বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের বেশিরভাগই ফেসবুক ব্যবহার করে থাকেন। যেখানে এই প্লাটফর্মটি প্রতি মাসে কোটি কোটি মানুষ ব্যবহার করছে এবং এখানে বিভিন্ন শ্রেণি ও বয়সের মানুষ রয়েছে। এত বিশাল পরিমাণ মানুষের উপস্থিতি থাকার কারণে, ফেসবুক একটি অন্যতম জনপ্রিয় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে ও পরিণত হয়েছে। আর তাই, বর্তমানে ফেসবুক ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে প্রতিমাসে লক্ষ লক্ষ ব্যবহারকারী তাদের পণ্য সামগ্রী বিক্রয় করছে।
যেকোনো ফেসবুক ব্যবহারকারী চাইলে এখানে তার একটি ই-কমার্স ব্যবসা তৈরি করতে পারে এবং সেখানে তার নিজস্ব পণ্য বিক্রি করতে পারে। ফেসবুকে, আপনিও তাই বিনামূল্যে আপনার বিভিন্ন আইটেম এবং পণ্য সামগ্রী বিক্রি করতে পারেন। তবে, ফেসবুকে পণ্য বিক্রি করার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। আর তা না হলে, আপনি ফেসবুকে পণ্য বিক্রি করার সময় অনেক সময় প্রতারণার শিকার হতে পারেন এবং এতে করে অনেক টাকার লোকসান হতে পারে।
যাইহোক, ফেসবুক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বিভিন্ন পণ্য কেনাকাটার এক্সপেরিয়েন্সকে নির্ভীঘ্ন করতে হলে আপনাকে এই প্ল্যাটফর্মের স্ক্যাম গুলো সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরী।
আমরা যদি স্বাভাবিক ই-কমার্স ওয়েবসাইটগুলোর দিকে নজর দেই, তাহলে এর বিপরীতে ফেসবুক প্ল্যাটফর্মে কোন একজন গ্রাহক সরাসরি বিক্রেতার সাথে যোগাযোগ করে এবং তার মাধ্যমে কথোপকথন হয়। আর এই সুযোগটিকে কাজে লাগিয়েই অনেক প্রতারক বসে থাকে এবং আপনিও তাদের স্ক্যামের ফাঁদে পড়তে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি ফেসবুক মার্কেট প্লেসে যে ধরনের পণ্যই বিক্রি করেন না কেন, সব ক্ষেত্রে আপনি তাদের ফাঁদে পা দিতে পারেন। আবার একইভাবে আপনিও যদি ফেসবুক মার্কেটপ্লেস থেকে পণ্য ক্রয় করেন, তাহলে আপনার ক্ষেত্রে ও প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তাই চলুন, এবার দেখে নেওয়া যাক, সাধারণভাবে ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে কোন ধরনের স্ক্যাম হয়ে থাকে এবং কোন বিষয়গুলোর ব্যাপারে আপনাকে অবশ্যই সতর্ক থাকা উচিত।
আপনি কি প্রায়ই ফেসবুকে বিভিন্ন পণ্যের ক্ষেত্রে ৬০% থেকে ৭০% ছাড় দিতে পান? অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, ফেসবুকে বিভিন্ন পণ্যের জন্য বিশাল ডিসকাউন্ট দিয়ে বিজ্ঞাপণ চালানো হয়। আর এ ধরনের লোভনীয় বিজ্ঞাপণ দেখে অনেকেই সেই পন্যটি ক্রয় করার জন্য অনেক আগ্রহী হয় এবং অবশেষে কোন কিছু না ভেবেই পণ্যটি ক্রয় করে।
বর্তমানে ফেসবুকে পণ্য বিক্রি করে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এবং এই প্লাটফর্ম ব্যবহার করে অনেকেই পণ্য ক্রয় করছেন। আর স্বাভাবিকভাবে, আপনি যখন ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে এরকম বিশাল ডিসকাউন্ট দেখবেন, তখন অবশ্যই আপনাকে কিছু বিষয়ে সতর্ক হওয়া জরুরি। সেই সাথে, পণ্যটি ক্রয় করার সময় স্ক্যাম থেকে বাঁচতে কিছু পদক্ষেপ নিতে পারেন।
