আপনি ব্লগিং করেন কিন্তু ডোমেইন অথরিটি সম্পর্কে জানেন না, তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্যই। ডোমেইন অথরিটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক করতে সহায়তা করে। যদি ভাবছেন কিভাবে তাহলে আপনাকে অনুরোধ করব পুরো লেখাটি পড়বার জন্য।
ডোমেইন অথরিটি সার্চ ইঞ্জিনের বহু অ্যালগরিদমের মধ্যে থাকা এসইও এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই এটাকে অবহেলা করাটা ঠিক নয়। আর ব্লগিংয়ে যারা নতুন তাদের জন্য এই কন্টেন্টটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তো চলুন, শুরু করা যাক।
ডোমেইন অথরিটি হল একধরনের গ্রেডিং সিস্টেম। আরও পরিষ্কার করে বললে বলা যায় সার্চ ইঞ্জিন র্যাংকিং সিস্টেমে যেটা moz organisation দ্বারা জারি করা হয়েছে। এই ডোমেইন অথরিটি গ্রেডিং স্কোর চেক এর মাধ্যমে একটি ওয়েবসাইট এর র্যাংক ক্ষমতা আন্দাজ করা হয়। ডোমেইন অথরিটিকে সংক্ষেপে DA(Domain Authority), DR(Domain Rangking) ও WA(Website Authority) বলা হয়।
একটা সাইটের ডোমেইন অথরিটি যত বেশি থাকবে তার র্যাংকিং হবার চান্সও তত বেশি। এই ডোমেইন অথরিটি বা DA চেক করার গ্রেডিং স্কেল ১ থেকে ১০০ পর্যন্ত। আগেই বলেছি ডোমেইন অথরিটি যত বেশি থাকবে র্যাংকিং এর ক্ষেত্রে তত ভালো। তবে ২০ থেকে ৫০ এর ভেতর থাকলে লো কম্পিটিটিভ কিওয়ার্ড দ্বারা সাইট র্যাংক করার সম্ভাবনা থাকে।
ডোমেইন অথরিটি চেক করার জন্য অনেক সাইট আছে। গুগলে সার্চ করলেই বেশ কিছু সাইট আপনার সামনে আসবে। এখান থেকে কোনো এক সাইটে ঢুকে আপনার সাইটের লিংক সাবমিট করে DA চেক করতে পারবেন। তবে ফ্রি সাইটে গেলে আপনাকে ভুলভাল তথ্য দেখানোর সম্ভাবনা বেশি। তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পেইড সাইটে যাওয়ায় ভালো।
এছাড়া পেইডের মধ্যে যে সাইটগুলো র্যাংকিং এ আছে মূলত সেই সাইটে ঢোকায় হবে বুদ্ধিমানের কাজ। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হল
ডোমেইন অথরিটি বৃদ্ধি করার জন্য আপনাকে পরিশ্রম করতে হবে তা বলাই বাহুল্য। এজন্য যে বিষয়গুলো জানা জরুরি তা নিচে আলোচনা করা হল।
আপনার লিখিত কন্টেন্টই ওয়েবসাইটের প্রধান আলোচ্য বিষয়। তাই এর ওপর মনোযোগ দেয়া জরুরি। একজন ভিজিটর যখন আপনার কন্টেন্টটি পড়বে তখন তার মূল লক্ষ্য থাকবে কন্টেন্ট এর টপিক সম্পর্কে ভালোভাবে জানা। যদি আপনি উপস্থাপন কৌশল দ্বারা আপনার কন্টেন্ট এর প্রতিপাদ্য বিষয় তুলে ধরতে না পারেন তবে ভিজিটর পোস্টটি বাধ্য হয়েই ইগনোর করবে।
