আপনি কি একজন ওয়েব ডিজাইনার অথবা ওয়েব ডিজাইন শিখতে চাচ্ছেন?
আমার জানার ইচ্ছে আছে আপনি কেন ওয়েব ডিজাইন শিখতে চান! কিছু মানুষ অসাধারণ ডিজাইন তৈরি করে জনপ্রিয় হতে পছন্দ করে। যেখানে অন্য কিছু মানুষ এটিকে তাদের পেশা এবং আয়ের উৎস হিসেবে পছন্দ করবে।
এখন আমি এমন একটি কৌশল শেখাবো যা আপনাকে একসাথে জনপ্রিয় হতে, অনলাইন এ আয় করতে এবং ওয়েব ডিজাইন শিখতে সাহায্য করবে। মানে একের ভেতর তিন আরকি। বিষয়টি খুব মজার, তাই না?
আপনি হয়ত ভাবছেন আমি টিউনটি তে ওয়েব ডিজাইন এর কিছু কৌশল নিয়ে আলোচনা করবো। কিন্তু আমি কিছু এমন কিছু কৌশল নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি যা সম্পূর্ণ ভিন্য এবং প্রচলিত ওয়েব ডিজাইন শেখার কৌশল এর মত নয়।
লেখালেখি একটি একের ভেতর তিন পদ্ধতি যেটা নিয়ে আমি বলছিলাম। আমি বাজি ধরতে পারি যে অধিকাংশ পাঠক টিউনটি পড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে, ঠিক যেই মুহূর্তে আমি বলেছি "লেখালেখি"। . খুব সামান্য অনন্য বেক্তিত্য এই আহ্বান টি গ্রহণ করবে এবং এই সুযোগ টিকে সকলের স্বপ্নের ওয়েব ডিজাইন পেশায় রূপান্তরিত করবে।
১০ টি মানসম্মত শব্দ ১ ডলার এর সমান
পড়তে থাকুন এবং টিউনটির শেষে ওয়েব ডিজাইন শিখতে এবং একই সাথে আয় করতে যা যা প্রয়োজন তা আপনি পেয়ে যাবেন।
অধিকাংশ মানুষ লেখালেখি কে খুব বিরক্তিকর কাজ ভাববে। অন্যরা ভাষা নিয়ে খুব ভয়ে থাকবে কারণ আমরা বাঙ্গালীরা বাংলা ভাষা শিখতেই নাকে দড়ি, ইংরেজি শেখার সময় কই? অনেক ভার্সিটির ছাত্র ও আছে যে কিনা ভালো মত ইংরেজিতে কথা বলতে পারে না।
আপনি যদি সঠিক রাস্তা বাছাই করেন, তবে আপনি খুব দ্রুতই বুঝে যাবেন ওয়েব ডিজাইন নিয়ে লেখালেখি খুব মজার একটি কাজ। আর আপনার সমস্যা যদি ভাষা হয় তবে নিয়মিত জনপ্রিয় ইংরেজি ব্লগ গুলো পড়ুন, ঘরে বাইরে সামন্য করে হলেও ইংরেজি চর্চা করুন। মনে রাখবেন "চর্চার কোন বিকল্প নেই" এবং "ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়"।
আমি বলবো হ্যা এবং না।
একদিকে HTML এবং CSS সমন্ধে প্রাথমিক জ্ঞান থাকলে সেগুলো নিয়ে লেখা শুরু করতে পারেন। অথবা কোন ধারণা না থাকলে আপনি ওয়েব ডিজাইন শিখতে যেসব সমস্যা ও পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছেন তা নিয়েও লিখতে পারেন।
লেখালেখি একটি অনুসন্ধান, আপনি শুন্য থেকে শুরু করবেন এবং যেতে যেতেই শিখবেন।
- E. L. Doctorow
সুতরাং আপনি ওয়েব ডিজাইন শিখতে যেসব সমস্যা এবং পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন তা নিয়েই লেখা শুরু করে দিন। পাঠকরাও তাদের কিছু অনুরূপ অভিজ্ঞতা প্রদান করবেন এবং অভিজ্ঞরা আপনাকে ওয়েব ডিজাইন শেখার জন্য সঠিক দিক নির্দেশনা দিবে।
এমন একটি বিষয় নির্বাচন করুন যেটি আপনাকে সবচেয়ে বেশি আনন্দ দেয় এবং সে বিষয় এর উপর যত বেশি সম্ভব প্রবন্ধ, টিউটোরিয়াল, বই ইত্যাদি পড়ুন। সেসব প্রবন্ধ, টিউটোরিয়াল বই থেকে অনুপস্থিত দিক গুলো চিন্তা করুন এবং সেগুলো নিয়ে একটি বিস্তারিত প্রবন্ধ তৈরি করুন।
