আশা করি সবাই ভাল আছেন। সর্বশেষ টিউন করেছিলাম দেখতেসি ১৩ই ডিসেম্বর, ২০১০ এ!! এতদিন সুধু মানুষের টিউন দেখেই গেলাম আর টিউন করে উঠা হয়নাই। অবশেষে ফিরে আসলাম আপনাদের সাথে একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্নে।
যাই হোক কাজের কথায় আসি। টেক-টিউন্স এ এর আগে ঘুমচোর ভাই ফ্রীল্যান্সিং নিয়ে একটা টিউন করেছিলেন অনেক আগে। তার সেই টিউন টা পরার পরে মাথায় ভুত চাপল ফ্রীল্যান্সীং এর। জোশের ঠেলায় খুলেই ফেললাম একাউন্ট Freelancer.com এ। তো প্রথমবার আমার জ্ঞানের সাগর ঢেলে দিলাম পুরা ফ্রীল্যান্সার জুড়ে। দেখা গেল সব দিকেই আমার অপরিসিম জ্ঞান। Article writing, Blog developement, Photoshop, C++, Java ইত্যাদি ইত্যাদি। ২০ টা স্কিল ই ফিল আপ করে দিলাম। প্রথম দিন এই বিভিন্ন প্রজেক্ট এ বেশ কয়েকটা বিড হেকে দিলাম। আমার জ্ঞানের রেডিয়াস বুঝতে পেরেই নাকি জানি না, কোন বিড ই কাজে লাগ্ল না। আমি তো হাল ছাড়ার পাত্র না। আমার মত গেয়ানি মানুস নাকি জব পাবেনা। বিড করতেই থাকলাম এবং রিজেক্ট হতেই থাকলাম।
কি ভাবছেন? এইবার মনে হয় লাইগা গেল! ভাই এক মাস প্রচেস্টা চালানর পরেউ যখন কোন কিছুতেই কিছু হইল না, বুঝতে পারলাম আমার মত স্কিলফুল মানুস এদের পছন্দ হয়নাই!! সত্য কথা বলতে যতগুলা জিনিস পারি বলসিলাম তার মদ্ধে Article লেখা বাদে আর কিছু করতে পারতাম বলে আমার মনে পরেনা। অতঃপর আমি সেখানেই ইতি টানলাম, বলা জায় টানতে বাদ্ধ্ হলাম, আমার প্রাথমিক স্কিলফুল ফ্রীল্যান্সিং জিবনের।
কয়েকদিন আগে ভার্সিটি এর সেমিস্টার ব্রেক এ হঠাত মাথায় পুরান ভুত টা চাড়া দিয়ে উঠল। তবে এইবার প্ল্যান সম্পুর্ণ ভিন্নভাবে। ঠিক করলাম Portfolio সহ একটা কমপ্লিট প্রোফাইল বানাবো এবং তারপরে শুধুমাত্র Article Writing এর উপরে বেস করে একটা প্রোফাইল তৈরি করব। শুরু করে দিলাম কাজ। আসলে কাজ তেমন কিছু করিনাই। আপনাদের বলি কি কি করলাম।
প্রথমেই ঘুমচোর ভাই এর কথামত নামের প্রতি জোর দিলাম যেন নাম দেখেই বেটারা কাত খায়। নাম দিলাম "workaholic1226"। ইকটু ইশটাইলিশ হইয়া গেলেউ নাম টা যে কাজের তা পরে বুঝতে পারসি। আপনারা দেখুন নামের মাদ্ধমে প্রকাশ করে দিলাম আমি কাজ করার প্রতি অতিশয় নেশাগ্রস্ত!! যদিও আদও সেইরকম কিছু আমার মদ্ধে নাই। মনে করেন আপনি php ভাল পারেন। নাম কি দিবেন? phpexpert1234 অবশ্যই এইরকম কিছু। তবে আমি বলব যে আপনি জা খুসি নাম দেন কোন সমস্যা নাই। আপনি চাইলে নিজের নাম ব্যবহার করেন, কিছুই যায় আসেনা। কারন আপনি যদি একটা ভাল Portfolio দার করাতে পারেন এবং বিড টা খুব সুন্দর ভাবে Demo সহ সাবমিট করতে পারেন কোন এমপ্লয়ার আপনার নাম কি তাকিয়েউ দেখবেনা। সেটাই হবে আপনার মূল টার্গেট। নাম টা উছিলা মাত্র।
