ইন্টারনেট যেমন আছে শেখার নানা সুযোগ, তেমনি আছে শেখাটাকে কাজে লাগিয়ে আয় রোজগারের বহু রাস্তা। তবে ঘরে বসে কোনো সাইটের লিংকে ক্লিক করে টাকা পকেটস্থ করার চিন্তা-ভাবনা যদি থেকে থাকে তাহলে এখনই মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন সেই চিন্তা। ইন্টারনেটে বহু ফোরাম ও ব্লগ আছে, যার সদস্যদের কাছে নিয়মিত ইন্টারনেটে আয় বিষয়ক পোস্ট আসে। ক্লিক করলেই ডলার অথবা পাউন্ড। হিসাবটা এমন যে, মাস শেষ হলেই পকেটে ৫০০-৬০০ডলার অনেকেই আগ্রহ করে ক্লিক করেন। কিন্তু কিছু দিন পরই জানা যায় সাইটটি ভুয়া। সুতরাং শুরুতেই জানিয়ে রাখা ভালো, ইন্টারনেটে আয় করা বিষয়ে প্রচুর ভুয়া সাইট আছে। এখনো আমাদের পরিচিত ব্লগ ও ফোরামগুলোতে ঘন ঘন ইন্টারনেটে আয় বিষয়ে পোস্ট আসে। কিন্তু ব্যবহারকারীরা ভুয়া সাইটের ওপর এত বিরক্ত যে, পোস্টগুলোতে মাইনাস রেটিং পড়ে বেশি।
তাহলে কী ইন্টারনেটে আয় একট মিথ্যা? যদি কেবল ক্লিক করে টাকা উপার্জনের চিন্তা করে থাকেন তাহলে আপনার জন্য বিষয়টা মিথ্যা। তবে যদি সৃজনশীলতাকে কাজে লাগতে পারেন তাহলে ইন্টারনেট থেকে টাকা উপার্জন অবশ্যই সম্ভব।
ইন্টারনেটে অনেক সাইটেই ফ্রিল্যান্স কাজ করার সুযোগ রয়েছে। ডিজাইন, ডাটা এন্ট্রি থেকে শুরু করে লেখালেখি পর্যন্ত নানা ধরনের কাজ করার সুযোগ আছে এসব সাইটে।
এ ধরনের সাইটের মধ্যে ওডেস্ক, গেট আ কোডার, রেন্ট আ কোডার, টপ কোডার সাইটগুলো বিশ্বস্ত। এই সাইটগুলো ব্যবহার করতে হলে শুরুতেই আপনাকে নিবন্ধিত হতে হবে। তারপর আপনাকে প্রোফাইল তৈরি করতে হবে। প্রোফাইল তৈরির সময়ই প্রতি ঘণ্টায় প্রত্যাশিত অর্থের বিষয়টি উল্লেখ করতে হয়।
ওডেস্ক (http://www.odesk.com) সাইটটির অর্থ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি বেশ ভালো। ওডেস্ক ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্সিং করেছেন মাহমুদুল হাসান। তিনি জানিয়েছেন, ওডেস্ক বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্য একটি ভিসা কার্ড প্রদান করে। এই কার্ড দিয়ে বাংলাদেশের ব্যাংক থেকেও অর্থ উত্তোলন করা যায়। এ ধরনের আরেকটি সাইট গেট আ কোডার (http://www.getacoder.com)। সাইটটির হোমপেজেই আছে নানা ধরনের কাজের তালিকা। সংশ্লিষ্ট কাজে আপনি যোগ্য হলে আবেদন করে রাখতে পারেন। বিড করে কাজটি পেলে আপনার জন্য পোয়াবারো। এই সাইটগুলোর সুবিধা হলো, যত বেশি প্রজেক্টের কাজ করবেন তত বেশি অভিজ্ঞতা যোগ হবে আপনার প্রোফাইলে। বাড়তে থাকবে আপনার মূল্য।
আপনার তৈরি করা ওয়েবসাইটে গুগলের এনে দেওয়া বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের ব্যবস্থা করেও বাড়তি আয় করতে পারেন। ওয়েবসাইট ভিজিট হলে কিংবা বিজ্ঞাপনে ক্লিক হলে টাকা জমা হবে আপনার একাউন্টে। বাংলাদেশের অনেকেই তাদের সাইটে গুগল অ্যাডসেন্স ব্যবহার করে। এর মাধ্যমে সাইটে গুগলের দেওয়া বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত হয়। আয়ের পরিমাণ ১০০ ডলার হলেই চেকের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেয় গুগল। তবে একই কম্পিউটার থেকে বেশি ক্লিক পড়লে অ্যাকাউন্টটি বাতিল করে দেয় গুগল। গুগল অ্যাডসেন্স সম্পর্কে জানতে হলে ভিজিট করুন :http://www.google.com/adsense
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজিং সংক্ষেপে এসইও নামে পরিচিত। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে সার্চ রেজাল্টে কোনো ওয়েবসাইটের অগ্রাধিকার ঠিক করা সম্ভব। ধরা যাক কোনো একটি কোম্পানির ভ্রমণ তথ্য নিয়ে একটি সাইট আছে। তারা চাচ্ছে তাদের সাইটটি গুগুল সার্চের ফলাফলে শুরুর দিকে প্রদর্শিত হোক। আপনি যদি এসইও জানেন তাহলে তা করে দিতে পারবেন। এসইও সম্পর্কে জানতে নিচের সাইটগুলো দেখতে পারেন http://www.seo.com
অন্যের ওয়েবসাইট ডেভেলপ করেও আপনি আয় করতে পারেন। ওয়েব ডেভেলপের কাজ পেতে হলে আপনাকে অনলাইনে বিড করতে হবে। জুমলা জানা থাকলে অন্যদের থেকে আপনি এগিয়ে থাকবেন। কিছু ডেমো তৈরি করে রাখতে পারেন। এগুলো আপনার রেফারেন্স হিসেবে কাজ করবে।
