ইন্টারনেটের কল্যাণে আমরা ব্লগিং কথাটার সাথে কমবেশি সকলেই পরিচিত। হয়তো ব্লগিং সম্পর্কে ক্লিয়ার ধারণা নেই, কিন্তু শব্দটা আমরা প্রায়ই শুনে থাকি। এই ব্লগিং কে পেশা হিসেবে নিয়ে বর্তমানে অনেকেই একটি সফল ক্যারিয়ার তৈরি করে নিয়েছেন। বাংলাদেশে অনেক সফল ব্লগার আছেন যারা ব্লগিং করেই মাসে হাজার হাজার টাকা আয় করছেন।
ব্লগ কী, কীভাবে ব্লগ শুরু করবেন, ব্লগিং সম্পর্কে খুটিনাটি সকল তথ্য নিয়ে আজকের টিউনটি সাজানো হয়েছে। যারা ডিজিটাল সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিন্তু কোন বিষয় নিয়ে কাজ শুরু করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না তাদের জন্য আজকের টিউনটি হতে পারে সঠিক গাইডলাইন। তাহলে চলুন ব্লগিং সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
অনলাইনে একটি ওয়েব পেইজ তৈরি করে সেখানে নিয়মিত লেখালেখি করে আয় করাকে ব্লগিং বলে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন যে ব্লগিং মূলত লেখালেখির সাথে জড়িত একটি কাজ। আপনি যখন নির্দিষ্ট কোনো অডিয়েন্স কে উদ্যেশ্য করে কিছু লিখবেন এবং লেখাটি আপনার ওয়েব পেইজে উন্মুক্ত করে দিবেন তখন সেটি হবে ব্লগ রাইটিং। গুগল সার্চ করলে আমরা যে বিষয়ভিত্তিক লেখাগুলো পাই এগুলো সব ব্লগ সাইটের লেখা। যারা এই সাইটে নিয়মিত লেখালেখি করে তাদেরকে বলা হয় ব্লগার।
অনলাইন অডিয়েন্সকে উদ্যেশ্য করে না লিখলে তখন তাদের বলা হয় লেখক আর সেই একই লেখা যখন ব্লগ সাইটে পাকলিশ করে দেয়া হয় তখন সেই লেখককে ব্লগার বলা হয়। মোটকথা টেক্সট কনটেন্ট এর মাধ্যমে কোনো ঘটনা, তথ্য, বিষয়বস্তু সুন্দরভাবে ওয়েব পেইজে তুলে ধরা হলে তা ব্লগিং বলে বিবেচিত হয়। সুতরাং একজন ব্লগার হওয়ার জন্য আপনাকে লেখালেখির ওপরে এক্সপার্ট হতে হবে।
ব্লগ লেখার বিষয়বস্তুর ওপর নির্ভর করে ব্লগের অনেক ধরন রয়েছে। তবে এরমধ্যে সব ধরনের ব্লগিং আসলে জনপ্রিয়তা পায় না। বর্তমানে ট্রেন্ডিং কয়েকটি ব্লগের ধরন সম্পর্কে এখানে আলোচনা করা হলো।
এটি একজন ব্যক্তির ভার্চুয়াল ডায়েরি বললেও ভুল হবে না। কারো ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, চিন্তাভাবনা, মতবাদ, ইচ্ছা বা পরিকল্পনা সম্পর্কিত লেখা প্রকাশ করা হয় পার্সোনাল ব্লগে। পার্সোনাল ব্লগের কোনো নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু হয় না বললেই চলে। ব্যক্তির ইচ্ছা অনুযায়ী যে কোনো বিষয়ে সে তার ব্লগ সাইটে লেখা প্রকাশ করতে পারে৷
বর্তমানে চলমান ধারার মধ্যে জনপ্রিয়তার শীর্ষে আছে লাইফস্টাইল ব্লগ। হালনাগাদ ফ্যাশন, হোম ডেকোরেশন, পোশাক, স্কিন কেয়ার, মেকআপ সহ লাইফস্টাইল বিষয়ক যে কোনো টপিক নিয়ে লেখা প্রকাশ হয় লাইফস্টাইল ব্লগে।