এক্ষেত্রে আপনি সেই পণ্যটি আসল নাকি নকল এই বিষয়ে অনুসন্ধান করুন এবং এজন্য বিক্রেতার কাছ থেকে অরজিনাল ছবি কিংবা ভিডিও চাইতে পারেন। সেই সাথে, আপনি নিজেও Google এ পণ্যটি সম্পর্কে অনুসন্ধান করুন এবং পণ্যটির দাম জানার চেষ্টা করুন।
অনেক ক্ষেত্রে এমনটি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে যে, কোন অপরিচিত প্রোডাক্ট বেশি দাম দিয়ে সেখানে বিশাল পরিমাণ ডিসকাউন্ট দেখানো হয়। আর এসব ক্ষেত্রে আপনি যদি পণ্যটির অরজিনাল দাম জানতে পারেন, তাহলে অবশ্যই তাদের প্রতারণার কৌশল সম্পর্কে জানতে পারবেন। আর যদি সত্যিই পণ্যটির দাম ঠিক থাকে, তাহলে পণ্যটি আসল কিনা নকল এই বিষয়ে অনুসন্ধান করা জরুরী।
ফেসবুক মার্কেটপ্লেস থেকে পণ্য ক্রয়ের সময় যদি সেটি কোন বড় ধরনের প্রোডাক্ট হয়, তাহলে সম্ভব হলে তার সাথে ফিজিক্যালি দেখা করুন এবং তারপর আপনার ডিল সম্পন্ন করুন।
অনেক সময় ফেসবুকে কোন একজন বিক্রেতা আপনাকে ভিন্ন প্রোডাক্ট কেনার জন্য প্ররোচিত করতে পারে। এরকম পরিস্থিতিতে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, আপনি ফেসবুকে কোন একটি নির্দিষ্ট পণ্যের বিজ্ঞাপণ দেখে, সেটি অর্ডার করার জন্য তার সাথে যোগাযোগ করলেন। কিন্তু এসময় তারা আপনাকে বলবে যে, পণ্যটি এই মুহূর্তে তাদের স্টকে নেই। আর এজন্য আপনাকে তারা এটির বদলে ভিন্ন একটি প্রোডাক্ট নিতে বলতে পারে।
অনলাইনে যেকোন প্রোডাক্ট অর্ডার করার ক্ষেত্রে অনেক মানুষই এ ধরনের বিরম্বনার শিকার হয়ে থাকেন। এমন ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, তাদের অর্ডার করা পণ্যের বিপরীতে ভিন্ন প্রোডাক্ট দেওয়া হয়েছে। আর যদি সে সময় সেই বিক্রেতার সাথে যোগাযোগ করা হয়, তারা এমনটি বলে যে, সেই মুহূর্তে প্রোডাক্টটি আমাদের কাছে Available ছিলনা এবং এ কারণে আপনাকে ভিন্ন একটি প্রোডাক্ট দেওয়া হয়েছে।
তাই, ফেসবুক মার্কেটপ্লেস থেকে যে কোন প্রোডাক্ট ক্রয় করার আগে অবশ্যই সেটির স্টক সম্পর্কে জেনে নিবেন। এজন্য আপনি তাদের সাথে সরাসরি কল করে যোগাযোগ করতে পারেন অথবা সেই আইটেমটির ব্যাপারে আরো জানার জন্য তাদের মেসেজ করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি অবশ্যই পূর্বে কনফার্ম হয়েই প্রোডাক্টটি Purchase করতে পারেন। আর এতে করে আপনি ফেসবুক মার্কেটপ্লেস থেকে পণ্য ক্রয় করার সময় এরকম প্রতারণা থেকে বাঁচতে পারবেন।
ফেসবুকে শুধুমাত্র কোন একজন গ্রাহক পণ্য ক্রয় করার ক্ষেত্রেই প্রতারিত হন না। বরং, অনেক ক্ষেত্রে পণ্য বিক্রেতা ও স্ক্যাম এর শিকার হতে পারেন। এ ধরনের পরিস্থিতিতে দেখা যায় যে, সেই গ্রাহক বা ফেসবুক ব্যবহারকারীটি একটি Successful Payment এর স্ক্রিনশট আপনাকে শেয়ার করেছে।
তাই একজন বিক্রেতা হিসেবে আপনার অবশ্যই কারো সাথে কথা বলেই কোন প্রোডাক্ট বা সার্ভিস ডেলিভারি দেওয়া উচিত নয়। ফেসবুক মার্কেটপ্লেস এ বিক্রি করা আপনার পণ্যটি যদি হয় একটি সার্ভিস এবং সেটির কোন ফিজিক্যাল অ্যাক্সেস না থাকে, তাহলে এমন সব সার্ভিসের ক্ষেত্রে আপনাকে আরো বেশি সচেতন হওয়া উচিত। কেননা, ডিজিটাল মাধ্যমে ডেলিভারি দেওয়া যায় এমন অনেক সার্ভিস একবার দিয়ে দিলে, সেটি আর ফিরিয়ে আনা যায় না।