যাই হোক এরপরে আমার স্কিল লিস্ট ফিল আপ শুরু করলাম। স্কিল্ সব ই দিলাম Article Writing বিষয়ক। দেখুন আমার সিলেক্ট করা স্কিল গুলো কি ছিল-
দেখেন এইখানে সব গুলোই writing বেসড স্কিল। আমার মূল চিনতা ছিল Article লিখার কাজ করা কাজেই আমি স্কিল্ গুলো ফিল আপ করেছি সেই ভাবেই। কারন আমার পুর্ব অভিজ্ঞতা থেকে ভালই বুঝতে পেরেছিলাম এমপ্লয়ার রা সর্ব কাজে পারদর্ষী কাউকে চায়না, তারা জেই কাজটা করাতে ইছছুক শুধুমাত্র সেই সেক্টর এ পারদর্শী এমন কাউকে চায়। তো আমার এইবারের লিস্ট এ দেউয়া যাবতীয় সব ই আমি করতে পারি, এইবার আর গতবারের মত ভুগিচুগি মারতে যাইনাই। এখন আপনি যদি একের বেশি বিষয়ে পারদর্ষী হন তাহলে দিতে কোনই সমস্যা নাই। কারন সেই ক্ষেত্রে আপনি উপযুক্ত demo দিয়ে বিড এ নিজেকে একটি শক্ত অবস্থানে নিয়ে যেতে পারবেন আপনার স্কিল এর উপর ভিত্তি করে।
এরপরে শুরু করলাম Portfolio এর কাজ। এটা খুব ই গুরুত্তপুর্ণ যে আপনার একটা কাজের Portfolio থাকুক। কাজের মানে আজাইরা কিছু দিয়ে দিলেন যা দেখে আপনার কাজের প্রতি এমপ্লইয়ার এর অনিহা চলে আসল তাহলে তো হবেনা। চেস্টা করবেন আপনার করা বেস্ট কাজ টি এখানে শো করতে। যাতে Portfolio দেখেই এমপ্লয়ের বলে একে দিয়াই আমার কাজ করাইতে হবে। আপনার Portfolio টাই যেন হয়ে উঠে আপনার যোগ্যতার স্বারক বা প্রতিচ্ছবি। আমার প্রোফাইল এ এতদিন একটা Portfolio ছিল যা আমি গতকাল ডিলিট করে দিসি কারন আমি আর আর্টিকেল লেখার বেপারে ইন্টারেস্টেড না। এমপ্লয়ার এর মন জুগিয়ে একটা ভাল মানের আর্টিকেল নির্দিষ্ট সময়ে লিখে দেউয়া টা অত্যন্ত কষ্টকর এবং সেই তুলনায় টাকা ও পাউয়া যায় অনেক কম। তাই ঠিক করলাম ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর কাজ সিখে পরবর্তীতে অই কাজ ই করব। অনেকেই হয়ত এমন আছেন যারা Article লিখা দিয়ে ফ্রীল্যান্সিং শুরু করে পরবর্তীতে এই কারনে বাদ দিয়ে দেয়। আরটিকেল লিখার কাজে আপনাকে যেই পরিমান শ্রম দিতে হবে এর চে অর্ধেক শ্রম দিয়ে আপনি আরও অনেক বেশি আয় করতে পারবেন web development, web design, graphics design, android, java প্রভ্রিতি সেক্টর এ। তবে প্রফেশনাল আর্টিকেল রাইটার রা অবশ্য ভালই কামাচ্ছেন, তবে উপরিউক্ত সেক্টর গুলোর তুলনায় আসলে কিছুই না। এখন আপনারা যদি ভাল Portfolio এর স্যাম্পল দেখতে চান তবে আপনাদের আমি কিছু হাই রেটেড Portfolio এর লিঙ্ক দিচ্ছি -
