ফ্রিল্যান্সিং, আউটসোর্সিং বা ঘরে বসে আয় করতে চান, এমন লোকের অভাব নেই। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম এদিকে বেশি ঝুঁকছেন। পড়াশোনা বা চাকরির পাশাপাশি ঘরে বসে আয়ের একটি উৎস হতে পারে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।
এক নজরে বিস্তারিত
প্রযুক্তিনির্ভর এই বিশ্বে মানুষের কেনাকাটার জন্য এখন আর বাইরে বের হওয়ার প্রয়োজন নেই। বাসা বা অফিসে বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন ই কমার্স সাইট থেকে কেনাকাটা করতে পারেন। অনলাইনে অর্ডারকৃত পণ্য ক্রেতার হাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পৌঁছে দেয় ইকমার্স প্রতিষ্ঠান। ই কমার্স সাইটগুলো তাদের পণ্যের প্রসারের উদ্দেশ্যে অ্যাফিলিয়েট সুবিধা দিয়ে থাকে। আর মার্কেটাররা এই সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে নিজেরা মার্কেটিং করে আয় করে। এটাই হলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। সহজে বলা যায়, আপনি অনলাইনে কোনো পণ্য বিক্রি করতে চাইলে সে প্রতিষ্ঠান আপনাকে তাদের পণ্যের একটা লিংক দিবে। আপনার দেয়া লিংকের মাধ্যমে কোন গ্রাহক যদি তাদের ওয়েবসাইটে ঢুকে এবং পণ্য ক্রয় করে, তাহলে ওই প্রতিষ্ঠান আপনাকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন দেবে। এই কমিশনের মাধ্যমে অর্থ আয় করার মাধ্যকেই বলা হয় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের জন্য প্রচলিত অনেকগুলো মার্কেটপ্লেস থাকলেও অ্যামাজান অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংকেই পছন্দের তালিকায় প্রথম স্থানে রাখেন বেশিরভাগ মার্কেটার। কেননা বিশ্বের সবচেয়ে বড় ই কমার্স সাইট অ্যামাজন ডট কম (Amazon.com)। বিশ্বে সম্ভবত এমন কোন প্রোডাক্ট নেই যা অ্যামাজনে নেই। আমেরিকায় প্রতি আট জনের মধ্যে একজন মানুষের অ্যামাজনে অ্যাকাউন্ট আছে। একজন মার্কেটার অ্যামাজনের পণ্যের বিক্রি বাড়াতে ভূমিকা রাখতে পারেন এবং তার মাধ্যমে যে বিক্রি হয় তা থেকে কমিশন হিসেবে আয় করতে পারেন।
বেশ কয়েকভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে কাজ শুরু করতে পারেন- সোশ্যাল সাইটে লিংকগুলো শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে, ল্যান্ডিং পেইজ তৈরির মাধ্যমে, ব্লগ সাইট বা ওয়েবসাইট তৈরির মাধ্যমে। সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হলো ওয়েবসাইট তৈরি করে কাজ করা। তবে গতানুগতিক ওয়েবসাইট থেকে এ ওয়েবসাইটের ধরন একটু আলাদা হবে। যখন আপনি অ্যামাজনের কোন প্রডাক্ট প্রচার ও প্রসারের উদ্দেশ্যে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করবেন