তাই কন্টেন্ট হাই কোয়ালিটি করে তুলতে এনগেজিং টিউন দ্বারা সহজ ও সাবলীল বিশ্লেষণে লেখা উচিত। আপনি যত ভিজিটর ধরে রাখতে পারবেন ওয়েবসাইট এর DA তত বাড়বে। এজন্য হাই কোয়ালিটি কন্টেন্ট সবার আগে জরুরি।
এমনভাবে লেখনীয় বিষয়গুলি উপস্থাপন করুন যাতে ভিজিটর বা পাঠক উপকৃত হয়। কারণ তারা উপকৃত হলেই আপনার ওয়েবসাইটকে গুরুত্ব দেবে এবং এতে করে আপনার সাইটের DA বাড়বে।
ইন্টারলিংক বা Internal linking হচ্ছে এক ধরনের প্রক্রিয়া যেখানে ব্লগে লেখা যেকোনো আর্টিকেলের সাথে ঐ ব্লগেরই অন্য প্রাসঙ্গিক আর্টিকেলের লিংক জুড়ে দেয়া হয়। ডোমেইন অথরিটির ক্ষেত্রে ইন্টারনাল লিংকিং থাকা জরুরি। মূলত ইন্টারনাল লিংকিং হচ্ছে ব্যাকলিংক এর একটা অংশ।
ইন্টারনাল লিংক ব্যবহারে আপনি অ্যাভারেজ বাউন্স রেট কমিয়ে দিতে পারবেন। আর বাউন্স রেট কম হওয়া মানেই ওয়েবসাইটে আসা ভিজিটর আপনার আর্টিকেল পড়ছে। তাই অবশ্যই এতে করে DA বেড়ে যাবে।
সাইটে যারা আর্টিকেল পড়তে আসে তাদের সুবিধার্তে ইন্টারনাল লিংক বিল্ডিং করা হয়। কারণ এতে করে ভিজিটর পড়তে এসে আরও বিস্তারিত তথ্য পেয়ে থাকে, তাই গুগল সার্চ বটও সহজে আর্টিকেল পেয়ে থাকে এবং ক্রল করে। এবার জানাই আর্টিকেলে কয়টি ইন্টারনাল লিংক থাকা জরুরি। এক্ষেত্রে ধরাবাধা নিয়ম না থাকলেও ২০০০ ওয়ার্ডের আর্টিকেলে ৫ - ১০ টি ইন্টারনাল লিংক শোভা পায়। দ্রষ্টব্য, গুগল কখনও এক আর্টিকেলের ভেতর ২০০ এর বেশি ইন্টারনাল লিংক ক্রল করে না।
আপনি যত কন্টেন্ট পাবলিশ করবেন তত আপনার সাইটটি অথরিটির দিক হতে বিশ্বস্ততা লাভ করবে। তাই মাসে অন্তত ১৫ - ২০ টা কন্টেন্ট পাবলিশ করা উচিত।
যদি আপনি নিয়মিত টিউন করা ছেড়ে দেন, তবে ব্লগের অথরিটি হারাবেন৷ তাই এক্ষেত্রে নিয়মিত কন্টেন্ট পাবলিশ করা জরুরি।
আপনি লক্ষ্য করলে দেখবেন র্যাংকিং সাইটগুলোর ওপেনিং স্পীড খুব দ্রুত। এতে করে ভিজিটর এনগেজিং রাখতে সুবিধা হয়। আর যেসকল ওয়েবসাইট স্পীড দ্রুত থাকে সেসকল ওয়েবসাইট এর ডোমেইন অথরিটিও বেশি হয়। কারণ এই বিষয়টির ওপর গুরুত্ব দিয়ে DA বৃদ্ধি পায়।
যে ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে যত বেশি সময় লাগে মূলত সেই ওয়েবসাইটে ভিজিটর তেমন আসে না। কারণ ওয়েবসাইট লোডিং সিস্টেমে থাকলে ভিজিটর বিরক্ত হয়। তাই ডোমেইন অথরিটির সাথে ওয়েবসাইট স্পীড সম্পর্কিত।
ওয়েবসাইটে কিছু লিংক থাকে যা র্যাংকিং এ বাধা দেয়। এছাড়াও এমন কিছু লিংক থাকে যা ওয়েবসাইট এর সাথে বর্তমানে যুক্ত নয়। এইসকল লিংককে ব্রোকেন লিংক বলে।
গুগলে সার্চ করলে অনেক ব্রোকেন লিংক চেকার পাবেন, যেগুলি দিয়ে ব্রোকেন লিংকগুলি চেক করা সম্ভব। আপনার সাইটে যত কম ব্রোকেন লিংক থাকবে সাইট গুরুত্ব পাবার পসিবিলিটিও তত বেশি। আর সাইটের গুরুত্ব পাওয়া মানেই ডোমেইন অথরিটি বৃদ্ধি পাওয়া।
