সুপ্রিয় বন্ধুরা, আসসালামুয়ালাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। আশাকরি করুণাময় আল্লাহর রহমতে সবাই সুস্থ আছেন। দেখতে দেখতে আমাদের মাঝ থেকে আরেকটি বছর পেরিয়ে গেলো। শুরু হয়ে গেছে নতুন আরেকটি বছর।
নতুন বছর মানেই নতুন ভাবনা, নতুন উদ্দীপনায় নতুন কিছু করা। নববর্ষ মানেই জীবনটাকে নতুন করে উপভোগ করা আর নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া। একেক জন একেক ভাবে চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করে। তাই আপনি যে পেশাতেই থাকুন না কেন সেটাকে ডেভেলপ করুন আর হয়ে উঠুন আত্ম-প্রত্যয়ী। যেহেতু আমার কাছে ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং ভাল লাগে সেহেতু আমি এই বিষয় নিয়েই কিছু বলতে চাই।
আমি নিশ্চিত, এই মুহূর্তে আপনারা যারা আমার এই লেখাটা পড়ছেন, তাদের বেশিরভাই হয়ত জানেন যে, ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং করে টাকা উপার্জন করা যায়। কিন্তু কিভাবে করা যায় সেটা কি জানেন? যাই হোক আজ আমি বলতে চাচ্ছি না যে কিভাবে অনলাইনে কাজ করে আয় করা যায়। আমি শুধু বলবো এই নতুন বছরটাকে কিভাবে জীবনের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে শুরু করতে পারেন।
ধরুন আপনি ওয়েব ডেভেলপার বা ডিজাইনার হয়ে অনলাইনে কাজ করে জীবন প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছেন। অনেকেই হয়ত ইতোমধ্যে শেখা শুরু করে দিয়েছেন। আমি শুধু সেই সমস্ত মানুষদের জন্যই লেখাটা লিখছি যারা সম্পূর্ণ নতুন। যারা অনেক এগিয়ে গেছেন তারা লেখাটি না পড়লেও পারেন।
২০১১ সাল থেকে ফ্রিল্যান্সিং করলেও শুরুতে ডাটাএন্ট্রি ও ওয়েব রিসার্চ এর কাজ দিয়েই শুরু করেছিলাম। গত বছরের প্রথম দিকের কথা, আমি প্রথম ওয়েব ডিজাইন এর কাজ শেখা শুরু করি। এক বছর পূর্ণ হয়ে গেছে। নিজের কাছে বিশ্বাসই হচ্ছে না যে কিভাবে কি হয়ে গেলো। ক্লায়েন্টদের সাথে কাজ করতে করতেই ওয়েব ডিজাইনের প্রতি আগ্রহ তৈরী হয়। ডাটাএন্ট্রি ও ওয়েব রিসার্চ এর কাজের পাশাপাশি আরও কিছু বিষয়ে আমার দক্ষতা দেখে কয়েকজন ক্লায়েন্ট আমাকে টুকটাক এইচটিএমএল এর কাজ করতে বলতো। আমার একজন ক্লায়েন্ট আছে যিনি ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপ এর কাজ করেন, আমার তৈরী করে দেওয়া একটি Proposal Letter এর মাধ্যমে তিনি $২৫০০০ (পঁচিশ হাজার ডলার) মূল্যের একটি কাজ পান। তখন তিনি আমার পারিশ্রমিক বাড়িয়ে দেন এবং আমাকে তার সহকারী হিসেব স্থায়ী করে নেন, সেই সাথে আমাকে দিয়ে টুকটাক ওয়েব ডিজাইনের কাজ করাতেন। এভাবে তার পরামর্শেই ওয়েব ডিজাইনের কাজ শেখা শুরু করে দেই। বিভিন্ন ধাপে ধাপে এগিয়ে এই একবছরে বেশ ধারণা পেয়েছি যে কিভাবে কি করা লাগে। এই এক বছরের পরিশ্রমের ফসল হিসেবে এখন আমি টুকটাক কাজ করছি। অথচ এক বছর আগেও আমি শুধুমাত্র ডাটাএন্ট্রি ও ওয়েব রিসার্চ এর কাজের পিছনে পড়ে ছিলাম। আমি কি পারবো! আমাকে দিয়ে কি হবে? কিন্তু সবসময় মনে জোর রাখতাম আর ভাবতাম অনেকেই তো পারছে তাহলে আমি পারবো না কেন? এই চিন্তা ভাবনা আর পথচলা।
তাই বলে ভাববেন না যে আমি বড় ধরণের ওয়েব ডিজাইনার হয়ে গেছি। আসলে সেরকম মোটেই না। আমি কেবলমাত্র শুরু করেছি। এখনো পুরোটা পথই বাকি। ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিংএ মাত্র ৩ বছর পেরোলো আর ওয়েব ডিজাইনের হাতেখড়ি মাত্র ১ বছর। আরো বছর দু'এক পর হয়তো প্রতিষ্ঠিত ফ্রিলান্সার হিসেবে নিজেকে দাবি করতে পারবো সেই সাথে একজন ওয়েব ডিজাইনার হিসেবে। একথা শুনে অনেকেই হয়তো ভাবছেন এতো সময় ধরে কাজ শেখার ধৈর্য আপনার নাই। তাহলে বলবো- ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং আপনার জন্য নয়। চিরাচরিত নিয়ম অনুযায়ী পড়াশুনা করুন এরপর চাকুরি খুঁজতে থাকুন।