সমাজে চলমান ট্রেন্ডি টপিক নিয়ে আলোচনা করা হয় সামাজিক ব্লগে৷ বর্তমান সময়ে ট্রেন্ড এর ধারায় গা ভাসিয়ে চলতে পছন্দ করে সকলেই। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্লগ লিখে নিজের সাইটে ট্রাফিক নিয়ে আসে সামাজিক ব্লগ সাইটের ব্লগাররা। সমাজে কী ঘটছে, কে কী করছে, সোস্যাল মিডিয়ায় কী চলছে, সুপারস্টার দের নিয়মিত তথ্য সামাজিক ব্লগে প্রকাশ পায়।
যে কোনো ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান তাদের যে কোনো নতুন অফার, বিজ্ঞপ্তি বা তথ্য প্রকাশ করে ব্যবসায়িক ব্লগের মাধ্যমে। ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণত বেশিরভাগ সময় রাইটার হায়ার করে ব্যবসায়িক ব্লগ গুলো লিখিয়ে নেয়। বিজ্ঞাপণ জাতীয় লেখাগুলোও প্রায়ই ব্যবসায়িক ব্লগে প্রকাশ করা হয়।
দেশ বিদেশের সব ধরনের খবরাখবর নিয়ে লেখা প্রকাশ করা হয় নিউজ ব্লগে। বর্তমানে নিউজ ব্লগ গুলো পাঠকদের কাছে খুব বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে৷ চলতি সময়ের সকল তথ্য পাওয়া যাবে নিউজ ব্লগে।
ভ্রমণ বিষয়ক অভিজ্ঞতা ও প্রয়োজনীয় তথ্য নিয়ে যে সকল ব্লগে লেখা প্রকাশ করা হয় তাকে ট্রাভেল ব্লগ বলা হয়। কোনো নির্দিষ্ট স্থানে কীভাবে যাবেন, কেমন খরচ পড়বে, পথিমধ্যে কী কী সুবিধা অসুবিধা হতে পারে তার সকল তথ্য পেতে চোখ রাখুন ট্রাভেল ব্লগ সাইট গুলোতে।
কোনো পণ্য বা সেবা ক্রয় করার আগে সম্ভাব্য ক্রেতা রিভিউ ব্লগ গুলো পড়ে নেয়। যে কোনো প্রডাক্ট ব্যবহার করে তার বাস্তব অভিজ্ঞতা একজন লেখক তার রিভিউ ব্লগে তুলে ধরে। এছাড়াও এর অন্তর্ভুক্ত হতে পারে মুভি রিভিউ, বুক রিভিউ, ওয়েব সিরিজ রিভিউ ইত্যাদি।
এখানে সাধারণত একজন লেখক তার পাঠকদের চাহিদা অনুযায়ী তাদের প্রশ্নের সঠিক উত্তর প্রদান করে থাকে। কোনো বিষয় সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়ার জন্য পাঠক এই প্রশ্ন উত্তর ব্লগ সাইট গুলো ভিজিট করে থাকে।
মোটামুটি জনপ্রিয় কিছু ব্লগ এর প্রকারভেদ সম্পর্কে এখানে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও আপনি ব্লগ সাইট ভিজিট করতে করতে আরও অনেক নতুন নতুন ব্লগ এর সাথে পরিচিত হতে পারবেন।
ব্লগিং শুরু করার জন্য আপনাকে প্রথমে একটি ফলপ্রসূ পরিকল্পনা করে নিতে হবে। এরপর পরিকল্পনা মাফিক আগাতে থাকলে অল্প সময়ের মধ্যেই আপনি আপনার ব্লগ সাইট থেকে আয় করা শুরু করতে পারবেন। চলুন ব্লগিং শুরু করার জন্য আপনাকে কী কী স্টেপ ফলো করতে হবে তা ধারাবাহিক ভাবে জেনে নেই।
আপনি চাইলেই সব ধরনের টপিক নিয়ে ব্লগ রাইটিং শুরু করতে পারবেন না। আপনাকে প্রথমে যে কোনো একটি টপিক নির্বাচন করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি আপনার আগ্রহের বিষয়টি খুঁজে বের করুন। ব্লগিং মানে যেহেতু লেখালেখি করা আর লেখালেখি কখনও জোড় করে হয় না। তাই আপনি কোন বিষয়ে লিখতে পছন্দ করেন বা কোন বিষয়ে লিখতে পারবেন তা আগে নির্বাচন করুন।