যখন আপনি একজন লেখক এর লেখা নিবেন তখন সেটি লেখাচুরি, কিন্তু আপনি যখন অনেক লেখক এর লেখা নিবেন তখন সেটি গবেষণা।
- William Mizner
অবশ্যই না। কখনোই চুরি করবেন না। অন্যের লেখা নকল করা এক প্রকার চুরি।
বরংচ সঠিক গবেষণা করুন। নুন্যতম ব্যাখ্যা গুলো সংগ্রহ করুন, এর সাথে কিছু নতুন এবং বাস্তবতা যোগ করে একটি নতুন টিউটোরিয়াল তৈরি করুন।
ভালো লেখার গোপন রহস্য হচ্ছে একটি পুরান বিষয় নতুন করে বলা বা একটি নতুন বিষয় পুরান করে বলা।
- Richard Harding Davis
এখন আপনি জানেন কীভাবে লেখালেখি শুরু করতে হবে। এরপর আমি কীভাবে ওয়েব ডিজাইন শিখতে হয় তা ব্যাখ্যা করবো, তারপর এই দুটোকে কিকরে এক করতে হয় তা আলোচনা করবো।
ওয়েব ডিজাইন শেখার জন্য অনলাইন এ হাজার হাজার ফ্রী টিউটোরিয়াল আছে। পড়ুন এবং ব্যবহারিক উদাহরণ অনুসরণ করে ধারণা গুলো বুঝুন।
আপনার কি দ্রুত শেখার দক্ষতা আছে?
অধিকাংশ মানুষ নিজেকে ছোট করে দেখে। আপনার সবসময়ই আপনার চিন্তা ভাবনার চেয়ে অধিক ক্ষমতা আছে। অনুশীলন আপনার যেকোনো বিষয়ে দক্ষতা বাড়াতে পারে। সুতরাং বিভিন্য ডিজাইন তৈরির মাধ্যমে আপনি যা শিখছেন তা অনুশীলন করতে থাকুন।
লেখালেখি আপনাকে একজন ভালো শিক্ষার্থী এবং ভালো ডিজাইনার করে
আপনি হয়তো ভাবছেন লেখালেখি কীভাবে আপনার ওয়েব ডিজাইন এর দক্ষতা বারাবে। এটি অবশ্যই মহান গতিতে আপনার দক্ষতার উন্নয়ন করে।
আমাদের মধ্যে অনেকেই হয়ত শেখার পদ্ধতি হিসেবে বই ও প্রবন্ধ পরবো, ভিডিও দেখবো, কোর্স করবো, দিক নির্দেশনা অনুসরণ করবো।
অতঃপর আমরা আমাদের শিক্ষা দানকারী যতটুকু জানে ঠিক ততটুকুই শিখি অথবা প্রকল্প শেষ করতে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই শিখি। আমরা কখনোই সম্পূর্ণ ধারণা থেকে শিখি না।
লেখালেখি তে আমরা শুধু ডিজাইন এর একটি নির্দিষ্ট বিষয় কে কেন্দ্রীভূত করতে পারি না। আমরা যা সম্পর্কে লিখছি তা সম্পর্কে আমাদের পরিষ্কার বোঝা এবং আস্থা থাকা প্রয়োজন। অন্যথায় আমরা পাঠকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবো না। আমরা যে বিষয় নিয়ে লিখবো তা নিয়ে অনেক গবেষণা করার প্রবণতা থাকতে হবে।
সুতরাং অধিক গবেষণা = অধিক অভিজ্ঞতা = অধিক জ্ঞান
যেহেতু আমি যখন শুরু করেছি তখন আমি ওয়েব ডিজাইন নিয়ে তেমন ভালো জানতাম না সুতরাং ওয়েব ডিজাইন নিয়ে লেখালেখির ফল আমি গ্যারান্টি দিতে পারি। এখন আমি ওয়েব ডিজাইন সমন্ধে মোটামোটি ভালোই জানি এবং এটি নিয়ে লেখালেখি করার চেষ্টা করি।
এখন ওয়েব ডিজাইন শেখা এবং এটি নিয়ে লেখালেখির গুরুত্ব জানার পর, আপনি এই দুটোকে এক করে একজন সফল ডিজাইনার হতে পারেন।
ওয়েব ডিজাইন এবং লেখালেখি উভয় এ দক্ষতা আছে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। এই অবস্থান থেকে অন্য সম অবস্থানকারীরা বাকিদের থেকে আলাদা হয়ে আপনাকে একজন সুনিপুণ ব্যক্তি হিসেবে দেখবে।