এমন অনেকেই আছে যারা Portfolio ছাড়াই অনেকদিন ধরে দক্ষতার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। তাহলে এদের রহস্য টা কী?? এদের মূল রহস্য লুকিয়ে আছে এদের বিড রিপ্রেসেন্টেশান এ। আমি আমার দ্বিতীয় বিড এই কাজ পেয়ে গেছি। সবাই এতটা লাকি হয়না। তবে প্রজেক্ট জেতার সবচে বড় ট্রিক্স টি লুকিয়ে আছে প্রজেক্ট টি বুঝতে পারার মদ্ধে। আপনাকে সবার আগে বুঝতে হবে এমপ্লয়ার আপনার কাছে ঠিক কি চায়। যা চায় তা যদি আপনি পুরোপুরি ঢেলে দিতে পারেন এবং আপনার কাজের ধরনের সাথে মিলে যায় তাহলেই কেবল বিড করুন। এছাড়া বিড করার কথা ভুলে যান। বিড করে দেখি লাইগা যাইতেও পারে টাইপ চিন্তা বাদ দেন। বিড করার জন্য আপনি অনেক প্রজেক্ট পাবেন কাজেই ফালতু বিড করে বিড নস্ট করার কোন মানে নাই। পরে দেখা গেল পছন্দসই প্রজেক্ট পেয়েও আপনি বিড এর অভাবে কিছুই করতে পারলেন না,এমনটা যেন না হয়।
এখন বলি আমি কি করেছিলাম বিড করার সময়। অনেক আশা নিয়ে প্রথম বিড টা করলাম, এমপ্লয়ার ছিল ইন্ডিয়ান। যেহেতু ঘুমচোর ভাইজান আগেই লাল বাতি জালাই দিসে ইন্ডিয়ান এমপ্লয়ার সম্পর্কে তাই ভয়ে ভয়ে ছিলাম বিড জিতলেউ প্রজেক্ট টা করার বেপারে। এরপরেই আমার একটা প্রজেক্ট দেখে পছন্দ হল এবং ঠিক করলাম অইটায় বিড করাই লাগবে। প্রজেক্ট টা দেখুন -
প্রথমেই দেখেন তার কত চাহিদা। এত চাহিদা দেইখাই আমি প্রথমে আউলা খাইলাম একবার। পরে মনে হইল নাহ এই কাজ টা আমার জন্য ঠিক আসে যদিও টাকা অনেক কম দিবে কিন্তু আমি তখন প্রথম কাজ পাউয়ার নেশায় মত্য। যে কোন ভাবে যে কোন উপজুক্ত কাজ আমাকে পেতেই হবে। আমি বিড দিলাম এইভাবে -
বিড এর সাথে PM সেন্ড করার অপশন থাকে। অইটা আপনি ব্যবহার করবেন আপনার ডেমো এবং কন্ডিশান গুলো সাবমিট করার জন্য। এই বেপারে বিস্তারিত পাবেন ঘুমচোর ভাই এর টিউন টায়। একটা জিনিস মনে রাখবেন,শুধুমাত্র Article প্রজেক্ট এর ক্ষেত্রে, চেস্টা করবেন আপনার Demo তে ব্যবহৃত প্রতিটা বাক্য যেন পুরোপুরি ব্যকরনগত দিক থেকে ঠিক থাকে। কারন গ্রামারটিকাল ভূল দেখলে আপনার প্রতি এমপ্লয়ার এর ভিউ এম্নিতেই খারাপ হয়ে যাবে। আমি আমার পুর্বে লিখা একটা ভাল আর্টিকেল Demo হিসাবে সাবমিট করলাম। লিখলাম তার সব কন্ডিশান এই আমি রাজি। এবং এর প্রায় আধা ঘন্টা পরে আমাকে বেক্কল বানাই দিয়ে PM এ রিপ্লাই আসল। আমার আর আমার এমপ্লয়ার এর মদ্ধকার পুরো কনভার্সেশান টাই দিয়ে দিলাম। আশা করি আগ্রহিদের সাহাজ্য হবে।
