ফ্রিল্যান্সিং কি? বর্তমান সময়ে অনলাইন থেকে আয়ের একটা মাধ্যম হলো ফ্রিল্যান্সিং। আপনি যদি অনলাইনে নিজের ক্যারিয়ার তৈরি করতে চান তাহলে ফ্রিল্যান্সিং হবে আপনার জন্য অনেক ভালো একটি মাধ্যম। বর্তমানে বাংলাদেশে ছয় লক্ষাধিক ফ্রিল্যান্সিং আছেন। যাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন যাদের মাসিক ইনকাম ৩-৫ লক্ষ টাকা। অতএব বুঝতেই পারছেন এই ফ্রিল্যান্সিং পেশাটি আপনার জন্য কেমন হবে।
আজ এই গুলা নিয়েই আমি বিস্তারিত আলোচনা করব।
ফ্রিল্যান্সিং হলো একটি জবের মতোই। আমরা যখন কোনো কম্পানিতে কাজ করতে যায় তখন কি করি.?ঐ কোম্পানির সার্কুলার দিলে আমরা জবের জন্য আবেদন করি, সিভি সাবমিট করি এবং জবটি হয়ে গেলে আমরা ঐ কম্পানির নির্দিষ্ট দায়িত্ব পালন করে থাকি এবং প্রতি মাসে একটা স্যালারি জেনারেট হয়।
তেমনি ফ্রিল্যান্সিং হলো একটা জব। অনলাইনে বিভিন্ন কম্পানি বিভিন্ন মানুষদেরকে হায়ার করে নিজেদের কম্পানির বিভিন্ন কাজ করিয়ে থাকে। (ফ্রিল্যান্সিং কি?)
নতুন যখন কোনো কম্পানি তৈরি হয় তখন তার একটা লগো ডিজাইন দরকার তো সেই কম্পানি একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনারকে হায়ার করে।
আবার সেই কম্পানির একটা ওয়েবসাইট এর প্রয়োজন পরে তাই তারা একজন ওয়েব ডিজাইনার এবং ডেভেলপার কে হায়ার করে করে কাজ করিয়ে নেই।
অর্থাৎ আপনার যেই কাজে দক্ষতা আছে বা ভবিষ্যতে যেই কাজটি আপনি শিখবেন সেই কাজ অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন কম্পানিকে করে দিবেন এবং সেই কম্পানি আপনাকে পেমেন্ট করবে।
তবে আমরা সাধারণত যেই জব গুলা দেখি তার সাথে ফ্রিল্যান্সিং এ কিছু ডিফারেন্ট আছে। আর সেটি হচ্ছে আমরা সাধারণত যারা জব করি তারা একটা ফিক্সড জব করি এবং নির্দিষ্ট সময় ধরে অফিস করি এবং মাস শেষে একটা নির্দিষ্ট স্যালারি পাই।
তবে ফ্রিল্যান্সাররা অনলাইনে কোনো প্রতিষ্ঠান এর ফিক্সড জব করে না। তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কম্পানির কাজ করে থাকে। তারা নির্দিষ্ট কোন সময় মেনে কাজ করে না। তারা কন্ট্রাক্ট ব্যাস কাজ করে। এবং মাসে একাধিক বার পেমেন্ট পেয়ে থাকে।
ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার এর সবথেকে বড় সুবিধা হলো এটি একটি স্বাধীন পেশা আপনি ঘরে বসেই খুব সহজেই ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন। আপনাকে প্রতিদিন অফিস করতে হবেনা। অফিসের বস এর হুকুম শুনতে হবে। এক কথায় আপনিই আপনার বস।
তো ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার পূর্বেই আপনাকে কোনো একটি নির্দিষ্ট কাজ বা স্কিল খুব ভালো ভাবে শিখতে হবে। সেটা হতে পারে
এমন অসংখ্য কাজ পাবেন অনলাইনে যেগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি কাজ শিখে আপনি ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন।
পূর্বেই বলেছি ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার পূর্বে আপনাকে যেকোন একটি কাজে দক্ষ হতে হবে সেটি
যেকোনো কাজেই হতে পারে আপনি একটি কাজ খুব ভালোভাবে শিখে এবং সেই কাজের প্রতি দক্ষতা অর্জন করে যদি মার্কেটপ্লেসে জয়েন হন তাহলে আপনি খুব সহজেই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করে একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হতে পারবেন। (ফ্রিল্যান্সিং কি?)
