সবাইকে সালাম ও ভালোবাসা জানাই।
আশা করি সব টিউনার বন্ধু ভালো আছে।
আজ ৮ ই মার্চ, "আন্তর্জাতিক নারী দিবস''। আমি নারীদেরকে সম্মান ও ভালোবাসার দৃষ্টি থেকে দেখি, সেই অনুভূতি থেকে এই টিউন।
টেকটিউনসে কেন এই টিউন? উত্তরটা হলো, বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ব্লগিং প্রযুক্তি সাইট এটি। তাই বলা যায়, দেশের শীর্ষ মেধাবী তরুণদের বেশীরভাগ অংশ এই সাইটের প্রাণ জুড়ে আছে। তাদের সাথে বিষয়টা শেয়ার করার মাধ্যমে গড়ে উঠতে পারে সচেতনতা। এই টিউন তারই ক্ষুদ্র প্রয়াস। এই দিনটির আড়ালে আমি কিছু মেসেজ টিউনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করব। তথাপি দিবসটি সম্পর্কে অপ্ল কিছু তথ্য থাকবে।
সাধারণত প্রতি বছর ৮ই মার্চ সারা পৃথিবী ব্যাপী "আন্তর্জাতিক নারী দিবস" পালিত হয়। আমাদের নারীদের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের জন্য এই দিনটি বিশেষ দিনটি পালন করা হয়। অনেকেরই অভিমত যে, একদিনে ভালোবাসা প্রকাশ করার কি আছে? তাদের জন্য আমি বলতে চাই, ভালোবাসাটা যদি একটা 'পাহাড়' হয় তবে তার সর্বচ্চো চূড়া হবে, ভালোবাসার জন্য পালিত দিনটি। যদি 'সাগর' হয় তাহলে সাগরের মধ্যবিন্দু হবে সেই দিনটি। অর্থাৎ, প্রত্যেকটা জিনিসের কিন্তু সর্বচ্চো থাকে। সেটা প্রকাশের জন্নই হয়তো 'দিবস' এর সৃষ্ট হয়েছে।
১৯১১ সালের ১৯ মার্চ সর্বপ্রথম জার্মানিতে 'সোশালিস্ট পার্টি অব আমেরিকা' ডাকে 'আন্তর্জাতিক নারী দিবস' পালিত হয়। ১৯১০ সালে কোপেনহেগেনে আন্তর্জাতিক মহিলা সম্মেলনে একজন জার্মান সোশালিস্ট ক্লারা যেটকিন, আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনের জন্য প্রথম প্রস্তাব করেন। তখন এর জন্য কোন নির্দিষ্ট দিন ঠিক না হলেও ১৯৭৭ নারী অধিকার ও আন্তর্জাতিক শান্তির জন্য জাতিসংঘ মার্চ মাসের ৮ তারিখকে 'আন্তর্জাতিক নারী দিবদ' হিসেবে ঘোষনা করে। সেই থেকে পালিত হয়ে আসছে এই দিনটি।
আমাদের দেশ মহিলা রাজনীতি নির্ভর হলেও, তারা নারীদের অবস্থার খুব একটা পরিবর্তন ঘটাতে পারেনি। কিছুদিন আগে 'ইভ টিজিং' (মেয়েরাও নারীত্বের দাবীদার) নিয়ে কিছু পাশবিক ঘটনার পর বেশ কিছু আইন হয়ছে। আমরা তার কিছু সুষ্ঠু প্রয়োগও দেখেছি। তবে আমার যেটা আশঙ্কা, সেটা হলো জনসম্মুখে সিগারেট খেলে ৫০ টাকা জরিমানা এই নাজুক আইনের মত না এটা আবার মিইয়ে যায়। আমরা আসলে এমন দেশে থাকি, যেখানে অঘটন না ঘটার জন্য 'সৃষ্টকর্তা'র কাছে প্রার্থনা করা ছড়া আর কিছুই নেই!তবে এই আইনের বেশ কিছু অপব্যবহার ইতি মধ্যে আমাদের সামনেই ঘটেছে। কিছু ব্যতিক্রমি মেয়ে আছে যারা এই আইনটিকে নিজেদের প্রয়োজনে কাজে লাগাচ্ছে। নারীদের প্রতি আমাদের দৃষ্টভঙ্গি ও প্রয়োগের দুটি নমুনা বলছি।
আমাদের দেশে নারীদের বর্তমান অবস্থা বুঝানোর জন্য আমি একটা ছবি দিচ্ছি .
