বোচ্চ ইনকামকৃত গেমটির রক্ষণাবেক্ষণে নির্মাতারা কিন্তু থেমে নেই।

PlayerUnknown's Battlegrounds (PUBG) একটি মাল্টিপ্লেয়ার অনলাইন ব্যাটল রয়্যাল ধাঁচের গেম যেটি নির্মাণ এবং প্রকাশ করেছে PUBG। এই গেমটিতে একটি ম্যাপে সর্বোচ্চ ১০০ জন প্লেয়ার প্যারাস্যূটের মাধ্যমে নামে এবং নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ করে লাস্ট ম্যান স্ট্যাডিং হিসেবে যেই থাকবে সেই হবে বিজয়ী। আর ম্যাপের বিভিন্ন স্থান হতে আইটেম এবং অস্ত্র সংগ্রহ করা যাবে আর ম্যাপের সেইফ জোনের সাইজ সময়ের সাথে সাথে ছোট হতে থাকবে। চমৎকার এই গেমটি নির্মাণে ব্যবহৃত হয়েছে আনরিয়েল ইঞ্জিন ৪ আর গেমটির বর্তমানে পিসি, এক্সবক্স ওয়ান এবং অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস ডিভাইসগুলোতে খেলা যাবে। গেমটি খেলতে হলে তোমার চাই একটি মিড রেঞ্জের গেমিং পিসি।

গেমটি খেলতে হলে তোমার পিসিতে কোর আই ৩ ৪৩৪৯ ৩.৬ গিগাহার্জ প্রসেসর, গিগাবাইট জিফোর্স জিটিএক্স ৬৬০ কিংবা এএমডি রাডিয়ন আর৯ ৩৯০ গ্রাফিক্স কার্ড, ৬ গিগাবাইট র‌্যাম, ডাইরেক্ট এক্স ১১ এবং ৩০ গিগাবাইট ফ্রি হার্ডডিক্স স্পেস এর দরকার পড়বে।

League of Legends

প্রায় ডটা ২ এর মতোই একটি গেম হচ্ছে League of Legends বা LoL।  League of Legends একটি ফ্রি MOBA ধাঁচের ভিডিও গেম যেটি সাধারণ দৃষ্টিতে ডটা ২ এর চাইতে অপেক্ষাকৃত ভাবে খেলা সহজ। তবে এর গ্রাফিক্স আমার কাছে কার্টুন এর মতো লাগে। তবে এর কারণেই গ্রাফিক্স কার্ড ছাড়াই নরমাল পিসিতেও গেমটি স্মুথ ভাবে খেলা সম্ভব। গেমটিতে ১০ জনের দুটি টিম নিজের মধ্যে যুদ্ধ করে বিপরীত টিমের মূল বেইস Nexus কে ধ্বংস করতে পারলেই ম্যাচটি জেতা যাবে। আর ডটা ২ এর মতোই ম্যাচে বিপরীত টিমের হিরো এবং ক্রিপদেরকে মেরে তুমি এক্সপেরিয়েন্স পয়েন্ট এবং গোল্ড সংগ্রহ করতে পারো আর এগুলো দিয়ে তোমার হিরোর জন্য আইটেম এবং পাওয়ার আপ আপগ্রেড করতে পারবে।

LoL এবং DOTA 2 গেম দুটোর মাঝে অনেক মিল থাকলেও এদের নির্মাতাদের মধ্যে কখনোই ঝগড়া হয় না, ঝগড়াটা হয় এদের প্লেয়ার কমিউনিটিদের মধ্যে। তবে যে যাই বলুক না কেন, তোমার যদি হাই ফাই গেমিং পিসি না থাকে এবং তুমি যদি অনলাইন MOBA ধাঁচের গেম খেলতে চাও তাহলে LoL তোমার জন্য পারফেক্ট।

গেমটি খেলতে হলে তোমার পিসিতে ডুয়াল কোর প্রসেসর, ২ গিগাবাইট র‌্যাম, ৫১২ মেগাবাইট গ্রাফিক্স কার্ড, ডাইরেক্ট এক্স ৯ এবং ১৫ গিগাবাইট ফ্রি হার্ডডিক্স স্পেস এবং অবশ্যই ১ এমবিপিএস গতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে।