অন্যদিকে, যদিও ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট ডেলিভারি দেওয়ার আগ মুহূর্তে ও আপনি এটি চেক করে নিতে পারবেন। তাই, কোন ব্যক্তির সাথে কথা বলেই তাকে ডিজিটাল বা ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট ডেলিভারি দেওয়া উচিত নয়। এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা আপনার সেট করা একাউন্টে টাকা পেলেই পণ্যটি পাঠানো উচিত।
যেসব ব্যক্তিরা ইন্টারনেটে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে কম সচেতন, তারা বিশেষ করে এ ধরনের উপহারের ফাঁদে পা দিতে পারেন। এসব ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, ফেসবুক ব্যবহারকারীদেরকে বিভিন্ন উপহার দেওয়ার নামে, একটি ফেক ফরম দেওয়া হয় এবং সেখানে তার ব্যক্তিগত তথ্য চাওয়া হয়।
ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে আপনাকে উপহার দেওয়ার কথা বলে, আপনার জন্মতারিখ, আপনার নাম-ঠিকানা, আপনার অবস্থান, আ এর বিবরণ এবং আরো অনেক ব্যক্তিগত গোপনীয় তথ্য চেয়ে নিতে পারে।
আপনি যদি এমন সব নকল উপহার দেওয়ার লিংকে ক্লিক করে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য দেন, তাহলে পরবর্তীতে অনেক ক্ষেত্রেই বিপদে পড়তে পারেন। আপনি উপহার পাওয়ার জন্য যে ফর্মটি ফিলাপ করছেন, সেটি হয়তোবা কোন একজন স্ক্যামার তৈরি করেছে এবং ডাটা কালেক্ট করছে। এরপর তারা সেসব ডাটা গুলো বিশ্লেষণ করে কিছু ব্যবহারকারীকে টার্গেট করবে এবং তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টসহ ফেসবুক প্রোফাইলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য সেগুলোকে ব্যবহার করতে পারে।
আমি এরকম অনেকেই দেখেছি যে, তারা বিভিন্ন উপহার পাওয়ার জন্য অনেক লিংক শেয়ার করে এবং সেখানে অনেক আকর্ষণীয় কিছু দেওয়ার অফার থাকে। আর আমার জানামতে, এ ধরনের উপহারের লিংক গুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভুয়া হয়। তাই ফেসবুকে আপনি কোন একটি উপহারের লিংক দেখেই ঝাঁপিয়ে পড়বেন না। আপনি কিন্তু এ ধরনের নকল উপহার ফরম পূরণ করে কোন ধরনের পুরস্কার ই পাবেন না। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র আপনার সময় এবং শ্রম নষ্ট, সেই সাথে ডেটা হারানোর ভয় তো আছেই।
ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে আরও একটি স্মার্ট কেলেঙ্কারির মধ্যে অন্যতম হলো, গ্রাহকের অতিরিক্ত পেমেন্ট করা এবং তারপর বাকি অর্থ ফেরত যাওয়া। ফেসবুকে এরকম স্ক্যাম অপ্রত্যাশিতভাবে হয়ে থাকে। তবে আপনাকে এ ধরনের স্মার্ট স্ক্যামের শিকার হওয়ার আগেই এই বিষয়ে জেনে নেওয়া উচিত।
পেমেন্ট করার পর সেই ক্রেতা আপনাকে অতিরিক্ত অর্থ অন্য কোন মাধ্যমে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করতে পারে। এক্ষেত্রে ধরা যাক, সেই ব্যক্তি আপনার কাছ থেকে ৩০০ টাকার কোন একটি প্রোডাক্ট ক্রয় করেছে। কিন্তু, সে আপনাকে এর বিপরীতে তিন হাজার টাকা পেমেন্ট করেছে। এবার সেই ব্যক্তি অতিরিক্ত টাকা তার অন্য একটি একাউন্টে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করতে পারে।