প্রথমে আপনি মাইন্ড সেট করবেন যে আপনি কোন কাজটি শিখে ফ্রিল্যান্সিং করতে চাচ্ছেন। আপনি যেই কাজ শিখে ফ্রিল্যান্সিং পেশাই আসতে চান সেই কাজটি ভালো ভাবে শিখতে হবে। কাজ শেখার আগে মনে রাখবেন যে অমুক এই কাজ শিখে ফ্রিল্যান্সিং এ সফল তাই আমিও এই কাজটি শিখে সফল হতে পারব।
এটি ভেবে যদি কাজ শেখা শুরু করেন তাহলে আমি আপনাকে গ্যারান্টি দিব আপনার সফল হওয়ার হার ১৫-২০%। কারন মনে করেন আপনি প্রোগ্রামিং বোঝেন না বা খুব কম বোঝেন সেক্ষেত্রে আপনি যদি ওয়েব ডিজাইন শিখতে চান তাহলে আপনি কখনই ভালো ভাবে শিখতে পারবেন না। কারন আপনি যদি প্রোগ্রামিং না পারেন তাহলে কিভাবে ওয়েব ডিজাইন শিখবেন।
অত এব আপনি যেই কাজটি ভালোবাসেন বা যেই কাজ করতে আপনার কখনো বোরিং বা বিরক্ত মনে হয় না আপনি সেই কাজটি শিখুন এতে আপনার সফলতার হার দ্বিগুণ বেড়ে যাবে। (ফ্রিল্যান্সিং কি?)
যখন আপনার কাজ শেখা শেষ হবে তখন আপনি বিভিন্ন মার্কেট প্লেস নিয়ে রিসার্চ করবেন। কোন মার্কেট প্লেস এ আপনি যেই কাজটি শিখেছেন সেই কাজটি বেশি পরিমাণে চাহিদা আছে। প্রথমে আপনি সেই মার্কেট প্লেস দিয়ে কাজ করা শুরু করবেন।
অবশ্যই করতে পারবেন। আপনি এক্ষেত্রে পার্ট টাইম হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং পেশাটাকে নিতে। আপনি একটি নির্দিষ্ট সময় করে নিবেন যে এতটুকু সময় আমি ফ্রিল্যান্সিং করব। আপনি দিনে হয়ত ২-৩ টি কাজ করবেন। পাশাপাশি আপনি আপনি পড়াশোনা এবং চাকরি চালিয়ে যেতে পারবেন।
এমন অনেক ফ্রিল্যান্সার আছেন যারা নিজের অফিসের কাজ শেষ করে বাড়িতে ফিরে ফ্রিল্যান্সিং করেন। বাড়তি কিছু টাকা আয় করার জন্য পার্ট টাইম ফ্রিল্যান্সিং হতে পারে অনেক ভালো একটি মাধ্যম। (ফ্রিল্যান্সিং কি?)
এটা একটা কমন প্রশ্ন ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে যে আমি ফ্রিল্যান্সিং করে কত টাকা আয় করতে পারব। আমি আগেই বলেছি বাংলাদেশ এমন অনেক ফ্রিল্যান্সার আছেন যাদের মাসিক ইনকাম ৩-৫ লক্ষ টাকা তো বুঝতেই পারছেন ঐই ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে কত পরিমাণ টাকা ইনকাম করা সম্ভব।
যাদের কাজের স্কিল বা দক্ষতা ভালো তারাই মাস শেষে বিশাল অঙ্কের টাকা ইনকাম করতে পারবেন। আপনি যত ভালো কাজ পারবেন এবং যত বেশি সময় দিতে পারবেন তত বেশি ইনকাম করার সুযোগ রয়েছে এই সেক্টরে।
আপনি যত বেশি কাজ পাবেন এবং যত বেশি কাজ করে দিতে পারে আপনার ইনকাম ও তত হবে। এক্ষেত্রে আপনি যদি একটি টিম গঠন করে কাজ করেন তাহলে আপনি অনেক কাজ পাবেন এবং অনেক বেশি পরিমাণ কাজ শেষ করতে পারবেন এবং বেশি পরিমাণ টাকা আয় করতে পারবেন। (ফ্রিল্যান্সিং কি?)
