[মুখবন্ধঃ ইন্টারনেটে ফ্রীল্যান্স কাজ বা লেখালেখি করে আজকাল অনেকেই একটা নিয়মিত আয়ের সুযোগ করে নিয়েছেন। এই ফ্রীল্যান্স ফিল্ডে আমাদের অর্থাৎ বাংলাদেশের তুলনায় অনেক দেশ এগিয়ে আছে শুধুমাত্র একটি পরিষ্কার ধারণা ও গুছিয়ে কাজ করবার জন্য তাদের যথেষ্ট জ্ঞান থাকার কারণে। ফ্রীল্যান্স লেখালেখিতে কিছুটা সাফল্য পেয়ে আমার মনে হয়েছিল, এটি আমাদের তরুণদের জন্য একটি অপার সম্ভাবনাময় জগত উন্মোচিত করতে পারে। আর তাই প্রায় ২-৩ বছর আগে আমার মাত্র ৪-৫ মাস অভিজ্ঞতার আলোকে একটি আর্টিকেল লিখেছিলাম। তখন আমি একের পর এক ব্লগে নিবন্ধন করে চলেছি, বিভিন্ন ছদ্মনামে। আর প্রায় প্রত্যেকটি ব্লগেই আমি এই লেখাটা পোস্ট করেছিলাম। পরে কয়েকটি ব্লগে একই আর্টিকেল পুনরায় লিখার জন্য কয়েকজনের কাছে রীতিমত তিরস্কৃত হই। টেকটিউনস একটি অন্যরকম জগত। আমি মনে করি আমার ঐ লেখাটি এখানে দিলে একই অপরাধে আমাকে দণ্ডিত হতে হবে না। আরেকটি ব্যাপার, এখানের অনেক কিছু লিখা আছে যা অনেক পাঠকেরই জানা, তবে নতুনদের জন্য অজানা হতে পারে, লেখাটি ২-৩ বছর আগে লিখা - এটি বিবেচনায় রাখতে অনুরোধ করা হল]
__________________________________________________________________________________________________________________________________________
ই-কমার্স বা অনলাইন বিজনেস সম্পর্কে আমরা সবাই হয়তো কিছু না কিছু জানি। কিন্তু, ইন্টারনেটের বদৌলতে আমাদের নিজস্ব সৃজনশীল প্রতিভাকে আমরা কিভাবে কাজে লাগাতে পারি, সে সম্পর্কে আমরা অনেকেই মোটেই সচেতন নই। আপনি কি জানেন, কোনরকম দৈহিক পরিশ্রম বা পুঁজি ছাড়াই শুধুমাত্র আপনার মেধা ও মননকে কাজে লাগিয়ে আপনি ঘরে বসেই মোটামুটি সম্মানজনক একটা আয় করতে পারেন? এই আয় হতে পারে আপনার প্রধান আয়ের চেয়ে অনেকগুন বেশি। আপনি যদি একজন কম্পিউটার/সফটওয়ার্ প্রোগ্রামার, গ্রাফিক ডিজাইনার, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর অথবা ওয়েব ডেভেলপার হয়ে থাকেন, তাহলে ইন্টারনেট কর্মসংস্থান সাম্রাজ্যের অনেকটাই আপনার। মাসিক ভিত্তিতে আপনার জন্য হাজার কিংবা লাখ ডলারের কাজ আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। ওয়েবে যেয়ে খুঁজলেই আপনি পেয়ে যাবেন এই অফুরন্ত সম্ভবনা। কিভাবে? একজন দক্ষ কম্পিউটার ব্যবহারকারী হিসেবে সেকথা আপনাকে বলা বাহুল্য। এই লেখাটি যেহেতু সাধারণ কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের জন্য লেখা, আমাদের বিষয়বস্তুটি কিছুটা ভিন্ন।
