কত বিশাল আমাদের এ মহাবিশ্ব! কত রহস্যময় আমাদের এ পৃথিবী। না জানি কত না তথ্য আমাদের অজানা। এ অজানাকে জানতে রাত দিন মাথার ঘাম পায়ে ফেলে যাচ্ছেন পৃথিবীর বড় বড় সব বিজ্ঞানীরা। প্রতিনিয়ত আমাদের দিয়ে যাচ্ছেন নতুন নতুন সব অজানা তথ্য। আর পৃথিবীর মানুষও তাদের দিয়ে যাচ্ছেন নিরঙ্কুশ সমর্থন। এমনকি বিভিন্ন দেশের সরকারও তাদের উৎসাহিত করার জন্য দিচ্ছেন বিভিন্ন ধরনের পুরষ্কার ও স্বীকৃতি। কিন্তু সবসময় কি মহাবিশ্ব নিয়ে গবেষণার পরিবেশ এত সুন্দর ছিল, ছিল এখনকার মত নিরাপদ? উত্তরটা হচ্ছে না। আসুন এ বিষয়ে একটা গল্প শুনি। আপনারা অবশ্যই বিখ্যাত বিজ্ঞানী গ্যালিলিও গ্যালিলাইয়ের নাম শুনেছেন। আপনারা নিশ্চয়ই বলবেন গ্যালিলিও গ্যালিলাইয়ের নাম শুনেনি এমন আবার কেউ আছে নাকি! ঠিক তাই। আসলেও এ বিজ্ঞানী ছিলেন তখনকার সময়ে ইউরোপের সবচেয়ে নামজাদা বিজ্ঞানী। তাহলে এবার শুনুন গল্পটা। একবার সেকালের ইউরোপের এই বিখ্যাত বিজ্ঞানীকে বিচারের কাঠগড়ার সামনে দাঁড়াতে হয়েছিল। কি ছিল তার অপরাধ? তার অপরাধ ছিল তিনি বলেছিলেন, সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে না, পৃথিবীই সূর্যের চারদিকে ঘুরছে। আপনারা হয়তো বলবেন, এতে আর অপরাধের কি? এটা তো চিরন্তন সত্য কথা! কিন্তু তখনকার সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ধর্মগুরুরা তা মানলে তো! তারা বললেন গ্যালিলিও গ্যালিলাই ধর্মদ্রোহিতা করছেন। কারণ ধর্মে লেখা আছে অন্যরকম। সেখানে লেখা আছে পৃথিবী সকল ক্ষমতার উৎস। পৃথিবী কারও উপর নির্ভরশীল হতে পারে না। সূর্যকে অনুসরণ করে পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘুরে এমন অদ্ভূত কথা কেউ কখনো শুনেছে নাকি! এ কথা বলাও পাপ। ধরে আন সে পাগল বিজ্ঞানীকে। তাকে দাও কঠিন শাস্তি এবং মুখ দিয়ে স্বীকার করাও পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘুরছে না, বরং সূর্যই পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে। গ্যালিলিও গ্যালিলাই তবু সত্যের পথ থেকে সরলেন না। লড়াই করে যেতে থাকলেন সমাজের সাথে। কিন্তু তখন তিনি সত্তর বছরের বৃদ্ধ। কতদিন আর বৃদ্ধ বয়সে এত অত্যাচার সহ্য করা যায়। অবশেষে ১৬৩৩ সালের ২২শে জুন এ বৃদ্ধ বাধ্য হলেন বিচারকের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে এবং স্বীকার করে নিলেন বিচারক পোপ ও ধর্মযাজকদের মিথ্যা বুলি এবং সকলের কাছে মাপ চেয়ে প্রাণভিক্ষা চাইলেন। গির্জার কর্তারা রায় ঘোষণা করে গ্যালিলিও গ্যালিলাইকে মাপ করে দিলেন আর ভাবলেন তাদের জয় হয়েছে। চিরদিনের জন্য তাঁরা বন্ধ করে দিয়েছেন গ্যালিলিওর মুখ। উপড়ে ফেলেছেন তাঁর ধর্মদ্রোহী ধারণার শেকড়। অসুস্থ গ্যালিলিও গ্যালিলাই তখন গির্জা থেকে বের হয়ে আসলেন আর বললেন সারা পৃথিবী কাঁপানো সে বিখ্যাত উক্তি-“তবু যে পৃথিবী ঘুরছে”।
তাহলেই ভেবে দেখুন, আগেকার সে দিনে বিজ্ঞান গবেষণা কতোটা কঠিন ছিল। তারপরও কিন্তু এ গবেষণা থেমে থাকেনি। বরং মহাকাশ মানুষকে আরও কাছে টেনেছে এবং মানুষ আবিষ্কার করেছে অজানা নানারকম আশ্চর্যজনক তথ্য। আজ আমরা শুধু পৃথিবী সম্পর্কে নয় বরং অন্যান্য গ্রহ-উপগ্রহ সম্পর্কেও জেনেছি অনেক তথ্য। তার একটা নমুনা দেই। নিচের ছবিগুলো দেখুন-
প্রথম ছবিতে পৃথিবীকে দেখুন কতো বড় অন্যান্য গ্রহ গুলোর চেয়ে। ভেনাস, মঙ্গল, প্লুটো দেখেন কত ছোট।
এখন এই ছবিতে দেখুন আমাদের প্রিয় পৃথিবীকে। কি বুঝলেন? দেখেছেন কতো ছোট!
