আসসালামু আলাইকুম। আশাকরি সবাই ভালো আছেন। বর্তমান যুগে আমাদের দেশে ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যা বেড়েছে। তবে আমাদের মধ্যে অনেকেই ফ্রিল্যান্সিং করার পরে ডলার দেশে আনতে গিয়ে নানা বিড়ম্বনায় পড়েন। আবার অনেক ক্লায়েন্ট পেপালের মাধ্যমে পেমেন্ট দিতে চায়। কিন্তু আমাদের দেশে পেপালের সুবিধা না থাকায় আমরা বিভিন্ন হাত-বদল করে করে সেই ডলার টাকায় পরিণত করি। ফলে আমরা ডলারের সঠিক মূল্য পাইনা আবার দেশে রেমিটেন্স আনতে পারিনা। এজন্য আমি আজ আপনাদেরকে কিভাবে বাংলাদেশ থেকে একটি আমেরিকান ব্যাংক একাউন্ট কিভাবে খুলবেন এবং একটি ফ্রি ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার কার্ড নিবেন এবং এগুলো দিয়ে আপনার পেপাল ভেরিফাই করতে পারবেন সেটা সম্পর্কে বলবো।
আজ আমি আপনাদের যে সাইটের কথা বলবো সেটি হলো Priyo Pay. আপনারা গুগলে গিয়ে Priyo Pay লিখে সার্চ করলে প্রথমে যে সাইটটি আসবে সেটাতে ক্লিক করবেন।
তারপর এখানে Sign up এ ক্লিক করবেন। এখন এখানে আপনার নাম, ইমেইল এড্রেস এবং একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড দিয়ে সাইন আপ করতে হবে।
তারপর ওই ইমেইলে একটি ভেরিফিকেশন মেইল যাবে। ওই মেইলের লিংকে ক্লিক করে আপনার একাউন্টটি ভেরিফাই করে নিবেন। এখন আপনার নিকট প্রশ্ন করা হবে যে আপনি পার্সোনাল একাউন্ট খুলতে চান নাকি বিজনেস একাউন্ট খুলতে চান। আপনি অবশ্যই পার্সোনাল একাউন্ট সিলেক্ট করবেন। কারণ বাংলাদেশ থেকে শুধু পার্সোনাল একাউন্ট খোলা যায় এখানে। বিজনেস অ্যাকাউন্ট খুলতে হলে আপনাকে অবশ্যই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হতে হবে।
এরপর আপনার জন্ম তারিখ, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর এসব যথাযথভাবে দিবেন।
এরপরের ধাপে আপনার এনআইডি কার্ডের দুই পাশের ফটো চাওয়া হবে। এগুলো দিয়ে আপনার অ্যাকাউন্টটি ফুল ভেরিফাই করতে হবে। এরপর আপনার একাউন্টটি প্রিয় পে কর্তৃপক্ষ যাচাই করে দেখবে। যদি সবকিছু ঠিক থাকে তাহলে আপনাকে একটি ইউএসএ ভেরিফাইড ব্যাংক একাউন্ট দিয়ে দিবে।
এরপর আপনি যদি ডেবিট মাস্টার কার্ড নিতে চান তাহলে বাম পাশের Card লেখাতে ক্লিক করে Apply for a mastercard এ ক্লিক করবেন। তাহলে আপনার মাস্টার কার্ডের জন্য আবেদন করা হয়ে যাবে। এরপর কিছুদিনের মধ্যে আপনাকে একটি ভার্চুয়াল মাস্টার কার্ড দেওয়া হবে।
এই কার্ড দিয়ে আপনি বিভিন্ন ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন করতে পারবেন। চাইলে ফেসবুক কিংবা ইউটিউবে ভিডিও বুস্টিং, অনলাইনে কেনাকাটা ইত্যাদি করতে পারবেন। আর আপনি যদি এই কার্ডের হার্ড কপি হাতে পেতে চান তাহলে Card অপশনে গিয়ে আপনাকে ফিজিক্যাল কার্ডের জন্য আবেদন করতে হবে।
কিন্তু ফিজিক্যাল কার্ডের জন্য আপনাকে প্রতিবছরে ২৯.৯৯ ডলার খরচ করতে হবে। এই ফিজিক্যাল মাস্টার ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে আপনি পৃথিবীর যেকোনো দেশের মাস্টার কার্ড চিহ্নিত এটিএম বুথ থেকে ওই দেশের লোকাল কারেন্সি তুলতে পারবেন। ফলে আপনি শুধু এই কার্ডে ডলার লোড করে পৃথিবীর যেকোনো দেশ ভ্রমণের যেতে পারবেন নিশ্চিন্তায়।
আপনারা যখন ইউএসএ’র পেপাল একাউন্ট খুলেন তখন কিন্তু পেপাল ভেরিফিকেশনের জন্য ইউএসএ ব্যাংক একাউন্ট চাওয়া হয় এবং এর পাশাপাশি একটি ইন্টারন্যাশনাল ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের তথ্যও চাওয়া হয়। কিন্তু আমাদের আমেরিকান ব্যাংক একাউন্ট বা ইন্টারন্যাশনাল ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড না থাকার কারণে আমরা পেপাল ভেরিফিকেশন করতে পারিনা। আপনি এই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও ডেবিট মাস্টার কার্ড ব্যবহার করে আপনার পেপাল একাউন্টটি ভেরিফাই করে নিতে পারবেন। আবার আপনারা যখন ফ্রিল্যান্সিং করে পেপালের মাধ্যমে পেমেন্ট নিবেন তখন পেপাল থেকে আবার এই ব্যাংক একাউন্টে ডলার ট্রান্সফার করতে পারবেন। ডলার ট্রান্সফার করা মাত্রই আপনার প্রিয় পে একাউন্টে ডলার যুক্ত হয়ে যাবে। এবং প্রিয় পে থেকে খুব সহজেই বাংলাদেশের যে কোনো ব্যাংকে ডলার ডিপোজিট করে সেটাকে টাকায় রূপান্তর করতে পারবেন। আবার আপনি ইচ্ছা করলে আপনার ইউএসএ ব্যাংক একাউন্ট থেকে প্রিয় পে’র মাস্টার কার্ডে ডলার ডিপোজিট করতে পারবেন এবং তারপর এই কার্ড দিয়ে বাংলাদেশের মাস্টার কার্ড চিহ্নিত যে কোনো এটিএম বুথ থেকে নগদ টাকা তুলতে পারবেন। যার ফলে এখন ফ্রিল্যান্সিং করে বিদেশ থেকে পেপালে ডলার আনতে আর কোনো বিড়ম্বনায় পড়তে হবে না। আশাকরি এতক্ষণ এই আর্টিকেলটি পড়ে একটু হলেও উপকার হবে। এরকম টেকনিক্যাল আর্টিকেল পড়ার জন্য টেকটিউনসের সাথেই থাকুন।
আমি যুবায়ের হোসেন। দ্বাদশ শ্রেণী, কুষ্টিয়া সরকারি সেন্ট্রাল কলেজ, কুষ্টিয়া। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 মাস 1 সপ্তাহ যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 3 টি টিউন ও 7 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 14 টিউনারকে ফলো করি।
আমি যুবায়ের হোসেন । ছোটবেলা থেকেই আমার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে জানার প্রবল আগ্রহ । টেকনোলজি বিষয়ে নিজে যতটুকু জানি তা অপরের নিকট জানানোর চেষ্টা করি ।