লেখালেখির কাজ আমরা অনেকেই করে থাকি। কেউ হয়তো নিতান্তই আত্ত্বিক বা মানসিক পরিতৃপ্তির জন্যই লিখে থাকি। কেউ হয়তো কাগজে বা ম্যাগাজিনে এই লেখালেখির মাধ্যমে কিছুটা উপার্জনও করি। কিন্তু আপনি জানেন কি, ইন্টারনেটে লেখকদের জন্য রয়েছে এক অমিত সম্ভবনা। শুধুমাত্র কয়েকশ শব্দের বিনিময়ে আপনি প্রতিদিন আয় করতে পারেন বেশ কিছু ডলার। ইন্টারনেটে মেধাভিত্তিক কাজের মাধ্যমে ঘরে বসে যারা আয় করতে উৎসাহী, তাদের অনেকই জানেন না কোথায় শুরু করতে হবে। যারা লেখক হিসেবে এই সুযোগটি কাজে লাগাতে চান, তাদের অবস্থাও একই রকম। আমি এই শুরু করা সম্পর্কেই কিছু কথা বলব। তার আগে, আসুন জেনে নেই কি ধরনের কাজ আপনার জন্য এই সম্ভাবনাময় জগতে অপেক্ষা করছে।
ইন্টারনেটের লেখকদের জগত মূলতঃ দুটি ভাগে বিভক্ত। প্রথমটি পেশাদার লেখকদের জন্য আর অপরটি ফ্রীল্যান্স লেখকদের। দুটি জগতেই রয়েছে নিম্নলিখিত ধরনের কাজঃ
আপনি যদি পেশাদার লেখক হন, তাহলে বেশ কয়েকটি ওয়েবসাইটে আপনি সদস্য হয়ে লিখতে পারেন। এখানে আপনাকে নির্দিষ্ট চুক্তির অধীনে কাজ করতে হবে আর আপনাকে কিছু বিষয়ে সম্যক জ্ঞান রাখতে হবে, যেমনঃ
পেশাদার লেখার কাজটা একটু জটিল এবং এর বাধ্যবাধকতাও অনেক। তবে পেশাদার লেখকদের সম্মানীর পরিমাণটাও বহুলাংশে বেশি।
অপরদিকে আপনি যদি নিতান্তই একজন সাধারণ বা ফ্রীল্যান্স লেখক হয়ে থাকেন, ইন্টারনেটে আপনার জন্য আছে বিস্তর কাজ। আসুন জেনে নেই, কোথায় এবং কিভাবে আপনি এই বিশাল জগতে পা বাড়াবেন।
ফ্রীল্যান্স লেখকদের জন্য বেশ কিছু ওয়েবসাইট আছে যা মূলতঃ article directories হিসেবে পরিচিত। ফ্রীল্যান্স লেখকদের জন্য বেশ কিছু ওয়েবসাইট আছে যা মূলতঃ article directories হিসেবে পরিচিত। Ezine Articles, Google Knol, ArticleDashboard, Article Pros, Article Directory, Triond ইত্যাদি এমন কিছু সাইট। এখানে আপনি আপনার পছন্দের বিষয়ভিত্তিক লেখা জমা দিয়ে পারিশ্রমিক পেতে পারেন। এই পারিশ্রমিক হতে পারে সরাসরি কিংবা কোন affiliate program এর আওতাভূক্ত। যেমন, আপনি যদি ডিজিটাল ক্যামেরা নিয়ে একটি আর্টিকেল লিখেন এবং ওয়েবসাইটে আপলোড করেন তাহলে হয়তো একই ওয়েব পেইজে Google AdSense এর মত কিছু সম্পর্কিত বিজ্ঞাপন (contextual ad) ভেসে উঠবে। আপনার লেখা পড়তে পড়তে কোন পাঠক যখন ঐ বিজ্ঞাপনগুলো click করবে তখন sponsor ওয়েবসাইট এবং সেখানে বিজ্ঞাপনদাতা উভয়েই একটি নির্দিষ্ট অংকের অর্থ আয় করবে। এই বিজ্ঞাপনের আয়ের কিছু লভ্যাংশ আপনি পেয়ে যাবেন। তবে জেনে রাখা ভাল, এ ধরনের ফ্রীল্যান্স লেখার মাধ্যমে আয়ের পরিমাণ সাধারণতঃ কম হয়ে থাকে।
ফ্রীল্যান্স লেখকদের জন্য আমার মতে সবচেয়ে লাভজনক হল online writing bid বা লেখালেখির নিলাম। তবে এই নিলামের শর্ত প্রচলিত নিলামের মত কঠিন নিয়মের বেড়াজালে আবদ্ধ নয়। ব্যাপারটা একটু স্পষ্ট করে বলি।
ধরা যাক, আপনি একজন ফ্রীল্যান্স লেখক (রচনা/লেখা বিক্রেতা) এই নিলামের একটি ওয়েবসাইটে গিয়েছেন এবং registered user (সাধারণতঃ ফ্রী) হয়েছেন। এখানে আপনি পাবেন বিভিন্ন গ্রাহক বা ক্রেতার দেয়া লেখালেখি সম্পর্কিত অনেক প্রজেক্ট। যেকোন একটি প্রজেক্ট ক্লিক করলে আপনি সাধারণতঃ নিচের বর্ণনাগুলো পাবেনঃ