এই রকম দৃশ্যগুলু আমাদেরকে এখনও দেখতে হয় একবিংশ শতাব্দিতে এসে। ক্ষুদা দারিদ্রে থেকে বাচার জন্য যে দেশের মানুষ রাজনীতির মত ছোট জিনিসকে আকড়ে পড়ে থাকে তাদের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য আবারো একবার প্রভু'কে ডাকতে হলো। যে দেশে এখনও 'এসিড নিক্ষেপ'র মত নোংরা ঘটনা ঘটে, সেখানে নারীদের অবস্থা নতুন করে বর্ণনা করতে গেলে, নিজেদের অসহায়ত্বই প্রকাশ পায়। এই রকম ঘটনা ঘটিয়ে তারা যখন বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ায়, তখন নিজেকে বড় অপরাধী মনে হয়। আইনের চোখে ফাঁকি দিয়ে কিংবা রাজনৈতিক সাহায্য নিয়ে বেঁচে যাওয়া এই পশুগুলা মানব জাতির মনুষত্বের জন্য সবচেয়ে বড় লজ্জা।
আমরা যখন বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে কিংবা নিজেদের বিবেক হারিয়ে এই কাজটি করি, তখন আসলে এই কাজটির খারাপ দিক বুঝা যায় না। আপনি যখন আপনার বোনকে নিয়ে বাহিরে বার হবেন এবং আপনার বোন আপনার সামনে ইভ টিজিং এর স্বীকার হবে, কেবল তখনই বুঝবেন ইভ টিজিং কিভাবে আমাদের সমাজকে অসুস্থ করে রেখেছে। আমরা আসলে এই ব্যাপারগুলা দেখতে দেখতে হাপিয়ে উঠেছি। যতক্ষন না আমদের ঘুমন্ত বিবেক জেগে উঠবে ততক্ষন এই রোগ সারবে না। তবে একটা জিনিস আমরা সব টিউনারই জানি যে, আমাদের ব্যবহার আমাদের পরিবার তথা বাবা-মা'কে রিপ্রেসেন্ট করে। তাই নিজের অস্তিত্ব(মা-বাবা) রিপ্রেসেন্ট করে।তাই নিজের অস্তিত্ব(মা-বাবা)কে অপমান না করে আমরা যদি সম্মান করতে পারি কেবল তখনই এই অসুস্থ সংস্কৃতি বন্ধ হবে।
আপনি খেয়াল করবেন, আপনি যদি সিগারেট না খান কংবা মেয়েদের টিজ না করেন আপনার বন্ধুদের কেউ কেউ আপনাকে বলছে, "তুই বেটা হি*** নাকি? কাম'ন ম্যান!!" তবে আশার কথা সবাইত এক রকম না! ভালো মানুষের সংখ্যাই বেশি।
আমি যদি এক কথায় এই প্রশ্নের উত্তর দিতে যাই, তা হবে "না"। কারণ এক হাতে তালি বাজে না। আমি সম্ভব্য শ্লীলতার মধ্যে একটা ছবি দেওয়ার চেষ্টা করেছি। সেটা দেখলে কিছুটা আন্দাজ করতে পারবেন।
তাদের এই বহিঃপ্রকাশ তথা প্রতিবা খোঁজার নামে, সমাজে চলছে চরম আকারের বাণিজ্য। যাতে নারীদের পূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে। সজ্ঞানে কিংবা অজ্ঞানে তারা এই ব্যপারগুলুর স্বীকার। এর মানে এই না, আমি নারীদের ঘরে থাকতে বলছি কিংবা শুধু রান্না ঘর দেখাশুনা করতে বলছি। একটা কথা কি জানেনতো, আপনি যদি টোপ না ফেলেন মাছ কিন্তু নিজে নিজে ডাঙ্গায় উঠে আসবে না। বর্তমান সময়ে আধুনিক হবার নামে মিডিয়া/বিজ্ঞাপন তথা গ্লেমার ওয়ার্ল্ড(কিংবা তথাকথিত সুন্দরী প্রতিযোগিতার নামে।) নামে যা হচ্ছে, তা এক কথায় 'অশ্লীলতা'। ]
আমরা জানি সেখানে কি বুঝানো হয় এবং তা শুধু মাত্র পুঁজিবাদের অন্যথায় লোভ হাসিলের আদায়ের উদ্দেশে। আর মেয়েরা তথা নারীরা যদি আধুনিকতার নামে সেখানে প্রশ্রয় না দিতো তবে কি এমনটা হত। আজ কাল পরিবারের সামনে টিভি দেখা প্রায় অসম্ভব হয়ে গেছে। আমার এক বন্ধু গতকাল বলছিল, একটা বিশেষ বিজ্ঞাপন সম্প্রতি দিচ্ছে আমাদের চ্যানেলগুলুতে। বাবা-মা ও ভাইয়ের সামনে সে রীতিমত লজ্জায় উঠে যেতে বাধ্য হয়ছে। তাহলে সেখানে প্রশ্রয়টা কে দিচ্ছে?
