ভৌতিক পরিবেশে প্রতিকূলতার মধ্যে অদ্ভুত জন্তুর সঙ্গে লড়াই করে টিকিয়ে রাখতে হবে বসবাসের শেষ আশ্রয়স্থল। অ্যাকশনধর্মী গেমের আদলে ফার্স্ট পারশন শুটিং গেম 'মেট্রো : লাস্ট লাইট'। গেম নির্মাতা জায়ান্ট ডিপ সিলভারের ব্যানারে এবং ফোর-এ গেমসের তত্ত্বাবধানে নির্মিত গেমটি বেঁচে থাকার ভয়াবহ কৌশল প্রদর্শন করায় আগের সিরিজ 'মেট্রো ২০৩৩'-এর মতোই অবমুক্তির পরপরই দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। প্লে-স্টেশন ৩, এক্সবক্স ৩৬০ এবং মাইক্রোসফট উইন্ডোজচালিত পিসিসহ প্রায় সব ধরনের গেমিং কনসোলেই 'মেট্রো : লাস্ট লাইট' গেমটি সমানতালে উপভোগ করা যাবে।
কাহিনী : সিক্যুয়ালধর্মী গেমটির কাহিনী আগের পর্ব 'মেট্রো ২০৩৩'-এর এক বছর পর থেকে শুরু হয়েছে।
২০৩৪ সাল। ভয়াবহ পারমাণবিক যুদ্ধে ধ্বংসস্তূপে রূপ নিয়েছে পৃথিবী। পৃথিবীপৃষ্ঠে পারমাণবিক বোমার সৃষ্ট ক্ষত এখনও সারেনি। ক্ষত-বিক্ষত মস্কো শহরের ধ্বংসস্তূপের নিচে একটি টানেলের ভেতর খোঁজ মেলে প্রাণের স্পন্দন। যেখানে পারমাণবিক তেজস্ক্রিয়তার বিপরীতে টিকে থাকা মানুষগুলো গড়ে তুলেছে নতুন এক নগরী 'মেট্রো'। বহু প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে মানবসভ্যতাকে টিকিয়ে রাখতে কয়েকজন রাশিয়ান সৈন্য গড়ে তোলে নিরাপত্তাবাহিনী 'ডি ৬'। যার অন্যতম সদস্য আর্টিওম [প্রধান চরিত্র]। বরাবরের মতোই মুক্ত ধাঁচের গেমটিতে গেমারকে অবতীর্ণ হতে হবে প্রধান চরিত্রে। আর তেজস্ক্রিয়তার প্রভাবে উদ্ভূত সেই জন্তুর পাশাপাশি লড়তে হবে স্বার্থান্বেষী শত্রুদল ডার্ক ওয়ানসের বিপরীতে।
প্রতিবন্ধকতার ভিড়ে উপস্থিত বুদ্ধি এবং পরিবেশকে আঁচ করার বিচক্ষণতাকে কাজে লাগিয়ে সংগ্রহ করতে হবে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, যা ব্যবহার করে ধ্বংস করতে হবে শত্রুপক্ষের সব ব্যারাক এবং নস্যাৎ করে দিতে হবে মেট্রো নগরীকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র। এ সময় বিশেষভাবে গেমারকে লক্ষ্য রাখতে হবে তার অক্সিজেন সিলিন্ডারের প্রতি, যা গেমারকে প্রকৃত বাস্তবতার সম্মুখীন করবে। আধুনিক শব্দ কৌশল এবং আকর্ষণীয় গ্রাফিক্সের সঙ্গে চ্যালেঞ্জিং পরিবেশ গেমারদের মধ্যে পরিপূর্ণ ত্রিমাত্রিক জগতের অনুভূতি জাগাতে সক্ষম হবে।
মেট্রো: লাস্ট লাইট (ফরমালি মেট্রো ২০৩৪) একটি একশন বেসেইড ফাস্ট পারসন হরর শুটিং গেম। গেমটি ২০১২ সালের গরম কালে রিলিজ পাবার কথা। তবে খবর পাওয়া যায় ২ই ফেব্রুয়ারী, সালে কনফার্ম করা হয় যে মেট্রো: লাস্ট লাইট রিলিজ ২০১৩ সালের প্রথম দিকে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। গেমটি আমেরিকায় মে ১৪, ২০১৩ সালে এবং ইউরোপে মে ১৭, ২০১৩ সালে মাইক্রোসফট উইন্ডোজ, প্লে-স্টেশন ৩ এবং এক্সবক্স ৩৬০ গেমস কনসোলে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি গেমটির প্লে-স্টেশন ৪ ভাসর্ন মুক্তি পাবে বলে এনাউন্স করা হয়েছে তবে কবে মানে তারিখ এখনো জানানো হয়নি। প্রথম প্রথম গেমটির নাম রাখা হয়েছিল মেট্রো ২০৩৪। গেমটি মেট্রো ২০৩৩ গেমের সিকুয়্যাল।
