যে বা যিনি কোন একটি ব্লগে নিয়মিত লেখালেখি করেন, তাকেই আমরা ব্লগার হিসেবে আখ্যায়িত করতে পারি। ব্লগিং শব্দটি ইদানিং ইন্টারনেটের বহুল আলোচিত একটি শব্দ। আর হবেই বা না কেন! কেননা, ইন্টারনেট এর বিশাল তথ্য ভাণ্ডার যে মুলত সমৃদ্ধ হচ্ছে এই ব্লগারদের কল্যাণেই!
অজানাকে জানার মাধ্যমে, তথ্যকে আরও সুশৃঙ্খলভাবে অন্যদের সামনে উপস্থাপন, মানুষের প্রয়োজন, সমস্যা প্রভৃতি মেটানো, নিজেকে উন্নত করা, নিজের জ্ঞান ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি নিজের লেখাকে আরও সুন্দর ও যৌক্তিক উপস্থাপন তথা একটি মিডিয়া ম্যানেজ করা ইত্যাদি যাবতীয় কাজ একজন ব্লগার করে থাকেন। তিনি একাধারে, একজন লেখক, ওয়েব ডিজাইন সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান রাখেন, ব্লগ মার্কেটিং এবং প্রোমোশন করে থাকেন, নিজের ব্লগের এর মাধ্যমে একটি নিজের একটি আয়ের মাধ্যম তৈরি করে স্বাধীন পেশা নির্বাহ করে থাকেন।
একজন ব্লগার মুলত প্রতিনিয়ত জ্ঞান চর্চায় নিজেকে জড়িত রাখেন। অন্যদিকে, নিজের অর্জিত জ্ঞান তার পাঠক(reader) এর সাথে শেয়ার করে নেন।
আমরা যে ফেসবুকে স্ট্যাটাস লিখি, টুইটারে টুইট করি কিংবা গুগোল প্লাসে যেসব লিখা লিখি সবই ব্লগিং এর আওতাভুক্ত।
প্রফেশনাল ব্লগিং মূলত কি?
আমরা তো ফেসবুক, টুইটার, গুগোল প্লাসসহ বিভিন্ন সোসাইল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলোতে যেসব লিখা লিখি তা মূলত আমাদের নিজেদের ব্যক্তিগত সন্তুষ্টির জন্য। কেউ একটা লাইক দিলো কিনা, কেউ একটা স্ট্যাটাস শেয়ার করলো কিনা ইত্যাদি বিষয় নিয়েই আমরা সন্তুষ্ট থাকি। এখানে, ব্লগিং নিয়ে ক্যারিয়ার গড়া কিংবা অর্থোপার্জন এর কোন প্রচেষ্টা থাকে না।
কিন্তু যখন, আপনি একটা ব্লগ/ওয়েবসাইট প্রতিষ্ঠা করতে চাইবেন, এর ব্র্যান্ড নেম চাইবেন, এর পপুলারিটি চাইবেন, আপনার একেকটি লেখার প্রচুর রিডার চাইবেন এবং সবকিছু আপনি উপস্থাপন করবেন যথাসম্ভব সুন্দর, সাবলীল এবং নিয়ম মেনে আপনি নিয়মিত লিখে যাবেন সর্বোপরি, আপনি আপনার ব্লগিং থেকে একটি আয়ের মাধ্যম বের করে নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবেন, তখনি আপনি প্রফেশনাল ব্লগিং এর কথা ভাবছেন।
যদি ব্লগিং কে প্রফেশন হিসেবে নিতে চান, কিংবা একজন প্রোব্লগার(Problogger) হতে চান, তবে আপনাকে শিখতে হবে ব্লগিং এর আর্ট! ব্লগিং হল এমন একটি কাজ যেখানে, জ্ঞান চর্চা চলে অবিরত। এখানে, জ্ঞান অর্জন এবং তা ব্লগারএর ভিজিটরদের সাথে শেয়ার করে নেয়া...এই হল কাজ।
আপনি যেহেতু এই টিউন পড়ছেন, তার মানে হয়তোবা ব্লগিং নিয়ে আপনার মাঝে ইন্টারেস্ট আছে কিংবা তৈরি হচ্ছে। নিম্মে, প্রফেশনাল ব্লগিং এ সফলতার জন্য ১২ টি মূল মন্ত্রের কথা উল্লেখ করা হল। আশা করি, আপনার আগ্রহ মেটানোর ক্ষেত্রে এগুলো সহায়ক হবে।