আরেকটা জিনিস হচ্ছে আপনি অবশ্যই প্রোফাইল পিকচার টা হয় নিজের ছবি নয়ত আপনার কোম্পানির ছবি দিতে চেস্টা করবেন। এটা এমপ্লয়ার এর মনে আস্থা সৃষ্টি করতে সাহাজ্য করে। ভুগিচুগি মার্কা ছবি দেউয়া থেকে বিরত থাকুন। আরও একটা বেপার লক্ষ করুন যে আমি নাকি ডেইলি ১৬ ঘন্টা এভেইলেবল থাকতে পারব!! এমপ্লয়ার কাজ দিতে চাইসে এমন একজন কে যে অল টাইম অনলাইন থাকতে পারবে। সো ঝোপ বুঝে জায়গা মত কোপ মেরে দিলাম। তবে এও ধরনের চাপা চুপা মারার আগে অবশ্যই মনে রাখবেন যেন এর অনতত অনেকটাই সত্ত হয়। যেমন আমি অন্তত ১২ ঘন্টা অনলাইন থাকতে পারব বুঝেই ১৬ ঘন্টা বলে দিসি। নইলে পরে যদি চাপা মেরে ধরা খান এমপ্লয়ার খেপে গিয়ে আপ্নের জব ক্যান্সেল এবং একটা সেইরকম বাজে রিভিউ দিয়ে দিতে পারে। কাজে বুঝে শুনে বিড করেন,চাপা আস্তে বুইঝা মারেন। আশা করি কাজে লাগবে।
দুঃখজনক বেপার আমার PHP কোর্স শুরু হয়ে জাউয়ায় আমি ১৩ টা আর্টিকেল লিখার পরে এমপ্লইয়ার কে বলে কাজে অব্যহতি দিয়ে দিসি। কাজ হয়ত শেষ করতে পারতাম কিন্তু আমার এমপ্লয়ার মাঝখানে দুই দিনের মত ফাকি দিসে। 😛 ১৩ আর্টিকেল এর জন্য আমাকে $13 পেমেন্ট করে এই মেসেজ টা দিসিল আমার এমপ্লয়ার -
ভাবসিলাম এমপ্লয়ার এর রিভিউ পাব। কিন্তু বেটা কাজ টা এবর্ট করে দিসে...আমাকে কোন রিভিউ দেয়নাই। 🙁 আমিও তাকে কোন রিভিউ দিতে পারতেসিনা। কিভাবে রিভিউ দেউয়া জায় বুঝতেসিনা। কেউ এই বেপারে জানা থাকলে জানাবেন দয়া করে।
কাজটা করার পরে এমপ্লয়ার এর সাথে আমার বেশ ভাল রিলেশান হয়ে গেসিল। প্রজেক্ট টা শেষ করলাম কিভাবে এবং কিভাবে ভাল রিলেশান গড়ে তুল্লাম সেই বেপারে আরেকদিন বলব। এখন আপাতত ফ্রীল্যান্সিং থেকে দূরে আছি। আগে ভালমত কাজ শিখতেসি যেটা সবারি করা উচিত। একটা ব্লগ বানিয়ে গুগল এড বসাই দিসি,এবং যত কাজ সিখি আমার সাইট টাকে গিনিপিগ বানাইয়া অইটাতেই অস্ত্রপচার চালাই। যারা কাজ সিখতে চান তাদের জন্য একটা নিজস্ব ব্লগ থাকা টা খুব ই জরুরি। সেখানে যত খুসি এইচটিএমএল এস্পার ওস্পার করেন কোন সমস্যা নেই। এভাবেই ধিরে ধিরে কাজ সিখবেন।
আজকে আর না। আরো গুছিয়ে সুন্দর করে লিখার ইচ্ছা ছিল। কোথাউ কোনোও ভুল থাকলে ধরিয়ে দিবেন। টিউন কেমন লাগ্ল জানাবেন। আর এটা নিতান্তই আমার একটি অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম মাত্র। কারোও যদি এটি কাজে লাগে ভাল লাগবে। আপনাদের কাছ থেকে ভাল সারা পেলে পরে হয়ত এমপ্লয়ের এর সাথে কিভাবে ভাল রিলেশান বিলড আপ করলাম এবং নতুন কেউ কিভাবে Article লিখা বাদেউ আর অন্য সেক্টর গুলোতে দক্ষতা অর্জন করতে পারে, আর আমি বর্তমানে কি কি শিখছি সেই বেপারে একটা টিউন করতে পারি।
আমি শুভ্র হাসান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 11 টি টিউন ও 112 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
ভাই workers দের replay দেখলেই মাথা ব্যথা শুরু হয়ে যায় …।
ওই জায়গায় তখন আর Bid করতে মন চায় না…।
🙁