এবং সেখানে আপনার নির্ধারিত প্রডাক্টের বর্ণনাসহ যখন সেটা বিক্রির উদ্দেশ্যে দিবেন, তখন আপনার ওয়েবসাইটটিকে বলা হবে অ্যামাজন নিশ সাইট। অ্যামাজনের নিশ সাইটে একটি ছোট বিনিয়োগের উপর বড় অংকের আয় করা সম্ভব। আর এটি যদি হয় প্যাসিভ ইনকাম তাহলে তো কথাই নেই। প্যাসিভ ইনকাম হলো এমন আয় যেখানে আপনি সরাসরি সম্পৃক্ত না থেকেও আয় করতে পারবেন। অর্থাৎ আপনি একটি নির্দিষ্ট সময় এবং নির্দিষ্ট পরিমাণ বিনিয়োগ করে রাখবেন এবং পরবর্তীতে সক্রিয়ভাবে কাজ না করা সত্ত্বেও আপনি আয় করতে থাকবেন। অ্যামাজন নিশ সাইট নিয়ে কাজ করে অনেকেই আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে। অনেকে মাসে কয়েক হাজার ডলারও ইনকাম করছে।
নিশ সাইটের জন্য যা দরকারঃ
১। কি-ওয়ার্ড রিসার্চ
২। একটি ডোমেইন নাম নির্বাচন করা ও হোস্টিং সেট আপ
৩। ওয়ার্ডপ্রেস ইনস্টল
৪। মানসম্মত কনটেন্ট
৫। ভাল মানের ব্যাকলিংক তৈরি করা
৬। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
৭। দরকারি পেজ সেটআপ
৮। কাঙ্খিত কনভার্সন রেট
প্রতিটি ধাপে কাজের বিস্তারিত ব্যাখ্যা নিচে দেওয়া হলোঃ
নিশ সাইট থেকে আয়ের জন্য শুরুতে মার্কেট যাচাই করতে হবে। অর্থাৎ অ্যামাজন সাইটটি দেখতে হবে। সেখানে হাজারো ধরনের প্রডাক্ট রয়েছে। সেগুলো থেকে বেছে ঠিক করতে হবে কোন ধরনের প্রডাক্ট নিয়ে কাজে নামবেন। প্রডাক্ট সিলেক্ট করার সময় তার রিভিউ দেখে মার্কেটে পণ্যটির বর্তমান অবস্থা বা কেমন চাহিদা আছে সেটা যাচাই করতে হবে। অ্যামাজন নিশ সাইটের জন্য কি-ওয়ার্ড নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ কারণ কি-ওয়ার্ড ভুল মানে নিশ সাইট থেকে কোন কমিশন আসবে না। তাই কি-ওয়ার্ড সিলেক্ট করার ক্ষেত্রে খুব সতর্ক হবেন।
কি-ওয়ার্ড সঠিকভাবে সিলেক্ট করে নিস সাইটটিকে অপটিমাইজ করলে নিস সাইটটি র্যাংঙ্কিংয়ে চলে আসবে। আপনার সাইটটি র্যাংঙ্কিংয়ে আসার পর আপনাকে প্রডাক্ট নিয়ে কাজে নামতে হবে। কাজের শুরুতেই আপনাকে অ্যামাজনের বেস্ট সেলিং প্রডাক্টগুলো দেখতে হবে। প্রডাক্টগুলো দেখার সময় আপনার মাথায় কিছু আইডিয়া আসবে। আপনি যে ক্যাটাগরির প্রডাক্ট নিয়ে কাজ করতে চান সেই ক্যাটাগরির কোন কোন প্রডাক্ট বেশি সেল হয়েছে তা দেখতে পারবেন। সেলিং এর উপর ভিত্তি করে আপনার প্রডাক্ট নির্বাচন করা সহজ হয়ে যাবে।
প্রডাক্ট নিবাচনের সময় যেসব বিষয় খেয়াল করতে হবে
১। আপনার মেইন নিশ/ কি-ওয়ার্ড এর সাথে মিল রেখে পণ্যের ক্যাটাগরি নির্বাচন করা।
২। নিশ এর জন্য পণ্য বাছাই করা।
৩। পণ্যের রিভিউ
৪। পণ্যের চাহিদা
৫। বিক্রির উপর আপনার কমিশন
কি-ওয়ার্ড গুলো যেভাবে নির্বাচন করতে পারেন:
Product Name/Keyword + Review