নির্মাতা:
৪এ গেমস
প্রকাশক:
টিএইটকিউ
ইঞ্জিণ:
৪এ ইঞ্জিণ
খেলা যাবে:
মাইক্রোসফট উইন্ডোজ,
প্লে-স্টেশন ৩,
এক্সবক্স ৩৬০ গেমস কনসোলে।
মুক্তি পেয়েছেঃ
মার্চ, ২০১৩ সালে।
ধরণ:
সুরভাইভাল হরর,
ফার্স্ট পারসন শুটার।
খেলার ধরণ:
সিঙ্গেল প্লেয়ার
Trailer Video:
http://www.youtube.com/watch?v=CZkUnciopl0
http://www.youtube.com/watch?v=PWTo7HLkMiM
http://www.youtube.com/watch?v=hI8wbMEM04Y
সিস্টেম রিকোয়ারমেন্টস:
মেট্রো: লাস্ট লাইট গেমটির সিস্টেম রিকোয়ারমেন্টস মেট্রো ২০৩৩ গেমটির প্রায় সমতুল্যই। যেহেতু গেমটি একই ইঞ্জিণ দিয়ে তৈরি। গেমটি ডাইরেক্ট এক্স ৯, ১০, ১১ সার্পোট করবে।
কমপক্ষে:
২.০ গিগাহার্টস ডুয়াল কোর বা এএমডি ফিনোম এক্স ২ গতির প্রসেসর,
মাইক্রোসফট উইন্ডোজ এক্সপি (সার্ভিস প্যাক ২) অপারেটিং সিস্টেম,
২ গিগাবাইট র্যাম,
৫১২ মেগাবাইট এনভিডিয়া ২০০ অথবা রাডিয়ন ৩০০০ সিরিজের গ্রাফিক্স কার্ড,
ডাইরেক্ট এক্স ৯.০সি সাথে শেডার মডেল ৩.০
৭.৫ গিগাবাইট ফ্রি হার্ডডিক্স স্পেস।
ভালভাবে খেলতে চাইলে:
২.৬ গিগাবাইট ইন্টেল কোর আই ৫ অথবা এএমডি ফিনোম এক্স ৪ গতির প্রসেসর,
৪ গিগাবাইট র্যাম,
১ গিগাবাইট এনভিডিয়া ৪০০ অথবা রাডিয়ন ৫০০০ সিরিজের গ্রাফিক্স কার্ড (**২ জিবি হলে ভাল**)
উইন্ডোজ ৭ অথবা ৮ অপারেটিং সিস্টেম,
ডাইরেক্ট এক্স ১০ (১১ হলে ভাল) সাথে শেডার মডেল ৫.০।
লাস্ট লাইট এর আক্ষরিক অর্থ শেষ বাতি হলেও এর রূপগত অর্থ হল শেষ সম্বল। গেমে আপনাকেও অনেকটা ওই মনুষ্য জাতির শেষ সম্বল হিসেবেই আবির্ভূত হতে হবে। শেষ বাতিটাও যদি নিভে যায় তবে কড়াল অন্ধকার গ্রাস করে নিবে। তাই বাংলা সিনেমার মত ‘বংশের শেষ বাতি’ হিসেবে আর্টিওম শেপার্ড আবির্ভূত হবে। (এখন আপনারা চিন্তা করছেন, কি এক আজাইরা কথা কইয়া শুরু করলো) 😛 মেট্রো লাস্ট লাইট গেমটি একটি First Person Shooter বা FPS গেম। ডেভেলপার হলো ইউক্রেনের গেম ডেভেলপার কোম্পানি 4A Games আর পাবলিশের দায়ীত্বে ছিল ডিপ সিলভার। গেমটি ছাড়া হয় উইন্ডোজ, প্লেস্টেশন ও এক্সবক্স ৩৬০ তে ২০১৩ সালের মে মাসে। মেট্রো লাস্ট লাইট শুরু হয় মেট্রো ২০৩৩ এর খারাপ এন্ডিং যেখানে শেষ হয়েছিল তার কিছু পরে থেকে। মেট্রো ২০৩৩ এর খারাপ এন্ডিং এ আর্টিওম সব “দ্যা ডার্ক ওয়ান” কে মেরে ফেলেছিল নিউক্লিয়ার বোমা মেরে। সেখান থেকে মেট্রোতে ফিরে সে বিশ্রাম নেয়। মেট্রো লাস্ট লাইট সেই বিশ্রাম থেকে জাগার পরে থেকেই শুরু হয়। এখানে আর্টিওম কে রেঞ্জার এ পদোন্নতি দেয়া হয়। মেট্রো লাস্ট লাইটে দেখা যায় যে বোমা মারার পরো একটি শিশু “ডার্ক ওয়ান” বেঁচে যায় কোনোভাবে। আর্টিওমকে বলা হয় যেন সার্ফেসে গিয়ে তাকে মারে। কিন্তু আর্টিওম সে কাজ করতে গিয়ে ব্যার্থ হয়। উল্টো সে শত্রুদের হাতে ধরা পরে। এরপর নানান ঘটনা ঘটতে থাকে। আর বিভিন্ন রহস্য উন্মোচিত হতে থাকে।
