কোনো এক গ্রামের সকল মানুষদেরকে জুম্বি বানিয়ে দিয়েছে ইভিল ফোর্স । আর সেখানে তুমি রয়েছো, যেখানে বেঁচে থাকতে হলে ফ্রিকি দৈত্যদের হাত থেকে পালিয়ে থাকতে হয়, পরিত্যাক্ত বিল্ডিংস, ভূতুরে পরিবেশ, অভিশপ্ত গ্রাম এবং থার্ড পারসন ভিউ গেম-প্লে!
উপরের কাহিনীগুলোর মতে এটি একটি রেসিডেন্ট ইভিল গেম হবে! কিন্তু না! এটি হচ্ছে অর্ধেক রেসিডেন্ট ইভিল এবং অর্ধেক সাইলেন্ট হিল গেমসগুলোর সমন্নয়ে নতুন একটি গেম The Evil Within!
The Evil Within (জাপানে Psycho Break) একটি সারভাইভাল হরর ভিডিও গেম যেটি নির্মাণ করেছে ট্যাংগো গেমওয়ার্কস এবং মুক্তি দিয়েছে বেথেসডা সফটওর্য়াকস।
গেমটি ২০১৪ সালের ১৪ই অক্টোবর মাইক্রোসফট উইন্ডোজ, প্লে-স্টেশন ৪, প্লে-স্টেশন ৩, এক্সবক্স ওয়ান এবং এক্সবক্স ৩৬০ গেমস কনসোলের জন্য মুক্তি পায়।
গেমটি থার্ড পারসন ভিউ গেম-প্লে ফিচার করে এবং গেমটিতে ফাইট এবং সারভাইভ এই দুটি উপাদানের মিক্স গেম-প্লে রয়েছে, মানে গেমটিতে কখনো কখনো বেঁচে থাকতে হলে তোমাকে যুদ্ধ করতে হবে জুম্বিদের সাথে আবার কখনো কখনো দৌঁড়িয়ে পালানো ছাড়া বেঁচে থাকার কোনো উপায় থাকবে না। আর এ জন্যই প্রথমে বলে নিয়েছি যে গেমটি অর্ধেক রেসিডেন্ট ইভিল এবং অর্ধেক সাইলেন্ট হিল গেমসগুলোর মতোই।
গেমটি ইন-গেম পরিবেশ গেমটির কাহিনীর সাথে মিল রেখে বদলাবে এবং গেমটিতে তোমার একশনগুলোর উপর ভিক্তি করেও গেমটির পরিবেশ বদলাবে। গেমটিতে তোমাকে মেডিক্যাল আইটেম ব্যবহার করে হেলথ রিস্টোর করতে হবে, আবার কিছু কিছু মেডিক্যাল আইটেম রয়েছে যেগুলো প্রচুর পাওয়ারফুল। যার কারণে ওই সমস্ত পাওয়ারফুল মেডিক্যাল আইটেমের রয়েছে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, যেমন সাময়িক হ্যালুসিনেশন হতে পারে তোমার!
গেমটিতে তুমি বিভিন্ন অস্ত্রের সাহায্যে জুম্বিদের সাথে যুদ্ধ করতে পারো, এদের মধ্যে রয়েছে রিভলবার, শটগান, স্নাইপার রাইফেল, ছুড়ি, গ্রেণেড এবং একটি স্পেশাল তীর-ধনুক। এই ক্রসব্রো ফ্রিজিং, ব্লাইন্ডিং, ইলেকট্রিক এবং এক্সপ্লোডিপ তীর ছোড়ার ক্ষমতা রাখে।
তবে গেমটিতে ডিফল্ট ভাবে গুলি সংখ্যা খুবই নগন্য রাখা হয়েছে। কারণ এটা কল অফ ডিউটি না বাছা! তবে ফার ক্রাই ৩ গেমটির মতো গাছপালার লতাপাতার সাহায্যে এক্সট্রা গুলি এবং তীরের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
আর মিলি এটাকের রয়েছে দুটি বৈশিষ্ট্য। পেছন থেকে কোনো জুম্বির উপর মিলি এটাক করলে তাকে হত্যা করা যাবে কিন্তু সামনে থেকে মিলি এটাকের কোনো পাওয়ার থাকবে না। আর জুম্বিদের একেবারে খুন করার জন্য ম্যাচকাঠির সাহায্যে তাদের শরীলে আগুন ধরিয়ে দিতে হবে! দারুন না!!
