অনেকেই বিশ্বাস করেন যে আমরা এখন সবচেয়ে তীব্র প্রযুক্তিগত বিপ্লব সম্মুখীন করছি এবং আমরা উচ্চ প্রযুক্তির যুগে রূপান্তরিত হচ্ছি, যেখানে নতুন অগ্রগতির কাছে পুরনো মডেল বিলুপ্ত হবে। এখানে কিছু গেজেট আছে যা খুব অদূর ভবিষ্যতে মুক্তি পাবে (কিছু কিছু ইতিমধ্যে মুক্তি পেয়েছে) এসব বেশিরভাগ আধুনিক ডিভাইস ই পালটে দেবে আমাদের জীবন - বিশ্ব যেখানে আমরা বাস করি - এবং আমাদের মঙ্গলের জন্যেই।
প্রতিটি গ্যাজেট নতুন নতুন প্রযুক্তির ধারা বয়ে এনেছে। এসব প্রযুক্তি এতটাই আগাম যে আগামী ১০ বছর পরও এগুলো আমাদের বিস্মিত করবে। আমাদের জীবনের যে চলমান গতিধারা তা পুরোটাই বদলে দেবে এসব প্রযুক্তি। চলুন বিস্ময়কর এসব ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি গুলো দেখে নেই এবং এদের সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেই...
Fear of the dentist নামক একটি রোগ আছে। যেটিকে Dental Phobia বলা হয়। এর কারনে মানুষ দাঁতের ডাক্তার এর কাছে যেতে ভয় পায়। তারা দাঁতের ডাক্তার এর কাছে যেতে চায় না এবং দাঁতের ডাক্তার কে সাহায্য করে না। অনেকে তো যায়ই না।
সত্য কথা হল, আসলে কেওই দাঁতের ডাক্তার এর কাছে যেতে পছন্দ করে না। সাধারণ কোন চেকাপ এর জন্যও কেও দাঁতের ডাক্তার এর কাছে যেতে চায় না। প্রিন্সটন এবং টাফটস এর বিজ্ঞানীরা একটি দাঁতের সেন্সর নিয়ে কাজ করছে যেটি আমাদের দাঁতের ডাক্তার এর কাছে যাবার প্রয়োজন কমিয়ে দিবে। আমাদের অপ্রয়জনে এবং ঘন ঘন দাঁতের ডাক্তার এর কাছে যেতে হবে না।
এই সেন্সর টি আপনার দাঁতে কোন ব্যাকটেরিয়া পেলে বা অন্য কোন সমস্যা পেলে আপনাকে জানিয়ে দিবে এবং কেবল তখনই আপনাকে দাঁতের ডাক্তার এর কাছে যেতে হবে।
Bollinger এবং Mabillard এর তৈরি ভবিষ্যতের মজা এবং বিনোদনের দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম। আপনারা অনেকে হয়তো বাংলাদেশে বিভিন্ন রোলার কোস্টার এ উঠেছেন। কিন্তু এই ডানাযুক্ত রোলার কোস্টার আপনার চরা সেই রোলার কোস্টার থেকে অনেকটা ভিন্ন এবং নতুন আঙ্গিকের। এতে যাত্রীরা রোলার কোস্টার এর ডানার মত স্থান এ বসবে এবং এর অনুভুতি থাকবে একটি এরোপ্লেন এর ডানায় চরার মত। তাদের উপরে এবং নিচে কিছুই থাকবে না। বিশ্বে এখন পর্যন্ত ৪ টি ডানাযুক্ত রোলার কোস্টার রয়েছে। ৩ টি যুক্তরাষ্ট্রে এবং আরেকটি ২০১৩ সালের কোন এক সময় চায়না তে স্থাপনের পরিকল্পনা আছে।
যাদের উচ্চতা ভীতি আছে বা বমি করার অভ্যাস আছে তাদের জন্য এটি নয়। সবকিছু সবসময় সঠিক ভাবে যায় না, হোক এটা যতই উন্নত প্রযুক্তি।
অনেকে এটিকে গেমিং বিপ্লব বলে- এবং ভুল বলে না। Oculus Rift একটি ভার্চুয়াল বাস্তব হেডসেট, যেটির চিরকালের জন্য গেমিং শিল্প পরিবর্তন করার ক্ষমতা আছে।
গেমাররা ইতিমধ্যেই পিসি গেম ও বর্তমান কনসোল থেকে অনেক লাভবান হচ্ছে। কিন্তু অকুলাস রিফট এমন একটি ডিভাইস যা সম্ভবত গেমারদের একশন এর মাঝখানে নিয়ে আসবে। আমরা শুধুমাত্র কল্পনাই করতে পারি যে এই নতুন প্রযুক্তিটি কিভাবে গেমিং এ প্রভাব ফেলবে। এবং ইতিমধ্যেই আমরা অনেকটা জানি, মাল্টিপ্লেয়ার কেমন হবে, সম্ভবত এক বা দুই দশক পর।