বলে রাখা ভাল আমি শুরুতে শুধুমাত্র একজন চাকুরীজীবিই ছিলাম, একটু একটু করে ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিংএ এগিয়েছি। কিন্তু এখন আমি নিজেকে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে পরিচয় দিতে ভালবাসি। এখন আমি একজন ফ্রিলান্সার, সাথে চাকুরীজীবি। আমার কাছে চাকুরীর চাইতে ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিংটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারন কোম্পানী চাইলে আমাকে চাকুরী থেকে বাদ দিতে পারে, কিন্তু আমি না চাইলে ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং আমাকে বাদ দিতে পারবে না। তাছাড়া চাকুরীর চাইতে আমি ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিংএর মাধ্যমে কয়েকগুন বেশি উপার্জন করি।
একটা কথা ভাবলেই তো হয় যে, আপনি যে পেশাটা বেছে নিচ্ছেন সেটা করলে আপনি মাসে ২০/৩০ হাজার টাকা বা তারও বেশি আয় করবেন। তাহলে কাজটা করতে হলে তো আগে জানতে হবে কিভাবে করতে হয়। আর জানতে হলে শিখতে হবে। শিখতে হলে অবশ্যই পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে।
অনেকেই হয়ত এখনো স্টুডেন্ট। হয়ত কয়েকবছর পর পড়াশুনা শেষ করে চাকরি খোঁজা শুরু করতে হবে। কেন ভাই, পড়ালেখার পাশা পাশি কি টুকটাক কাজ শেখা যায় না? অনেকেই তো কম্পিউটারে বসে গান শুনে, ফেসবুকে বসে অযথা সময় নষ্ট করে থাকেন। সেই সময়টাই কাজে লাগান না। একটু সময় নিয়ে একটা ভাল কাজ শিখুন। দেখবেন পড়াশুনা শেষ হতে না হতেই আপনার জন্য কাজ হাজির সাথে উপার্যনও। এরপর আশা করি আপনাকে হয়ত আর চাকুরিই খুঁজতে হবে না।
নিশ্চয়ই প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করছে যে, কাজ শিখবেন কিভাবে? আগে নিজেকে স্থির করুন কোন কাজটি শিখলে আপনি ভাল করতে পারবেন। আমাদের হাতের নাগালেই ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট এর কাজ শেখার মত অনেক রিসোর্স রয়েছে। শুধু একটু কষ্ট করে নিজের অবস্থানটাকে বিস্তৃত করুন আর দেখুন আপনার আশেপাশে কে কিভাবে নিজ চেষ্টায় কাজ শিখে কাজ করছে!
আপনি স্বপ্ন দেখছেন অনলাইনে কাজ করে বৈদেশিক মুদ্রা ঘরে আনবেন কিন্তু এমনি এমনি তো আর কেউ আপনাকে টাকা দিবে না। বিশ্বের বড় বড় ফ্রিলান্সারদের সাথে টক্কর দিয়ে কাজ করতে হবে। ব্যাপারটা ভেবে দেখেছেন? সেরাদের সেরা কিভাবে হতে হবে একসময় আপনি নিজেই সেটা বুঝতে পারবেন।
তবে এর জন্য আপনার যেটি দরকার, তা হলো প্রবল স্বদিচ্ছা আর কঠোর পরিশ্রম করার মানসিকতা। তাই এই নতুন বছরটাকে এখন থেকেই কাজে লাগান। প্রথমে আপনার কি কি শেখা লাগবে তা এখনই স্থির করুন! এর পর চেষ্টা করুন আস্তে আস্তে সামনে এগিয়ে যাওয়ার। তবেই একসময় আপনার হাতে সাফল্য ধরা দিবে। আপনার সাফল্যের অপেক্ষায় থাকলাম। আমার সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে আমাকে ফেসবুকে পাবেন।
আপনাদের প্রয়োজনে আমার অন্যান্য সোস্যাল মিডিয়া প্রোফাইলগুলোকে ফলো করতে পারেন। কোন আপডেট থাকলে এগুলো থেকেই পেয়ে যাবেনঃ
Facebook | Youtube Channel | Twitter | LinkedIn | Google Plus
আমার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটঃ wadudofficial.com
লেখাটি প্রথম প্রকাশঃ টেকপ্যাঁচাল ডট কম ব্লগে
আমি আব্দুল ওয়াদুদ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 27 টি টিউন ও 79 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
Hi, My name is Wadud. Full Name: Md. Abdul Wadud (In Bengali: মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ), I was born on October 12th, 1982 in Khulna, Bangladesh. I have earned B. Sc in Computer Science and Engineering. I’m Mostly a Freelancer, Freelancing Instructor and a Vlogger (Video Blogger). I’m writing blogs and...
অনলাইন থেকে আয় করার উপযোগী ভালো পোষ্ট খুব কমই দেখা যায়। টেকটিউনস পরিবারের জন্য অবশ্যই এটি একটি ভালো পোষ্ট। ভবিষ্যতে আরো ভালো ভালো পোষ্টের অপেক্ষায় রইলাম। PTC SITE থেকে আমার ১ম আয় প্রায় ৩০ ডলার। PAYMENT PROOF দেখুন। >> http://goo.gl/TYDZyg << আপনিও আয় শুরু করুন।