ফ্রিল্যান্স রাইটার হিসাবে ক্যারিয়ার গড়তে চান!

অনলাইনে আয় করার অন্যতম সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রে হল লেখালেখি, যেটিকে আমরা আর্টিকেল রাইটিং বা কনটেন্ট রাইটিং বলি, এছাড়াও আছে কপিরাইটিং এর ব্যপারও। যারা ইংরেজিতে দক্ষ এবং ইন্টারনেটের বিভিন্ন বিষয়ে ভালো জ্ঞান রাখেন তাঁরাই কেবল লেখালেখিকে ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে পারেন। বাংলাদেশে এমন অনেক ফ্রিল্যান্স লেখক আছেন যারা ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস গুলোতে ঘন্টায় ৮-১২ থেকে ৩০ ডলার আয় করে থাকেন। এছাড়াও দেশি-বিদেশি ইন্টারনেট মার্কেটিং অথবা কনটেন্ট মার্কেটিং প্রতিষ্ঠানে অনেক রাইটার বা কপিরাইটার আছেন যারা মান্থলি ৩০ থেকে ১ লাখ টাকা বেতনে চাকরি করছেন। বিষয়ভিত্তিক যেকোনো লেখালেখিই হলো কনটেন্ট রাইটিং। কনটেন্ট রাইটাররা বিভিন্ন কাজের জন্য কনটেন্ট লিখে থাকেন। তবে সেটি যদি ওয়েবের জন্য লেখা হয় তাহলে আমরা সেটিকে ওয়েব কনটেন্ট হিসেবে বিবেচিত করি। এছাড়া বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য রিসোর্স বই, ব্রশিউর, লিফলেট বা অন্যান্য প্রচারণার কাজে কনটেন্ট ডেভেলপ করা হয়ে থাকে। একজন কনটেন্ট ডেভেলপার এ ধরনের সব কাজই করতে পারেন। নিচে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি কাজের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হলো।

  • কপিরাইটিং: একটি প্রডাক্ট বা সার্ভিস অনলাইনে বিক্রি করার জন্য ক্রেতার বায়িং মুড এবং আবেগের সমন্বয় ঘটিয়ে সেলস পেজ কন্টেন্ট লিখতে হয় এবং একজন রাইটার ঠিক এই কাজটি করে প্রচুর টাকা আয় করতে পারে। বর্তমান বিশ্বে একজন কপিরাইটারের প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
  • ব্লগ লেখা: কনটেন্ট মার্কেটিংয়ের প্রধান উপায় হচ্ছে ব্লগ লেখা। দিন দিন কনটেন্ট মার্কেটিংয়ের গুরুত্ব যত বাড়ছে ব্লগারদের কাজের সুযোগও বাড়ছে তত। বিষয় ভিত্তিক ব্লগ লিখে প্রতিটি আর্টিকেলে ৫ থেকে ১০০ ডলার পর্যন্ত পাওয়া সম্ভব ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসগুলোতে।
  • ওয়েবসাইট কনটেন্ট লেখা: আমরা প্রতিদিন যত ওয়েবসাইট ভিজিট করি তা কেন করি? ওয়েবসাইট থেকে বিভিন্ন তথ্য নেয়ার জন্য। এই তথ্যগুলো কি এমনি এমনি ওয়েবসাইটে রয়েছে? কাউকে না কাউকে তো প্রথমে এটি লিখতে হয়েছে। এরপর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হয়েছে। ইন্টারনেটে ওয়েবসাইটের পরিমাণ যত বাড়ছে এক্ষেত্রে কাজের পরিমাণও বাড়ছে তত।
  • প্রেস রিলিজ রাইটিং : বিভিন্ন প্রোডাক্ট বা ওয়েবসাইটের জন্য প্রেস রিলিজ লেখার কাজ প্রায়দিনই পাওয়া যাবে। এজন্য আপনাকে প্রেস রিলিজ লেখার সঠিক ফরমেট ও স্টাইল জানতে হবে। প্রেস রিলিজের পেমেন্ট আর্টিকেল রাইটিংয়ের চেয়ে বেশি হয়। একটির জন্য ২০-৫০ ডলার হয়ে থাকে।
  • ট্রান্সলেশন : ইংরেজি-বাংলা বা বাংলা-ইংরেজির অনুবাদের কাজ ফ্রিল্যান্সিং সাইটে কম থাকে। বরং প্রফেশনাল সাইট যেমন- ট্রান্সলেটরসবেজডটকম, প্রজডটকম ইত্যাদি সাইটে থাকে এবং এসব সাইটে প্রথমেই পে করে মেম্বারশিপ নিতে হয়।
  • ট্রান্সক্রিপশন : আপনি যদি দক্ষ হতে পারেন তবে ট্রান্সক্রিপশন সেক্টর খুবই ভালো আয়ের সুযোগ করে দিতে পারে । আপনি একটি অডিও ফাইল কানে শুনবেন বা একটি ভিডিওদেখবেন এবং সেখানে উচ্চারিত ইংরেজি হুবহু টাইপ করে দেবেন। এক্ষেত্রে আপনার প্রয়োজন পড়বে ইংরেজি শুনে বোঝার ক্ষমতা এবং দ্রুত টাইপিং দক্ষতা। সাধারণত এক ঘণ্টার অডিও বা ভিডিওর জন্য ১০-১৫ ডলার পেমেন্ট করা হয়।
  • সামারাইজেশন : সামারাইজেশন কাজটি হচ্ছে একটি আর্টিকেল বা ব্লগ পোস্টকে ১০০-১৫০ শব্দে রূপ দেয়া। কখনো বায়াররা কোনো বইয়ের সংক্ষিপ্ত রূপও চাইতে পারে।
  • রিজিউম রাইটিং : আমেরিকান কর্পোরেট জগত বা ইন্টারনেট জগতের জন্য উপযুক্ত রিজিউমে বা সিভি তৈরি করতে পারলে এ ধরনের কাজও যথেষ্ট পাওয়া যাবে।
  • পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন : এটি আসলে ইংরেজি ও পাওয়ার পয়েন্ট দক্ষতার সমন্বয়। আপনাকে কোনো বইয়ের চ্যাপ্টার বা মিটিংয়ের বিষয়বস্তু বা টিউটোরিয়াল সম্বন্ধে প্রেজেন্টেশন তৈরি করতে হবে। বর্তমানে প্রেজি অনলাইন টুলস দিয়ে পাওয়ারপয়েন্টের চেয়েও ভালো মানের প্রজেন্টেশন তৈরী করা যায়। ইংরেজির উপর দখল আর ভালো প্রেজেন্টেশন ধারণা থাকলে প্রচুর আয় করা সম্ভব।

