আসালামুয়ালায়কুম, সবাই কেমন আছেন। আশা করি আল্লাহর রহমতে ভাল আছেন, আর ভালো থাকাটাই সবসময়ের জন্য প্রত্যাশা ।
ফ্রীলেন্সিং এর জগতে হাতে খড়ি দিতে প্রয়োজন অনেক সাধনা, ত্যাগ আর ধৈর্য। এর কোনটি আপনি ধরে রাখতে না পারলে সফল হওয়া সম্ভব নয়। অনলাইনে আয়ের জন্য অনেক আগ্রহ থাকা সত্বেও কিছু ভুল ধারণা মনে বাসা বেধে থাকার কারণে মাঝ পথে গিয়ে অনেককেই ফিরে আসতে হয়... চলুন দেখে নেই অনলাইনে আয় করতে গেলে কি কি প্রতিবন্ধকতা আসতে পারে।
ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে গেলে যে বিষয়গুলো আপনাকে মেনে চলতে হবে...
১. ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে গেলে প্রথমেই অনেক বড় ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হবে এমন মানসিকতা নিয়েই কাজ শুরু করতে হবে ।
২. প্রথমেই যে কোনো মার্কেট প্লেসে একাউন্ট করতে হবে, odesk, freelancer এবং elance পৃথিবীর সবচেয়ে পপুলার আউট সোর্সিং মার্কেট প্লেস ।
৩. কখনোই মনে করে যাবেনা ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেই রাতারাতি বড় লোক হয়ে যাব ।
৪. অনলাইনে আয় করার অনেক পথ আছে, আপনি ফ্রিল্যান্সিং করতে গিয়ে ভাবতে পারবেননা এ পথে সফল হওয়া অসম্ভব। তাহলেই কাজের শুরুতেই আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবেন ।
৫. কোনো মার্কেট প্লেসে একাউন্ট করে আপনি সাথে সাথে কাজ পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী হবেন এটা স্বাভাবিক কিন্তু কাজ না পেলে আশাহত হয়ে বিড করা ছেড়ে দিবেন এমন ভাবনা মন থেকে বাদ দিন ।
৬. আপনি কাজের জন্য যে বিড করবেন তা যেন গ্রহণযোগ্য হয়, মিনিমাম ৩ ডলার রাখুন আওয়ার লি রেইট আর সর্বোচ্চ রেইট আপনার কাজের দক্ষতা অনুযায়ী দিবেন, মিনিমাম রেইট এর নিচে দিলে আপনার মাধ্যমেই মার্কেট খারাপ হয়ে যাবে এটা নিশ্চিত । অবশ্য এখন এই রেইটটাই ডিফল্ট হিসেবে গন্য ।
৭. আপনার টাকার চেয়ে মার্কেটপ্লেসে ফীডব্যাকের গুরুত্ব বেশী এটা হাইলাইট করুন । আর অবশ্যই বায়ারের বাজেটের মধ্যে বিড করতে হবে ।
৮. যারা ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেছে, তারা শুধু এটা শুরু করেই ক্ষান্ত হয়নি, পাশাপাশি চেষ্টা করেছে ব্লগিং এফিলিয়েট মার্কেটিং কিংবা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইমাইজেশন এর কাজ, আপনিও একই নীতি এপ্লাই করুন সফল হলে আপনিই বুঝতে পারবেন অনলাইনে আয় করা আপনার জন্য কিভাবে সহজ এবং কোন পথ আপনার জন্য কার্যকরী।
৯. কাজের জন্য বিড করতে গিয়ে কভার লেটার অবশ্যই আকর্ষনীয় করে লিখবেন, বায়ারকে সম্বোধন করবেন স্যার কিংবা ডিয়ার হায়ারিং ম্যানাজার এভাবে, আপনি কাজটি করতে পারেন এবং করতে আগ্রহী তা বুঝিয়ে বলবেন, এর বেশি কথা বলতে যাবেননা।
১০. একটি কভার লেটার বারবার কপি করে সেটা সব জায়গায় পেস্ট করবেননা তাহলে কাজ পাওয়ার যে সম্ভাবনা থাকবে সেটাও হারাবেন ।
১১. সাধারণত কাজ পাওয়ার মুখ্য সময় গভীর রাত অর্থাত রাত ১টা থেকে ৪টা, এ সময়ে কাজ বেশি পোস্ট হয়, তাই এ সময় এপ্লাই করলে কাজ পেয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে, অন্য সময় এপ্লাই করতে গেলে দেখবেন আপনি এপ্লাই করার আগেই আরো অনেকজন করে ফেলেছে, এর মধ্যে হায়ার হয়েছে কয়েকজন আর ইন্টারভিউতে কল পেয়েছে আরো কয়েকজন, আর তাই সেখানে আপনার সম্ভাবনা অতি নগন্য।
১২. পেমেন্ট মেথড ভেরিফাইড এমন বায়ার দেখেই কাজের জন্য এপ্লাই করবেন, এছাড়া অন্য বায়ারদের গ্যারান্টি নেই, আপনাকে দিয়ে কাজ করিয়ে নিয়ে ভাগতে পারে ।
১৩. ই-মেইল মার্কেটিং, আর্টিকেল রাইটিং, ফোরাম পোস্টিং, ওয়েব রিসার্চ, এফিলিয়েট মার্কেটিং, কপি পেস্ট, ডাটা এন্ট্রি এর মত কাজগুলো করার জন্য আপনার পর্যাপ্ত দক্ষতা থাকার প্রয়োজন
নেই । ফিক্সড টাইমের কাজগুলোর পেমেন্টের নিশ্চয়তা কম আর এক্ষেত্রে পেমেন্ট নিতে হবে কাজের শেষে, ঘন্টাভিত্তিক কাজে পেমেন্ট ঘন্টায় ঘন্টায় পাবেন ।
১৪. Microworkers এ রেজিস্ট্রেশন করুন, এখানে ছোট ছোট কাজ করে
আয় করতে পারেন। বিভিন্ন রেইটের কাজ করে এখানে ব্যালেন্স জমা হতে হতে
যখন বড় একটি এমাউন্ট হবে তখন আপনি তোলার চিন্তা করবেন । এটির মত আরো কিছু সাইট
আছে অনলাইনে, আপনি সেগুলো ও চেষ্টা করতে পারেন, যদি বড় মার কেট প্লেস গুলো আপনার জন্য সুবিধা জনক মনে না হয়...