প্রফেশনাল ব্লগার হতে ১২ টি মূলমন্ত্র
১। স্বতঃস্ফূর্ত লেখার ক্ষমতা
লেখালেখি হল একটি ব্লগের প্রধান কাঁচামাল। আমরা যদি কোন একটি কারখানার দিকে লক্ষ্য করি, তবে দেখা যাবে, তারা তাদের পণ্য উৎপাদন এর জন্য বিভিন্ন ধরণের কাঁচামাল ব্যবহার করছে। যেমন, কাগজ উৎপাদনের ফ্যাক্টরি কাগজ বাঁশ, পাট বা খড় প্রক্রিয়াকরণ এর মাধ্যমে কাগজ উৎপাদন করছে এবং তা বাজারে সরবারাহের উপযোগী করে বিক্রি করছে। ঠিক তেমনি, একটি ব্লগের প্রধান কাঁচামাল হল, এর লেখা। তাই, আপনি যদি আপনার ব্লগটিকে জনপ্রিয় করতে চান এবং এর সফলতা চান, তবে এতে সুন্দর সুন্দর লেখা প্রকাশ করতে হবে।
আপনার লেখা পড়ে আপনার পাঠকেরা উপকৃত হবে, আনন্দিত হবে অথবা তাদের কোন একটি সমস্যার সমাধান পাবে। এর ফলে, সে আপনার ব্লগটি বুকমার্ক করে রাখতে পারে যেন ভবিষ্যতে সে আবার আপনার ব্লগে আসতে পারে।
এছাড়া, আপনার ব্লগটি যদি তাকে আরও বেশি মুগ্ধ করতে পারে, এমনও হতে পারে, সে তার বন্ধুদের ও এই ব্লগ এর ব্যাপারে জানাতে পারে। এতে আপনি ভিজিটর এর কাছ থেকে রেফারেল ভিজিটর পাবেন।
এভাবে, আপনার ব্লগের জনপ্রিয়তা ক্রমাগত বাড়তে থাকবে। আর, এইসব হবে তখনি, যখন আপনি সুন্দর সুন্দর লেখা আপনার ব্লগের পাঠকদের উপহার দিতে পারবেন।
সুন্দর সুন্দর লেখা পাঠকদের উপহার দিতে, আপনার থাকতে হবে সুন্দর সুন্দর আর্টিকেল লেখার ক্ষমতা। সুন্দর সুন্দর আর্টিকেল লেখার ক্ষমতা এক-দুই দিনে জন্মায় না! এর জন্য প্রয়োজনঃ
উপরের ৫ টি বিষয়ের উপর যদি আপনার দক্ষতা থাকে, তবে আপনি আপনার ব্লগের পাঠকের জন্য সুন্দর সুন্দর লেখা উপহার দিতে পারবেন।
লেখালেখির দক্ষতা বৃদ্ধিকল্পে নিম্মে কিছু টিপস দেয়া হলঃ
লেখালেখি সম্পর্কে আরও জানতে চাইলে পড়তে পারেন নিচের টিউনগুলো...
২। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন সম্পর্কে জ্ঞান
বর্তমানে ইন্টারনেট এর বস(Boss) বলা হয়ে থাকে গুগলকে। আর গুগোল এর এতো জনপ্রিয়তার মূল কেন্দ্রে যে বিষয়টি তা হল সার্চিং। গুগোল এর মতো আর দুটি সার্চ ইঞ্জিন হচ্ছে ইয়াহু এবং বিং। এরা দুটি মিলেও গুগোল এর জনপ্রিয়তার ধারে কাছেও নেই। কারন কি? কারন হচ্ছে, গুগোল সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সার্চ রেজাল্ট প্রদান করে।
ব্লগিং এ সফল হতে চাইলে, আপনাকে গুরুত্ব প্রদান করতে হবে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর উপর। আসলে, আমরা বলবো যে, গুগোল অপটিমাইজেশন এর উপর! কেননা, আপনি যদি গুগল এ ভালো পজিশন পান, তবে অন্যগুলিতে ও পাবেন।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন হল আপনার ব্লগের কন্টেন্ট এবং অন্যান্য ফ্যাক্টরগুলি সার্চ ইঞ্জিন ফ্রেন্ডলি করা।
সার্চ ইঞ্জিন এর প্রধান ফ্যাক্টরগুলি হচ্ছে...
