ইদানিং কিছু নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান ফ্রিল্যান্সিং সেখানোর নাম করে মানুষের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তাদের এসব আপক্রমের জবাব দিতে আমার এই ছোট্ট প্রয়াস, আশা করি আপনারা আমার সাথে থাকলে এই উদ্দেশ্য সফল হবে। ফ্রিল্যান্সিং এর সকল বিষয়ে সহজ ভাষায় বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করবো। প্রয়োজনে চিত্র/ভিডিও ব্যবহার করা হবে। ফ্রীলেঞ্চিং শুরু করার আগে ভালো একটি প্রতিষ্ঠান থেকে আপনার পসন্দের যেকোনো একটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেকে ওই কাজে সম্পূর্ণ দক্ষ করে গড়ে তুলুন, তাহলে আপনাকে আর কখনই পিছনে ফিরে তাকাতে হবে না। আসুন তাহলে শুরু করা যাক।
যেমনঃ ইমেইল (সব ফিচার), স্কাইপে, সোশ্যাল মিডিয়া, গুগল সার্চ (সব ধরনের ব্যবহার), গুগল ড্রাইভ, গুগল ডকস, ড্রপবক্স, ফটোশপ (বেসিক), স্ক্রিনসট, টিম ভিউআর।
ফ্রীলেঞ্চারদের জন্য সবচেয়ে গুরুপ্তপূর্ণ হচ্ছে ইমেইল; মার্কেটপ্লেচ গুলোর সব নোটিফিকেশন ইমেইলে সেন্ড করা হয়। আপনাকে দিনের বেশির ভাগ সময় ইমেইলে লগইন থাকতে হবে। মনে রাখবেন মাত্র এক মিনিটের দেরির কারনে আপনার একটি জব অন্য কারো হাতে চলে যেতে পারে।
আজকাল অনেক কম দামে স্মার্ট ফোন পাওয়া যায় এবং ইন্টারনেট অনেক সহজলভ্য। আপনি ফোনে ইমেইল চেক করতে পারেন যেকোনো সময়, যেকোনো জায়গা থেকে। ফোনের মাধ্যমে আপনার ক্লাইন্টের মেসেজের জবাব দিতে পারবেন যত দ্রুত সম্ভব। এতে ক্লাইন্ট আপনাকে অনেক রেস্পন্সিভ ভাববে এবং আপনার সম্পর্কে তার ইতিবাচক ধারনা তৈরি হবে।
যদি আপনি ইচ্ছা করে দেরি করেন এবং ভাবেন যাহোক একটা অজুহাত দেখালেই হবে, তবে আমি বলবো ফ্রীলেঞ্চিং আপনার জন্য না। এখানে স্বাধীনতা আছে সত্য কিন্তু তার মানে এই না যে আপনি যখন তখন আজুহাত দেখাবেন।
ইমেইলের কিছু দরকারি ফিচারঃ Cc, BCc, Attach files, Email alias, Categories, Create folder, Document share etc.
জব পাবার জন্য যেটা সবচেয়ে গুরুপ্তপূর্ণ সেটা স্কাইপেতে যোগাযোগ। প্রায় ৯০% ক্লাইন্ট স্কাইপেতে ইন্টারভিউ নেয় এবং জব চলাকালীন যোগাযোগ করে।
আমার নিজস্ব সাজেসনঃ (ক্লাইন্ট আপনাকে প্রথম নক করার সাথে সাথে তাকে স্কাইপেতে নিয়ে আসার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন ক্লাইন্ট একই সাথে অনেক জনের সাথে চ্যাট করবে, সেক্ষেত্রে যত তারাতারি এবং সঠিক ভাবে তার প্রশ্নের জবাব দিতে পারবেন জবটি পাবার সম্ভাবনা ততই বাড়বে।
কিছু দরকারি ফিচারঃ add request, contact list, file share, video/voice chat, etc.
অনেকেই মনে করতে পারেন এটা শুধুমাত্র যারা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করবে তাদের জন্য দরকার। আমি দুইটা উদাহরন দেবো, আশা করি বুজতে পারবেন।
উদাহরন ১-আপনি একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার, ক্লাইন্ট আপনাকে ইউটিউব চানেলের ব্যানার ফটো বানাইতে বলছে। আপনি যদি স্মার্ট ফ্রীলেঞ্চার হন কখনই তাকে ফটোর সাইজ জিজ্ঞেস করবেন না। এটা ইউটিউব থেকে নিজেই জেনে নেয়া সম্ভব।
উদাহরন ২- আপনি ওয়েব রিসার্চ করেন, ক্লাইন্ট আপনাকে কম্পানির ইমেইল খুজতে বলল। আপনি যদি ওয়েবসাইট থেকে ইমেইল খুজে না পান তাহলে তাদের সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট/পেজ থেকে তা পেতে পারেন।
বিভিন্ন ধরনের কয়েকটি সোশ্যাল মিডিয়াঃ Facebook, twitter, YouTube, Google+, LinkedIn, Pinterest, etc.