কি লিখবেন, কিভাবে লিখবেন

লেখার বিষয়টা নির্ভর করে লেখকের দক্ষতা, রুচি, সহযোগিতা সর্বোপরি যে সাইট বা বিষয়ের জন্য লেখা হচ্ছে সেটার চাহিদার ওপর। তবে বিষয়বস্তু যা-ই হোক না কেন একজন ওয়েব কনটেন্ট রাইটারকে কোনো নির্দিষ্ট টপিক নিয়ে রীতিমতো গবেষণা করে ডেটাবেজ তৈরিকরতে হয়। উন্নত বিশ্বে একজন কনটেন্ট রাইটারকে একজন সাংবাদিক আবার গবেষকও অভিহিত করা হয়। ওয়েবসাইটের ধরণ অনুযায়ী ঠিক করে নিতে হয় লাইন অফ অ্যাকশন।

লেখা অবশ্যই প্রাঞ্জল ও গুরুত্বপূর্ণ হতে হবে। রাইটার হিসেবে আপনাকে মনে রাখতে হবে, যারা ওয়েবসাইটে আপনার লেখা পড়বেন, তিনি মিনিট প্রতি বা ঘণ্টা প্রতি নির্দিষ্ট পয়সা খরচ করে পড়বেন। সুতরাং তিনি চাইবেন সবচেয়ে কম সময়ে প্রয়োজনীয় জিনিস পড়তে। তাই তথ্য নির্ভর, সংক্ষিপ্ত বিষয়ভিত্তিক লেখাই আপনাকে লিখতে হবে। এতে লেখক হিসেবে আপনার গ্রহণযোগ্যতা যেমন বাড়বে তেমনি উপার্জনের পথও প্রশস্থ হবে।

কাজের যোগ্যতা

আগেই বলেছি, কনটেন্ট রাইটার হতে গেলে আপনাকে অবশ্যই ইংরেজিতে ভালো হতে হবে। প্রয়োজন শুদ্ধ বানান। এক্ষেত্রে এমএস ওয়ার্ডের স্পেল চেকারের সাহায্য নেয়া যেতে পারে। আমেরিকান স্পেলিং শুদ্ধভাবে জানতে হবে। ছোট, মাঝারি ও লম্বা বাক্য লিখতে হবে। তাই গ্রামার সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে। এক্ষেত্রে ব্রিটিশ ও আমেরিকান গ্রামার সম্পর্কেসম্যক ধারণা থাকা ভালো। আর ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য প্রয়োজনীয় যে বিষয়গুলো রয়েছে যেমন ক্লায়েন্টের সঙ্গে যোগাযোগ সমন্বয়, কাভার লেটার লেখা, আপডেটেড থাকা এসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