গেমটিতে তোমাকে খেলতে হবে পুলিশের গোয়েন্দা অফিসার সাবাস্টিয়ান ক্যাটেলানস এর ভূমিকায়। সাথে পাবে জুলি কিডম্যান এবং জোসেফ ওডা কে তোমার টিম মেমবার হিসেবে।
সাবাস্টিয়ানের টিমকে বিকন মেন্টাল হাসপাতালে পাঠানো হয় একটি গণহত্যার তদন্তের জন্য। সেখানে গিয়ে সাবাস্টিয়ানের টিমকে মুখোমুখি হতে হয় একটি প্যারানরমাল এবং পাওয়ারফুল ফোর্সের সাথে। সাবাস্টিয়ান অজ্ঞান হয়ে পড়ে এবং জ্ঞান ফিরার পর নিজেকে সে আবিস্কার করে সেই হাসপাতালেই কিন্তু অন্য এক অদ্ভুত দুনিয়ায়। যেখানে ক্রিমসন সিটিতে কিছুক্ষণ পরপরই হচ্ছে ভূমিকম্প এবং শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছে জুম্বি টাইপের ভূতেরা!
গেমটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১০ সালের শেষের দিকে আর মজার ব্যাপার হলো গেমটির পরিচালক হিসেবে রয়েছেন রেসিডেন্ট ইভিল এর সৃস্টিকারী Shinji Mikami । ইদানিং কালের রেসিডেন্ট ইভিল গেমগুলো “হরর” এর মজা পাওয়া যাচ্ছে না বিধায় Shinji Mikami একটি আসল “হরর” গেম নির্মাণ করতে চেয়েছেন এবং তার ফল স্বরুপ আমরা পেয়ে গেছি The Evil Within! গেমটিতে রয়েছে সারভাইভাল হরর উপাদান, প্লেয়ারকে করে দেওয়া হয়েছে প্রায় পাওয়ারলেস!, লিমিটেড এমুনেশন এবং প্রায় অদৃশ্য সাদৃশ্য শত্রু সব মিলিয়ে এক দারুণ গেম হচ্ছে The Evil Within!
The Evil Within গেমটি নির্মাণ করা হয়েছে id Tech 5 গেম ইঞ্জিণ দিয়ে। গেমটি ২০১৪ সালের অক্টোবরের মাঝামাঝিতে রিলিজ পায়। আর গেমটি দুটি DLC ফিচার করবে।
The Evil Within গেমটির শুরুতে তোমাকে কোনো প্রকার অস্ত্রই দেওয়া হবে না, তখন স্টেলথই হবে তোমার বেঁচে থাকার একমাত্র সম্বল! আর মজার ব্যাপার হলো গেমটিতে সবুজ রংয়ের ডিব্বা / Jar রয়েছে যেগুলো সংগ্রহ করে তুমি তোমার স্কিল বাড়াতে পারো!
আর বেশি বেশি অস্ত্র এবং গুলি সংগ্রহ করে গেমটিকে তুমি রেসিডেন্ট ইভিল ৪-৬ বানিয়ে দিতে পারো! কোনো জুম্বি সামনে আসলেই মাথায় গুলি! সেখানে নিজে “বস” মনে হবে তোমার (লুল)!
আর পারফরমেন্স এর ব্যাপারে কি বলবো! বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় যে, গেমটির মিনিমাম রিকোয়ারেমন্টস দেওয়া হয়েছে কোর আই ৫ প্রসেসর এবং ৬ গিগাবাইট র্যাম! আর এর নিচে হলেই গেমটি নিড ফর স্পিড রাইভালস এর মতো FPS ৩০ এ গিয়ে আটকে থাকবে। আর ১০৮০ রেজুলেশনে ৬০ FPS পেতে হলে তোমার চাই একটি দৈত্যাকার পারফরমেন্সের পিসি!