উপরের ফ্যাক্টরগুলিকে প্রধান বলার কারন হচ্ছে, এগুলো আপনাকে নিয়মিত করে যেতে হবে। অন্যদিকে আরও কিছু বিষয় আছে, যেগুলো নিম্মে একসাথে উপস্থাপন করা হল।
এসইও এর উপর পরবর্তী লেখাসমুহে উপরোক্ত বিষয়সমূহ এর ব্যাখ্যা প্রদান করা হবে। প্রফেশনাল ব্লগার হওয়ার জন্য উপরোক্ত বিষয়সমুহে যথেষ্ট জ্ঞান থাকা আবশ্যক।
এ সম্পর্কে আরও পড়তে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন নিচের টিউনটি থেকে...
৩। ওয়েব ডিজাইন সম্পর্কে জ্ঞান
একজন ব্লগারের ওয়েব ডিজাইন সম্পর্কে জ্ঞান থাকাও আবশ্যক। কেননা, এর ফলে সে নিজেই নিজের ব্লগ ডিজাইন করে ফেলতে পারবে আর ব্লগের ডিজাইন বাবদ খরচ কমাতে পারবে।
তাছাড়া, নিজে ডিজাইন করতে না চাইলেও ডিজাইন সম্পর্কে জ্ঞান থাকলে অন্য কাউকে দিয়ে কাজ করানোর সময় সে কেমন ব্লগ ডিজাইন চায় এবং কিরকম তা আদায় করে নিতে পারবে। ব্লগ ডিজাইনার ও যদি জানে যে, যার কাজ করছেন, তিনি ডিজাইন সম্পর্কে অভিজ্ঞ। তাহলে, ডিজাইনার ও ব্লগ ডিজাইন এর সময় সতর্ক থেকে কাজ করবেন।
ব্লগ ডিজাইন এর সময়ে যা লক্ষ্য রাখা উচিতঃ
৪। অথরশিপ প্রতিষ্ঠা
একজন ব্লগার তার ব্লগে লিখে থাকেন। একজন ব্লগার মূলত তার ব্লগে কন্টেন্ট আপডেট করে থাকেন। তিনি নিত্য নতুন নতুন লেখা লিখে তার ব্লগে পাবলিশ করে থাকেন। পুরনো লিখাগুলো পরিমার্জন(প্রয়োজন লাগলে) করে আপডেট করে থাকেন। যাই লিখেন না কেন, লিখাগুলো মূলত তার অথোরিটি প্রতিষ্ঠা করে থাকে। ওই ব্লগের ভিজিটররা তার লিখা পড়ে মুগ্ধ কিংবা বিরক্তবোধ(!) করে থাকেন।
আমরা জানি যে, সুন্দর সুন্দর লেখা উপস্থাপন করতে পারলে, ভিজিটরদের মুগ্ধ করা যায় এবং তাদের বিশ্বাস অর্জন করে তাদেরকে ব্লগে ধরে রাখা যায়।
সুন্দর সুন্দর লেখার মাধ্যমে, একজন ব্লগার মূলত তার অথোরিটি প্রতিষ্ঠা করেন। যেমনঃ আমাদের হুমায়ূন আহমেদ তার লিখার মাধ্যমে তার নিজস্ব অথোরিটি প্রতিষ্ঠা করে গিয়েছেন। কেউ যদি হুমায়ূন আহমেদ এর ৩-৪ টি বই পড়ে, তাহলে সে সহজেই হুমায়ূন আহমেদ এর লেখার যে ছন্দ রয়েছে তার ভেতরে প্রবেশ করতে পারবে এবং পরবর্তীতে যদি সে হুমায়ূন আহমেদ এর আরেকটি বই পড়ে, তাহলে সে কিরকম লেখা আশা করবে?