ভালো কনটেন্ট রাইটার হওয়ার জন্য

প্রথমত ইন্টারনেট ব্যবহারের খুটিনাটি জানতে হবে। তারপর গবেষণার জন্য থাকতে হবে তীব্র একাগ্রতা। থাকতে হবে নিজস্ব সৃজনশীলতায় তথ্যকে সম্পূর্ণ করে লেখার ক্ষমতা এবং সংগৃহীত তথ্যকে সংঘবদ্ধভাবে সাজিয়ে পাঠককে নতুন নতুন স্বাদ পাইয়ে দেয়ার চেষ্টা। রাইটার হিসেবে একেবারে নতুন হলেও সমস্যা নেই। তবে সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতা থাকলে ভালো হয়। লেখার ইচ্ছা, ভালো রচনাশৈলী ও সময়োপযোগী বিষয়বস্তু নির্বাচনের সামর্থ্য থাকলে এ পেশায় আপনি সফল হবেন। ফ্রিল্যান্স রাইটার হতে হলে যে ২০টি ব্লগ অবশ্যই দেখবেন:

১. প্রোব্লগার (http://problogger.com/)
২. কপিব্লগার (http://copyblogger.com/)
৩. ইয়ংপ্রিপ্রো ব্লগ (http://youngprepro.com/)
৪. ফ্রিল্যান্স ফোল্ডার (http://freelancefolder.com/)
৫. জেন হ্যাবিটস (http://zenhabits.net/) ও রাইট টু জোন (http://writetodone.com/)
৬. ডাম্ব লিটল ম্যান (http://dumblittleman.com/)
৭. ফ্রিল্যান্স সুইচ (http://freelanceswitch.com/)
৮. দশদশ (http://doshdosh.com/)
৯. সেথ গোডিন (http://www.sethgodin.com/sg/)
১০. ৪৩ ফোল্ডারস (http://www.43folders.com/)
১১. মেন উইথ পেনস (http://menwithpens.ca/)
১২. পারসোনাফাইড (http://www.pearsonified.com/)
১৩. ডেইল ব্লগ টিপস (http://dailyblogtips.com/)
১৪. লাইফ হ্যাকার (http://lifehacker.com/)
১৫. এন্টারপ্রেওনার জার্নি (http://www.entrepreneurs-journey.com/)
১৬. ক্রিস গ্যারেট (http://www.chrisg.com/)
১৭. দ্য সিম্পল ডলার (http://thesimpledollar.com/)
১৮. স্টিভ প্যাভলিনা (http://www.stevepavlina.com/)
১৯. লাইফ হ্যাক (http://lifehack.org/)
২০. ক্রিস ব্রোগান (http://www.chrisbrogan.com/)

যদি নতুন হন!

মনে রাখতে হবে লেখা যেন যুক্তিযুক্ত হয়। লেখার আগে তাই জানা চাই কি লিখছেন, কেন লিখছেন। নিজের কোনো শখ, দৈনন্দিন জীবন, ব্যক্তিগত কোনো অভিজ্ঞতা বিষয়ে লিখতে হলে লেখার শুরুটা হবে আবেগপ্রবণ। কারণ আবেগ পাঠককে নাড়া দেয়। এ ক্ষেত্রে ঘটনার খুটিনাটিতে না গিয়ে বরং যা ঘটেছিল ঠিক তাই বর্ণনা করুন। অতিরিক্ত শব্দ ব্যবহার না করে সামঞ্জস্যপূর্ণ শব্দ বেছে নিন। লেখা শেষে বারবার পড়ুন। ভালো লেখা পড়া, ই-মেইল, চ্যাটিংয়ের মাধ্যমে ওয়েব রাইটারদের সঙ্গে ভাবনা চিন্তার আদান প্রদান করুন। লেখার মধ্যে নাটকীয়তা রাখার চেষ্টা করুন। পাঠকরা যাতে চমক পায় সে রকম কিছু রাখুন আপনার লেখায়।

কনটেন্ট কপিরাইটিং এবং লেখালেখির কিছু টেকনিক আছে। আপনার যদি এক্ষেত্রে কাজ করার আগ্রহ থাকে তবে অবশ্যই এই টেকনিকগুলো রপ্ত করে একজন প্রফেশনাল কনটেন্ট রাইটার হতে পারেন

Level 0

আমি আবু তাহের সুমন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 33 টি টিউন ও 1212 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

আমি তাহের অনলাইন উদ্যোক্তা এবং ইন্টারনেট মার্কেটিং স্ট্রেটেজিস্ট হিসাবে কাজ করছি দীর্ঘ ১দশক যাবত। ২০১৭'তে প্রতিষ্ঠা করি ' আওয়ামাহ টেকনোলজিস লিমিটেড ' বর্তমানে এর প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। আমার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ইংরেজি ব্লগ 'ক্লিক করুন' । ধন্যবাদ।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

Level 0

thanks a lot for very research full content….

Level 2

awesome

Level 0

খুবই ভাল লাগল। আমার মত অনেকের কাজে আসবে। কষ্ট করে লেখার জন্য ধন্যবাদ।

Level 0

vai facebook a problem a porse

please any one give me your mobile number

http://[email protected]

Thank you for considering my post and allow me to post this on your site Beauty Blog
https://sauvewomen.com/beauty-guest-post/