বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই? আশা করছি আপনারা সকলেই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। ফ্রিলান্সিং বা মুক্ত পেশা, যেটির মাধ্যমে বর্তমান সময়ে একটি বিশাল কর্ম বাজার তৈরি হয়েছে। বন্ধুরা আজকে আমরা আলোচনা করব ফ্রিল্যান্সিং বা মুক্ত পেশা সম্পর্কে।
ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ক আজকের এই টিউনটিতে যা থাকবে তাহলো, ফ্রিল্যান্সিং কি? ফ্রিল্যান্সিং আপনি কেন করবেন? ফ্রিলান্সিং করার ক্ষেত্রে আপনি কি কি সুবিধা পাবেন? কিভাবে আপনি ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন এবং কোথায় আপনি ফ্রিল্যান্সিং এর কাজগুলো করবেন ইত্যাদি বিষয়গুলো এই টিউনে আলোচনা করব।
ফ্রিলান্সিং বা মুক্ত পেশা সম্পর্কে বর্তমানে আমরা সকলেই কম বেশি পরিচিত। আজকের টিউনটি শুরু করার আগে আপনাদের কে বলে নিচ্ছি আপনারা যারা এখনো পর্যন্ত আমাকে ফলো করে রাখেন নি তারা উপরের ফলো বাটনে ক্লিক করে আমাকে ফলো করে রাখুন। যাতে করে আমার নতুন কোন টিউন প্রকাশিত হলে সবার আগে আপনার হোমপেজে চলে আসে। আর যদি ইতিমধ্যে আমাকে ফলো করে রাখেন তবে অসংখ্য ধন্যবাদ। চলুন তবে আজকের টিউনটি শুরু করা যাক।
ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে জানার জন্য আমাদেরকে প্রথম থেকেই জানতে হবে।
ফ্রিলান্সিং এর অর্থ হলো স্বাধীন বা মুক্ত পেশা। এই কথাটির অর্থ এভাবে বলা যায় যে, নির্দিষ্ট কোন প্রতিষ্ঠান অধীনে কাজ না করে স্বাধীন বা মুক্ত ভাবে কাজ করাকে ফ্রিল্যান্সিং বলে। আর এই পেশার সাথে যারা জড়িত থাকে তাদেরকে বলা হয় ফ্রিল্যান্সার বা স্বাধীন পেশাজীবী। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে যারা কাজ করে তাদের সবাই ফ্রিল্যান্সার। মার্কেটপ্লেসগুলোতে চুক্তিভিত্তিক কাজ করা ছাড়াও অনেকেই এসবের বাইরে কাজ করে, এদেরকেও ফ্রিল্যান্সার বলে।
যাই হোক আমরা এটা বুঝতে পেরেছি যে ফ্রিল্যান্সিং একটি মুক্ত পেশা। এখানে যে কেউ তার দক্ষতা অনুযায়ী কাজ করার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে। যেখানে কোন ব্যক্তির হস্তক্ষেপ বা শাসন চলে না। এজন্যই একে ফ্রিল্যান্সিং বা মুক্ত পেশা বলা হয়।
আপনি কেন ফ্রিল্যান্সিং করবেন এর দুটি কারণ হতে পারে, একটি হল স্বাধীনতা এবং অন্যটি হচ্ছে অর্থের জন্য। এখানে স্বাধীনতা টি সবচাইতে বেশি গুরুত্ব পায়। কেননা ফ্রিল্যান্সিং করার ক্ষেত্রে কোন ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণ থাকে না আপনার উপর। চাইলেই মাসের যেকোনো সময় এবং দিনের যেকোনো সময়ে ইচ্ছামত কাজ করা যায়। একটি চাকুরী করার ক্ষেত্রে যেখানে প্রতিদিন 5 থেকে 8 ঘন্টা কাজ করতে হয় সেখানে এ পেশায় যেকোনো সময়ে কাজ করা যায়। সেটি হতে পারে দিনের কয়েক ঘন্টা অথবা সারাদিন।
এছাড়া প্রথাগত চাকরি করার বেতন এর চাইতে ফ্রিল্যান্সিং এ কোন কাজে দক্ষ হয়ে তার চাইতে বেশি টাকা আয় করা সম্ভব। তবে সেটি সময়, শ্রম এবং অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করে।
ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধার কথা আমি যদি একটি চাকুরির সঙ্গে তুলনা করি তবে, কোন একটি চাকরিতে আপনাকে পাঁচ থেকে নয় ঘণ্টা কাজ করতে হবে, কিন্তু ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্ষেত্রে আপনি যেকোন সময় কাজ করতে পারবেন। এখানে আপনি সম্পূর্ণ স্বাধীন। কোন একটি প্রাতিষ্ঠানিক চাকরির ক্ষেত্রে আপনাকে নির্দিষ্ট একটি কাজ প্রায় প্রতিদিন করতে হতে পারে, কিন্তু ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্ষেত্রে আপনাকে নিত্য নতুন কোন কাজ করতে হবে। যে কারণে এখানে প্রাতিষ্ঠানিক কাজের মত বিরক্ত হয়ে যাবার সম্ভাবনা বেশি থাকে না।