Assassins Creed Origins

এসাসিন্স ক্রিড সিরিজ টাই একটি ইউনিক ওপেন ওয়ার্ল্ড ধাঁচের গেমস সিরিজ। সিরিজের সবগুলো গেমই তাদের সময়ে প্রচুর জনপ্রিয় ছিলো। আর সিরিজের লেটেস্ট গেম অরিজিনস তো পুরোই মাখন। এসাসিন্স ক্রিড অরিজিনস গেমটি এবার আমাদের জন্য নিয়ে এসেছে মিশরের রহস্য ঘেরা একটি গেমিং এক্সপেরিয়েন্স। গেমটি বাজারে আসতে ১ বছর বেশি সময় নিয়েছিলেন নির্মাতারা কিন্তু গেমটি এতই ভালো যে এর জন্য ১ বছর অপেক্ষা করা কোনো ব্যাপারই নয়। এসাসিন্স ক্রিড ২ এবং ৪ এর পর অরিজিনস হলো সিরিজের অন্যতম ইউনিক ও জনপ্রিয় একটি গেম।

গেমটিতে করার মতো অনেক কিছুই পাবে তুমি। লম্বা টাইপের মেইন মিশন, সাইড মিশন, ট্রেজার, পাজল, গ্লাডিয়েটর কমবাট, চেরিয়ট রেসিং, হাটিং ইত্যাদি অনেক কিছুই তোমাকে গেমটি অনেকদিন খেলার জন্য উদ্বুদ্ধ করে রাখবে। তবে এর জন্য তোমার চাই হাই ফাই গেমিং পিসি এবং ভালো মানের একটি গ্রাফিক্স কার্ড। এগুলো থাকলে গেমটির প্রতিটি ডিটেইলসের তুমি মজা নিতে পারবে।

গেমটি খেলতে হলে তোমার পিসিতে কোর আই ৫ প্রসেসর, জিফোর্স জিটিএক্স ৭৬০ কিংবা রাডিয়ন আর৯ ২৮০এক্স গ্রাফিক্স কার্ড, ৬ গিগাবাইট র‌্যাম, ডাইরেক্স এক্স ১১ এবং ৫০ গিগাবাইট ফ্রি হার্ডডিক্স স্পেস এর প্রয়োজন পড়বে। তাহলেই তুমি খ্রিষ্টপূর্ব ২৪৯৬ সালের পুরোনো মিশরের গ্রাফিক্সের মজা নিতে পারবে।

Divinity Original Sins 2

তোমার রোল প্লেয়িং ধাঁচের গেম খেলতে ভালো লাগে? তাহলে বর্তমান সময়ের সবথেকে বেস্ট রোল প্লেয়িং গেম Divinity Original Sins 2 গেমটি তুমি খেলে দেখতে পারো। গেমটির গ্রাফিক্স এবং গেমপ্লে তোমাকে মুগ্ধ করবেই। আর গেমটির গেমিং স্টোরিলাইনে তুমি হারিয়ে যাবে এক অন্য দুনিয়ায়! গেমটির মূল ক্যাম্পেইন কমপ্লিট করতে তোমাকে ৮০ থেকে ১০০ ঘন্টার মতো সময় গেমটিতে দিতে হবে। তবে এই শেষ নয়, চাইলে তুমি অন্য কোনো ক্যারেক্টার নিয়ে অন্য স্কিল ফিল্ডে গেমটি আবারো খেলতে পারো এবং এখানে একটি কথা গ্যারান্টি দিয়ে বলা যায় যে প্রতিটি ক্যারেক্টারে তুমি গেমটি নতুন করে উপলব্ধি করতে পারবে! আর গেমটির Arena এবং অনান্য মোডতো রয়েছেই হালকা বিনোদনের জন্য। গেমটিতে তোমাকে একটি Legion এর হয়ে খেলতে হবে। গেমটিতে তুমি যে কাউকেই খুন করতে পারবে, যে কারো সাথেই কথা বলতে পারবে এমনকি পশু প্রাণীদের সাথে কথা বলতে পারবে যদি তোমার কাছে Pet pal স্কিলটি থাকে, এবং গেমের প্রায় সব ধরনের চরিত্রের সাথে ট্রেড করতে পারবে, লুট করতে পারবে আর এগুলোর মধ্য দিয়ে তোমাকে গেমটির স্টোরিলাইনে এগিয়ে যেতে হবে। গেমটি Divinity Engine 3.0 ইঞ্জিনে তৈরি এবং এডভান্স রোলপ্লে সিস্টেম থাকায় এটি চালাতে হলে তোমার একটি গেমিং পিসির দরকার পড়বে।

