আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ফ্রিল্যান্সাররা অ্যাসাইনমেন্ট লিখে হাজার হাজার টাকা ইনকাম করে, এই বিষয়টা কম বেশি আমরা সবাই জানি। তবে আন্তর্জাতিক মার্কেটের প্রায় প্রতিটি কাজই হয় ইংরেজি নির্ভর। সেই সাথে থাকতে হয় ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা। দিনের পর দিন এই দিকে প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হয়। তাই অনেকেই আন্তর্জাতিক মার্কেটে কাজ খুঁজে বের করাটাকে কঠিন বিষয় মনে করে।
তবে আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি ইউনিক আইডিয়া শেয়ার করবো। যার মাধ্যমে আপনি বাংলাদেশের ক্লায়েন্টদের অ্যাসাইনমেন্ট লিখে দিয়ে আয় করতে পারবেন। তো কীভাবে কাজটি করবেন এবং কীভাবে ক্লায়েন্ট খুঁজে পাবেন সে বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পুরো টিউনটি পড়ার অনুরোধ রইল।
অ্যাসাইনমেন্ট লেখার কাজ সম্পর্কে জানার আগে আপনার অ্যাসাইনমেন্ট সম্পর্কে একটু ধারণা থাকা প্রয়োজন। অ্যাসাইনমেন্ট হলো এক ধরনের লিখিত প্রজেক্টের কাজ যা সাধারণত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীদের করতে দেয়া হয়। বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তা একত্রিত করে একটি নোট তৈরি করাই মূলত অ্যাসাইনমেন্ট। তাছাড়া বিভিন্ন প্রাকটিকাল খাতার কাজ গুলোও অনেকটা অ্যাসাইনমেন্ট এর মতো।
সাধরণত বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের সবথেকে বেশি অ্যাসাইনমেন্ট করতে হয়। তবে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদেরও অ্যাসাইনমেন্ট ও প্রাকটিকাল খাতার কাজ করতে দেয়া হয়। আর এই কাজগুলো বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরা অন্যদের দিয়ে করিয়ে নেয়।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে প্রফেশনালি অ্যাসাইনমেন্ট লেখার কাজের উল্লেখযোগ্য কোনো মার্কেট নেই। কিন্তু তবুও বেশিরভাগ ছাত্র ছাত্রী তাদের অ্যাসাইনমেন্ট অন্যদের দিয়ে লিখিয়ে নেয়। হ্যাঁ, প্রফেশনালি এই কাজের কোনো মার্কেট সৃষ্টি হয়নি। তবে ব্যক্তিগতভাবে অনেকেই তাদের আশেপাশের ছাত্র ছাত্রীদের এই কাজগুলো করে দেয়। কেননা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীরা অ্যাসাইনমেন্ট লেখার কাজ কিংবা প্রাকটিকাল খাতা তৈরির কাজকে একটি বাড়তি ঝামেলা হিসেবে মনে করে।
যেহেতু এখনও পর্যন্ত এই কাজের কোনো প্রফেশনাল সেক্টর তৈরি হয়নি, তাই এই সাইটে চেষ্টা করলে আপনি একচেটিয়া ভাবে কাজ পাবেন। তাছাড়া বাংলাদেশে সত্যিই এই কাজের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। তাই আপনি নিশ্চিতে প্রফেশনালি অ্যাসাইনমেন্ট লেখার কাজ শুরু করতে পারেন।
আপনার কাছে মনে হতে পারে অ্যাসাইনমেন্ট লেখার কাজটি খুব কঠিন। খুব ভালো পড়াশোনা না জানলে এই কাজ করা সম্ভব না। তবে আপনার এই ধারণা পুরোপুরি সঠিক নয়। কেননা অ্যাসাইনমেন্ট লেখার পুরো দিকনির্দেশনা আপনার ক্লায়েন্ট অবশ্যই আপনাকে প্রদান করবে। সেই সাথে লেখার তথ্যগুলো কোথায় পাবেন, কীভাবে তথ্যগুলো সাজাবেন এই এসকল তথ্য আপনাকে ক্লায়েন্ট কর্তৃক সরবরাহ করা হবে।