ধরুন আপনি খেলা দেখতে পছন্দ করে বা খেলাধুলার প্রতি আপনার আগ্রহ আছে। তাহলে আপনি স্পোর্টস ব্লগ শুরু করতে পারেন। কিংবা আপনি রান্না ভালো পারেন, তাহলে অবশ্যই আপনার কুকিং ব্লগ শুরু করা উচিত। এভাবে আগে নিজের পছন্দের বিষয় খুঁজে বের করুন তারপর ঐ বিষয়ে ব্লগ লেখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন।
ব্লগিং এর জন্য এবার আপনার একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। ব্লগ তৈরির জন্য বর্তমানে আলাদা আলাদা অনেক প্লাটফর্ম রয়েছে। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সবথেকে জনপ্রিয় প্লাটফর্ম হলো ওয়ার্ডপ্রেস এবং ব্লগার। তবে সুযোগ সুবিধা ও ফিচার এর দিক থেকে ওয়ার্ডপ্রেস একটু বেশিই এগিয়ে আছে। তবে আপনি যদি চান একদম বিনামূল্যে ব্লগ তৈরি করবেন তাহলে ব্লগার হবে আপনার জন্য উপযুক্ত প্লাটফর্ম।
ওয়ার্ডপ্রেস এর মাধ্যমে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য আপনাকে ডোমেইন, হোস্টিং এর জন্য প্রথমেই ইনভেস্ট করতে হবে। এবং ওয়ার্ডপ্রেস এর মাধ্যমে আপনি একটি মানসম্মত ব্লগ তৈরি করতে পারবেন। অন্যদিকে ব্লগার এর মাধ্যমে আপনি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে একটি ব্লগ তৈরি করতে পারবেন এবং সেই সাইটে নিয়মিত লেখালেখি করতে পারবেন। আলাদা করে আপনাকে হোস্টিং এর জন্য কোনো টাকা খরচ করতে হবে না। তবে একটি চমৎকার ডোমেইন ক্রয় করে নেয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
এবার সকল দিক বিবেচনা করে আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন যে আপনি কোন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে ব্লগ তৈরি করবেন।
আপনি যদি সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন যে আপনি ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে ব্লগ তৈরি করবেন তাহলে অবশ্যই এ পর্যায়ে আপনাকে হোস্টিং ক্রয় করতে হবে। সেই সাথে একটি সহজ ও আকর্ষনীয় ডোমেইন নেইম ক্রয় করতে হবে। আপনি যে প্লাটফর্ম ব্যবহার করেই ব্লগ তৈরি করেন না কেন একটি চমৎকার ডোমেইন নেইম ক্রয় করা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। মূলত এটিই হবে আপনার ব্লগের পরিচয়। একটি ভালো হোস্টিং ও মানানসই, আকর্ষনীয় ও ছোট ডোমেইন নেইম এর ওপরে নির্ভর করে আপনার ব্লগে ট্রাফিক এর পরিমাণ কমবেশি হতে পারে।
প্লাটফর্ম নির্বাচন করে ডোমেইন ও হোস্টিং ক্রয় করা হয়ে গেলে আপনাকে এবার ব্লগ সেট-আপ করতে হবে৷ এই বিষয়ে আপনি এক্সপার্ট না হলে অন্য কোনো এক্সপার্ট এর সাহায্যে কাজটি করিয়ে নিতে পারেন। অথবা নিজেই ব্লগ সেটআপ এর কাজ শিখে সঠিকভাবে কাজটি করতে পারেন। মনে রাখবেন আপনার ব্লগের সেটআপ যতো পারফেক্ট এবং সুন্দর হবে ততো বেশি ভিজিটর আকৃষ্ট করতে পারবেন। তাই এই অংশের কাজটিকে বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দিন।