গেমটি খেলার জন্য তোমার পিসিতে নূন্যতম কোর আই ৫ প্রসেসর, জিফোর্স জিটিএক্স ৫৫০ টিআই কিংবা রাডিয়ন আর৯ ২৮০ গ্রাফিক্স কার্ড, ৬ গিগাবাইট র‌্যাম, ডাইরেক্ট এক্স ১১ এবং ২৫ গিগাবাইট ফ্রি হার্ডডিক্স স্পেস এর প্রয়োজন হবে। তবে হাই গ্রাফিক্স সেটিংয়ে গেমটি 1080P রেজুলেশনে উপভোগ করতে চাইলে তোমার কোর আই ৭, জিটিএক্স ১০৮০ টিআই গ্রাফিক্স কার্ড, ১৬ গিগাবাইট র‌্যাম এর প্রয়োজন পড়বে।

Kingdom Come: Deliverance

গেমটিতে স্কাইরিম এর মতো মনে করলে তোমার ভুল হবে। কারণ গেমটি অনেকটাই বাস্ববিক টাইপের RPG ধাঁচের গেমের মতোই। তবে গেমটি বাচ্চাদের জন্য নয়, গেমটি প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য। কারণ গেমটি খেলা অনেকটাই কঠিন এবং গেম-প্লেতে অনেক সময় বুদ্ধি খাটিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আর গেমটির সকল সাইড কোয়েস্ট পূর্ণ করে গেমটি একবার গেমওভার দিতে তোমাকে ১০০+ ঘন্টা সময় দিতে হবে গেমটিতে।

Kingdom Come: Deliverance একটি একশন রোল প্লেয়িং ধাঁচের ভিডিও গেম যেটি নির্মাণ করেছে Warhorse Studios এবং প্রকাশ করেছে Deep Silver। গেমটির স্টোরিলাইন ১৫০০ শতাব্দির রোমান সাম্রজ্যে কিছু ঐতিহাসিক বাস্তবিক ঘটনাচক্রের অনুসারে তৈরি করা হয়েছে। আর এরই সাথে গেমটিতে তুমি ১৫০০ শতাব্দির অস্ত্র, কাপড়-চোপড়, কমবাট টেকনিক এবং আর্কিটেকচার সিস্টেম পাবে যা খুবই একুরেট ভাবে গেমটিতে আনা হয়েছে। আর গেমটিকে বাস্তবিক RPG ধাঁচের বলা হয়েছে এই কারণে যে এখানে কোনো ফ্যান্টাসি টাইপের কোনো উপাদান (ড্রাগন, ম্যাজিক, দৈত্য দানব ইত্যাদি) নেই।

ক্রাই ইঞ্জিন ৪ দিয়ে বানানো এই গেমটি ভালো ভাবে খেলতে হলে তোমার প্রয়োজন হবো ইন্টেল কোর আই ৫, ১৬ গিগাবাইট র‌্যাম এবং এএমডি আর৯ ৩৯০ কিংবা এনভিডিয়া জিটিএক্স ৯৭০ গ্রাফিক্স কার্ড সমৃদ্ধ কম্পিউটার।