Parallella কম্পিউটার গঠন এর পদ্ধতি পরিবর্তন করে দিবে। এবং এডেপ্টিভা (Adapteva) সবাইকে এই বিপ্লবে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দিচ্ছে। সাধারণ ভাবে তৈরি, এটি সাধারণ ব্যাক্তির জন্য একটি সুপার কম্পিউটার।
বাস্তব সময়ে বস্তুর অনুসরণকরণ, হলোগ্রাফিক মাথা প্রদর্শন, কণ্ঠস্বর চেনা হয়ে যাবে অধিক কার্যকর এমনকি বুদ্ধিমতী। এর পুরো ধন্যবাদটা Parallella কে। মুলত এটিকে একটি মিনি সুপার কম্পিউটার বিবেচনা করলে, এর মুল্য অবিশ্বাস্য। মাত্র 99$ যা বাংলাদেশি টাকায় ৭৫০০ টাকা মাত্র! এটি নন-প্রোগ্রামার এবং নন-লিনাক্স ব্যবহার কারীদের জন্য প্রস্তাবিত নয়। তবে আপনি যদি জানেন, এটি কিভাবে ডেভেলপমেন্ট সফটওয়্যার দিয়ে লোড হয়, তাহলে হয়তো ব্যবহার করতে পারবেন।
পুরনো মডেল এর টেলিভিশন গুলো পরিবর্তন করে নতুন মডেল এর টেলিভিশন চালু করার প্রবণতা বেশ কয়েকবছর ধরেই চলছে। তবে 4k মডেলের টিভি পুরনো মডেলের টিভির শিল্পে চূড়ান্ত আঘাত হানবে। এই টিভিতে আগের HDTV -র তুলনায় ৪ গুন বড় ছবি প্রদর্শিত হবে। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, কেন এটি এত গ্রহণ যোগ্যতা পাচ্ছে।
বর্তমানে এর মুল্য কিছুটা বাধাদায়ক। এবং এর যেসব প্রোগ্রাম তা অন্য কোন টেলিভিশন পুরন করতে পারবে না। কি মনে হয়, এই 4k টিভি কবে নাগাত কিনতে পারবেন? আপনি চাইলে এখনই কিনতে পারেন, এখানে ক্লিক করে। সনির ৫৫ এবং ৬৫ ইঞ্চির মডেল আপনি পাবেন ৫০০০ ডলার এ। এবং ৮৪ ইঞ্চির দাম পরবে প্রায় ২৪০০০ ডলার। এখানে ক্লিক করে এর একটি ভিডিও ক্লিপ দেখে নিতে পারেন।
"Pebble" ২০১৩ সালে আনুষ্ঠানিক ভাবে মুক্তি পায়, যেটি প্রথম বুদ্ধিমান ঘড়ি। একটি ঘড়ির সাধারণ কাজের পাশাপাশি এটি সাধারণ এন্ড্রয়েড বা আইওএস এপ্লিকেশন সহ একটি স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট এর সাথে সংযুক্ত থাকবে। এর মাধ্যমে ঘড়িটি দিনের সময়ের পাশাপাশি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমাদের দিবে, যেমন মিসড কল, মেসেজ, ইমেইল ইত্যাদি। ডিভাইসটি একটি অ্যাপ স্টোর এর সাথেও যুক্ত থাকবে, এতে ডেভেলপার রা আরো দারুন এপলিকেশন তৈরি করতে পারে যাতে করে ব্যবহারকারীরা লাভবান হয়।
বর্তমানে এডভারটাইজিং এর মত সমাজে পরিষ্কার পানিও দরকারি। সুতরাং একটি কোম্পানিকে এই দুটিকে একত্রিত করার জন্য কঠোর চেষ্টা করতে দেখে মন সতেজ হয়ে উঠে। পেরুর লিমায় অবস্থিত The University of Engineering and Technology of Peru এবং অ্যাড এজেন্সি Mayo DraftFCB গঠিত এই বিলবোর্ডটি প্রতিদিন প্রায় ২৬ গ্যালন পানি উৎপাদন করতে সক্ষম। এটি পাচটি পরিস্রাবণ ডিভাইস ব্যবহার করে এবং লিমার আর্দ্র বাতাস এটিকে সাহায্য করে।
এই বিলবোর্ড শুধুমাত্র পেরুর সর্ববৃহৎ শহরের জন্য ডিজাইন করা হয়নি- যে শহরে প্রায় ১.২ মিলিয়ন মানুষ পর্যাপ্ত পানি পায় না। সাথে শিশুদের UTEC প্রয়োগ এবং ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার উৎসাহ যোগাতে এটি ডিজাইন করা হয়েছে। এটি সবচেয়ে বড় প্রযুক্তিক বিপ্লব হতে পারে, যেটি সবচেয়ে বড় মানবিক সমস্যার দূর করবে। অথবা এটি একটি নিছক উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা হতে পারে যা আগামী ধাপ পর্যন্ত বিবর্ধিত হতে পরবে না। সময়ই সবকিছু বলে দিবে।