আপনি যদি গ্রাফিক ডিজাইন জানেন তবে সেই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ইন্টারনেটের বিভিন্ন সাইট থেকে কাজ বাগিয়ে নিতে পারেন। বিভিন্ন কোম্পাানির লোগো, কর্পোরেট আইডেনটিটি ডিজাইন (প্যাড, বিজনেস কার্ড, লেটার হেড) করা যাবে গ্রাফিক ডিজাইন জ্ঞান ব্যবহার করে। গ্রাফিক ডিজাইন শিখতে এবং এই সম্পর্কিত পেশা সম্পর্কে জানতে সাইটগুলো দেখতে পারেন http://www.graphicdesign.about.com, http://www.graphic-design.com , http://www.graphic-design-employment.com ,
http://www.graphiccompetitions.com
কোনো ওয়েবসাইট তৈরির প্রাথমিক ধাপ হলো টেমপ্লেট ডিজাইন। কোনো ওয়েবসাইটের বিভিন্ন তথ্য ও ছবি ওয়েব পেইজের কোন জায়গায় কতটুকু যাবে, তার প্রাথমিক ধারণা দেয় এই টেমপ্লেট। ধরুন আপনি খেলা নিয়ে একটি ওয়েবসাইট করতে চাচ্ছেন। সাইটে কোথায় কোন খেলা যাবে, তার লুকটা কেমন হবে, ছবি আর লেখা কতটুকু যাবে, তার একটি প্রাথমিক ডিজাইন এই টেমপ্লেট। আপনি চাইলে এই টেমপ্লেট তৈরি করেও আয় রোজগার করতে পারেন।
টেমপ্লেটের নমুনা দেখতে ভিজিট করুন : http://www.joomladesigns.co.uk,
http://www.freewebsitetemplates.com
বর্তমানে অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট জনপ্রিয় হচ্ছে। ধরা যাক আপনি একটি সাইট করলেন, যেখানে বাংলা থেকে ইংরেজি অনুবাদ, ইংরেজি থেকে বাংলা অনুবাদ করা যায়। সাইটটি অনলাইনে আপলোড করা থাকলে অনেকেই এটি ব্যবহার করবে। বাড়বে আপনার ভিজিট, গুগল অ্যাডসেন্সের মতো বিজ্ঞাপনী সেবাগুলো যোগ করে রাখতে পারেন।
বেশি ক্লিক মানেই আপনার পকেটে অর্থ। ফেইসবুকের জন্য বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ও গেমস ডেভেলপ করতে পারেন। ভালো গেমস অ্যাপ্লিকেশন ও গেমস ডেভেলপ করলে ফেইসবুকই কিনে নেবে। ফেইসবুকে অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপ করতে চাইলে দেখতে পারেন সাইট: developers.facebook.com
ফ্লাশ তৈরি, ব্লগ লেখা, প্রোডাক্ট রিভিউ, প্রজেক্ট টেস্টার হিসেবে কাজ করেও অর্থ উপার্জন সম্ভব। এসব তো গেল কী উপায়ে ইন্টারনেটে অর্থ উপার্জন সম্ভব। কিন্ত আপনার যদি এসব টেকিনিক্যাল জ্ঞান না থাকে তাহলে? টেকনিক্যাল জ্ঞান নেই তো কী? ইন্টারনেটে প্রচুর টিউটোরিয়াল আছে। এসব টিউটোরিয়ালে বেশ গোছালোভাবে কাজের প্রক্রিয়া বর্ণনা করা আছে। এসব দেখে দেখে নিজে নিজেই কাজগুলো শিখে নিতে পারবেন।
ওয়েব ডিজাইন
http://www.webdesign-tutorials.com
http://www.w3schools.com
http://en.wikipedia.org/wiki/Web-design
গ্রাফিক ডিজাইন
http://www.allgraphicdesign.com
http://www.graphictutorials.net
http://www.designtutorials.info
http://en.wikipedia.org/wiki/graphic-design
বেশ কিছু ফোরাম ও ব্লগ আপনার সহায়ক হতে পারে
forum.amaderprojukti.com
techtunes.io
http://www.joomla-bd.org
http://www.php.net
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেও ওয়েব ডিজাইন, গ্রাফিক ডিজাইন শিখতে পারেন। এআইইউবি, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির মতো বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাঝে মধ্যে প্রফেশনাল কোর্স করায়। এই কোর্সগুলো করতে পারেন। এ ছাড়া সিসটেক ডিজিটাল, ডেফোডিল ইনস্টিটিউট অব আইটির মতো কিছু প্রতিষ্ঠান গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইনের ওপর কোর্স করায়।
যোগাযোগের ঠিকানা
সিসটেক ডিজিটাল লিমিটেড, বাড়ি নম্বর-৭, সড়ক-৩১, সেক্টর ৭, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০, ফোন-০২ ৮৯৬২৬৩৬, ০১৭১৩২৪৯৫৪১
ডেফোডিল ইনস্টিটিউট অব আইটি, ধানমন্ডি ক্যাম্পাস, বাসা-৭, সড়ক-১৪ (নতুন), ধানমন্ডি-১২০৯, ফোন-০২-৯১১৭২০৫, ৯১২৪৭৭৩
আমি নেট সাগর। CEO, Best Social Plan, Bogra। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 58 টি টিউন ও 696 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি একজন অজানা পথের পথিক। সারাদিন ইন্টারনেটের মধ্যেই ডুবে থাকি। আমার ওয়েবসাইট: https://bestsocialplan.com/