Overwatch

ফ্যাক্টাসি স্টাইলের কার্টুন টাইপের গ্রাফিক্স হলেও শুধুমাত্র অনলাইন মাল্টিপ্লেয়ার FPS ধাচেঁর এই গেমটির জনপ্রিয়তা অনেক। ২০১৬ সালে মুক্তির পর গেমটি এখন পর্যন্ত ৩৫ মিলিয়ন প্লেয়ার রেজিস্টার্ড হয়েছে। গেমটির ঘনত্ব, ক্যারেক্টার, ব্যালেন্সিং, ম্যাপ ডিজাইন এবং উন্মাদনাই এর জনপ্রিয়তার রহস্য।

Overwatch একটি টিম ভিক্তিক মাল্টিপ্লেয়ার ফাস্ট পারসন শুটার ধাঁচের ভিডিও গেম যেটি নির্মাণ এবং প্রকাশ করেছে Blizzard Entertainment। গেমটিতে ৬ জনের দুটি টিম থাকবে আর ২০ টির বেশি ক্যারেক্টার থেকে তোমাকে একটি চরিত্র বেছে নিতে হবে। প্রতিটি ক্যারেক্টারের রয়েছে নিজস্ব ইউনিক স্টাইল এবং ক্যারেক্টারগুলোকে মূলত চারটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে : Offence, Defense, Tank এবং Support। গেমটিতে তোমাকে তোমার দলের সাথে এক হয়ে ম্যাপের কনট্রোল পয়েন্টসগুলোকে ডিফেন্ড করতে হবে এবং লিমিটেড টাইমের ভিতর পেলোড কে ম্যাপের এক স্থান হতে অন্য স্থানে শিফট করতে হবে।

গেমটি খেলার জন্য তোমার দরকার হবে কোর আই ৩ প্রসেসর, জিফোর্স জিটিএক্স ৪৬০ কিংবা রাডিয়ন এইচডি ৬৮৭০ গ্রাফিক্স কার্ড, ৪ গিগাবাইট র‌্যাম, ডাইরেক্ট এক্স ১১ এবং ৫ গিগাবাইট ফ্রি হার্ডডিক্স স্পেস।

Warface

সিএস গো ব্যক্তিগত ভাবে আমি পছন্দ করলেই ১৪ ডলার খরচ করে গেমটি কেনার ব্যাপারে এবং গেমটিতে স্কোপ লেস ওয়েপন সিস্টেমের কারণে আমি CSGO গেমটি থেকে দূরে থাকিই বলা যেতে পারে। কিন্তু অনলাইনে যুদ্ধ যুদ্ধ টাইপের গেমের চাহিদা মেটাতে আমি নিজে ব্যক্তিগত ভাবে Warface গেমটি খেলে থাকি। প্রথমত এটি একটি ফ্রি টু প্লে গেম আর এতে কল অফ ডিউটির মাল্টিপ্লেয়ারের স্বাদ আমি পেয়েছি তাই গেমটি আজকের লিস্টে আমি ব্যক্তিগত ভাবে নিয়ে এলাম।

ওয়ারফেস একটি ফ্রি টু প্লে অনলাইন অনলি FPS মিলিটারী শুটার ধাঁচের ভিডিও গেম যেটি নিমার্ণ করেছে রাশিয়ান নির্মাতা Crytek Kiev এবং প্রকাশ করেছে ক্রাইটেক। গেমটি Crysis গেমের CryEngine 3 দিয়ে বানানো হয়েছে। গেমটিতে দুটি টিম একটি ম্যাপে নিজেদের মধ্যে বিভিন্ন গেম স্টাইলে যুদ্ধ করবে। আর প্রতিটি টিমে চারটি ভিন্ন ক্লাস ক্যারেক্টার রয়েছে। Sniper, Rifleman, Engineer এবং Medic। প্রতিটি ক্লাসের রয়েছে আলাদা অস্ত্র এবং নিজস্ব রোল। মেডিকসরা আহত টিমমেটদের সুস্থ করে তোলবে, ইঞ্জিনিয়াররা আরমর রিপেয়ার এবং রিস্টোর করবে, রাইফেলম্যানদের রয়েছে এক্সটা গুলি আর স্নাইপারা লং রেঞ্জে টিমকে সার্পোট দিবে।