মানুষ এর আগেও বুদ্ধিমান চশমা তৈরি করার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু সফল হননি। কিন্তু গুগল গ্লাস ইতিমধ্যে সফলতার মুখ দেখছে। শুধু তাই নয়, যারা গুগল গ্লাস ব্যবহার করেছে তারা বলেছে এটি সত্যিই অসাধারন। আপনি যার দিকে তাকাবেন তার বিস্তারিত তথ্য আপনার চোখে ভেসে উঠবে। গুগল গ্লাস সম্পর্কে আরো বিস্তারিত পরুন এখানেঃ গুগল গ্লাস Google Glass এর যাদু [স্পেকস সহ আপডেটেড]
মায়ো একটি হাতের ব্যান্ড, যা আগামী প্রজন্মের গেসচার কনট্রোল হিসেবে কাজ করে। এটি হাতের পেশীর বৈদ্যুতিক কার্যকলাপ ধরতে পারে। এর মাধ্যমে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। কোন তার ছাড়াই ব্লুটুথ এর মাধ্যমে এটির সাহায্যে কম্পিউটার চালনা করা যাবে। বর্তমানে এটি উইন্ডোজ এবং ম্যাক ওএস সাপোর্ট করে এবং খুব শীঘ্রই আইওএস ও এন্ড্রয়েড সাপোর্ট করবে। ১৪৯$ এর বিনিময়ে এটি আগাম অর্ডার দিয়ে রাখতে পারেন। ২০১৩ সালের মদ্ধেই এটি বিতরণ শুরু হবে বলে জানা গেছে।
এটি কতটা সফল হবে তা নির্ভর করে এটি কতটা ইউজার সাপোর্টিভ হবে। এটি যত বেশি অ্যাপ্লিকেশান সাপোর্ট করবে এর জনপ্রিয়তা তত বৃদ্ধি পাবে। এটি আরো জনপ্রিয় হবে যদি এটিকে গেমিং এ কাজে লাগানো যায়।
আরগাস ২ এমন একটি ডিভাইস যা সত্যি সত্যি আমাদের জীবনধারা বদলে দিবে। সত্যি বলতে অন্ধদের জীবনধারা বদলে দিবে। এটি ছোট্ট একটি ক্যামেরার সাহায্যে বিভিন্ন ইমেজ ক্লিপ ধারন করে এবং সেগুলোকে নির্দেশে রূপান্তরিত করে ব্রেইন এ পাঠায়।
অর্থাৎ এই ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে একজন অন্ধ প্রায় একজন সুস্থ মানুষের মতই সব দেখতে এবং করতে পারবে। সে একটি চশমা পরে থাকবে, যেই চশমায় থাকবে ছোট্ট ক্যামেরা। এবং সেটি তার চোখের সামনের বিভিন্ন ছবি তুলে সেগুলোকে নির্দেশাবলী তে রূপান্তরিত করবে। এরপর চাক্ষুষ তথ্য হিসেবে ব্রেইন এ পাঠাবে। এভাবে সে মানুষটি বুঝতে পারবে কখন কি করতে হবে, কোথায় কি করতে হবে, সামনে কে বা কি আছে ইত্যাদি। এটি সত্যি একটি প্রযুক্তির বিপ্লব, যা বিশ্ব জুড়ে কোটি কোটি দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের দৃষ্টিশক্তি পুনরুদ্ধার করবে।
এসব প্রযুক্তি সম্পর্কে আপনার মতামত কি? কি মনে হয় আপনার? এসব প্রযুক্তি কি আসলেই আমাদের জীবন ধারা কে পালটে দেবে? এসব প্রযুক্তির কোন নেতিবাচক প্রভাব কি আমাদের উপর পরবে? আপনার সুচিন্তিত এবং সুগঠিত মূল্যবান মন্তব্য আমাদের জানান টিউমেন্ট এর মাধ্যমে।
➡ আপনার একটি টিউমেন্ট আমায় ১০ টি টিউন করার অনুপ্রেরণা দেয়।
➡ নিয়মিত আমার টিউনের আপডেট পেতে চাইলে সাবস্ক্রাইব করুনঃ টেকটিউনস » কম্পিউটার লাভার
কম্পিউটার লাভার (রাকিবুল হাসান)
ফেসবুক ~ টুইটার ~ গুগল প্লাস
আমি কম্পিউটার লাভার। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 101 টি টিউন ও 1258 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 20 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
Also known as "Raiku Saiko". React.js & Javascript Developer. Former Wordpress Developer, Front-end Designer. Technology Addicted.
nice tune man
carry on it (y) 😀