সেদিন ক্লাসে আমাদের একজন ম্যাম'তো সবার সামনে মেয়েদেরকে, তাদের পোষাকের ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন। তাহলে কি আমরা বলবো, এতে ফ্যামেলীর শিক্ষার অভাব? আমি মানলাম আমাদের পুরুষ সম্প্রয়দায়ের সমস্যা বেশি। কিন্তু তাই বলে আমরা নারীদের একদম নির্দোষ বলে দিতে পারি না। আপনি খেয়াল করবেন রাস্তা দিয়ে যখন একটা মেয়ে শ্লীল পোষাক পরে যায়, তাদের টিজিং করার সাহস কেউ পায় না। আবার একই মেয়ে, আধুনিকতার নামে আধুনিক জামা কাপড় পরে, দেখবে সে যখন রাস্তা দিয়ে যায়, সবাই এমন ভাবে তাকিয়ে থাকে যেন খুব মজার কিছুএকটা যাচ্ছে।
তাহলে কি আমি বলবো তারা এইগুলা দেখা/শুনার জন্যই এই রকম গেটাপ নেয়? কারো কারো ধারনা হতে পারে, আমি বোরখা পরার কথা বলছি। তা নামি কখনোই বলতে পারি না, এটা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত একটা ব্যপার। আপনি দেখবেন পহেলা বৈশাখ কিংবা, বসন্তের প্রথম দিনের সাঁঝে, সবাইকে অন্য রকম লাগে। সেটাই নিয়ে আমি ইভ টিজিং হতে দেখিনি কখনও। কারন এতো শতভাগ বাঙ্গালীপনা। তাতে হয়তো, নারীর প্রতি সম্মান আর ভালোবাসা একটু খানি বেড়েই যায়। তাছড়া আরো একটি বিয়ের চমৎকার ছবিও আমরা দেখে তার আবেশ বুঝতে পারি।
মা কিংবা ভালোবাসার মানুষের 'এক কথায়' অনেকের জীবনের ইতিকথা বদলে যেতে আমি দেখেছি। তাই তারা প্রেরনা। তাই তারা ভালোবাসা। আমাদের দেশে এই নারীরাই বাছিয়ে রেখেছে গোটা একটা শিল্পের বেশিরভাগ অংশ। তা হল তৈরী পোষাক শিল্প। জানিনা তাদের কথা কত জন ভাবে, তবে তারা আমার কাছে অনেক বিষ্ময়ের ও সম্মানের। কোনও খারাপ কাজ কিংবা ছোট কাজ করলে আমি অনেকেই গালি দিতে শুনেছি, "পুরা গারমেন্টেসর লোকজনের মত!!"।(আমার এক পাড়াত ভাই আছেন, যিনি মাঝে মধ্যেই এই কথা বলেন!) বিশ্বাস করেন, এই গালির মানে আমার মাথায় ধরে না। কেউ জনলে আমাকে জানাবেন। নারী আমাদের জন্য কতটা প্রেরনার তার নমুনা দেখানোর জন্য আমি একটা ছবি দিলাম নিচে।
আমার নিজস্ব অভিমত ও চিন্তা থেকে এই টিউনটি করা। কাউকে দুঃখ দিতে নয়। কেউ কষ্ট পেলে মার্জনা মিলবে আশা করি। তবে এখান থেকে যদি একজনও সচেতন হয় তাতেই আমার চেষ্টা সফল হবে। কারন নারী মানে প্রথম যে কথাটি আসে, তা হলো 'মা'। শেষ করার আগে সবার জন্য দুটি জিনিস নিবেদন করতে চাই।
আমার ভালোবাসার 'মা'(যিনি এখনও আমাকে খাইয়ে দেন!) সহ, সকল টিউনারের ও আমার আরেকটি প্রিয় সাইট টেকটুইটস(http://www.techTWEETS.com.bd) এর সকল বন্ধুদের শ্রদ্ধার 'মা'য়ে দের। আমি একটা কথা বিশ্বাস করি, পৃথিবীর সব ভালোবাসাই মা'এর জন্য।
ফেসবুকে আমাকে পাবেন এখানেঃ Rubel Orion
আমি Rubel Oron। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 8 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 9 টি টিউন ও 229 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
______''সুডো ব্লগ''_এ আপনাকে স্বাগতম!' ________'প্রোগ্রামারের পৃথিবী''_তে আপনাকে স্বাগতম! _______''Rubel Orion on Facebook! :D
ভাই জোস হয়ছে!!!!!!!!!!!!!!!বিশেষ করে ইভ টিজিং এ নারীরাও যে দায়ী এইটা দারুন একটা সত্য কথা!!!!!!!!!!এক হাতে সত্যি তালি বাজে না!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!