গেমটিতে রয়েছে PvP এবং Co-op মিশন। PvP মোডে তোমাকে টিমের হয়ে কিংবা ডেডম্যাচে নিজের হয়ে খেলতে হবে। আর Co-op  মিশনে সিঙ্গেল প্লেয়ার কিংবা অনলাইনে অন্য প্লেয়ারদের সাথে নিয়ে গেমটির AI এরদের সাথে খেলতে হবে তোমাকে। গেমটি চালানো জন্য তোমার চাই ডুয়াল কোর প্রসেসর, ৪ গিগাবাইট র‌্যাম, ১ গিগাবাইট নরমাল গ্রাফিক্স কার্ড, ডাইরেক্ট এক্স ৯ এবং ১৫ গিগাবাইট ফ্রি হার্ডডিক্স স্পেস এবং অবশ্যই ১ এমবিপিএস গতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ।

কল অফ ডিউটি ৪ মাল্টিপ্লেয়ার

এটা বলতেই হবে যে পুরো কল অফ ডিউটি সিরিজটি জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো কল অফ ডিউটি সিরিজের ৪র্থ গেম মর্ডার ওয়্যারফেয়ার দিয়ে। আর গেমটির জনপ্রিয়তা এতটাই বেশি ছিলো যে গেমটির রিমেক ভার্সনও এখন বাজারে এসে পড়েছে। কিন্তু অরিজিনাল গেমটির মাল্টিপ্লেয়ার এখনো ইন্টারনেটে খেলা যাবে। আর তাই আজকের লিস্টে সবার শেষে সবার খেলার উপযোগী একটি বেস্ট পিসি গেম হিসেবে কল অফ ডিউটি ৪ মাল্টিপ্লেয়ারটি আমি রেখেছি।

কল অফ ডিউটি ৪ এর অফিসিয়াল সার্ভারগুলো অনেক আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তবে আনঅফিসিয়াল অনেকগুলো সার্ভার এখনো চলমান রয়েছে আর বাংলাদেশী ২টি বা ৩টি সার্ভারও রয়েছে এদের মধ্যে। যাদের হাই এন্ড পিসি নেই কিংবা যারা নস্টালজিয়া কড ৪ খেলতে ভালোবাসেন তাদের জন্যেই এই ব্যবস্থা।

এর জন্য প্রথমেই তোমার দরকার হবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ। তারপর দরকার হবে অনলাইন গেমিং ক্লায়েন্ট গেম রেঞ্জার। তারপর তোমার কল অফ ডিউটি ৪ মাল্টিপ্লেয়ার গেমটির ভার্সন 1.8x য়ে আপগ্রেড করতে হবে আর তারপরেই গেম রেঞ্জারের মাধ্যমে তুমি তোমার পছন্দের সার্ভারে ঢুকে খেলা শুরু করে দিতে পারো।

তবে আরেকটি গেমের কথা না বললেই নয় সেটি হলো জিটিএ ৫। মুক্তির প্রায় ৫ বছর পরেও এর মতো অন্য কোনো গেম এখনো বের হয় নি। তাই জিটিএ ৫ গেমটি সিঙ্গেল প্লেয়ার এর দিক থেকে এখনো বাজার মাতাচ্ছে। আর জিটিএ ৫ নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই তাই এখানে বেশি কিছু বললাম না। আর জিটিএ ৫ চালাতে আহামরি টাইপের পিসির প্রয়োজন হয় না বিধায় গেমটি বাংলাদেশেও বহুল জনপ্রিয় একটি গেম।

এই ছিলো আজকের সব আয়োজন। আশা করি গেমস জোনের আজকের এই পর্বটি তোমাদের কাছে ভালো লেগেছে। আগামীতে অন্য কোনো গেমস নিয়ে আমি গেমওয়ালা চলে আসবে তোমাদের প্রিয় গেমিং টিউন সিরিজ গেমস জোন নিয়ে শুধুমাত্র টেকটিউনস এ।

Level 10

আমি ফাহাদ হোসেন। Supreme Top Tuner, Techtunes, Dhaka। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 661 টি টিউন ও 428 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 149 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

যার কেউ নাই তার কম্পিউটার আছে!


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

Level 0

ভাল লাগলো।