আশাকরি-
-
ফ্রিলান্সারদের দীর্ঘ সময় কম্পিউটারে কাজ করতে হয়। অনেক সময় দেখা যায় একটানা অনেক ঘন্টা কাজ করতে হয়। এভাবে কাজ করা বিভিন্নভাবে শরিলের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু একটু সতর্ক হলে অনেক বড়ো ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
১. আমার মনে হয় না মানুষের জন্য ব্যায়ামের চাইতে বড়ো কোনো ওষুধ আছে। সকালে ও বিকালে কমপক্ষে ১৫-২০ মিনিট করে ব্যায়াম করা খুবই দরকারি।
২. কমপক্ষে ১ ঘন্টা পর পর ৫ মিনিটের জন্য একটু হাঁটুন।
৩. ফ্রিলান্সারদের দীর্ঘ সময় বসে থাকার পাশাপাশি মারাত্মক টেনশন এ থাকতে হয়। যদিও অভিজ্ঞতা বেশি হয়ে গেলে আস্তে আস্তে টেনশন কমে যায়। বসে থাকা ও টেনশন ব্লাড প্রেসার ও পালস এর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ব্লাড প্রেসার ও পালস কে নিয়ন্ত্রণ রাখুন। সবচাইতে ভালো যদি প্রেসার ১২০/৮০ এর ভিতরে থাকে। তবে কোনোভাবে ১৩০/৮০ এর উপরে উঠতে দেয়া ঠিক না। আর পালস যেন সবসময় ৬০-১০০ থাকে। তবে ভালো হয় বিশ্রাম অবস্থায় পালস যদি ৭৬ এর মধ্যে থাকে। ডাক্তার রা ১৪০/৯০ ও পালস ১০০ এর উপরে উঠলে ওটাকে স্বাভাবিক হিসেবে বলবে। কিন্তু একজন ফ্রিলান্সার এর লাইফ স্টাইল এর কারণে ওটা স্বাভাবিক নাও হতে পারে। তাই প্রেসার ও পালস কে সবসময় নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।
ব্যায়াম প্রেসার ও পালস এর জন্য ম্যাজিক এর মতো কাজ করে। তারপরও যদিও কন্ট্রোল না থাকে তাহলে সকালে খালি পেতে ১/২ কোয়া রসুন খান। রসুন ছোটো টুকরো টুকরো করে একটু চিবিয়ে পানি দিয়ে খাওয়া ভালো। তবে যদি চামড়ায় লালচে দাগ দেয়া দেয় বা অন্য কোনো পার্শপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয় তাহলে খাওয়া যাবে না।
এতেও যদি প্রেসার পালস কন্ট্রোল না থাকে তাহলে দিনে ১/২ টা লেবুর রস পান করুন। লেবুর রসও প্রেসার পালস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
৪.কম্পিউটার স্ক্রিন থেকে ব্লু রে বার হয়। ব্লু রে কম সময়ে কোনো ক্ষতি করতে পারে না। কিন্তু দীর্ঘ সময় যদি ব্লু রে এর মধ্যে থাকতে হয় তখন ওটা চামড়া ও চুখের জন্য ক্ষতিকর। আমাদের দীর্ঘ সময় কম্পিউটার স্ক্রিন এর সামনে থাকতে হয় বলে ব্লু রে আমাদের চোখ ও চামড়ার অনেক ক্ষতি করার সুজুগ পায়। ব্লু রের কারণে আমাদের চুখে ব্যথা অনুভব করি। মুখের ত্বকে sunburn এর মতো হতে পারে। তাই চোখের জন্য আন্টি ব্লু রে চশমা ব্যবহার করা উচিত। তবে সবচাইতে ভালো uv সহ আন্টি ব্লু রে। uv ৪২০ মানের গ্লাস ব্যবহার করা যায়।
আর মুখের ত্বকের জন্য ভালো uv ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। আবার ভার্জিন নারিকেল তেলও ব্যবহার করতে পারেন। নারিকেল তেল এ কিছু uv protection আছে। তবে নারিকেল তেল সব স্কিনের জন্য ভালো নাও হতে পারে। সাইড ইফেক্ট বেপারে সতর্ক থাকবেন। আরো তেল আছে যা uv প্রটেক্টর হিসেবে কাজ করে। যেমন Carrot Seed Oil – SPF 38 – 40, Red Raspberry Seed Oil – SPF 28 – 50, Wheatgerm Oil – SPF 20, Olive Oil – 2-8, Almond Oil – SPF 5। তবে যাই ব্যবহার করেন সাইড ইফেক্ট বেপারে সতর্ক থাকবেন।
