ফ্রিল্যান্সাররা কোন কাজ করেন না! ওয়েট ওয়েট, আগে থেকেই এক্সট্রা এক্সাইটেড হয়ে যাবেন না প্লিজ! এই কাজ বলতে আমরা কায়িক পরিশ্রম বোঝাচ্ছি! একজন ফ্রিল্যান্সারকে দীর্ঘ সময় কম্পিউটার স্ক্রিনের সামনে বসে কাজ করতে হয়। যেহেতু অধিকাংশ ফ্রিল্যান্সার নিজ ঘরে বসেই কাজ করেন তাই বাইরেও খুব একটা বের হননা। বলা হয়ে থাকে ফ্রিল্যান্সাররা একধরণের ‘উপবিস্ট’ জীবন যাপন করেন, যে জীবনে ফিজিক্যাল অ্যাকটিভিটি খুবই কম থাকে। আর এধরণের জীবন যাপনের ফলে ফ্রিল্যান্সাররা ওজন বেড়ে যাওয়া, উচ্চ রক্তচাপ এমনকি হৃদরোগ সহ হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিও রয়েছে।
এ সমস্যাগুলোকে খুব সহজেই কিন্তু এড়িয়ে যাওয়া যায়। এটি করতে আপনাকে খুব বেশি এফোর্টও নষ্ট করতে হবেনা, প্রয়োজন কাজের ফাঁকে নিয়মিত কিছু ফিজিক্যাল অ্যাকটিভিটি, শারিরীক অনুশীলন, সাইক্লিং কিংবা হাঁটা। যাঁরা বাইরে বের হতে খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না তাঁরা বাসাতেই এক্সারসাইজ মেশিন বসিয়ে নিতে পারেন।
ফ্রিল্যান্সিং কাজটাকে অনেকে সহজ মনে করেন। এটি আসলে এতটা সহজ নয়, দেশের শীর্ষ ফ্রিল্যান্সারদের সঙ্গে কথা বললেই বিষয়টি বুঝে যাওয়ার কথা। যেহেতু ফ্রিল্যান্সারদেরকে একসঙ্গে একাধিক প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করতে হয় তাই প্রচুর ডেড-লাইন! আবার যেহেতু অনেক ক্লায়েন্ট তাই মাঝে মাঝে ‘কঠিন’ ক্লায়েন্টদের খপ্পরেও পড়তে হয় যারা ফ্রিল্যান্সারদের কাজ নিয়ে অসুন্তষ্ট হয়ে থাকেন। ফ্রিল্যান্সারদেকে এই সব ধকল-ই নিয়মিত সহ্য করতে হয়। আর ধারাবাহিক এবং দীর্ঘায়িত ধকল স্বাস্থ্যগত সমস্যার অন্যতম উৎস। এটি নিয়মিত মাথাব্যাথার কারণ, মানসিক ক্লান্তি এবং রাত্রে ঘুমের সমস্যা তৈরি করে। এটি শারীরিক অসুস্থ্যতা বাড়ায় এবং সক্ষমতা কমায়।
এটি খুব কঠিন কিছু নয়। আপনি নিজের শরীরের দিকে খেয়াল রাখুন। স্বাস্থ্যসম্মত অভ্যাস গড়ে করুন, ধকলকে এড়িয়ে চলায় সচেষ্ট থাকুন। আর হ্যাঁ, কাজ নেয়ার সময় যদি কোন ক্লায়েন্টকে ‘ঝামেলাপূর্ণ’ মনে হয় তাহলে সেই প্রজেক্ট না নেয়াই ভাল! নিজের শরীর প্রতিও একটু খেয়াল রাখতে হবে যে!
আগেই বলেছি, ফ্রিল্যান্সাররা ঘরে বসে কাজ করেন। আর এর মানে হচ্ছে দিনভর একলা রুমে কাজ করেই যাচ্ছেন! এমনও ফ্রিল্যান্সার আছেন যাঁরা কেবল ওয়ার্কস্ট্রেশন-বেডরুম ছাড়া অন্য কোথাও যানই না! আপনি যদি এরকম একা থাকতে অভ্যস্ত হন তাহলে একটা সময় আসবে যখন সারাক্ষণই বিষন্নতার মধ্যে ডুবে থাকবেন।
মনে রাখতে হবে, একাকীত্ব আমাদের মানুসিকতার উন্নয়নে খুবই নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
প্রিয় ফ্রিল্যান্সার ভাই, নিজেকে কোনভাবেই একাকীত্বের গর্তে ফেলা যাবে না! আপনি একা কাজ করেন বলেই যে আপনাকে একা থাকতে হবে এমনটি নয়। বন্ধুদের সঙ্গে নিয়মিত বাইরে আড্ডায় যেতে হবে, বাসার বাইরে দেখা করতে হবে এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় দিতে হবে। যদি আপনার সমমনা খুব বেশি বন্ধু না থাকে তাহলে উপায় হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোর মাধ্যমে আপনার এলাকা সমমনা বন্ধুদের খুঁজে বের করা এবং তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত মিট-আপ আয়োজন করা।
ফ্রিল্যান্সাররা পুনরাবৃত্তিমূলক স্ট্রেস ইনজুরিতে (RSI) ভুগতে পারেন, এক্ষেত্রে কারপাল টানেল সিনড্রোম (Carpal tunnel syndrome)-সমস্যায় পড়ার যথেষ্ঠ সম্ভাবনা রয়েছে। পুনরাবৃত্তিমূলক স্ট্রেস ইনজুরিতে আক্রান্ত ব্যক্তি প্রচুর ব্যথা অনুভব করেন। এতে আপনার দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করার সক্ষমতা হৃাস হয়।
এধরণের ইনজুরি থেকে বাঁচতে দরকার মুক্তি, কাজ থেকে নিয়মিত বিরতি।
আগেই উল্লেখ করেছি যে ফ্রিল্যান্সাররা বেশিরভাগ সময়ই বাসায় থাকেন। আপনি কি এটা জানেন, এ কারণে তাঁরা ভিটামিন ডি-র অভাবে পড়বেন।
কিভাবে?
