যুদ্ধ মানেই তো গোলাগুলি । হাতে একটা বন্দুক, শরীরে একটা আরমোর, কোমরে ঝোলে কতগুলো গ্রেনেড সঙ্গে কিছু সঙ্গীকে নিয়ে যুদ্ধ করতে বেরিয়ে যেতে কে না পছন্দ করে । কিন্তু বাস্তবজীবনেতো তা আর সম্ভব না । তবে তা সম্ভব হবে ব্যাটেলফিল্ড ৪ গেমটিতে । কারন, তোমাকে পুরোপুরি জলে-স্থলে ছুটে বেড়াতে হবে গেমটিতে । আর সেখানে তুমি সুবিধা পাবে নিজেকে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে উপস্থাপন করার । হ্যাঁ আমি আজকে এলাম বিখ্যাত ব্যাটেলফিল্ড সিরিজ এর চতুর্থ গেম ব্যাটেলফিল্ড ৪ এর রিভিউ নিয়ে ।
নির্মাতাঃ
ইএ ডাইস (DICE)
প্রকাশকঃ
ইলেক্ট্রনিকস আর্টস
ধরণঃ
ফাস্ট-পারসন শুটিং
মোডঃ
সিঙ্গেল প্লেয়ার, মাল্টিপ্লেয়ার
ইঞ্জিনঃ
ফ্রোস্টবাইট ৩
প্ল্যাটফর্মঃ
মাইক্রোসফট উইন্ডোজ,
প্লে-স্টেশন ৩,
প্লে-স্টেশন ৪,
এক্সবক্স ৩৬০,
এক্সবক্স ওয়ান,
লেখকঃ
জেস স্টেম
মাইকেল সেকার
অ্যাড্রিয়ান ভারসিনিন
ডিরেক্টরঃ
লারস গাস্টাভসন
স্টিফান স্ট্রেন্ডবারগ
মুক্তি পায়ঃ
অক্টোবর ২৯, ২০১৩
অফিসিয়াল ওয়েবসাইটঃ
http://www.battlefield.com/battlefield-4
সর্বনিম্ন যা প্রয়োজনঃ
CPU:Core 2 Duo E6600 2.4GHz, Athlon 64 X2 Dual Core 5600+
RAM: 4 GB
OS:Windows Vista SP2 32-Bit (with KB971512 System Update)
Video Card: AMD Radeon HD 3870 / NVIDIA GeForce 8800 GT or better
Free Disk Space:30 GB
ভালোভাবে খেলতে যা প্রয়োজনঃ
CPU:Core i7-930 Quad 2.80GHz, Phenom II X6 1055T
RAM:8 GB
OS:Win 7 64
Video Card:Radeon HD 7870 / GeForce GTX 660
Free Disk Space:30 GB
ব্যাটলফিল্ড ৪ একটি ফাস্ট-পারসন শুটিং গেম যা নির্মাণ করেছে সুইডিশ ভিডিও গেম ডেভেলপার , ডাইস (DICE) এবং প্রকাশ করেছে ইলেক্ট্রনিকস আর্টস । এটি ২০১১ সাল এর ব্যাটলফিল্ড ৩ এর ডিরেক্ট সিকুয়াল । গেমটি অক্টোবর ২৯, ২০১৩ আমেরিকা, অক্টোবর ৩১, ২০১৩ অস্ট্রেলিয়া, নভেম্বর ১, ২০১৩ ইউরোপ এবং নিউজিল্যান্ড এবং নভেম্বর ৭ ২০১৩ জাপানের জন্য রিলিজ হয় । এই গেমটির মূল আকর্ষণ হচ্ছে মালটিপ্লেয়ার মোড । গেমটি অনেক গেমারদের প্রত্যাশা সফল ভাবে পূরণ করেছে ।
ব্যাটলফিল্ড ৪ এর সিঙ্গেলপ্লেয়ার ক্যাম্পেইন মোড তোমাকে নিয়ে যাবে ২০২০ সালের দিকে । গেমের পটভূমি হিসেবে থাকছে রাশিয়া, আমেরিকা এবং চীন । ৬ বছর আগে রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একধরনের সংঘর্ষ বাঁধে । এই সংঘর্ষ আস্তে আস্তে প্রায় যুদ্ধের কাছাকাছি চলে যায় । কোন এক কারনে চীন এর নৌসেনাপতি চ্যাং এই যুদ্ধের অংশ হয়ে যায় । সে চীনের বর্তমান সরকারকে ক্ষমতা থেকে নিপাতন করার পরিকল্পনা করে । আর সে যদি তাতে সফল হয় তাহলে সে রাশিয়ার পূর্ণ সমর্থন পাবে এবং চীনকে এই যুদ্ধের কিনারায় নিয়ে আসতে পারবে ।