এবার নিচের ছবিতে চেষ্টা করেন দেখি পৃথিবীকে খুঁজে পান কিনা। সূর্যের তুলনায় পৃথিবীর আকার দেখেছেন! (এ ছবি যদি তখনকার দিনের পন্ডিতেরা দেখতো নির্ঘাত তাদের হার্ট অ্যাটাক হয়ে যেত! :D)
এবার দেখি নিচের এই ছবি। এবার পৃথিবীকে বাদ দেন! দেখুন তো সূর্যকেই খুঁজে পান কিনা। Arcturus তারা! সূর্য থেকে কতো বড় লক্ষ্য করেছেন।
এবার আসি নিচের সর্বশেষ ছবিতে। দেখুন তো Arcturus-কেই কোথাও খুঁজে পান কিনা।
তাহলেই একবার ভেবে দেখুন এ বিশাল মহাবিশ্বে আমাদের পৃথিবীর অবস্থান কতো ক্ষুদ্র, আমাদের অস্তিত্বই বা কতোখানি জুড়ে! (তাহলে যিনি এ বিশাল মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছেন তিনি না জানি কতো শক্তিশালী ভাবতেও অবাক হতে হয়)
আজ আমরা এত কিছু জানতে পারছি বিজ্ঞান ও নতুন নতুন প্রযুক্তির কল্যাণে। তাই আসুন আমরা বিজ্ঞান চর্চায় বাঁধার সৃষ্টি না করে বিজ্ঞানের ও প্রযুক্তির চর্চায় এগিয়ে আসি এবং এর আলো ছড়িয়ে দেই সবখানে, সর্বক্ষেত্রে। বিজ্ঞান হোক আমাদের নিত্য দিনের সঙ্গী।
আমি ফাহিম আহ্মেদ। Manager, Transcom Electronics Ltd., Dhaka। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 16 টি টিউন ও 480 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি ফাহিম আহ্মেদ। ভাল লাগে বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখি করতে, গান শুনতে আর প্রচুর বই পড়তে। আমি মুক্ত মনের স্বাধীন মানুষ হতে চাই, চাই লেখার স্বাধীনতা। স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি। স্বপ্নের মাঝেই আমি বাস্তবতার খোঁজ করি। স্বপ্নের রঙ্গিন ভেলায় ভেসে, আমি সত্য জগতে পাড়ি জমাতে চাই। চাই স্বপ্নীল আলোতে নিজেকে উদ্ভাসিত করতে।...
Swear just fun korlam.Don’t mind.Keep going.Comment basi korle to abar tenus id disable kore dai.Ore bapre ke admin re baba.Ara.Amar id jotoy disable korok ami sotto kotha bolbo.Koto id disable korbe.Korte korte hapiye jabe.Ar ami patihas.
সুন্দর টিউন আপনাকে ধন্যবাদ,সর্বশেষ আমাদের একটা কথাই মানতে হয় বিজ্ঞান যুগে যুগে মত পরিবর্তন করেছে কিন্তু কোরান একিই কথার উপর আছে এবং কেয়ামত পর্যন্ত থাকবে যা হল’সুর্য গুরছে প্রিথিবীও গুরছে এমনকি অন্যন্য নক্ষত্রও গুরছে তবে সবাই যার যার কক্ষ পথে’ – সুরা ইয়াছিন।