গেমের পটভূমি ২০৩৩ সালের রাশিয়া। যাতে এমন একটি এক্সিডেন্ট হয় যার কারনে পৃথিবীর উপরিভাগে মানুষের বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ে। সবাই সরে আসে রাশিয়ার সুবৃহৎ মেট্রো রেল নেটোর্য়াকে যা আন্ডারগ্রাউন্ডে অবস্থিত। এদিকে উপরিভাগে তো সব প্রানি মিউট্যান্ট হয়ে যায়। এমনকি চিংড়িও। এই উপরিভাগেই ছিল ডার্ক ওয়ান দের বসবাস। মেট্রোতে মানুষের মানবেতর জীবন যাপনের চিত্র খুব সুন্দর ভাবেই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। গেমের পরিবেশ বেশ অন্ধকারচ্ছন্ন। মেট্রোতে কিছু যায়গায় তো টর্চলাইট ছাড়া কিছু দেখাই যায়না। উপরিভাগে কুয়াশার জন্য কস্ট হয় দেখতে।
মেট্রো গেমগুলোর একটি অনন্য দিক হলো এর গ্যাস মাস্ক, ঘড়ি ও বুলেট কারেন্সি। প্রথমে গ্যাস মাস্কের কথা বলি। সার্ফেস অর্থাৎ মেট্রোর উপরের জগতে বিষাক্ত গ্যাসে পরিপুর্ন। এ যায়গায় বাঁচতে হলে গ্যাসম্যাস্ক অবস্যকীয়। কিন্তু গ্যাস মাস্কের ফিল্টার আনলিমিটেড নয়। এটি ২ মিনিট থেকে শুরু করে ১০ মিনিট পর্যন্ত ব্যাকাপ দেয়। এর পর তা চেঞ্জ করতে হয়। কিন্তু ফিল্টার খুজে বের করতে হয়। ফিল্টার ফুরিয়ে গেলে আর্টিওমের মৃত্যু ঘটে। এরপর ঘড়ির কথায় আসি। আর্টিওম একটি ঘড়ি পড়ে। যার সময় বর্তমান সময় নির্দেশ করে, গেমের সময় নয়। বুলেট কারেন্সি মানে হলো এখানে বুলেট=টাকা। পৃথিবীর উপরিভাগ বসবাসের অযোগ্য হবার আগের তৈরী বুলেটগুলো বর্তমানে টাকা হিসেবে ব্যাবহৃত হয়। আর গোলাগুলির জন্য ব্যাবহৃত হয় সস্তা বুলেট। বুলেট কারেন্সি কিন্তু আপনি ইচ্ছা করলে অস্ত্রে ব্যাবহার করতে পারবেন। তবে সেক্ষেত্রে গুলি করা মানে আক্ষরিক অর্থেই টাকা পোড়ানো হয়ে যাবে। টাকা দিয়ে অস্ত্র, বোমা, ছুরি ও সস্তা গুলি কিন্তে হয়। তাই টাকা নষ্ট করা মোটেও কাম্য নয়। গেমের অস্ত্রসস্ত্র হলো পুরোনো নতুন মেশানো। মানে পুরোনো আমলে রাশিয়ান AK-47, RPK এসব আছে আবার নয়া নয়া তৈরী করা অস্ত্রও আছে। লাস্ট লাইটে নতুন একটি ফিচার যোগ করা হয়েছে এটাচমেন্ট। মানে আপনি আপনার অস্ত্রে বিভিন্ন আনুষাঙ্গিক জিনিষপত্র কিনে যুক্ত করতে পারবেন যা যুদ্ধক্ষেত্রে কাজে লাগবে। গেমটা এনভিডিয়ার জন্য অপটিমাইজ করা। তাই এএমডির গ্রাফিক্স ব্যাবহারীরা সমস্যার সম্মুখিন হতেপারেন। এনভিডিয়ার ফিজিক্স এতে প্রয়োগ করা হয়েছে যা