কোন একটি চাকরি করার ক্ষেত্রে আপনি যে শ্রম দিবেন তার বিপরীতে হয়তোবা আপনি কম টাকা পাবেন, কিন্তু অন্যদিকে ফ্রিল্যান্সিং করার ক্ষেত্রে আপনি আপনার শ্রম এর বিপরীতে টাকা চেয়ে নিতে পারবেন। এখানে যে কাজটির মূল্য আপনার শ্রম এর সঙ্গে মিলে যাবে আপনি সে কাজটি বেছে নিতে পারবেন। তাই এখানে কাজের ক্ষেত্রে পারিশ্রমিক পাওয়ার ব্যাপারে নিজের ঠকার কোন সুযোগ নেই। শুধু তাই নয় চাকরির ক্ষেত্রে যেখানে অভিজ্ঞতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সামান্য কিছু বেতন বাড়ে, সেখানে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে কাজ করার ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কয়েকগুণ আয় বেড়ে যায়।
কোন একটি প্রতিষ্ঠানে আপনি যদি চাকরি করেন সেখানে অবশ্যই আপনাকে প্রতিদিন যেতে হবে। কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং করার ক্ষেত্রে এটি আপনি ঘরে বসেই করতে পারছেন। এখানে আপনাকে যাবার ব্যাপারে কোন সমস্যা থাকবে না। এছাড়াও কোন একটি চাকরির ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই সে প্রতিষ্ঠানের একটি বসের অধীনে কাজ করতে হবে এবং সে যা বলবে সে অনুযায়ী আপনাকে কাজ করতে হবে। কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং ক্ষেত্রে আপনার এরকম হবার কোনো সুযোগ নেই। এখানে আপনার ইচ্ছা মতো কাজ করতে পারবেন, যে কারণে এটাকে ফ্রিল্যান্সিং বা মুক্ত পেশা বলে।
ফ্রিল্যান্সিং করা অনেকের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। ফ্রিল্যান্সিং করার ক্ষেত্রে এখানে কিন্তু আপনি আপনার অভিজ্ঞতা ছাড়া কোন কাজ করতে পারবেন না। এ জন্য আপনাকে প্রথমেই স্কিল ডেভলপমেন্ট করতে হবে। এজন্য আপনি পরিপূর্ণ কাজ শিখে তারপর ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে এসে কাজ অনুসন্ধান করতে থাকবেন। এক্ষেত্রে আপনি প্রথমে কাজ নাও পেতে পারেন। সেজন্য ফ্রিল্যান্সিং প্রথম দিকে আপনার জন্য হতে পারে ঝুঁকিপূর্ণ। অনেককেই দেখা যায় যারা পরিপূর্ণ কাজ শিখে ও ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে প্রথমদিকে কাজ পায় না।
ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস গুলোতে কাজ পাবার ক্ষেত্রে ছাত্ররা অনেকটা সুবিধা অর্জন করতে পারে। কেননা এই সময়ে তারা সম্পূর্ণ পরিবারের উপর নির্ভরশীল থাকে এবং যেকোন সময় কাজ পেলেই তাদের চলবে। তবে কেউ যদি কোন কাজ শিখে চাকরি ছেড়ে দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজ পাবার জন্য ছুটে, তবে তার জন্য এটি হতে পারে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তবে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে যদি কাজ শুরু করে দিতে পারেন তবে পরবর্তীতে আর কোনো ঝুঁকি থাকে না। এছাড়াও চাকরির পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করলে ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়।