যে কোনো ক্ষেত্রে সফল হবার জন্য পরিশ্রম করতে হয়, অযথা সাফল্য এসে হাতে ধরা দিবেনা, আপনিও যে পথে আগ্রহী, অনলাইনে আয়ের যে বিষয়গুলো আপনার ভালো লাগে সে বিষয়গুলো আপনি নিয়মিত স্টাডি করুন, এ পথে সময় দিন, লেগে থাকুন, আউট পুট অবশ্যই পাবেন। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো।
ফ্রিল্যান্সিং এর পাশাপাশি আপনি ব্লগিং করতে চাইলে যে বিষয়গুলো মেনে চলবেন
1. কখনোই কপি পেস্ট করে আর্টিকেল লিখবেননা
2. সাইট এর কন্টেন্ট এর উপর বেশি গুরত্ব দিন
3. সার্চ ইঞ্জিন অপটি মাইজেশন এপ্লাই করুন তবে গ্রহনযোগ্য আর্টিকেল লেখার পর
4. আপনার সাইট এর মার্কেটিং করুন বিভিন্ সোশ্যাল মিডিয়ায়
5. কাঙ্খিত মানে পৌছলে তখন গুগল এডসেন্স এর জন্য আবেদন করুন
6. গুগল এডসেন্স পেলে সেখান থেকে এড কোড নিয়ে নিজের সাইটে বসান
7. নিজের এড এ নিজে ক্লিক করতে যাবেননা আর ছবির পাশে এড ব্যবহার করবেননা
8. সকল নিয়ম কানুন মেনে চলুন তাতে পর্যায়ক্রমে আপনি লাভবান হবেন
চলবে...
এছাড়াও অনলাইনে আয়ের হাজার পদ্ধতি আপনি গুগলে সার্চ দিয়ে পাবেন, তার মধ্যে কার্যকরী পদ্ধতি পেতে টেক টিউনতো আছেই ।
সৃজনশীল কোনো কাজে সময় দিতে পারলে আপনার শ্রম এবং দক্ষতা ২টি-ই কাজে আসবে । আপনি গুগল এর ব্লগার এর মাধ্যমে ফ্রি সাইট তৈরী করতে পারেন । এ সাইটের মাধ্যমে গুগল এডসেন্স ব্যবহার করতে পারেন আর এডসেন্স না পেলেও অন্যান্য পিপিসি প্রোগ্রাম ব্যবহার করে আয় করতে পারেন । আর এতে ডোমেইন হোস্টিং নিয়ে বাড়তি টাকা খরচ করারও প্রয়োজন পড়ছেনা ।
সাফল্যের রাজ্যের কোন সংক্ষিপ্ত রাস্তা নেই । চুনে মুখ পুড়লে দইকেও ভয় পেতে হয়, যার বাপকে কুমিরে খেয়েছে তারতো ঢেকী দেখেও ভয় পাওয়ারই কথা । অনলাইন কাজের নামে যারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন তাদের বিভ্রান্ত না হয়ে স্বচ্ছ ধারণা এবং উপযুক্ত নির্দেশনার মাধ্যমে পুরোদমে কাজ করার সুযোগ এখনো আছে । হাত বাড়ালেই এ সুযোগের পুরো দাবীদার আপনিও হতে পারেন । হাতের মুঠোয় নিয়ে আসতে পারেন অনলাইনে আয়ের সকল পদ্ধতি, শুরু করে দিতে পারেন ফ্রিল্যান্সিং সহ যাবতীয় আয়ের মাধ্যম ।
আরো জানতে আমার "অনলাইন আয়ের এ পথ, সে পথ, আপনি যাবেন কোন পথে" লেখাটি দেখতে পারেন । সকলের সার্বিক কল্যান কামনায় আজকের মত এখানেই শেষ করছি। শুভ কামনা রইলো । ভালো থাকবেন সবাই...
সবার জন্য শুভ কামনা রইলো ।
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ।
সাফল্যের রাজ্যের কোন সংক্ষিপ্ত রাস্তা নেই ।
চুনে মুখ পুড়লে দইকেও ভয় পেতে হয়, যার বাপকে কুমিরে খেয়েছে তারতো ঢেকী দেখেও ভয় পাওয়ারই কথা .
Osthir kotha bolsen vai. khub e valo legese. Priyo te rakhlam.
Kosto kore post korar jonno dhonnobad