কোন পাঠক আপনাকে দেখেনা। দেখলেও বড়জোর, আপনার একটা ছবি হয়তো দেখে থাকবে। যাইহোক, আপনার ব্লগের লেখা আপনাকে তার কাছে অন্যরকম মাত্রায় উপস্থাপন করতে যথেষ্ট।
আপনার লেখার ছন্দ, তথ্য উপস্থাপন এর পদ্ধতি, কোন বিষয় এর সহজবোধ্য ব্যাখ্যা, লেখার ভেতর চিত্র কিংবা গ্রাফিক্স এর ব্যবহার প্রভৃতি বিষয় আপনাকে আপনার ব্লগের পাঠকবর্গের কাছে একটা মাত্রায় উপস্থাপন করে। আর এই উপস্থাপন এর মাধ্যমেই আপনার অথোরিটি প্রকাশ এবং প্রতিষ্ঠা পায়।
৫। পাঠকের আস্থা অর্জন
যদি আপনি শক্ত অথরশিপ অর্জন করতে পারেন, তবে সহজেই পাঠকের আস্থাও অর্জন করে নিতে পারবেন। পাঠকের আস্থা আপনার ব্লগিং এর জন্য জরুরী।
পাঠকের আস্থা অর্জন আরও বেশি জরুরী যখন আপনি ব্লগিং এর উপর আপনার ক্যারিয়ার কিংবা ব্লগিং দিয়ে আপনার আয়ের একটা মাধ্যম গড়ে তুলতে চান। পাঠক যদি আপনার উপর নির্ভর করতে পারে, তবে সে শুধু নিজেই না, তার বন্ধু-বান্ধব তথা পরিচিত জগতেও আপনাকে উপস্থাপন করতে পারে, আপনার লেখা উপস্থাপন করতে পারে। এর ফলে আপনি আরও নতুন নতুন ভিজিটর/রিডার/পাঠক পাবেন।
অন্যদিকে, নতুন নতুন পাঠকের আস্থা অর্জনের মাধ্যমে আপনার ব্লগের জনপ্রিয়তা তথা ভিজিটর বাড়াতে পারবেন। যার অর্থ হল, আপনার ব্লগিং সফলতা। কেননা, ভালো লেখা যেমন একটি ব্লগের খুঁটি, তেমনি ভিজিটর হল আপনার ব্লগের প্রান। প্রান না থাকলে কঙ্কাল এর কি দাম আছে!!!
৬। লেখার জন্য সময় নির্ধারণ থাকা
ব্লগিং সফলতার জন্য নির্ধারিত সময়ে ব্লগের জন্য কাজ করাই উত্তম।
দেখা গেলো, সকালে একটি টিউন করলেন, পরের দিন বিকেলে একটা, এরপর তিন দিন আর কোন খবর নিলেন না ব্লগের, তাহলে ব্লগিং টা না করাই ভালো আপনার জন্য! কেননা, এভাবে আপনার সফল হতে সময় নিবে, আর আপনি নিজেই বিরক্ত হবেন।
যদি প্রফেশনাল ব্লগার হতে চান, তবে দিনের একটা সময় স্থির করুন। ওই স্থির করা/সেট করা সময়ে, আপনি আপনার ব্লগের জন্য কাজ করবেন।
৭। ব্লগের তথ্য উপস্থাপন
আপনার ব্লগটি তথ্য সমৃদ্ধ কিনা, তা অনেক গুরুত্ব বহন করে। বড় বড় ব্লগগুলি প্রচুর ভিজিটর পাচ্ছে এবং অর্থ ও উপার্জন করছে। এর একমাত্র কারন হল, তাদের সমৃদ্ধ তথ্য ভাণ্ডার।
আপনার নিস বা ব্লগের লেখার বিষয়বস্তু যাইহোক না কেন, তার উপর যথেষ্ট কন্টেন্ট আপনার ব্লগে আছে কিনা, তা আপনাকে লক্ষ্য রাখতে হবে। না থাকলে তৈরি করতে হবে। আপনি যদি আপনার ব্লগটাকে তথ্য সমৃদ্ধ করতে পারেন, তবে পাঠকের আস্থা অর্জনের মাধ্যমে অথোরিটি প্রতিষ্ঠা করতে পারেবেন। আর এর ফলে, আপনার ভিজিটর বাড়বে এবং ভিজিটর বাড়লে আপনার ব্লগের জনপ্রিয়তা বাড়বে, আয় বাড়বে।
আপনি যদি আপনার লেখা গুছানো, সুন্দর সুন্দর মানানসই চিত্র ও টেবিল ব্যবহার, পয়েন্ট আকারে আপনার লেখার বডি অংশ বর্ণনা করেন, যা আপনার পাঠকের কাছে আকর্ষণীয় এবং তথ্যবহুল মনে হয়, তবে আপনি সহজেই আপনার লেখা দিয়ে পাঠকের মন জয় করে নিতে পারবেন।
পাঠকের মন জয় করতে পারলে, সার্চ ইঞ্জিন এর মন ও জয় করতে পারবেন। ফলে, পাঠক এবং সার্চ ইঞ্জিন উভয়ই আপনার ব্লগে নতুন ভিজিটর পাঠাবে।
৮। নিশ নির্বাচন
নিশ নির্বাচন হল আপনার ব্লগের লেখার বিষয়বস্তু নির্বাচন। ইন্টারনেট হল বিশাল এক জগত যেখানে, নানারকম তথ্য, উপাত্ত থাকে। নানা ধরণের ব্লগার বিভিন্ন বিষয়ের উপর লিখে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। কেউবা আবার থমকে যাচ্ছে অনেক সময়।
আপনি যদি সঠিকভাবে আপনার নিশ নির্বাচন করতে না পারেন, তবে থমকে যেতে হতে পারে যেকোনো সময়। কেননা, ব্লগে লিখার বিষয়বস্তু যদি আপনার সাথে মানানসই না হয়, তাহলে আপনার আগ্রহ দিন দিন কমে যাবে। আর যদি লিখাতে আগ্রহ কমে যায়, তবে কয়টি লিখাই আর লিখতে পারবেন বলুন?