যদি আপনার ডিজাইন এবং লেখালেখির পাশাপাশি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এ দক্ষতা থাকে তাহলে সেটি আপনার পেশায় অনন্য এবং অত্যন্ত সুপরিচিত হয়ে দারায়।
আপনি এটি অনলাইন এ সব জায়গায় পাবেন। যত বেশি সম্ভব প্রবন্ধ পড়তে থাকুন প্রসঙ্গ আপনার মাথায় আসতে থাকবে। এখানে কিছু পদ্ধতি যা প্রবন্ধ লেখার ধারণা পেতে সাহায্য করবেঃ
এমন কিছু মানুষের খোঁজ করুন যারা অনন্য এবং মানসম্মত প্রবন্ধের লিঙ্ক শেয়ার করে এবং তাদের ফলো করুন। সকল ওয়েব ডিজাইন ব্লগ এর একটি ভালো টুইটার প্রোফাইল আছে।
নতুন প্রবন্ধ লেখার জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থানে নতুন প্রশ্ন গুলো বের করুন।
ওয়েব ডিজাইন প্রসঙ্গ নিয়ে একটি নির্দিষ্ট কিওয়ার্ড নির্বাচন করুন এবং সেই প্রসঙ্গের উপর ট্রেন্ডিং কিওয়ার্ড বের করুন। আপনার এসইও উন্যত করার জন্য ট্রেন্ডিং কিওয়ার্ড এর উপর প্রবন্ধ লিখুন।
এটি আপনার প্রচেষ্টা এবং লেখালেখি ও ডিজাইন এ ব্যয় করা সময় এর উপর নির্ভর করে। লেখালেখি তে কোন নির্দিষ্ট আয় নেই। এটিকে সুবিধা এবং অসুবিধা দুটোই ধরে নেয়া যেতে পারে। একদিকে আপনার লেখা বারলে আপনার আয় বারবে। অন্য দিকে আপনি প্রতি মাসে সমান সংখ্যক প্রবন্ধ লিখতে পারবেন না।
একটু আগে আমি বলেছি "১০ টি মানসম্মত শব্দ ১ ডলার এর সমান" এটি দ্বারা কি বোঝায়?
ওয়েব ডিজাইন নিয়ে টিউটোরিয়াল লেখায় সাধারণত কোন শব্দ প্রতি আয় নেই। এটি মান, সময় এবং প্রসঙ্গের গুরুত্তের উপর নির্ভর করে।
আমার অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে, আমরা প্রতি ১০ টি শব্দের জন্য 1 USD অর্থাৎ প্রায় ৮৫ টাকা আয় করতে পারি। একটি ১৫০০ শব্দের প্রবন্ধ আপনাকে ১৫০ ডলার দিবে। প্রদত্ত যে, নতুন প্রসঙ্গে আপনার শেখার বাক খুবই স্বল্প, প্রতি মাসে আপনার ৬-৭ টি টিউটোরিয়াল লেখা সম্ভব।
শেখার সময় প্রতি মাসে ১০০০ ইউএস ডলার আয়
এই সংখ্যা হয়ত সবাইকে প্রভাবিত করবে না। শুধু মনে রাখবেন এটা হচ্ছে শুরু। একবার আপনি অনলাইন এ আপনার নাম খ্যাতি অর্জন করুন, আপনার আয় অত্যন্ত দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাবে। অন্যতম একটি বড় ওয়েবসাইট নেটওয়ার্ক এর এই সুযোগ টি দেখতে পারেন।
যখন আপনি একটি প্রসঙ্গ নির্বাচন করবেন এবং অনুসন্ধান শেষ করবেন তখন আপনি যা শিখলেন তা লিখতে প্রলুব্ধ হবেন। কখনোই এমন কিছু লিখবেন না যা আপনি অনুশীলন করেননি।
বদলে, তত্তটির একটি ব্যবহারিক প্রয়োগ ভাবুন এবং সেটি নিয়ে লিখুন। এমন প্রবন্ধ লিখতে আপনাকে প্রসঙ্গটির বিষয়ে সব কিছু জানার প্রয়োজন নেই। চলুন ধরে নেই আপনি মাত্র CSS animations সমন্ধে শিখলেন। একটি দারুণ CSS animation তৈরি করুন এবং কীভাবে এমন এনিমেশন তৈরি করতে হয় তা নিয়ে টিউটোরিয়াল লিখুন।
