গত কয়েকটি পর্বে ওয়েব ডেভোলপমেন্ট টুলস, পিএইচপি টিউটোরিয়াল, ওয়ার্ডপ্রেস থিম নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। তাই আজকে ভাবলাম একটু ভিন্ন কিছু নিয়ে ব্লগ লিখি। আজকে ফ্রীল্যান্সিং নিয়ে কিছু লিখব বলে মনঃস্তির করেছি। ফ্রীল্যান্সিং বরাবরের মতই আমার কাছে একটি ভাল লাগার বিষয়বস্তু। কারন এখানে আপনি নিজেই সব কিছু, আপনার উপরে কেঊ খবরদারী ফলাতে পারবে না। 😛 আপনার ইচ্ছামত কাজ আপনি নিজেই পছন্দ করে নেওয়ার মত ব্যাক্তি স্বাধীনতা আছে এই ফ্রীল্যান্সিং জগতে। শুধু কাজ জানলেই যে এখানে আপনি সফলতা পাবেন তা কিন্তু একদমই সত্য নয়। কাজের সাথে সাথে যদি কিছু টিপস যোগ করে নেন তাহলে কাজের সফলতা অনেকগুন বেড়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে।
বাংলাদেশে এখন অনেকেই ফ্রীল্যান্সিং সাইট গুলোতে কাজ করে থাকে এবং এই সাইটগুলোতে তাদের রেটিং অন্যান্য দেশের ডেভোলপার এবং ডিজাইনারদের থেকে অনেক ভালো। খুব ভাল লাগে যখন ওডেস্কে, ভি-ওয়ার্কারে, ইলেন্সে বাংলাদেশী কোন ফ্রীল্যান্সিং এর প্রোফাইল দেখি। অনেকের প্রোফাইলে কাজের রেটিং দেখে খুব উৎসাহ পাই, আবার অনেকের প্রোফাইলের কাজের রেটিং দেখে দুঃখ লাগে। 🙁
ভুমিকাতো অনেক হল- এবার তাহলে চলুন জেনে নেই কিছু টিপস- "কিভাবে ফ্রীল্যান্সিং ক্যারিয়ারে আপনার কাজের রেট বাড়াবেন"।
অধিকাংশ ফ্রি-ল্যান্সাররাই দ্বিধা-দ্বন্দে ভুগে থাকেন কাজের রেট বাড়ানোর ব্যাপারে। এটি অস্বাভাবিক কিছুই নয়। কারন , ফ্রি-ল্যান্সারদের ধারনা কাজের রেট বাড়িয়ে দিলে হয়ত তার হাত থেকে কাজটি ছুটে যেতে পারে। তাই রেট বাড়ানোর ব্যাপারে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেন না। ফ্রিল্যান্সাররা অপেক্ষা করতে থাকেন কখন বায়ারা কখন কাজের রেট বাড়াবে!! আপনি যদি এই রকম ভেবে থাকেন তাহলে বুঝবেন -"আপনি নিজেই আপানার নিজে পায়ে কুড়াল মারলেন!" তাই এখনই সময় নিজের কাজের রেট বাড়ানোর। আপনার যদি পুর্ব কোন অভিজ্ঞতা না থাকে, "কিভাবে রেট বাড়াতে হয় ,তাহলে আপনি সিনিয়ার কারো সাথে কথা বলে দেখতে পারেন। তাদের কথা শুনুন এবং আপনার বায়ারের সাথে তা এপ্লাই করে দেখুন।" আশা করি ভাল ফল পাবেন।
ফ্রী-ল্যান্সিং হিসাবে শুধু কাজ করলাম এটা ভাবাটা আসলে পুরোপুরি সঠিক নয়। এটা আপনার জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদী কাজের স্থান ও বটে । তাই এখানে বুঝে শুনে আগ্রসর হওয়া উচিত। এই জন্য বলছি-কারন অনেকে বুঝতেই পারেন না যে কিভাবে শুরু করবেন , আর কিভাবে সামনের দিকে আগ্রসর হবেন। বলছি - প্রথমে আপনি হুট করে কোন কাজে হাত দিবেন না। জানেন ই তো - "তাড়া-হুড়া শয়তানের কাজ" 😛 । যে কাজটি পারবেন তা নির্বাচন করুন। এর পরে আপনার বায়ারকে খুব সুন্দর করে একটি কভার লেটার লিখুন। কাজের রেটের স্থানে একটু কম রেটে কাজটি দিন। কারন এটি আপনার প্রথম কাজ। তাই কাজটি আপনাকে পেতে হবে। প্রথম ১০টি কাজ আপনি একটু কম রেটে করে দিন। হতাশ হওয়ার কিছু নাই। এই ১০টি কাজ আপনাকে পয়সা হয়ত কম দিবে কিন্ত আপনি পাবেন রেটিং আর বায়ারের ফিডব্যাক।
এই ফিডব্যাক গুলো আপনাকে পরের কাজগুলো পেতে ব্যাপক সাহায্য করবে। ১১ থেকে ২০ নং কাজ পর্যন্ত আর কিছু রেট ফিক্সড করুন এবং কাজ করতে থাকুন। রেটিং এবং ফিডব্যাক বাড়ার সাথে সাথে সমানুপাতিক হারে আপনার কাজের রেটও বাড়িয়ে দিন।
শিরোনামটা মনে হয় ভাল হল না !! যাই হোক ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলছি। ধরুন আপনি প্রতি ঘণ্টা ১০$ করে কাজ করেন। এখন আপনার কাজকে প্রিমিয়াম এবং বেসিক এই দুইটি ভাগে ভাগ করে নিন। অর্থ্যাৎ যদি কেউ বেসিক সার্ভিস নিতে চায় তাহলে তাকে ১০$ এ কাজটি করে দিন, আর যদি কেউ প্রিমিয়াম সার্ভিস নিতে চায় তাহলে তাকে ২০$ প্রদান করতে বলুন। ২০$ এ যদি কয়েকটি কাজ করে ফেলতে পারেন তাহলে আপনার কাজের রেট বাড়িয়ে ২০$ করে দিন। এই পদ্মতিটি প্রয়োগ এর আগে আপনাকে সুন্দর একটি পোর্ট-ফলিও ওয়েব সাইট বানাতে হবে, তাহলেই কেবল আপনি আপনার বায়ারদের কে সন্তুস্ট করেতে পারবেন।
সবশেষে এসে বলব, ফ্রি-ল্যান্সিং এ হঠ্যাৎ করে সফলতা পাবার কোন পদ্মতি নেই! নিজের ধৈর্য্য , চেস্টা আর পরিশ্রেমর মাধ্যমেই কেবল এখানে সফলতা পাওয়া সম্ভব।
কক্ষনোই নিজের যোগ্যতাকে ছোট করে দেখবেন না, কাজ পাওয়ার জন্য একদম কম রেটে বিড না করাটাই শ্রেয়। হুট করে সিদ্বান্ত না নিয়ে আস্তে ধীরে বুঝে শুনে কাজ নিন এবং বায়ারকে খুশি করার চেস্টা করুন।
আপনার ফ্রি-ল্যান্সিং ক্যারিয়ার সফল হোক এই প্রত্যাশায় আজকের পোস্ট শেষ করছি। সবাই ভাল থাকবেন।
টিউটোরিয়াল সুত্রঃ ফ্রিলেন্সিং টিপস
একই সাথে প্রকাশিতঃ টেকটুলসবিডি
আমি মাহবুব আলম খান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 20 টি টিউন ও 91 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
কাজের পোস্ট। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।