এই কাজ করার জন্য আপনাকে ধৈর্যশীল হতে হবে। রিসার্চ করে সাজিয়ে গুছিয়ে লেখার মনমানসিকতা থাকতে হবে। তবে অ্যাসাইনমেন্ট এর বেশিরভাগ লেখাই কোনো বই, নোট কিংবা অন্য কোনো উৎস থেকে কপি করে লিখতে হয়। তাই দিকনির্দেশনা দেয়া হলে লিখতে গিয়ে খুব বেশি সমস্যায় পড়তে হবে না আপনাকে।
আর আপনি যদি মনে করেন এই কাজের জন্য আপনার পর্যাপ্ত ধারনা নেই, তাহলে অন্যকে দিয়ে আপনি কাজটি করাতে পারবেন। আপনি শুধু অর্ডার সংগ্রহ করবেন। সেক্ষেত্রে রাইটার দের টাকা পরিশোধ করে যাতে আপনার পারিশ্রমিক থাকে সেদিকে লক্ষ রাখবেন। এভাবেই আপনি অ্যাসাইনমেন্ট লেখার করে আয় করতে পারবেন।
আসলে বাংলাদেশে এমন ভালো মানের কোনো প্লাটফর্ম নেই যেখান থেকে আপনি কাজ সংগ্রহ করতে পারবেন। আর এটাই হয়তো হতে পারে আপনার Plus Point। আপনি দুইটি উপায়ে বাংলাদেশের মার্কেট থেকে অ্যাসাইনমেন্ট লেখার কাজ করতে পারবেন।
আপনার ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে জানিয়ে দিতে পারেন যে আপনি অ্যাসাইনমেন্ট লেখার কাজ করেন। বিশেষ করে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রুপ গুলোতে যুক্ত হয়ে সেখানে আপনার কাজের বিষয়ে টিউন করতে পারেন। এতে খুব ভালো ফলাফল পাবেন বলে আশাকরি। তাছাড়া নিজের একটি ব্যবসায়িক পেইজ খুলেও সেখান থেকে আপনার কাজ বা সেবার প্রচার করতে পারেন। টিউন করতে পারেন নিজের প্রোফাইলেও। এতে করে খুব সহজেই আপনার কাজের পরিচিতি বাড়বে।
বাংলাদেশে অ্যাসাইনমেন্ট রাইটিং সেবার জন্য তেমন ভালো কোনো ওয়েবসাইট নেই। তাই আপনি যদি একটি ওয়েবসাইট চালু করে সেখানে আপনার সেবা সম্পর্কে খুব ভালোভাবে তুলে ধরতে পারেন তাহলে ক্লায়েন্ট ধরতে আপনাকে খুব বেশি বেগ পেতে হবে না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অনেক অনেক স্বনামধন্য ওয়েবসাইট এই বিষয় নিয়ে সাফল্যের সাথে কাজ করছে। তাই আপনার যদি একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা থাকে এই সেক্টরে তাহলে ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখান থেকে অর্ডার সংগ্রহ করার চেষ্টা করুন।
আশাকরি বাংলাদেশের মার্কেটে অ্যাসাইনমেন্ট রাইটিং করে আয় করার মূল ধারনা ইতোমধ্যে পেয়ে গেছেন। এই বিষয়ে যদি আরও কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে এই টিউনে টিউনমেন্ট করে জানাবেন।
আপনার হাতে থাকা মোবাইল এর মাধ্যমে আয় করার আরও বিভিন্ন অভিনব আইডিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে আমাকে ফলো করে রাখুন। আশাকরি একটু হলেও উপকৃত হতে পারবেন। সময় নিয়ে আমার টিউনটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমি শারমিন আক্তার। শিক্ষার্থী, ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, গাজীপুর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 115 টি টিউন ও 29 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 6 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।