এবার আপনার ব্লগ পুরোপুরি প্রস্তুত লেখা প্রকাশ করার জন্য। এই পর্যায়ে আপনি ব্লগিং শুরু করতে পারবেন। এখন আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী কনটেন্ট লিখে ব্লগে পাবলিশ করতে থাকুন। অবশ্যই নিয়মিত এই কাজ অব্যাহত রাখতে হবে। এটাই ব্লগিং এর নিয়মিত কাজের ধারা।
আপনার লেখাকে সার্চ ইঞ্জিনে সবার ওপরের তালিকায় নিয়ে আসার জন্য লেখাকে এসইও করতে হবে। অর্থাৎ সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন করতে হবে। লেখা যতো বেশি এসইও ফ্রেন্ডলি হবে ততোই আপনার ব্লগে ট্রাফিক বেশি আসবে এবং আপনার ইনকাম বৃদ্ধি পাবে। এসইও একটি ডিজিটাল স্কিল যা আপনাকে আয়ত্ত করতে হবে। কয়েকটি ফ্রি অথবা পেইড টিউটোরিয়াল অনুসরণ করে আপনি একজন এসইও এক্সপার্ট হয়ে উঠতে পারবেন৷
এ পর্যায়ে আপনাকে বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়া সাইটে লেখা শেয়ার করে লেখাকে প্রমোট করতে হবে। বিভিন্ন গ্রুপ, আপনার ব্যক্তিগত সোস্যাল মিডিয়া প্রোফাইল, পেইজ ও অন্যান্য সাইটে যতোটা সম্ভব লেখাকে ছড়িয়ে দিন। এই সকল প্রমোশন এর মাধ্যমে আপনার ব্লগ সাইটে নিয়মিত ট্রাফিক আসবে।
মোটামুটি ৪০ থেকে ৫০ টা কনটেন্ট পাবলিশ করে ওয়েবসাইট পপুলার করে ফেলতে পারলেই আপনি আপনার সাইট মনিটাইজ করে নিতে পারবেন৷ তাই আগে পর্যাপ্ত পরিমান লেখা পাবলিশ করে মনিটাইজেশন এর জন্য পর্যাপ্ত ট্রাফিক নিয়ে আসুন। এবং সাইট মনিটাইজ হওয়ার হওয়ার পরেও নিয়মিত ট্রাফিক ধরে রাখতে লেখালেখি অব্যাহত রাখুন।
উপরোক্ত স্টেপ গুলো ফলো করে ধারাবাহিক ভাবে কাজ করলে আপনি অল্প সময়ের মধ্যেই ব্লগিং পেশায় সফল হতে পারবেন৷ আশাকরি ব্লগিং এর পুরো বিষয় সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারনা পেয়ে গেছেন।
ইতোমধ্যে হয়তো এটা ক্লিয়ার হয়েছে যে ব্লগিং হলো লেখালেখি বিষয়ক একটি পেশা। আর লেখালেখি হলো একটি আর্ট। আপনার মধ্যে এই সৃজনশীলতা না থাকলে হাতে ধরে কেউ আপনাকে লেখালেখি শেখাতে পারবে না। তাই লেখার প্রতি আগ্রহ থাকলে আপনি এই পেশায় আগাতে পারবেন, বাকি টেকনিক্যাল কাজগুলো আপনাকে শিখতে হবে।
এক্ষেত্রে প্রথমে আপনি শিখতে পারেন ব্লগ সেটআপ করা। এজন্য আপনি ব্লগিং এর ওপরে অনেক অনলাইন কোর্স পাবেন। চাইলে এই পেইড কোর্স করে হাতেকলমে ব্লগিং এর সকল টেকনিক্যাল বিষয়বস্তু শিখতে পারবেন। আর আপনি যদি চান যে এক টাকাও খরচ না করে সম্পূর্ণ ফ্রি তে ব্লগিং শিখবেন সেক্ষেত্রে আপনি ইউটিউব এবং অন্যান্য ব্লগ টিউন থেকে ফ্রি টিউটোরিয়াল খুঁজে বের করে নিতে পারেন। ব্লগিং এর ওপরে অনেক ফ্রি টিউটোরিয়াল ভিডিও ইতোমধ্যে অনেকেই ইউটিউবে উন্মুক্ত করে দিয়েছে।
