অনলাইন এ টাকা কামানোর জন্য আমরা সবাই বেশ আগ্রহী। এর জন্য আমরা অনেকেই ফ্রীলান্সিং ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি বিট করে কাজের মাধ্যমে টাকা উপার্জন করি। কিন্তু নতুন দের জন্য বিট করে ফ্রীলান্সিং ওয়েবসাইট থেকে টাকা উপার্জন অনেক কঠিন। ভালো করে প্রোফাইল তৈরি করে বিট করার পর দেখা যায়, ক্লাইয়েন্ট অন্য একজন কে কাজটা দিয়ে দিয়েছে। তখন মাথার মেজাজ হয়ে যায় চরম। সত্যি কথা হলো ভালো করে প্রোফাইল তৈরি করে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে করতে ৬ মাস বা ১ বছর লেগেই যায়।
অনেকে আবার বিভিন্ন ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরি করে গুগল এডসেন্স বা চিতিকা বা অন্য কোনো এড নেটওয়ার্ক এর এড-কোড ওয়েবসাইট এ বসিয়ে টাকা উপার্জন এর চেস্টা করেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ আবার বাংলাদেশি এড নেটওয়ার্ক ব্যবহার করেন। বস্তুত এ সকল এড নেটওয়ার্ক এর মধ্যে গুগল এডসেন্স ছাড়া অন্য সকল এড নেটওয়ার্ক থেকে ভালো টাকা উপার্জন করা কঠিন। এর মধ্যে গুগল এডসেন্স এর এতো বেশি কঠিন আইন-কানুন নতুন এডসেন্স পাব্লিশাররা হিমসিম খেয়ে যান। দেখা যায়, ২ টাকা জমতে না জমতে এডসেন্স একাউন্ট ব্যান্ড। অন্য এড নেটওয়ার্ক এর অবস্থা আরো খারাপ। তাদের এড এ ১০টা ক্লিক এ ১৫ টাকা আয় করতে খবর হয়ে যায়।
মজার কথা হলো, আমাদের মধ্যে অনেকে পিটিসি ওয়েবসাইট থেকে বিভিন্ন এড এ ক্লিক করে টাকা কামানোর চেস্টা করেন। কেউবা আবার কেপচা র মতো মাথা ধরা কঠিন পরিশ্রম এর পরে ১ ডলার বা ৮০ টাকা কামান। উপরের সব গুলো রাস্তায় কম-বেশি টাকা উপার্জন করা যায়। মূল কথা হলো এদের মধ্যে কোনোটা কার্যকরী আবার কোনোটা তা নয়।
আমার মতে, এফিলিয়েট মার্কেটিং অনলাইন থেকে টাকা উপার্জন এর সবচেয়ে কার্যকরী পন্থা। বিভিন্ন কোম্পানি তাদের সেবা বা পন্য বিক্রয় এর জন্য এফিলিয়েট মার্কেটিং সেবা ব্যবহার করে। আমাজন ডট কম, ই-বে, কমিশন জাঙ্কশন বা সি-জে ওয়েবসাইট গুলো শুধুমাত্র এফিলিয়েট মার্কেটিং এর কারনে বছরে কয়েক বিলিয়ন ডলার এর পন্য বা সেবা বিক্রি করে। এবং এই এফিলিয়েট মার্কেটিং যারা করেন, অর্থাৎ এফিলিয়েট মার্কেটার দেরকে তারা তাদের বিক্রিত পন্যের মোট মুল্যের পারসেন্টেজ আকারে টাকা দেয়। কোনো কোনো এফিলিয়েট মার্কেটার একটি বিক্রিত পন্যের উপর ১০০ ডলার এর বেশি আয় করতে পারেন।
এফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য কোন মূলধন এর দরকার হয় না। আপনি ফেইসবুক এ বসে বসেও এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন। সুতরাং মজা করতে করতেও এফিলিয়েট মার্কেটিং করা যায়। এফিলিয়েট মার্কেটিং এর নিয়মটা খুব সহজ। আপনি যে পন্য বা সেবা এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে বিক্রি করবেন, তার জন্য নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট এ রেজিস্ট্রেশন করে আপনার এফিলিয়েট লিঙ্ক বা এড কোড সংগ্রহ করবেন। এর পর ফেইসবুক বা স্কাইপ এ চ্যাট করার সময় আপনার এফিলিয়েট লিঙ্ক টি বন্ধুদের মাঝে ছড়িয়ে দিন। বাড়তি ঝামেলার কোনো দরকার নেই। কেউ আগ্রহী হলে পন্য কিনবে। আর না কিনলেও ক্ষতি নেই। পন্য বিক্রি হলে মাঝখান থেকে কমিশন পেয়ে গেলেন। মজার ব্যাপার হল, ফেইসবুক, টুইটার এ গ্রুপ এ শেষ নেই। তাই, নির্দিষ্ট পন্য সম্পর্কিত গ্রুপ বা পেইজ এ আপনার এফিলিয়েট লিঙ্ক ছড়িয়ে দিতে পারলে, আপনি একটা এফিলিয়েট লিঙ্ক থেকে কয়েক হাজার টাকা আয় করতে পারবেন। এই টিপসটা নতুন এফিলিয়েট মার্কেটার দের জন্য বেশ কার্যকরী।
আপনার যদি কোনো ব্লগ বা ওয়েবসাইট থেকে তাহলে এফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে আপনার আরো সুবিধা। আপনার এফিলিয়েট লিঙ্ক বা এর এড কোড আপনি সরাসরি বিজ্ঞাপন আকারে আপনার ওয়েবসাইট এ প্রদর্শন করাতে পারেন। এতে কোনো আগ্রহী ভিজিটর আপনার লিঙ্ক এ ক্লিক করে পন্য ক্রয় করলে আপনি তার কমিশন পেয়ে যাবেন। নিশ্চিন্ত থাকুন, চিতিকা বা বাংলাদেশি কোনো এড নেটওয়ার্ক থেকে বেশি আয় করতে পারবেন যদি আপনার ওয়েবসাইট পন্য সম্পর্কিত হয়। এছাড়া সরাসরি ইমেইল করে, আপনার এফিলিয়েট লিঙ্ক এর প্রচারনা করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। গুগল এ সার্চ করলে এফিলিয়েট লিঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়ার আরো অনেক রাস্তা খুঁজে পাবেন।
মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, কেউ যদি আপনার এফিলিয়েট লিঙ্ক এ ক্লিক করার পর সাথে সাথে পন্য না কিনে, পরে অন্য কোনো সময়, সরাসরি ওয়েবসাইট থেকে পন্য ক্রয় করে, তাহলে তো আপনি কমিশন পাবেন না। আসলে তা সঠিক নয়। আপনার এফিলিয়েট লিঙ্ক এ ক্লিক করার পর সাথে সাথে ব্রাউজার একটা কুকিস(আপনার এফিলিয়েট লিঙ্ক এর) সংগ্রহ করে রাখে। তাতে, পরে ঐ ভিজিটর পন্য ক্রয় করলেও আপনি (ঐ কুকিস এর কারনে) আপনার কমিশন ঠিক-ঠিক পেয়ে যাবেন।
আমরা বাংলাদেশীদের জন্য এফিলিয়েট মার্কেটিং একটা সুবর্ণ সুযোগ। বাংলাদেশি অনেক প্রতিষ্ঠান এফিলিয়েট মার্কেটারদের কে পন্য বা সেবা বিক্রির জন্য নগদ টাকা দেয়। তাদের অনেকে বিকাশ বা মোবাইল এর মাধ্যমে টাকা তোলার সুযোগ দেয়।
সৌজন্যেঃ গ্রীন হোস্টিং এফিলিয়েট প্রোগ্রাম
আমি ভাস্কর বনিক বনিক। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 25 টি টিউন ও 121 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি বিগত পাঁচ বছর যাবত এসইও এবং ওয়েব ডেভোলাপমেন্ট এর বিভিন্ন কাজ করেছি। টেকটিউনস একটি অসাধারন প্লাটফরম নিত্য নতুন কিছু জানার ও শিখার। আমি টেকটিউনস অনেক ভালবাসি।
দারুন একটি টিউন করেছেন ভাই।