ব্লগে লিখার বিষয়বস্তু নির্বাচন করার পূর্বে, আগে চিন্তা-ভাবনা করে নিন যে, আপনি কোন বিষয়ে লিখতে অধিক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে থাকেন। এমন একটি বিষয় নির্বাচন করুন, যার উপর লিখতে আপনার নিজেরও ভালো লাগে এবং এর উপর ভিজিটরও ভালো আছে। বিষয় এমন যদি এমন হয়, ভিজিটররা সার্চ করে কম, কিন্তু আপনার আগ্রহ অনেক, তাহলেও প্রব্লেম।
সুতরাং, গুগোল এডওয়ার্ড টুলস এর মাধ্যমে দেখে নিন, আপনি যে বিষয় নিয়ে লিখবেন ভাবছেন, তার কিওয়ার্ডগুলি গুগোল প্রতিমাসে সার্চ হচ্ছে কেমন, সিপিসি কেমন এবং এর কম্পিটেসন কেমন। নিশ নির্বাচন নিয়ে আরও লিখা সামনে আসছে।
৯। মূল্যবান কন্টেন্ট তৈরি
একটা ব্লগের লিখাগুলিই মূলত ব্লগটাকে তার ভিজিটর এর সামনে উপস্থাপন করে থাকে। তাই, একজন প্রফেশনাল ব্লগার এর মূল লক্ষ্য এরকম হওয়া উচিত যে, সে তার ব্লগের কন্টেন্টগুলো যতটা সম্ভব মূল্যবান তথা ভালো লেখা হিসেবে উপস্থাপন করবে। অর্থাৎ, ভালো ভালো কন্টেন্ট তৈরি করবে।
একজন ব্লগার মুলত দুই ধরণের লিখা লিখে থাকেন...
রেগুলার টিউনঃ রেগুলার টিউনগুলো ৫০০-৮০০ শব্দের মধ্যে হয়ে থাকে। রেগুলার টিউন এর মাধ্যমে, একজন ব্লগার তার ভিজিটরদের নিয়মিত লিখা আপডেট দিয়ে থাকেন। কোন ক্ষুদ্র বিষয়ে তথ্য উপস্থাপন করেন অথবা কোন একটি বিষয়ে মোটামুটি সম্পূর্ণ ধারণা প্রকাশ করার চেষ্টা করে থাকেন।
পিলার টিউনঃ পিলার টিউনগুলো ২০০০-৫০০০ শব্দের মধ্যে হয়ে থাকে। এধরেনর টিউনকে কিলার আর্টিকেল ও বলা হয়ে থাকে। এই কিলার আর্টিকেলগুলো একটি ব্লগের খুঁটি(pillar) এর মতো কাজ করে থাকে। তাই এদেরকে পিলার টিউন বলে। এরা, কোন একটি বিষয়ে প্রায় প্রয়োজনীয় সবধরণের তথ্য বিশদাকারে উপস্থাপন করে। এধরণের টিউনগুলো পাঠকপ্রিয়তা পায় বেশি এবং শেয়ার ও হয় বেশি। অর্থাৎ, রিডার এনগেজমেনট পাওয়া যায় বেশি।
তাছাড়া, এধরণের টিউন দ্বারা ব্যাকলিঙ্ক অর্জন করা সম্ভব হয়। ভালো ব্যাকলিঙ্ক সার্চ ইঞ্জিন রেঙ্কিং পেতে খুবই সহায়ক।
রেগুলার টিউন হোক, কিংবা পিলার টিউন, একজন প্রফেশনাল ব্লগারের সব ধরণের টিউন লেখার ক্ষেত্রেই নিজস্ব স্বকীয়তা, দক্ষতা, সৃজনশীলতা প্রভৃতি বিষয় তুলে ধরতে হবে।
১০। নুন্যতম খরচ নির্বাহ
আমরা এতক্ষন একটি ব্লগের বিভিন্ন বিষয় এ একজন ব্লগার এর নিজস্ব দক্ষতা বৃদ্ধি এবং প্রদর্শন সম্পর্কিত তথ্য পেলাম। এর পরিচালনা সংক্রান্ত কিছু খরচ রয়েছে। এবার, সেগুলো আমাদের জানা দরকার।
একটি ব্লগ মূলত একটি ওয়েবসাইট। একটি ওয়েবসাইট দুইভাবে চালানো যায়...