৫. ডেইলি ৬-৮ গ্লাস পানি পান করুন। শীতের দিনে একটু কম হলেও সমস্যা নাই। পানি আমাদের শরিলের অনেক উপকার করে। কিন্ডার, লিভার, হার্ট সহ শরিলের প্রায় সব অঙ্গের উপকার করে। পানি রক্তচাপ, পালস কে স্বাভাবিক রাখতে খুবই উপকারী।
-
কয়েক দিন আগে আমাদের এক ফ্রিল্যান্সার ভাই (Rayhan Sumon) আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়েছেন। আল্লাহ্ তাকে জান্নাতবাসী করুন। এখন আমার পূর্বের ডাক্তার এবং রোগী নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতার আলোকে যদি "শার্লক হোমস" স্টাইলে কেস স্টাডি করি, তবে আমি যা যা পেলাম সেটা বর্ণনা করছি। তার হয়েছিল হেপাটাইটিস A, এটা হেপাটাইটিস B বা C এর মত মারাত্মক নয়, এটা খুবই কমন। ধারণা করি, এটা থেকে তার জন্ডিস হয়েছিল। আমাদের দেশে সাধারনত যে জন্ডিস হয়, তার বেশির ভাগ মূলত, এই হেপাটাইটিস A এর কারনেই হয়। তবে B এবং C এর কারনেও জন্ডিস হয়। জণ্ডিস কোন রোগ না, এটা রোগের উপসর্গ মাত্র। কারো জণ্ডিস হলে, প্রধানতম সিকিৎসা হচ্ছে, পুরাপুরি বেডরেস্টে থাকা, কারন এই সময় লিভার ঠিক মত কাজ করতে পারে না। তাই লিভারকে পুরা রেস্ট দিতে হবে। না হলে রক্তের বিলুরবিন বাড়তে থাকবে। এটা টক্সিক উপাদান। শরীর থেকে দ্রুত বের করে দিতে হয়। এই বিলুরবিন এর কারনেই আমাদের মল হলুদ হয়। যখন লিভার ভাল করে কাজ করতে পারে না, তখন এই বিলুরবিন রক্তে বাড়তে থাকে, ফলে আমাদের শরীর হলুদ হতে থাকে। এই জন্য পুরাপুরি বেড রেস্ট এ থেকে লিভারকে সুস্থ হবার সুযোগ করে দিতে হবে। এমনকি সামান্য নাড়াচাড়াও লিভারের উপর চাপ বাড়তে পারে। সাথে খাবার এর কিছু রেস্ট্রিকশন আছে, আর সাথে ওষুধ। আশা করা যায় রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে।
HERE-see this and be careful!
-
এই ভাইটি (Rayhan Sumon) -
Rayhan Sumon (Freelancer) ভাই. তিনি গলব্লাডার, হেপাটাইটিস এ, আর কিডনীর সমস্যায় চিকিৎস্যারত অবস্থায় ইন্তেকাল করেন।
"ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন"
-
আমরা যারা গ্রফিক্স ডিজাইনার ও ফ্রিল্যান্সার আমারা মাঝে-মধ্যে নামাজটাও জামাতের সহিত আদায় করতে পারিনা কাজের কারনে। কিন্তু আমরা ভুলে গেছি এ সময়টা কার দেওয়া এবং কার সাথে সময় নিয়ে অবহেলা করছি। আমাদের যেদিন যে যেখানে সময় ফুড়িয়ে যাবে সেদিন সে সময় আমাদের আর ১ সেকেন্ডও সময় দেওয়া হবেনা বাকি কাজ করার জন্য। আজ খবরটা শুনেই মনটা খারাপ হয়ে গেল।
-চলে গেলেন না ফেরার দেশে। অনেক ভাল একজন মানুষ। তিনি কত আশা করেছিলেন যে আর কটাদিন বেচে থাকবেন আমাদের মাঝে।