এরপর ব্লগিং পেশায় আরও একধাপ এগিয়ে যাওয়ার জন্য আপনাকে পুরোপুরি ভাবে এসইও এর ওপরে মাস্টার হয়ে উঠতে হবে। এসইও শেখার জন্যও আপনি পেইড কোর্স করতে পারেন কিংবা ফ্রি টিউটোরিয়াল ফলো করতে পারেন। কিন্তু হাতেকলমে একদম পুরোপুরি এসইও আয়ত্ত করার জন্য আপনার পেইড কোর্সে ভর্তি হয়ে স্বনামধন্য কোনো মেন্টর এর সহায়তা নেয়াই ভালো হবে। মোটামুটি এই দুটো স্কিল আয়ত্ত করতে পারলে এবং লেখালেখির ওপরে পুরোপুরি আগ্রহ থাকলে আপনি ব্লগিং পেশায় সফল হতে পারবেন।
বর্তমান সময়ে অনলাইন সেক্টরে মুক্তভাবে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য ব্লগিং একটি উপযুক্ত পেশা। লেখালেখিকে মূল হাতিয়ার করে একদম ঠান্ডা মাথায় কাজ করতে পারেন এই সেক্টরে। অনলাইন সেক্টরের অন্যান্য কাজে যেমন সময় বেশি দিতে হয় তেমন বিভিন্ন ধরনের গ্যাজেট এর প্রয়োজন পড়ে। পাশাপাশি ক্রিটিকাল সব ডিজিটাল স্কিল শিখতে হয়। কিন্তু ব্লগিং এর জন্য আপনাকে কোনো ধরনের এডিটিং, কোডিং কিংবা অন্য কোনো স্কিল না শিখলেও হবে।
ব্লগিং পেশায় আয়ের কোনো ধরাবাঁধা সীমা নেই। আপনি লেখালেখির পাশাপাশি একই সাইট থেকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে, ব্যাক লিংক প্রদান করে, অনলাইন কোর্স বিক্রি করে আয় করতে পারবেন। সুতরাং এটি আপনার আয়ের একমাত্র ফুল টাইম সোর্স হয়ে উঠবে। তাছাড়া সবথেকে সুবিধা হলো এই কাজ আপনি নিজের ইচ্ছে ও সময় অনুযায়ী করতে পারবেন। কারো নির্দেশনা অনুযায়ী ঘন্টা ধরে, নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে কাজ করতে হবে না।
তাই যদি আপনার লেখালেখির হাত ভালো থাকে এবং যথেষ্ট ধৈর্য থাকে তাহলে বলবো বর্তমান সময়ে ক্যারিয়ার হিসেবে ব্লগিং এর ভবিষ্যৎ বেশ সম্ভাবনাময়।
এবার চলুন ব্লগিং পেশায় সফল হওয়ার ৫ টি গুরুত্বপূর্ণ টিপস জেনে নেয়া যাক। এই টিপস গুলো ফলো করলে আপনি নিয়মিত আপনার ব্লগে পাঠক ধরে রাখতে পারবেন।
আপনাকে এমন টপিক নির্বাচন করতে হবে যে বিষয় সম্পর্কে লোকজন খুব বেশি সার্চ করে৷ অর্থাৎ পাঠকদের মাঝে সবথেকে বেশি চাহিদা রয়েছে এই টাইপ কনটেন্ট লিখতে হবে৷ পাশাপাশি এটাও মাথায় রাখতে হবে যে উক্ত টপিক সম্পর্কে আপনার আগ্রহ কতোটুকু। আপনার পছন্দের টপিক না হলে আপনি কোনোভাবেই সেই লেখা দিয়ে পাঠকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারবেন না। তাই টপিক নির্বাচনে সচেতনতা অবলম্বন করুন।
আপনি যতো ভালো ভাবে লেখা এসইও করতে পারবেন ততোই আপনার লেখা বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাবে। তাই ব্লগিং শুরু করার আগে সঠিক ভাবে এসইও সম্পর্কে ধারণা নিয়ে নিন। আপনার লেখা যতো সুন্দরই হোক না কেন, তা যদি এসইও ফ্রেন্ডলি না হয় তবে আপনার লেখা গুগল Rank করবে না। ফলে আপনার ব্লগে ভিজিটর আসবে না।