ফ্রিল্যান্সিং করে আপনি কত টাকা আয় করবেন এ বিষয়টি বলা একেবারেই ভুল হবে। আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয় আপনার অভিজ্ঞতা কিরকম আছে, তবে আপনি নিজেই উত্তর দিতে পারবেন যে আপনি কিরকম টাকা আয় করতে পারবেন। আপনি যদি অনভিজ্ঞ হন তবে আপনি কিন্তু একটি টাকাও আয় করতে পারবেন না। অনভিজ্ঞ হয়ে শুধু ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে বিচরণ করলেই চলবে না, আপনাকে অবশ্যই কোনো কাজে দক্ষ হতে হবে। তারপরই আপনি টাকা আয় করতে পারবেন। আপনি কোন ধরনের কাজ করবেন এবং কেমন কাজ করবেন সেটির উপর নির্ভর করবে আপনার আয়।
ফ্রিল্যান্সিং শুরু করা একটি সাধারন ব্যাপার। এজন্য আপনি যেকোনো একটি কাজ বাছাই করে নিন যেটির প্রতি আপনার আগ্রহ রয়েছে। এজন্য সেটি হতে পারে প্রোগ্রামিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, অ্যাপ ডেভলপমেন্ট, হতে পারে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ইত্যাদি। এগুলোর মধ্যে আপনি যে কোন একটি বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করুন। বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট, মার্কেটিং ইত্যাদি বিষয়ে অনেক চাহিদা রয়েছে। তাই আপনি যদি চান তবে এসব বিষয়ের যেকোনো একটি শিখে আপনার ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন।
এসব টপিকের বাইরে আপনি আরো কিছু কাজ পাবেন যেগুলো আপনি আপনার ইচ্ছানুযায়ী বাছাই করে নিতে পারবেন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলো থেকে। যেখান থেকে আপনি সেগুলো বাছাই করতে পারেন এবং সেই বিষয়ের উপর স্কিল ডেভলপ করুন। আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট কেন শিখবেন এ বিষয় নিয়ে আমার আগের টিউন রয়েছে। আপনারা চাইলে সেগুলোও দেখে আসতে পারেন। সেসব টিউন গুলো দেখতে এই লিঙ্ক গুলোতে ক্লিক করুন। গ্রাফিক্স ডিজাইন কেন শিখবেন? এবং ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট কোন শিখবেন?
কোন বিষয়ের উপর কাজ শিখে তারপর ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজ অনুসন্ধান করার মাধ্যমে আপনি আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করতে পারবেন।
আপনি যদি কোনো কাজ শেখেন তবে আপনার কাজ খুঁজে পেতে সময় লাগবে না। বর্তমানে অনেকগুলো ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস রয়েছে। এসবের মধ্যে যেমন freelancer.com, upwork.com, fiverr.com ইত্যাদি। আপনি যদি কোনো কাজের উপর দক্ষ হয়ে থাকেন তবে এসব ওয়েবসাইটে এসে সেসব কাজগুলোতে বিড করতে পারেন। এছাড়াও আপনি যদি নির্দিষ্ট কোনো কাজের উপর দক্ষ হয়ে থাকেন তবে আপনাকে কাজ খুঁজতে বেগ পেতে হবে না। আপনি যদি একবার কোন বায়ারের কাজ করে দেন এবং সেটি যদি ভাল হয় তবে সে আপনাকে পরবর্তীতে কাজ দেওয়ার জন্য খুঁজবে।
বন্ধুরা নিত্যনতুন আরও টিউন পেতে আমাকে ফলো করে রাখুন। টিউনটি ভাল লাগছে জোসস করতে ভুলবেন না। ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কিত আজকের এই টিউনটি এখানেই শেষ করছি। দেখা হবে পরবর্তী টিউনে আরো নতুন কিছু নেই ইনশাআল্লাহ। আসসালামু আলাইকুম।
আমি মো আতিকুর ইসলাম। কন্টেন্ট রাইটার, টেল টেক আইটি, গাইবান্ধা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 421 টি টিউন ও 93 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 62 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 3 টিউনারকে ফলো করি।
“আল্লাহর ভয়ে তুমি যা কিছু ছেড়ে দিবে, আল্লাহ্ তোমাকে তার চেয়ে উত্তম কিছু অবশ্যই দান করবেন।” —হযরত মোহাম্মদ (সঃ)