বাংলাদেশ এই পর্যন্ত সাড়ে ছয় লক্ষ ফ্রিল্যান্সার যদি এই পেশায় সফল হতে পারে আপনি কেন পারবেন না। যদি আপনি কোন একটা কাজ খুব ভালো ভাবে শিখতে পারেন এবং আপনার যদি কমিউনিকেশন স্কিল ভালো থাকে তাহলে আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি আপনি এই পেশায় সফল হতে পারবেন।
আপনি প্রথমে ভালো করে একটা কাজ শিখুন এবং কমিউনিকেশন এর জন্য স্পোকেন ইংলিশ ভালো করে শিখুন। তারপর মার্কেট প্লেস এ কাজ করতে আসুন তাহলেই আপনার সফলতা আসবেই।
আর আপনাকে অবশ্যই ১০-১২ ঘন্টা কম্পিউটার এর সামনে বসে থাকার অভ্যাস থাকতে হবে। এবং রাত জেগে কাজ করার মন মানুষিকতা থাকতে হবে।
কাজ শেখার জন্য অনেক উপায় আছে। তার মধ্যে অন্যতম উপায় হচ্ছে কোনো প্রতিষ্ঠান এ গিয়ে কাজ শিখে নেওয়া। অনেকেই বলতে পারেন বাংলাদেশে তো অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যারা ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ শেখায়। তাহলে কোথা থেকে শিখব? আবার অনেকেই বলতে পারেন বাংলাদেশে তো এমন অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যারা ফ্রিল্যান্সিং শেখানো নামে প্রতারণা করছেন তাহলে কিভাবে সঠিক প্রতিষ্ঠান খুঁজে বের করব এবং কাজ শিখব.?(ফ্রিল্যান্সিং কি?)
আপনি যেভাবে বুঝবেন আপনি যেই প্রতিষ্ঠান থেকে কাজ শিখতে চান ঐ প্রতিষ্ঠান আসলে প্রতারণা করছে কিনা। এটা বোঝার জন্য আপনাকে ঐ প্রতিষ্ঠানে আগে যারা ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ শিখেছেন তাদের সফলতা দেখুন এবং তাদের সাথে কথা বলুন। এবং যেই স্যার আপনাদের শেখাবে ঐ এর ব্যাকগ্রাউন্ড চ্যাক করুন তিনি অদোতেও কোনো ফ্রিল্যান্সার কিনা। এই গুলা যদি ঠিক হয় তাহলে বলা যেতে পারে তারা প্রতারিত করবে না।
বাংলাদেশ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এর কথা বলব যেখান থেকে প্রতারিত হবেন না। অনেক বলতে পারে আমি এই প্রতিষ্ঠানকে প্রোমোট করছি। না আমি প্রোমোট করছি না। আপনাদের জানানোর জন্যই শেয়ার করছি।
এছাড়াও আরও অনেক প্রতিষ্ঠান আছে এদের নাম বলছি না। মনে রাখবেন একটি প্রতিষ্ঠান আপনাকে সঠিক গাইডলাইন দিতে পারে।
ফ্রিল্যান্সিং কি?আমি লেখা মাঝে বার বার বলেছি অবশ্যই ভালো করে কাজ শিখবেন। আপনি কাজে যত দক্ষ হবেন মার্কেট প্লেস এ আপনার চাহিদাও বেশি থাকবে। আর সাথে আপনাকে কমিউনিকেশন ইংলিশ জানতে হবে।
তো শুরু করে দিন ফ্রিল্যান্সিং এবং নিজেকে স্বাধীন পেশায় নিযুক্ত করুন। ঘরে থাকুন সুস্থ থাকুন এই বলেই আজ শেষ করছি। ধন্যবাদ সবাইকে।
আমি টেকি বাপ্পি। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 2 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।