আপনি যদি প্রয়োজন মত দুধ না খান এবং রোদে খুব একটা না যান তাহলে আপনি ভিটামিন ডি সংকটে ভুগবেন সেটি নিশ্চিত! আপনাদের একটি মজার সমীক্ষার কথা বলি, আরব দেশীয় মহিলারা শেষ বয়সে নানা রকম হাড়ের সমস্যায় ভোগেন। কারণ খুঁজে দেখা গেছে, তাদের শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব আছে। শতকরা ৬০ ভাগ মহিলারই এই অবস্থা। এমন রৌদ্রঝলসিত মরুর দেশে ভিটামিন ডি-এর অভাব? সেটি কিভাবে? কারণ আর কিছুই নয়, অতিরিক্ত পর্দাপুশিদার কারণে তাদের গায়ে রোদের কিরণ ঠিকভাবে পড়ে না।
আমাদের দেশের অধিকাংশ ফ্রিল্যান্সাররা সারাক্ষণ ঘরে থাকার কারণে রোদ্রের মাঝে একেবারেই যান না। আর এ কারণেই আপনাকে ভিটামিন ডি সংকটে পড়তে হতে পারে।
আসলেই, এ সমস্যাটির সমাধান করা খুব কঠিন কিছু নয়। আপনাকে পরিমিত সময় রোদ্রের মধ্যে থাকতে হবে, সেজন্য বিকেলে ঘুরতে বের হতে পারেন ।
এটি অনেকটা কমন সমস্যা ফ্রিল্যান্সারদের জন্য। ফ্রিল্যান্সাররা প্রচুর খাওয়া দাওয়া করে থাকেন। অবশ্য ফ্রিজের মাত্র কয়েক ফুটের মধ্যে বসে অফিস করলে কে ই বা না খেয়ে থাকতে পারবে, বলুন? 🙂
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, এই অতিরিক্ত খাওয়া কিংবা ডায়েট না করা আপনার স্বাস্থ্যগত সমস্যা বাড়াবে।
হুমমম... খাওয়া দাওয়া কমিয়ে দিতে হবে বস! আর কত? আর সেটি না পারলে শারিরীক পরিশ্রম বাড়িয়ে দেয়া খুবই জরুরী!
# সতর্কবার্তা!!!
আমাদের (ডেভসটিম ) টিমে কোন ডাক্তার নেই। এই আর্টিকেলটি লেখার জন্য সরাসরি ডাক্তারের কাছ থেকে কোন সহযোগিতাও নেয়া হয়নি। নিজেদের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা থেকে আর্টিকেলটি সাজিয়েছি।
আমি বিশ্বাস করি সফল ফ্রিল্যান্সার ভাইয়েরাও নিজেদের স্বাস্থ্য নিয়ে বেশ সচেতন এবং নিজের স্বাস্থ্যগত সমস্যাগুলোকে রুখে দিতে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করেন। আপনাদের এই পদ্ধতিগুলো শুনতে চাই। অন্যরা আপনাদের মন্তব্য শুনে অনুপ্রাণিত হবে।
সবাইকে জানাতে পোস্টটি শেয়ার করতেও ভুলবেন না!! 🙂
আমি আবু তাহের সুমন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 33 টি টিউন ও 1212 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি তাহের অনলাইন উদ্যোক্তা এবং ইন্টারনেট মার্কেটিং স্ট্রেটেজিস্ট হিসাবে কাজ করছি দীর্ঘ ১দশক যাবত। ২০১৭'তে প্রতিষ্ঠা করি ' আওয়ামাহ টেকনোলজিস লিমিটেড ' বর্তমানে এর প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। আমার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ইংরেজি ব্লগ 'ক্লিক করুন' । ধন্যবাদ।
Awsome tune. kheal kori nai, kintu point gula asholei sotti. Mene cholar try korbo.Thanks boss.