ওয়েবসাইট আপডেটেড রাখার মধ্য দিয়ে ওয়েবসাইটে নিত্য নতুন তথ্য প্রকাশ করাকে বুঝায়। যাতে করে সময়ের সাথে সাথে মানুষ নতুন কিছু শিখতে পারে। এজন্য ওয়েবসাইট আপডেটেড রাখা জরুরি। ধরুন, আপনি গতবছর যা লিখে ওয়েবসাইট এ পাবলিশ করেছেন এ বছর তা সময়োপযোগী নাও হতে পারে। তাই সময়ের সাথে সাথে সব বদলায় এই সত্য মাথায় রেখে ওয়েবসাইটকে আপডেটেড রাখুন।
এতে করে ডোমেইন অথরিটি বাড়বে। কারণ নিয়মিত টিউন করলে সাইটের বিশ্বস্ততা বৃদ্ধি পায় তা আগেই বলেছি। আর সাইটের বিশ্বস্ততার মধ্য দিয়ে ডোমেইন অথরিটি বৃদ্ধি পাবে।
ব্যাকলিংকের মাধ্যমে খুব সহজেই ডোমেইন অথরিটি বা DA বাড়ানো সম্ভব। তবে সেটা অবশ্যই হাই কোয়ালিটি ব্যাকলিংক হতে হবে। অনেকেই লো কোয়ালিটি ব্যাকলিংক জেনারেট করার ফলে সাইটের ডোমেইন অথরিটি গ্রেড নিজ অজান্তেই কমিয়ে ফেলে এবং সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংকিং হারায়।
কিন্তু কিভাবে একটা ভালো ব্যাকলিংক জেনারেট করা যায়?
প্রথমত, বিভিন্ন সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম যেমন ফেসবুক, টুইটার, ইন্সটাগ্রামে নিজের ব্লগের প্রোফাইল তৈরি করে সেখানে প্রত্যেক আর্টিকেল শেয়ারের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাকলিংক তৈরি করতে পারবেন। এতে করে সোশ্যাল ট্রাফিক যেমন বাড়বে সেইসাথে DA বা ডোমেইন অথরিটিও বাড়বে।
দ্বিতীয়ত, গেস্ট টিউনিং। বিভিন্ন ওয়েবসাইট দেখবেন আপনার ওয়েবসাইট নিশের সাথে সম্পৃক্ত। এসব ওয়েবসাইটের সাথে যোগাযোগ করে তাদের ব্লগে নিশ অনুযায়ী আর্টিকেল লিখে ব্যাকলিংক তৈরি করতে পারেন। এক্ষেত্রে আর্টিকেল এর শেষে আপনার ওয়েবসাইট মেনশন করতে ভুলবেন না। কারণ এর মাধ্যমেই ব্যাকলিংক তৈরি হবে।
পরিশেষে, শুধুমাত্র কিওয়ার্ড রিসার্চ করেই ওয়েবসাইট র্যাংক করা সম্ভব নয়। এরজন্য প্রয়োজন ডোমেইন অথরিটি বৃদ্ধির। আর ডোমেইন অথরিটি বিভিন্ন বিষয়ের সাথে সম্পৃক্ত। হাই কোয়ালিটির কন্টেন্ট লেখা থেকে শুরু করে নিয়মিত কন্টেন্ট পাবলিশ, ব্যাকলিংক তৈরি ইত্যাদি বিষয় এর সাথে জড়িত।
তাই ডোমেইন অথরিটি বৃদ্ধি করতে হলে আপনাকে ব্লগিং এ নিয়মিত হতে হবে এবং প্রচুর সময় ব্যয় করতে হবে। আর তাছাড়া নতুন ব্লগে ডোমেইন অথরিটি গ্রেড কম থাকে। তাই নির্দিষ্ট সময় অবধি পরিশ্রমের সাথে অপেক্ষা করায় ভালো।
আমি আল মাহমুদ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 4 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 8 টিউনারকে ফলো করি।