আপনার যে একটি ব্লগ সাইট রয়েছে এবং আপনি সেখানে নিয়মিত লেখালেখি করেন এটা সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিন। যে কোনো উপায়ে নিজেই নিজের লেখাকে প্রমোট করুন। সোস্যাল মিডিয়ায় আপনার লেখা নিয়মিত শেয়ার করুন৷। লেখা শেয়ার করা যায় এমন কোনো প্লাটফর্ম বাদ রাখবেন না, সব প্লাটফর্মে নিজেই নিজের ব্লগিং প্রমোট করুন।
আপনি ব্লগিং শুরু করে কিছুদিন পর তা অফ করে দিলেন। এভাবে তো সফল হওয়া সম্ভব না। আর অনিয়মিত ভাবে লেখা প্রকাশ করলেও তা আশানুরূপ ট্রাফিক নিয়ে আসতে পারবে না। তাই নিয়মিত লেখালেখির কাজ চালিয়ে যেতে হবে। বিরতিহীন ভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে গেলে সফল হতে খুব বেশি সময় লাগবে না।
বর্তমানে ট্রেন্ড ম্যাটার করে অনেক বেশি। তাই চলমান ট্রেন্ড এর সাথে তাল মিলিয়ে নিজের লেখাকে আপডেট করতে থাকুন৷ বিশেষ করে ইন্টারনেট সার্চ করে কেউ দুই বছর আগের ট্রেন্ড এর সাথে যায় এমন লেখা তো পড়বেই না। তাই চলমান ট্রেন্ড সম্পর্কে খোঁজ খবর রাখুন এবং ট্রেন্ডি লেখা নিয়ে আসুন।
বর্তমানে অনেকেই মোবাইল দিয়ে ব্লগিং করে থাকে। হ্যাঁ মেবাইল দিয়ে আপনি ব্লগ লিখতে পারবেন, তা পাবলিশ করতে পারবেন এমনকি একটা সাইট পুরোপুরি ভাবে পরিচালনা করতে পারবেন। কিন্তু ব্লগিং শুরু করার জন্য একটি সাইট চালু করার ক্ষেত্রে আপনি সকল কাজ মোবাইল দিয়ে সঠিক ভাবে করতে পারবেন না। নানান ধরনের জটিলতার মধ্যে পড়তে হবে। সুতরাং একটি সাইট রানিং করার জন্য প্রথমে আপনার কম্পিউটার বা ল্যাপটপ এর সহায়তা নিতে হবে।
আর মোবাইল এর মাধ্যমে লেখালেখি করাটাও খুব সহজ বিষয় নয়। তবে আত্নবিশ্বাস ও প্রচেষ্টা থাকলে আপনি মোবাইল দিয়েই প্রতিদিন আশানুরূপ লেখা প্রকাশ করতে পারবেন। একান্তই কম্পিউটার বা ল্যাপটপ এর ব্যবস্থা না করতে পারলে আপনি মোবাইল দিয়েই ব্লগিং শুরু করতে পারেন। তবে টেকনিক্যাল কাজ গুলোতে আপনার কিছুটা জটিলতায় পড়তে হবে।
ব্লগিং সম্পর্কে একটি পুরোপুরি ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছি এই টিউনে। আশাকরি টিউনটি আপনাদের ভালো লেগেছে। তো লেখক যারা আছেন তারা কিন্তু চাইলেই নিজেদের ব্লগারে রূপান্তর করতে পারেন। ব্লগিং পেশায় শুরু করতে পারেন নিজের নতুন ক্যারিয়ার। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো। ধন্যবাদ।
আমি শারমিন আক্তার। শিক্ষার্থী, ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, গাজীপুর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 115 টি টিউন ও 29 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 6 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।