যখন আপনি ধারণাটির উপর অনুশীলন করবেন এবং পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা পাবেন, CSS animation এর তাত্ত্বিক দিক গুলো লিখতে শুরু করুন।
লিখার জন্য আপনার নিজের একটি ব্লগ করে নিতে পারেন। সামান্য কিছু টাকা খরচ করে একটি ডোমেইন আর হোস্টিং কিনে একটা ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগ খুলে নিন। অথবা ফী তেই খুলে নিতে পারেন ব্লগার.কম এ ব্লগ। ব্লগ সম্পর্কে যেকোনো প্রকার সাহায্যের জন্য তো টেকটিউনস আছেই! এছারাও গুগল মামাকে জিজ্ঞেস করলে আপনাকে হাজারো রাস্তা দেখিয়ে দিবে। দেখতে পারেন এই টিউটোরিয়াল গুলোঃ
ব্লগ বানালেন, এখন ভিসিটর এর জন্য তো কিছু করতে হবে? এসইও ছাড়া কোন উপায় নেই। তাহলে শুরু করে দিন আপনার ব্লগ এর জন্য এসইওঃ
শুধুই কি ব্লগ? আর কোন রাস্তা নাই? আছে! থাকবে না কেন? বিভিন্য ব্লগ আছে যারা প্রবন্ধ জমা নেয়। প্রথম প্রথম হয়ত আপনাকে বিনা পারিশ্রমিকেই লেখা জমা দিতে হবে, অথবা খুব অল্প পারিশ্রমিক পাবেন। তবে আপনার দক্ষতা দেখাতে পারলে অবশ্যই উন্যতি হবে। তবে আমি বলবো নিজে একটি ব্লগ করে নিন। সবচাইতে ভালো হবে।
শুরুতে আপনি ওয়েব ডিজাইন শিখতে পারবেন এবং খুব ভালো আয় করবেন, এটাই কি শেষ? এটা মাত্র শুরু।
আরো অনেক চমৎকার জিনিস আসছে আপনার রাস্তায়। আমি লেখালেখির অনেকগুলো অতিরিক্ত উপকারিতা সমন্ধে শুনেছি। কিন্তু আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে কিছু উপকারিতা শেয়ার করছি।
এই ধরনের লিখার একটি সুবিধা হলো আপনি একটি নির্দিষ্ট পারিশ্রমিকে কাজ করার চেয়ে নিজে পারশ্রমিক ঠিক করে নিতে পারবেন।
এগুলো ওয়েব ডিজাইনার + লেখক হিসেবে কাজ করার সামান্য কিছু উপকারিতা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এছারাও আপনি আরো অনেক উপকারিতা পেতে পারেন। আপনি এতদূর এসেছেন, আপনার মুল্যবান সময় খরচ করে এই টিউনটি পড়ে একজন ওয়েব ডিজাইনার লেখক হবার ইচ্ছায়। যখন আপনি শুরু করেছেন, আপনার কোন ধারণা ছিলো না আপনি শেষে কি পাবেন।
আপনার অবশ্যই অনেক প্রশ্ন থাকতে পারে। সুতরাং আপনার উদ্বেগ পরিষ্কার করার জন্য টিউমেন্টের মাধ্যমে আমাকে বিনা দ্বিধায় প্রশ্ন করুন। নতুন প্রজন্মের চমৎকার ওয়েব ডিজাইনার লেখকদের প্রতি রইল শুভ কামনা।
বিঃদ্রঃ আমি কোন প্রফেশনাল ওয়েব ডিজাইনার না। বিভিন্য ব্লগ পড়েই এই টিউনটি লেখা। আশা করছি আমার ভুল গুলো ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
আমি ফেসবুক এ - Rakibul Hasan
আমি কম্পিউটার লাভার। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 101 টি টিউন ও 1258 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 20 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
Also known as "Raiku Saiko". React.js & Javascript Developer. Former Wordpress Developer, Front-end Designer. Technology Addicted.
ভাইয় ব্লগার থেকে কি আয় করা যায়? প্লিজ প্লিজ বলেন