নেইল আর্মস্ট্রং আর ইউরি গ্যাগারিনের কথা আমরা সবাই জানি এবং সারা বিশ্ব খুবই শ্রদ্ধার সাথেই স্বরণ করে থাকে দুজনকে। তবে তাদের মিশন মুন সফল হবার আগে যার অবদান সবচেয়ে বেশি তার কথা আমরা বেমালুম ভূলেই যাই। হ্যাঁ, আমি সেই ছোট্ট কুকর লাইকার কথা বলছি। সোভিয়েতের হয়ে সেই প্রথম পৃথিবীর ক্ষপথে চক্কর মেরেছিল এবং সেই প্রাণীজগতের প্রথম প্রানী যে মহাকাশে গিয়েছিল। এরকম আরো অনেক প্রানীই যুগে যুগে মহাকাশে গিয়েছে। আজ সেই সমস্ত ক্ষুদে তারকাদের কথাই আরেকবার স্বরন করব –
১৯৫৭ সালে লাইকাই প্রথম প্রানী যগতের হয়ে মহাকাশ ঘুরে আসে। আমরা শুধু এইটুকুই জানি। তাকে দিয়ে করানো হয়েছিল মূলত একটি বিশাল ঝুকিপূর্ণ এক্সপেরিমেন্ট। লাইকার এক্সপেরিমেন্ট সফলও হয়ছিল। তবে আমরা অনেকেই যা জানিনা তা হল, ল্যান্ডিং এর কয়েক ঘন্টা পরেই লাইকার মৃত্যু ঘটেছিল। তবে সে প্রমান করেছিল যে মহাকাশে ওজনহীনতায় প্রানী বেঁচে থাকতে পারে।
১৯৫০ এবং ১৯৬০ সালের মহাকাশ অভিজানে সোভিয়েত যেন মরিয়া হয়ে উঠে। একের পর এক এক্সপেরিমেন্ট। একের পর এক প্রান। এই সময়ে তারা একসাথে ৫৭টি কুকুর স্পেসে পাঠিয়েছিল। এদের অনেকে আবার লাইকার চাইতে বয়সে ছোট এবং অনেকে পরবর্তীতে একাধীকবার মহাকাশ ভ্রমনের সূযোগ পায়।
এই দৃশ্যটা দেখে আমার অনেক মায়া লেগেছে। এটি একটি স্কুইরেল মানকি। তাকে স্পেস ট্রেইনিং এ সিলিকন রাবার এর প্যাডিং করে তাকে ক্যাপসুলেট করা হয়েছিল। উদ্দেশ্য একটাই, এক্সপেরিমেন্ট। ১৯৫৮ সালে ১৫ মিনিটের একটি স্পেস ফ্লাইটে ৩১০ মাইল ভ্রমন করে সে। তবে ল্যান্ডিং এর পর সে এবং তার ক্যাপস্যুল কোনটাকেই আর খুজে পাওয়া যায় নাই। তবে ক্যাপসুলের এক্সপেরিমেন্টে এটাই ছিল প্রথম মাইল ফলক। ধরে নেয়া হয় সে সমস্ত যাত্রা পথে জীবিত ছিল। মারা গিয়েছিল ল্যান্ডিং এর পরে।
এরাই প্রথম প্রানীযুগল যারা মহাকাশের সমস্ত যাত্রা পথ এবং ল্যান্ডিং এর পরেও সুস্থভাবে জীবন যাপন করেছিল। ছবিটি ১৯৫৯ সালের। এরকম সফল মিশনের পরে নাসার কর্মকর্তারা তাদের নিয়ে আনন্দেই মেতে উঠে। এ্যাবেল ছিল ৭ পাউন্ডের রেসাস মানকি এবং বেকার ছিল ১১ পাউন্ডের স্কুইরেল মানকি এবং দুজনেরই মাতৃভূমি ছিল পেরু। এ্যাবেল ল্যান্ডিং এর চারদিন পরে একটি মাইনর সার্জারি করতে গিয়ে মারা যায় তবে বেকার বেঁচে ছিল ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত!!
১৯৬১ সালে, সোভিয়েতের হয়ে ইউরি গ্যাগারিন পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরে আসার আগেই নাসা তাদের মার্কারী প্রোগ্রামের জন্যে একটি শিম্পকে ট্রইন করছিল। হলোমন এয়ার বেসে এরকমই প্রায় বিশটি শিম্পটি দিয়ে চালানো হয়ছিল এক্সপেরিমেন্ট।
হলোমন এয়ার বেসের সেই শিম্পদের ট্রেইনিং এর একটি অংশ ছিল টাইম টাস্ক। এটা ছিল একটা সিম্পল টাস্ক। বিভিন্ন ইলেক্ট্রিক্যাল লাইট এবং সাউন্ডে কিভাবে রেসপন্স করতে হবে তারই একটি ট্রেইনিং। এই ছবিটি নেয় হয়েছে যখন একটি শিম্প একটি মিসটেক করেছিল এবং মহাকাশে বড় সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছিল নাসা কে!
এই ছবিটিও হলোমন এয়ার বেস থেকে নেয়া। এক্সপেরিমেন্ট চলছিল মঙ্গল অভিজানের ক্যাপস্যুলেটিং সিস্টেমটি নিয়ে। রকেট লন্চ হবার কিছুক্ষন আগে তোলা হয় এই ছবিটি।
অবশেষে হলোমন এয়ার বেস সফলভাবে দুটি শিম্পকে মহাকাশে পাঠাতে সক্ষম হয়। ১৯৬১ সালে হ্যাম নামের একটি শিম্পকে প্রায় ১৪ মিনিটের জন্যে স্পেসে পাঠানো হয়। এবং সে পৃথিবীর কক্ষপথে দুইবার চক্কর মেরে আসে।
এখানে হ্যামের হাসিমুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে পৃথিবীর কক্ষপথে চক্কর মেরে সে কি মজাটাই না পেয়েছিল সেদিন। আটলান্টিকে তার ক্যাপস্যুলটি নিক্ষিপ্ত করা হয় এবং সেখান থেকেই একজন ক্রু তার ক্যাপসুলটি নিরাপদে নিয়ে আসে।
আমি দুঃসাহসী টিনটিন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 16 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 200 টি টিউন ও 1531 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 34 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
মানুষ হিসেবে তেমন আহামরি কেউ নই আমি। সাটামাটা জীবনটাই বেশী ভালো লাগে। আবার মাঝে মাঝে একটু আউলা হতে মন চায়। ভালো লাগে নিজেকে টিনটিন ভাবতে .... তার মত দুঃসাহসী হতে মন চায় ..... কিন্তু ব্যক্তি জীবনে অনেকটা ভীতুই বটে ..... অনেক কিছুই হাতছাড়া হয়ে গেছে জীবনে এই কারনে ..... আবার...
চমৎকার হয়েছে । পড়তে পড়তে আর ছবি দেখতে দেখতে কেমন জানি অন্যরকম একটা মোহতে হারিয়ে গেলাম । অসাধারণ ।
টিনটিন ভাই আমারে পাঠানোর ব্যবস্থা করা যায় না ?