Product Name/Keyword + Reviews
Best + Product Name/Keyword
Cheap + Product Name/Keyword
যে ক্যাটাগরির প্রডাক্ট নিয়ে কাজ করবেন সেটার সাথে মিল রেখে কি-ওয়ার্ড নির্বাচন করুন। এজন্য একটু প্রতিযোগিতা করেই আপনাকে টপে আসতে হবে। অন্য কি-ওয়ার্ড দিয়েও আপনার নিশ সাইটটিকে টপে নিয়ে আসতে পারবেন কিন্ত প্রাপ্ত ট্রাফিক কোন কাজে আসবে না।
নিশ সাইটের ধারনা নেয়ার জন্য iWriter Profile, Niche Discover, TopTenReviews.com এবং অ্যামাজনের হাজারো প্রডাক্ট রিভিউ পড়তে পারেন। এভাবে আপনি লাভজনক নিশ প্রডাক্ট নিয়ে কাজ করতে পারেন। তবে একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে যেন প্রডাক্টের বেশ কিছু রিভিউ থাকে আর দাম যেন বেশি হয়।
আপনি যে ধরনের প্রডাক্ট নির্বাচন করেছেন তার সাথে কিছু আনুসঙ্গিক প্রডাক্টও রাখার চেষ্টা করবেন। ধরুন, ফ্যাশন বিষয়ে নিশ সাইট নিলেন সেখানে ম্যান, ওমেন এর ড্রেস রাখবেন। পাশাপাশি আনুষঙ্গিক প্রডাক্ট হিসেবে জুতার আইটেমও রাখার চেষ্টা করবেন। কি-ওয়ার্ড সিলেক্ট করার জন্য টুলস হিসেবে গুগল এডওয়ার্ডস বা লংটেইল প্রো প্লাটিনাম ব্যবহার করতে পারেন।
কী-ওয়ার্ড সিলেক্ট করার পরে আপনাকে পুরো মার্কেট যাচাই করতে হবে ও আপনার প্রতিযোগী সম্পর্কে সম্যক ধারনা থাকতে হবে। যে কী-ওয়ার্ডটি নিচ্ছেন যদি সঠিকভাবে সিলেক্ট করতে পারেন সেটা বুসিনেসের প্রসার করবে। ধরুন, অনলাইনে আপনি একটি মোবাইল কিনবেন। আপনি মোবাইল লিখে সার্চ দিয়ে খুঁজবেন কোন মোবাইল কিনবেন। কিন্তু আরও ভাল করে বললে আপনি নকিয়া লুমিয়া ৫২০ ব্র্যান্ড এর মোবাইলের রিভিউ দেখলেন, তখন আপনি সেটা কেনার চেষ্টা করবেন।
দেখা যায়, মানুষ রিভিউ পড়েই প্রডাক্ট কেনে। আর এভাবে আপনি যত মানুষের মাঝে প্রডাক্টের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াবেন, ততোই সেলস বাড়াতে পারবেন, যত মানুষ প্রডাক্টগুলো পছন্দ করবে- আপনি নিশ সাইট থেকে তত কমিশন পাবেন।
কোন প্রডাক্ট কিনতে সাধারণত মানুষ যেভাবে সার্চ করে :
Best/Top Rate + Product Name
Cheap + Product Name
Quality + Product Name
Product Name + For Sale
Product Name + Review/Reviews
Product Name + Coupon
Where Can I Buy + Product Name
Buy + Product Name
Best + Product Name + Review
Best + Product Name + Online
Best + Product Name + Year
VS/ Or/ Compare to + Product Name
তাই Best + Product type কি-ওয়ার্ডটা নিশ সাইটের প্রধান কীওয়ার্ড হিসেবে নেয়া বেশি যুক্তিযুক্ত।
একটা নিশ সাইট এর জন্য সাধারণত –
১। সার্চ ভলিউম- 800 থেকে 3000 থাকতে হয়
২। KC নিশ্চিত ভাবে ৩০ এর নিচে হতে হবে (KC = Page Authority (PA) +/- Page Title Factor +/- Keywords in Domain Factor +/- Domain Length)