তবে তখন যুক্তরাষ্ট্রের টম্বস্টোন নামের এক স্পেশাল ফোরস চ্যাং এর পরিকল্পনায় রুখে দাঁড়ায় । তারা তাদের পূর্ণশক্তি দিয়ে চ্যাং এর কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে ।
তোমাকে এই টম্বস্টোন স্কোয়াডের সেকেন্ড কমান্ডার ড্যানিয়েল উয়েকার (সংক্ষেপে "Reck")কে নিয়ে খেলতে হবে । তোমার সাথে স্কোয়াডমেটে যারা থাকবে - স্কোয়াড লিডার উইলিয়াম ডান, ভারি অস্ত্র বিশেষজ্ঞ কাইম্বেল গ্রেভস(সংক্ষেপে "Irish") এবং ফিল্ড মেডিক(ডাক্তার) ক্লেয়টন পাকওস্কি(সংক্ষেপে "Pac") । এছাড়া ব্যাটেলফিল্ড ৩ ক্যাম্পেইনের W. Kovic ("Agent W." নামে পরিচিত) এবং Dimitri ও কিছু কিছু মিশনে থাকছে তোমার সঙ্গে ।
গেমের হেড-আপ ডিসপ্লে (HUD) অনেকটা আগের মতই আছে । মিনি ম্যাপ এবং মেইন গেম স্ক্রীনে নীল রঙের সিম্বল এলিস, সবুজ রঙের সিম্বল স্কোয়াডমেটস এবং লাল বা কমলা রঙের সিম্বল শত্রুদেরকে বোঝাবে । গেমে প্রত্যেকটি লেভেলেই পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্রেটস থাকবে যা থেকে তুমি বন্দুকের বুলেট সংগ্রহ করতে পারবে । আর তাই বুলেটের জন্য তোমার কোনো চিন্তা করতে হবে নাহ ! গেমের প্রত্যেক মিশনেই ২ থেকে ৩টি ডগ ট্যাগ লুকানো অবস্থায় থাকবে । তোমাকে এগুলো খুজে বের করতে হবে । এগুলো খুঁজে বের করতে হলে তোমাকে সাউন্ড ভালো করে শুনে খেলতে হবে । কোনো ডগ ট্যাগের কাছাকাছি আসলে এক ধরণের সাউন্ড হবে ।
ব্যাটেলফিল্ড ২ এর Commander Mode ফিচারটি এবারো ফিরে এসেছে । এটির মাধ্যমে প্রত্যেক টিমের একটি করে কমান্ডার থাকবে । এই কমান্ডার মিসাইল লঞ্চ, গানবোট, ড্রোন দিয়ে এটাকের জন্য নির্দেশ দিতে পারবে । তবে এই ফিচার গেমের শুরুতেই থাকবে না ।
গেমে তুমি Dual Scoped অস্ত্র ব্যাবহার করতে পারবে । বিভিন্ন ফায়ারিং মোড ( Single Shots, Automatic Fire) রয়েছে । পানিতে সাঁতার কাটা কিংবা ডাইভিং এর সময়ও গুলি করতে পারবে ।
গেমের মিশন সংখ্যা মাত্র ৭টি । কিন্তু এগুলো শেষ করতেই তোমাদের অনেক সময় লাগবে । কারন মিশনগুলো অনেক কঠিন । সিঙ্গেল-প্লেয়ার মিশনসমূহ:
গেমে হরেক রকম অস্ত্র এবং সরঞ্জাম পাবে তুমি । ব্যাটেলফিল্ড ৩ এর গুলো তো আছেই এছারাও আরোও অনেক রকম অস্ত্র যোগ করা হয়েছে । অনেক রকম গেজেট আছে যা মিশনগুলো শেষ করতে তোমাকে সাহায্য করবে । গেমের কিছু কিছু মিশনে তোমাকে বিভিন্ন যানবাহন চালাতে হবে ।যেমন - জেট প্লেন, স্পীডবোট, ট্যাঙ্ক ইত্যাদি । তুমি যদি এগুলো চালাতে দক্ষ না হও তাহলে Test Range মোডে প্র্যাকটিস করে নিতে পারো ।