খুব জনপ্রিয় একটি ফাইল শেয়ার মাধ্যম এবং অনলাইন ফ্রী স্পেস। আপনি সাইন আপ করার সাথে সাথে ২ গিগাবাইট ফ্রী স্পেস পাবেন এবং আপনার বন্ধুদের রেফার করে প্রতিবার ৫০০ মেগাবাইট এড করতে পারবেন। এটির এখন অনেক বিকল্প আছে কিন্তু বেশির ভাগ ক্লাইন্ট বড় সাইজের ফাইল সেয়ার করতে ড্রপবক্সকেই পছন্দ করে। https://db.tt/nsy2qskF লিঙ্কে গিয়ে দরকারি তথ্যগুলো দিয়ে সাইনআপ করুন। তারপর ড্রপবক্স অ্যাপটি আপনার কম্পিউটারে ডাউনলোড করে ইন্সটাল করুন।
অনলাইন স্টোরেজ হিসেবে গুগল ড্রাইভের বিকল্প হয় না বললেই চলে। প্রতিটি গুগল একাউন্টের জন্য আপনি ১৫ গিগাবাইট ফ্রী স্টোরেজ পাবেন। মাইক্রোসফট অফিস এর সব কাজ করতে পারবেন গুগল ডক্সস ব্যবহার করে। ওয়ার্ড, এক্সেল, পাওয়ার পয়েন্ট সহ বাড়তি হিসেবে পাবেন অনলাইন ফর্ম তৈরি এবং সেয়ার করার সুযোগ। আপনার জিমেইলে লগইন করে ভিজিট করেন https://drive.google.com/
ফ্রীলেঞ্চার দের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি সফটওয়ার। টিম ভিউআর এর কয়েকটি ব্যবহার। ১, দূরবর্তী কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন, তবে সেটি অবশ্যই চালু থাকতে হবে এবং ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে। ২, দূরবর্তী শিক্ষা গ্রহনে, এর মাধ্যমে অন্য কেউ তার কম্পিউটারে কাজ করে আপনাকে দেখাতে পারবে। এতে আপনি খুব দ্রুত কাজটি শিখতে পারবেন। ৩, টাইম ট্রাকার হিসেবে, আপনি আপনার কম্পিউটারে কাজ করছেন তা প্রমান করতে পারবেন।
অনলাইনে কাজ করার সময় আপনি নানান ধরনের সমস্যায় পরতে পারেন, তখন সমস্যা ভালভাবে বোঝাবার জন্য (কারো কাছে সাহায্য পেতে) একটি স্ক্রিনসট সেয়ার করুন। স্ক্রিনসট নিতে আপনার সমস্যার পেজটি ওপেন করে কিবোর্ড থেকে “Print Screen” বোতাম চাপুন। এবার পেইন্ট ওপেন করুন এইভাবে Start menu – All programs – Accessories – Paint তারপর পেস্ট করুন (Crtl + v). এবার প্রয়োজনীয় এডিট/ রিসাইজ করে সেইভ করুন JPG ফরম্যাটে।
ছবি সহ আরও বিস্তারিত জানতে ভিসিট করুন এইখানে। এগুলোর বাইরে আরো কিছু জিনিস দরকার সেগুলো সময়ের প্রয়জনে নিজেরাই সিখে নিতে পারবেন।
পৃথিবী বিখ্যাত এবং জনপ্রিয়তার বিচারে শ্রেষ্ঠ ১০ টি ফ্রীলেঞ্চ মার্কেটপ্লেচ এর লিস্ট দেখুন। প্রথমেই বলে নিই আপনি যদি একজন ভালো ফ্রীলেঞ্চআর হতে চান এবং এই সেক্টরে ভবিষ্যৎ গড়ার সপ্ন দেখেন, তবে কখনই একটি মাত্র মার্কেটপ্লেস এর উপর নির্ভরশীল থাকবেন না। প্রথমে শুরু করতে পারেন ওডেস্ককে দিয়ে। আমার মতে একজন সম্পূর্ণ নতুন ফ্রীলেঞ্চারের জন্য আদর্শ হতে পারে এটি। এবার আসুন দেখি এদের মধ্যে ওডেস্ককে কেন এক নম্বরে রাখা হয়েছে সেটা বুঝার চেষ্টা করি।
এই পর্ব এইখানেই শেষ করছি। আপনাদের যেকোনো প্রশ্ন করতে যোগ দিন আমাদের ফেচবুক গ্রুপে। এই টিউটরিয়াল প্রথম প্রকাশিত হয়েছে ইংরেজিতে এইখানে। এই পর্বের পিডিএফ ডাউনলোড করুন। এই টিউটরিয়ালের প্রথম পর্ব প্রকাশিত হয়েছে এইখানে।
আর আগামি পর্ব গুলোতে থাকবেঃ
আমি Tuner's Hat। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 15 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
ধন্যবাদ ।