ফ্রিঃ ফ্রি ব্লগিং করতে চাইলে, আপনাকে গুগোল এর ব্লগস্পট, অথবা ওয়ার্ডপ্রেস এর সাবডোমেইন সাইট এর উপর নির্ভর করতে হবে।
অর্থ খরচ করেঃ এ ক্ষেত্রে আপনাকে একটি ডোমেইন নিতে হবে। এক বছরের জন্য খরচ পড়বে ৮০০-১২০০ টাকা(Domain Cost) এবং একটি হোষ্টিং প্লান(Hosting Cost-1000-2000) ও নিতে হবে। সাধারণত, প্রাথমিক অবস্থায় শুরু করার জন্য ১০০০-১৫০০ টাকা এর ব্যয় হবে।
১১। অর্থ উপার্জন
আপনার ব্লগ যখন যথেষ্ট পাঠকপ্রিয়তা পাবে, তখন আপনি এর থেকে একটি আয়ের সোর্স তৈরি করে নিতে পারবেন। একটি ব্লগ থেকে বিভিন্ন উপায়ে অর্থ উপার্জন করা যায়...
উপরোক্ত, উপায় ছাড়া আরও অনেক উপায় রয়েছে। তবে, উপরের সিস্টেমগুলো বেশি নির্ভরযোগ্য।
১২। নিয়মিত লেখালেখি করা
এতক্ষণের আলোচনায়, এই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, লেখা হল একটি ব্লগের প্রধান কাঁচামাল।
সুতরাং, যদি আপনি সত্যি সত্যিই একজন প্রফেশনাল ব্লগার হতে চান এবং ব্লগিং থেকে আয় করতে চান, তবে, আপনাকে আপনার ব্লগের জন্য নিয়মিত লিখে যেতে হবে। নিয়মিত টিউন দিতে পারলে, আপনি সার্চ ইঞ্জিন রেঙ্কিং এ ও সুবিধা পাবেন। অন্যদিকে, আপনার ব্লগের ভিজিটরদের কাছেও অধিক ট্রাস্ট অর্জন করতে পারবেন।
১৩। অভারভিউ
আমরা এতক্ষন প্রফেশনাল ব্লগিং এর ১২ টি মূলমন্ত্র আলোচনা করলাম। আলোচনাগুলো বিস্তারিত করার সুযোগ না পেলেও, স্বল্প পরিধিতে যতটুকু সম্ভব আলোচনা করা হয়েছে এবং এসব বিষয়ের উপর বিস্তারিত টিউন ও থাকছে।
যাইহোক, এখন আমরা এই ১২ টি পয়েন্ট এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলো একসাথে নিম্মে দেখবো, যেন এগুলো আমাদের মাথায় ক্যাচ করে বেশি...
আমরা, এতক্ষণের আলোচনার শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। অনেককিছুই বলা হয়েছে। অনেককিছু বলা বাকি ও রয়ে গেছে, যেগুলো পর্যায়ক্রমে নতুন নতুন টিউন এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে আসবে ইনশাল্লাহ।
তবে, এই টিউন এর উপসংহারে বলবো, ব্লগিং হল একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া(Regular Process)। এর যে কাজগুলো রয়েছে, যদি নিয়মিত সেগুলো করা যায়, তবে এর সফলতা আসতে অনেকটা বাধ্য।ধৈর্য ধরে নিয়মিত ব্লগের বিভিন্ন বিষয় উন্নত করে যেতে পারলে, সফল হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
I like to write. Writing is my passion. Reading is my hobby. Both combined as blogging. My blog is Bangla Books PDF. I write on various topics. But the book is the main niche. And there are many topics of Bangladesh which are described on Bangla Books PDF as articles to help its readers.
My recent article on Bangla Books PDF is How to wake up early and benefits of early rising.
আমি Sun- Moon। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 4 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 1 টি টিউন ও 19 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।