AMD এর ব্যাবহারকারীরা উপভোগ করতেঅক্ষম। AMD র ব্যবহারকারীরা প্রচুর বাগ এ পরবেন। আমি নিজেও পড়েছিলাম ২ বার। মেট্রো লাস্ট লাইটে মোটামুটি ১০ ঘন্টার সিঙ্গেলপ্লেয়ার গেমপ্লে রয়েছে। রয়েছে সহস্যজনক ও আকর্ষনীয় কাহিনী। যা আপনাকে গেমটি শেষ করতে আগ্রহী করে তুলবে। তবে বরাবরের মত এতে কোনো মাল্টিপ্লেয়ার বা অনলাইনে খেলার অপশন নেই। গেমে দুটো মোড আছে। রেন্ঞার মোড ও নরমাল মোড। রেঞ্জার মোডে জিনিষপত্র খুজে কম পাওয়া যাবে। তবে নরমাল মোডে সহজেই জিনিষপত্র খুজে পাওয়া যাবে। যারা একটু চ্যালেঞ্জের খোজ করছেন তারা রেঞ্জার মোডে খেলতে পারেন।
ডাউনলোডঃ
http://kickass.to/metro-last-light-reloaded-t7415288.html
> গেমস জোন শুধুমাত্র বিনোদনের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এর উপাদান সমূহের দ্বারা কেউ মনে কষ্ট কিংবা আঘাত পেলে তা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার আহ্বান জানাচ্ছি।
> গেমস জোনে ব্যবহৃত বাংলা কভার, ওয়ালপেপারসমূহ সর্ম্পূণ ভাবে লেখকের নিজস্ব সৃস্টি। এর সাথে আসল গেমটির কোনো সর্ম্পক নেই
> গেমস জোন এর সাথে উক্ত গেমসগুলোর কোনো সরাসরি সম্পৃত্ত নেই এবং থাকবে না।
> গেমস জোন এর গেমসগুলোর রিলিজ তারিখ, নির্মাতা, প্রকাশক, মুক্তির তারিখ, সিস্টেম রিকোয়ারমেন্টস এবং চিটকোড তথ্য গুলো বিভিন্ন ওয়েবসাইট হতে সংগৃহকৃত। লেখক এখানে শুধুমাত্র বাংলায় লিখেছেন।
> ডাউনলোড লিংক এবং এর ফাইলসমূহ সর্ম্পূণ ভাবে অন্য সাইট হতে কপিকৃত। লেখকের সাথে ডাউনলোড লিংক এর কোনো সম্পৃত্ততা নেই।
> সর্বপরি গেমস জোন লেখক গেমওয়ালার ব্যক্তিগত কর্ম মাত্র। এর সাথে এই ব্লগের কোনো সর্ম্পক নেই এবং গেমস জোনের সকল তথ্য (ডাউনলোড লিংক ব্যাতিত) এর জন্য শুধুমাত্র লেখক গেমওয়ালা দায়ী থাকবে।
> গেমস জোন একটি সর্ম্পূণ ফ্রি গেমস রিভিউ এবং প্রিভিউ টিউন। তাই এর যেকোনো উপদান স্বাধীনভাবে “ব্যক্তিগত” উদ্দেশ্যে যে কেউ ব্যবহার করতে পারবে। তবে গেমস জোন কে “করপোরেট” ভাবে কখনোই ব্যবহার করা যাবে না।
> গেমস জোন সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যা, পরামর্শ, অভিযোগ এবং অন্যান্য যে কোনো বিষয়ের জন্য গেমস জোন এর ফেসুবক পেইজ
http://www.facebook.com/games.zone.bd তে যোগাযোগ করুন
অথবা সরাসরি লেখক গেমওয়ালার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন http://www.facebook.com/talented.fahad
আমি ফাহাদ হোসেন। Supreme Top Tuner, Techtunes, Dhaka। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 661 টি টিউন ও 428 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 149 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
যার কেউ নাই তার কম্পিউটার আছে!