বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং জগতে যারা অনেক বেশি সফল, তাদের বেশিরভাগই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা প্রচার করে বেড়ায় না। সচরাচর দেখাও যায় না কোনো প্রোগ্রামে। তারা বানায় না “১ মাসে কোটিপতি” হওয়ার কোনো কোর্স। তাহলে ফেসবুকে এত এত ফ্রিল্যান্সিং কোর্স গুলো কে বানায়?
সবচেয়ে বেশি ফ্রিল্যান্সার ওয়ালা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ একটি। সার্টিফিকেটধারী বেকার এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যত্রতত্র প্রচারে একজন উঠতি বয়সের যুবক যুবতীর আশা থাকে বাসায় বসে ইনকামের। কিন্তু এ আশায় গুড়ে বালি দেয়ার জন্য গড়ে উঠেছে “ফ্রিল্যান্সিং কোর্স” নামক প্রতিষ্ঠানগুলো। বর্তমানে ফ্রিল্যান্সার ইনফ্লুয়েন্সারদের মধ্যে নিজেদের দক্ষতা বিক্রি করার প্রবণতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোর্স বিক্রির মাধ্যমে আয়ের নতুন পথ খুলে যাওয়ায় অনেকেই এই কাজে সুযোগ নিচ্ছে। দক্ষ ফ্রিল্যান্সার বা এজেন্সির ভান করে অনেক ভন্ডরাও এ সেক্টরে ঢুকে গেছে, যার ভুক্তভোগী হচ্ছে সাধারণ উৎসুক জনতা।
বর্তমানে অনলাইন কোর্স মার্কেট বিশাল আকার ধারণ করেছে। ২০২৩ সালের এক রিপোর্ট অনুযায়ী, গ্লোবাল অনলাইন কোর্স মার্কেট এর ভ্যালু এখন ৩৯০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। তবে কতগুলি কোর্স তার গুনগত মান ধরে রাখতে পেরেছে তা প্রশ্নবিদ্ধ। বাংলাদেশের হিসেবে এ সংখ্যা টা কত হতে পারে তা আন্দাজ করাই যায়। অফিসিয়াল মিডিয়া ছাড়া নিম্নমানের কনটেন্টে পরিপূর্ণ এই কোর্সগুলি থেকে শিক্ষার্থীরা খুব কমই জ্ঞান অর্জন করে।
অনলাইন কোর্স বিক্রি করার ক্ষেত্রে অনেক ইনফ্লুয়েন্সার/এজেন্সি মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেয়। আমাদের দেশে সঠিক পদ্ধতিতে গবেষণা করলে দেখা যাবে, প্রায় অর্ধেকের বেশি শিক্ষার্থী অতিরঞ্জিত মার্কেটিং কৌশলের কারণে কোর্স কিনে ফেলে এবং পরে হতাশ হয়। কেনার পর এই কোর্সগুলি গলার কাটা হয়ে দাঁড়ায়। শিক্ষার্থীরা ১/২ মাসে কাজ তো শিখতে পারেই না, উলটো অন্য একটি এডভান্স কোর্স নেয়ার জন্য বাধ্য হয়। একটি নির্দিষ্ট নিশ এ দক্ষ হতে হলে ফ্রিল্যান্সার দের কমপক্ষে ০৬ মাস সময় দিতে হয়। ব্যক্তিবিশেষে তা ভিন্ন হলেও, নিজের পোর্টফলিও আপডেট না করে কেউ অনলাইনে কাজ দিবে না এই কথাটি বেশিরভাগ কোর্সে শেখানো হয় না। এ নিয়ে বিস্তারিত পরিসংখ্যান এখানে
ফ্রিল্যান্সিং ইনফ্লুয়েন্সারদের বিক্রি করা অনলাইন কোর্সের উচ্চমূল্য শিক্ষার্থীদের উপর মাত্রাতিরিক্ত অর্থনৈতিক চাপ তৈরি করে। বেশিরভাগ কোর্স ক্রয়কারীরাই বেকার বা স্টুডেন্ট। একটি ব্যয়বহুল কোর্স ক্রয় করে তার আউটপুট সাথে সাথে দেয়াটা বলতে গেলে অসম্ভবই বলা যায়। আর যদি কোর্সটি হয় তথাকথিত ফ্রিল্যান্সিং করার তাবীজ বিক্রি, তাহলে তো কথাই নেই।
বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং জগতে যারা অনেক বেশি সফল, তাদের বেশিরভাগই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা প্রচার করে বেড়ায় না। সচরাচর দেখাও যায় না কোনো প্রোগ্রামে। তারা বানায় না “১ মাসে কোটিপতি” হওয়ার কোনো কোর্স।
তাহলে ফেসবুকে এত এত ফ্রিল্যান্সিং কোর্স গুলো কে বানায়? অনলাইনে শিক্ষাদানের এই স্রোতে অনেক অদক্ষ ব্যক্তি নিজেদের কোর্স বিক্রি করে টাকা কামিয়ে নিচ্ছে। এমন অনেক শিক্ষার্থী পাওয়া যাবে, তারা এমন কোর্সে অংশগ্রহণ করেছে যেখানে প্রশিক্ষকদের পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা ছিলেন না। ফলে, তারা সত্যি বলতে তেমন একটা কিছু শিখতে পারেনি।
অনলাইন কোর্সগুলোতে সঠিক মেন্টরশিপের অভাব খুবই প্রকট হয়ে উঠছে। ফ্রিল্যান্সিং ইনফ্লুয়েন্সারদের বিক্রি করা অনলাইন কোর্সের শিক্ষার্থীরা সাধারণত কোর্সের সমস্যার সম্মুখীন হলেও কোনো প্রকার সহায়তা পায়না। ভুল প্রতিষ্ঠানগুলো চিহ্নিত করা যায় এই পদ্ধতির মাধ্যমে। এ ধরনের কোর্স শিক্ষার্থীদের জন্য দীর্ঘমেয়াদে মূল্যহীন হয়ে পড়ে। কোর্স চলাকালীন ব্যবহার করা রিসোর্স শেয়ার না করার কারণে শিক্ষার্থীরা তাদের টাস্কগুলো সম্পন্ন করতে পারে না। কোর্স চলাকালীন শুধুমাত্র নিশ এর উপর পর্যাপ্ত তাত্তিক জ্ঞানই যথেষ্ট নয়, বরং ক্লায়েন্ট এর সাথে নেগোসিয়েশন, অর্ডার রেডি, ডেলিভারি এবং ক্লোজিং সম্পর্কেও বিস্তারিত ধারণা দেয়া উচিত।
আমি আশিকুর রহমান প্রিয়। SEO expert, Shottokontho, Gazipur। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 সপ্তাহ 3 দিন যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আসসালামু আলাইকুম। আমি আশিকুর রহমান প্রিয়, একজন টেক লাভার। ইন্টারনেট দুনিয়ার পরিচয়ের পাশাপাশি আমি প্রচুর ঘুরতে ভালোবাসি এবং আড্ডা দিতে।