আমরা মরহুমের আত্নার মাগফেরাত কামনা করছি এবং মহান আল্লাহ এই পরিবারের সকল কে ধৈর্য্য ধারন করার তৌফিক দান করুন। - আমিন।
কিন্তু কেউ যদি এই অসুস্থ অবস্থায়ও কাজ করতে থাকে, তবে যেটা হবে, তার রাক্তের বিলুরবিন মারাত্মক হারে বেড়ে যাবে। রক্ত দূষিত হয়ে পড়বে। সময় মত চিকিৎসা না করলে, বেশি খারাপ অবস্থায় কিডনি বিকল হয়ে যেতে পারে। আর কিডনি একবার বিকল হলে, সেটা হার্ট এবং ফুসফুসের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। এবং রোগীর অবস্থা খুবই ক্রিটীক্যাল হয়ে যাবে। দেখা যাচ্ছে, উপরের সব কিছু তার সাথে মিলে যায়। হেপাটাইটিস A এর জীবানু আমাদের চারিদিকে গিজগিজ করছে। এটা বিশেষ করে খাবার পানির সাথে বেশি ছড়ায়। পানি যদি বিশুদ্ধ না হয় বা যদি ঠিকমত ফুটানো না হয় বা রোগীর পান করার পাত্রে যদি সুস্থ মানুষ পানি খায়, তবে সেও আক্রান্ত হতে পারে। এই জন্য বড় বড় শহরে, বিশেষ করে ঢাকায় জণ্ডিসের এত প্রকোপ। সামনে গরমকাল আসছে। এটার প্রাদুর্ভাব শুরু হবে। কারন আমারা অনেকেই রাস্তার ধারে অপরিছন্ন অবস্থায় আখের রস বা সরবত বেশি বেশি খাব।
আমি ধরানা করি তার শরীর আগে থেকেই বেশ খারাপ ছিল। সেই অবস্থাতেই তিনি পরিশ্রম করে গেছেন। গত জানুয়ারিতে তিনি তার নতুন অফিস খোলেন, এর আগে থেকেও তার অনলাইন ট্রেনিং প্রোগ্রাম চালু ছিল, সাথে ফ্রিল্যান্সিং এবং ইউটিউব চ্যানেল। মাত্র ২৩ বছর বয়সে অনেকে বেশি প্রেশার নিয়ে ফেলেছিলেন। এত ধকল তার শরীর নিতে পারেনি। আসলে
অনেক সময় পারিপার্শ্বিক কারনে চাইলেও বিরতি নেয়া যায় না। ফলে দেখা যায় অনেকেই হাঁসপাতালের বেডে শুয়ে, বায়ারের কাজ কর্ আবার ফেসবুকে ছবি দিয়ে টিউন দেয়। আমি মনে করি এই ধরনের টিউন দেয়া গর্বের নয়, লজ্জার। তার সম্পর্কে আমি এতক্ষণ যা বললাম, সেটা আমার ধারণা মাত্র। যারা তার কাছের মানুষ তারা এটা যাচাই করে বলবেন আমার ধারণা ঠিক আছে কিনা। তিনি পিতা মাতার একমাত্র সন্তান ছিলেন। এটা যে তারপরিবারের উপর কত বড় আঘাত সেটা বোঝাবার ভাষা আমার নেই। আল্লাহ্ তাঁদের এই শোক কাটিয়ে উঠার তৌফিক দিন।
আমার এক ঘনিষ্ঠ ফ্রিল্যন্সার বন্ধু গত বছর মারা যায়। তিনিও একটা অগোছালো অনিনন্ত্রিত জীবন যাপন করতেন। মাঝে মাঝে বুকে ব্যাথা করত, কোন গুরুত্ব দিতেন না। ফলাফল নিজের সন্তানের মুখটা না দেখেই, পৃথিবী থেকে বিদায়। প্রার্থনা করি এমন করুন পরিনতি যেন কারো না হয়। এই সব উদাহরণ দিয়ে আমি কাউকে ছোট করতে চাচ্ছি না। শুধু সবাইকে সাবধান করে দিতে চাচ্ছি। আমাদের সব ফ্রিল্যন্সার ভাই বোনদের এখনই সাবধান হওয়া উচিৎ। সবার একটা গোছানো জীবন যাপন করা উচিৎ। কাজের বেশি প্রেশার আশাকরি, তারা কিন্তু সবাই সপ্তাহে দুই দিন আরাম করে। এই সময় তারা কোন কাজ করে না। এমনকি মেইলেরও জবাব দেয় না। তাঁদের লাখ টাকা বাড়তি দিলেও, রাতে কাজ করবে না। অফিস টাইমের ৮ ঘণ্টা বাদে সাধারণত তারা, ওভারটাইম খুব একটা করে না। অথচ তাঁদের সাথে কাজ করে আমরা কত অনিয়ম করি।