৩। প্রডাক্টটির মূল্যও বেশি হতে হবে < 100
৪। কোন বিশেষ সময় সিজনকে ধরে কী ওয়ার্ড না নেয়া
৫। এমন কোন প্রোডাক্ট নিতে হবে যা বছরের পর বছর ব্যবহার হয়
কী-ওয়ার্ড সিলেক্ট হয়ে গেলে ডোমেইন এবং হোস্টিং নিতে হবে। ডোমেইন কেনার সময় লক্ষ্য রাখবেন : আপনার কীওয়ার্ড যেন এক না হয়। এটাকে এক্সাক্ট ম্যাচ ডোমেইন বলা হয়। এক্সাক্ট ম্যাচ ডোমেইন আগের মত আর শক্ত অবস্থানে নেই, এক্সাক্ট ম্যাচ ডোমেইন বা লঙ টেইল কীওয়ার্ড নিলে গুগল পেনাল্টি খাওয়ার সুযোগ থাকে। তাই আনুষঙ্গিক প্রোডাক্ট বা আংশিক ম্যাচ ডোমেইন নেয়া ভালো। অর্থাৎ আপনার কীওয়ার্ডের সাথে আংশিক মেলে এরকম কিছু।
আপনার কী ওয়ার্ড যদি হয় best juicer machine আর আপনার সাইটের নাম যদি হয় bestjuciermachine.com এটা খুব একটা যুতসই কীওয়ার্ড হবে না। তার চেয়ে আপনি বরং এভাবে নিতে পারেন efficientjucinginfo.com। খেয়াল রাখবেন সাইটের নামটা যেন খুব রিসোর্সফুল হয়। ডোমেইন এক্সটেনশন .com নেয়াই ভালো কেননা ভিসিটররা সহজে এটা মনে রাখতে পারে।
আপনি Godaddy, Namecheap, Bluehost থেকে ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন। খেয়াল রাখবেন হোস্টিং যেন স্লো না হয়, লোডিং স্পিড ফাস্ট হওয়া খুব জরুরি দুই কারণে-
১। আপনার সাইটকে র্যাংঙ্কিং করাতে হলে লোডিং স্পিড ভালো হতে হবে।
২। যদি আপনার সাইটের লোডিং স্পিড স্লো হয়, মানুষ আপনার অ্যাফিলিয়েট সাইট থেকে অ্যামাজন সাইটে যাবে না। অর্থাৎ সে অ্যামাজন সাইট থেকে কোন প্রডাক্ট কিনবে না।
হোস্টিং নিতে পারেন Hostgator বা bluehost থেকে, কারণ-
১। দাম তুলনামূলক কম
২। ওয়ার্ডপ্রেসের মতো SEO user friendly সাইটও bluehost কে রিকমেন্ড করে
সাইটের কন্টেন্ট, থিম, প্লাগিন ঠিক করতে হবে। অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েশনের জন্য ওয়ার্ডপ্রেস একটা বড় প্লাটফর্ম কারণ
১। Fast, Dynamic & Simple
২। Flexible for Content Managements
৩। No Big investment for setup
৪। Featured with Theme, plugin, add-ons
থিমের জন্য themeforest, mafiashare, envanto, AuthorityAzon, FocusBlog theme থেকে সুন্দর থিম নিতে পারেন। থিম নির্বাচনের ক্ষেত্রে নিচের বৈশিষ্ট্যগুলো আছে কিনা দেখে নিবেন-
আমি মোঃ মানিক হোসেন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 17 টি টিউন ও 23 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
সুন্দর, আমিও শুরু করেছিলাম।কিন্তু মধ্যে থেকে সাইট কিভাবে যেন ডাউন হয়ে গেল।আমার ওয়েবসাইটে কেন যেন আর ঢোকা যাচ্ছে নাঃ experienceproducts.wordpress.com