আগেই বলা হয়েছে যে গেমটির মূল আকর্ষণ হচ্ছে গেমের মালটিপ্লেয়ার মোড । গেমের মাল্টিপ্লেয়ার মোডে তুমি ৭ রকমের গেম মোডে খেলতে পারবে । এই ৭ রকমের মাল্টিপ্লেয়ার মোডগুলো হলঃ
এছারাও রয়েছে ১০ রকমের আলাদা আলাদা ম্যাপ ।এক্সবক্স ৩৬০ এবং প্লে-স্টেশন ৩ এ তুমি সর্বোচ্চ ২৪ জন (১২ vs ১২) এবং বাকি প্ল্যাটফর্মে তুমি সর্বোচ্চ ৬৪ জন (৩২ vs ৩২)কে নিয়ে খেলতে পারবে । গেমে Levolution নামের নতুন একটি ফিচার এসেছে ।
আমার মত গেমারদের জন্য এই গেমের আরেকটি চমক হচ্ছে এর গ্রাফিক্স । গেমের গ্রাফিক্স প্রথম দিন দেখে তো আমি পুরাই টাস্কি খাইয়া গেসি ! গেমে নেক্সট জেনারেশন গ্রাফিক্স ব্যাবহার করা হয়েছে । আর তাই গ্রাফিক্স পুরাই রিয়েলিস্টিক মনে হয় ।
ব্যাটেলফিল্ড ৪ নতুন ফ্রোস্টবাইট ৩ ইঞ্জিনের ওপর তৈরি হয়েছে । এই নতুন ইঞ্জিন তোমাদেরকে এনে দিবে আরো বাস্তবসম্মত পরিবেশ, উচ্চ রেজল্যুশন এবং নতুন Particle Effects । Networked Water নামক একটি নতুন ফিচার এসেছে । এর মাধ্যমে তোমাদের Coop বা মাল্টিপ্লেয়ার খেলার সময় পানির ইফেক্ট আরও বাস্তবগামী হয়ে উঠবে ।
গেমের লাইটিং ইফেক্টগুলো চমৎকার হয়েছে । বিশেষ করে যখন বিস্ফোরণ ঘটে তখনকার ইফেক্টগুলো দেখার মত ! বিল্ডিং ধসে পরার গ্রাফিক্স দেখে যে কারোরই মনে সন্দেহ হতে পারে যে সে মুভি দেখছে নাকি গেম খেলছে ।
গেমটি নির্মাণে DICE এবং AMD পার্টনার হিসেবে কাজ করেছে । আর তাই AMD গ্রাফিক্স কার্ডেই গেমসের গ্রাফিক্স আরও নিখুঁত হবে এবং পারফর্মেন্স বৃদ্ধি পাবে ।
গেমসের সাউন্ডও গ্রাফিক্সের মতই চমৎকার । গেমের সাউন্ড গেম-প্লের সাথে মিল রেখে তৈরি। ভাল সাউন্ড সিস্টেম দিয়ে খেলতে পারলে গেমটি খেলে তুমি অত্যান্ত মজা পাবে।
তবে সবকিছুর সাথে গেমের কিছু বাগস বা ত্রুটি আছে । সব ভাল গেমেরই কিছু না কিছু ত্রুটি থাকে । এই গেমেও আছে । গেমটি হঠাৎ হঠাৎ Crash করতে পারে । সব পিসিতেই এমন হয় না । তবে কিছু কিছু পিসিতে এমন হতে পারে ।
আমার আজকের রিভিউ এখানেই শেষ করছি । কোনো ভুল হলে নিজগুনে ক্ষমা করবে । আগামীবার আসব আরো ভাল কোনো গেমের রিভিউ নিয়ে । ততদিন অপেক্ষা করো। পুরো টিউনটি পরার জন্য ধন্যবাদ।
আমি Mr. গেমার। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 4 টি টিউন ও 7 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
গেমটা যদিও অনেক আগেই ওভার করসি, তার পরও রিভিউটা ভাল লাগল। অনেকটা গেমওয়ালার মতই হইসে।