শেষ কিছু কথা বলতে চাই The Evil Within গেমটির ব্যাপারে,
> পুরোনো আমলের ক্যামেরা ভিউ গেমটিতে ব্যবহার করায় মাউস মুভমেন্টের সাথে ক্যামেরার সাদৃশ্যে কিছু বাগ থেকে গেছে যার কারণে গেমটি খেলার মতো ডানে-বামে তাকিয়ে জুম্বিদের সনাক্ত করা বহু মুশকিল! এটা ফিক্স করে একটি প্যাচ রিলিজ করা জরুরী!
> গেমটির অবাস্তব বা কাল্পনিক একটি মাত্র উপাদান রয়েছে, তা হলো প্লেয়ার স্কিল বাড়ানো সিস্টেম! সবুজ ডিব্বা সংগ্রহ করার পরই তা একটিভ করলে জাদুর মতো তোমাকে সেই মানসিক হাসপাতালে নিয়ে যাবে এবং তোমার ব্রেনের ভিতর বিদ্যু ঢুকে তোমার স্কিল বাড়বে!! (পুরাই লুল!)
> গেমটিতে রয়েছে ১৪ থেকে ১৯ ঘন্টার গেম-প্লে।
> গেমটির কাহিনী চক্র ৯০ দশকের সিনেমাগুলোর মতো!
> গেমটির লেভেল ডিজাইন তেমন মনে ধরে নি আমার
> গেমটিতে অস্ত্রের ব্যবহারের কারণে স্টেলথ এর কোনো মজাই পাওয়া যাবে না!
> আর ৩০ FPS এর জ্বালা তো রয়েছেই!! যথেষ্ট র্যাম এবং ভালো গ্রাফিক্স কার্ড না থাকলে কোর আই ৭ প্রসেসরের পিসিতেও ল্যাগ দেয় এই গেম!! (জাহান্নামে যা!)
নির্মাতাঃ
ট্যাঙ্গো গেমওর্য়াকস
প্রকাশ করেছেঃ
বেথেসডা সফটওর্য়াকস
ইঞ্জিণঃ
Id Tech 5
খেলা যাবেঃ
মাইক্রোসফট উইন্ডোজ,
প্লে-স্টেশন ৩,
প্লে-স্টেশন ৪,
এক্সবক্স ওয়ান এবং
এক্সবক্স ৩৬০ গেমস কনসোলে
মুক্তি পেয়েছেঃ
অক্টোবর ১৪-১৬, ২০১৪ সালে
ধরণঃ
সারভাইভাল হরর
থার্ড পারসন শুটার / স্টেলথ
খেলার ধরণঃ
সিঙ্গেল প্লেয়ার
সিস্টেম রিকোয়ারমেন্টসঃ
কমপক্ষেঃ
কোর আই ৫ ২.৮ গিগাহার্জ কিংবা এএমডি এফএক্স -৮১৫০ প্রসেসর,
৪ গিগাবাইট র্যাম,
এনভিডিয়া জিফোর্স জিটিএক্স ৭৫০ টিআই কিংবা রাডিয়ন এইচডি ৭৮৫০ গ্রাফিক্স কার্ড,
উইন্ডোজ সেভেন (৬৪বিট) অপারেটিং সিস্টেম,
ডাইরেক্স এক্স ১১,
৫০ গিগাবাইট ফ্রি হার্ডডিক্স স্পেস
আমি ফাহাদ হোসেন। Supreme Top Tuner, Techtunes, Dhaka। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 661 টি টিউন ও 428 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 149 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
যার কেউ নাই তার কম্পিউটার আছে!
ধন্যবাদ ভাই টিউনের জন্য আচ্ছা ভাই আমার পিসি টা ধরতে গেলে ওল্ড g41মাদারবোর্ড এইটাতে কোন গ্রাফিক্স কার্ড বেস্ট হবে