প্রজেক্টের শর্তাবলী যদি আপনার পছন্দ হয় তাহলে আপনি এখন বিড করবেন। ধরা যাক আপনি digital camera এর উপর একটি আর্টিকেল পছন্দ করেছেন। এই লেখাটি আপনি ১ দিনের মধ্যে লিখতে পারবেন। তাহলে বিড অপশনে গিয়ে আপনি ৫ ডলারে ১ দিনের মধ্যে আর্টিকেলটির জন্য বিড করুন। গ্রাহক যদি আপনার লেখার নমুনা এবং বিড পছন্দ করে তাহলে আপনি পেয়ে যাবেন কাজটি। একদিনের মধ্যে লিখে ফেলুন চমৎকার একটি লেখা আর তা জমা দিয়ে আয় করে নিন ৫ ডলার।
- ওয়েবসাইটের পেমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে। গ্রাহক আপনার পাওনা ওয়েবসাইটে আপনার একাউন্টে জমা করবে, যা আপনি বিভিন্ন প্রচলিত money transfer অপশনের মাধ্যমে (যেমন PayPal, Moneybookers, Wire Transfer, Cheque) আপনার ব্যাংক একাউন্টে স্থানান্তর করতে পারবেন।
- ওয়েবসাইটের সিস্টেমের বাইরে যেয়ে সরাসরি PayPal, Moneybookers ইত্যাদির মাধ্যমে।
অনলাইন বিড এর জন্য সাইটসমূহ
আর বসে থাকা কেন? নেমে পড়ুন আপনার এক নতুন অর্থবহ (এবং অর্থকরীও বটে!) যাত্রায়। বছর ঘুরে আসার আগেই হয়ে যান একজন নিয়মিত অনলাইন লেখক আর আয় করতে থাকুন অতিরিক্ত কিছু টাকা।
পরবর্তী লেখায় উপরের সাইটগুলোর কিছু বিশেষত্ব তুলে ধরতে চেষ্টা করব।
__________________________________________________________________________________________________________________________________________
[পরিশিষ্টঃ এই আর্টিকেলটি বিডিনিউজ২৪ এর বাংলা ব্লগে লিখেছিলাম মুক্তচিন্তা নামে, আমাদের প্রযুক্তি ফোরামে লিখেছিলাম আমিনেই নামে আর প্রজন্ম ফোরামে লিখেছিলাম বাংলাআমারদেশ নামে। কিন্তু আজ লেখাটি সার্চ দিতে যেয়ে দেখি ভয়ংকর অবস্থা। আমার লেখাটি Ctrl+C ও Ctrl+V হয়েঃ অনলাইনফরআর্নিং নামে একটি ব্লগে দুটি ভাগে ভাগ করে এখানে ও এখানে পোস্ট করা হয়েছে। রংমহল ফোরামে ভবঘুরে নামের একজন পোস্ট করেছেন এখানে। Me-Mine নামের ব্লগে একজন পোস্ট করেছেন এখানে। ইফতি নামে একজন আড্ডা ব্লগে লিখেছেন এখানে। একমাত্র নিয়াম নামে একজন বিডিঅনলাইন২৪ব্লগ এ এখানে পোস্টটি দিয়ে উল্লেখ করেছেন যে তার কাছে ভাল লাগার কারণে তিনি এটা শেয়ার করলেন। আমার আসলে কোনটাতেই আপত্তি নেই। আমি চাই আমার জানা-টুকু ছড়িয়ে যাক আমার দেশের মানুষের মাঝে]
আমি মোহাম্মদ ইউসুফ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 15 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 96 টি টিউন ও 1053 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
ইচ্ছা আছে সবাইকে নিয়ে রিভিউ লেখার জন্য একটা সাইট করা। খসড়া দাড় করিয়েছি। পরীক্ষার জন্য আপাতত বিরতি। দেখা যাক পরীক্ষার পর কি করা যায়।
পোস্টটা আমার কাজে লাগবে। ধন্যবাদ।