জিওগ্রাফিকাল কারনে আমাদের রাত জেগে কাজ করতেই হয়। কারন আমাদের রাত তাঁদের দিন। ভাল্ হয় যদি আপনি রাত ১২ টা পরে ঘুমিয়ে পড়েন এবং ফজরের সময় উঠে নামাজ পড়ে কাজ শুরু করেন। এই সময় প্রোডাক্টিভিটি সর্বচ্চ থাকে। মানে অন্য সময় চার ঘন্টায় যা করবেন, এই সময় দুই ঘন্টাতেই তার থেকে বেশি কাজ করতে পারবেন। এটা বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমানিত। অনেকেই মনে করেন, রাত জেগে কাজ করলে মানুষ দ্রুত মারা যায়। এসব ভুল ধারণা, যুগ যুগ ধরে অনেক পেশার মানুষ আছে যাদের রাত জেগে কাজ করতেই হয়। তাহলে তারা সবাই অল্প বয়সে মারা যেত। তবে রাতে কাজ করলে কিছুটা হরমনাল ইম্ব্যালেন্স হয় এটা ঠিক। ফলে শরীরের কিছুটা ক্ষতি হতে পারে। তাই রাতে কাজ করে, দিনে যদি ঘুমাতেই হয়, তবে ঘর পুরাপুরি অন্ধকার এবং নিরিবিলি করে রাতের পরিবেশ সৃষ্টি করে ঘুমাতে হবে। এতে রাতের বেলায় আমাদের শরীরে, যে সব হরমোন সিক্রেশন হয়, দিনের বেলাতেও সেটাই হবে। ফলে রাত জাগার ক্ষতি অনেকটাই পুষিয়ে নেয়া সম্ভব। এটা আমার বানানো কোন কথা না, বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমানিত।
জীবনে টাকার দরকার আছে, কিন্তু তার অর্থ এই না যে, এই টাকা কামাতে যেয়ে আমাদের জীবনটাকে বিসর্জন দিতে হবে। আমরা যৌবনে অমানুষিক পরিশ্রম করে টাকা কামাই, আবার সেই টাকাই শেষ বয়সে খরচ করি জীবন বাঁচানোর জন্য। মাঝখান থেকে আমাদের জীবনটা বরবাদ হয়। কিছু কিছু রোগ আছে যেগুলো নিজেকে ফকির বানাবার পাশাপাশি পুরা পরিবারকেই ফকির বানিয়ে দেয়। যেমন কিডনি, হার্ট, লিভার ইত্যাদি রোগ। নিয়মিত সুস্থ জীবন যাপন আমাদের এই ধরনের রোগ থেকে অনেকটাই মুক্ত রাখতে পারে। এর পরেও যদি এই ধরনের রোগ হ্ তবে সেটা নিয়তির বিধান ধরে নিতে হবে। সবার উচিৎ বছরে অন্তত একবার ফুলবডি চেকাপ করানো। এতে বড় কোন রোগ হবার আগেই আগাম সতর্ক থাকা যাবে। ঢাকার বড় বড় হাঁসপাতালে ফুল বডি চেকআপ করার প্যাকেজ আছে। চাইলে পাশের দেশে গিয়েও চেকাপ করাতে পারেন। খরচ খুব একটা বেশি না। পাশাপাশি আমাদের নিজ নিজ ধর্মমত অনুযায়ী সবার ধর্মকর্ম পালন করা উচিৎ। এতে মন ভাল থাকবে কাজে আগ্রহ বাড়বে। নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম এবং ব্যায়াম শরীর ভাল রাখতে সাহায্য করবে।
আপনি ভাল থাকলে, আপনার পরিবারও ভাল থাকবে। একজন রেমিটেন্স যোদ্ধা দেশেরও সম্পদ। আশাকরি, নিজেকে সুস্থ রাখি।
ধন্যবাদ!
contact with me
উপকৃত হয়ে থাকলে চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে আসবেন
-
First published on: SylTechLab
তো আজকে এই পর্যন্তই.
ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন.
আল্লাহ হাফেজ!
আমি আল আমিন আরাফ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।