যদি সেই ব্যক্তি আসলেই আপনার সাথে স্ক্যাম করার জন্য আসে, তাহলে সে হয়তোবা আপনাকে অতিরিক্ত অর্থ প্রদানের জন্য কোন চুরি করা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেছে। যদি সেই ব্যক্তি আপনাকে অর্থ করার ক্ষেত্রে সত্যিই কোন চুরি করা ক্রেডিট কার্ড বা ব্যাংক একাউন্ট ব্যবহার করে, তাহলে আপনি সেই অর্থ নিয়ে বিপদে পড়তে পারেন এবং সেটি পরবর্তীতে ফেরত দিতে হতে পারে।
কেননা, এক্ষেত্রে অবশ্যই মূল মালিক আইনের দ্বারস্থ হবে এবং পরবর্তীতে আপনার ব্যাংক একাউন্ট বাউন্স করা হবে। তাই, এ ধরনের ক্রেতার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার সচেতন হওয়া উচিত।
ফেসবুক মার্কেটপ্লেস থেকে পণ্য বা সার্ভিস নেওয়ার ক্ষেত্রে বিক্রেতা যদি তার কনভারসেশন ডিলিট করে, তাহলে অবশ্যই আপনাকে প্রথমেই থেমে যাওয়া উচিত। কেননা, অনলাইন থেকে কোন একটি পণ্য বা সার্ভিস নেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার জন্য একটি স্ট্রং প্রমান থাকা জরুরী। তার কাছ থেকে সার্ভিসটি নেওয়ার পর যদি আপনি কোন কারণে স্ক্যামিং এর শিকার হন, তাহলে এমন পরিস্থিতিতে আপনি তার সাথে লেনদেনের বিষয়টি প্রমাণ করতে ব্যর্থ হবেন।
তাই, ফেসবুক থেকে কোন সার্ভিস নেওয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই প্রতিটি লেনদেন প্রমাণ সহ সম্পন্ন করা উচিত।
আপনার নেওয়া সেই সার্ভিসটি যদি কোন ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট হয়, তাহলে এমন পরিস্থিতিতে চেষ্টা করবেন ক্যাশ অন ডেলিভারিতে প্রোডাক্ট নেওয়ার। আর তা না হলে, সন্দেহজনক হিসেবে আপনি তার কাছ থেকে সার্ভিস নেওয়া এড়িয়ে যেতে পারেন। কেননা, কোন প্রফেশনাল বিক্রেতা অবশ্যই তার গ্রাহকের সাথে কনভারসেশন ডিলিট করবে না। আর এক্ষেত্রে আপনার অবশ্যই ফেসবুকে সেই বিক্রেতা সম্পর্কে রিপোর্ট করতে পারেন।
ফেসবুক মার্কেট প্লেসে অনেক সময় বাসা অথবা দোকান ভাড়া দেওয়া হবে সম্পর্কে Post করা হয়। তবে ফেসবুকে দেওয়া এরকম প্রতিটি ভাড়া দেওয়ার Post প্রকৃতভাবে সত্য নয়। বরং, এখানে কিছু কিছু স্ক্যামার রয়েছে, যারা মানুষকে প্রতারিত করার জন্য এরকম ফেক ভাড়ার Posting করে থাকে। প্রকৃতপক্ষে, তারা যে ধরনের বিজ্ঞাপণ চালায়, এমন কোন সম্পত্তি বা বাড়ির অস্তিত্ব নেই এবং থাকলেও সেটি সত্য নয়।
ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে যদি আপনাকে এই পদ্ধতিতে প্রতারণার ফাঁদে ফেলা হয়, তাহলে প্রথমে তারা আপনাকে অগ্রিম কিছু টাকা পাঠাতে বলবে। এক্ষেত্রে তারা এমন শর্ত জুড়ে দেয় যে, আগ্রহী ব্যক্তিদের অগ্রিম টাকা পাঠাতে হবে। আর এমন সময়ে আপনি Facebook মার্কেটপ্লেসে প্রতারণার শিকার হতে পারেন।
আপনার যদি সত্যিই কোন একটি বাসা কিংবা অন্য কোন সার্ভিস ভাড়া নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে, তাহলে অবশ্যই প্রকৃত বিক্রেতার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করুন। আর যদি সম্ভব হয়, তাহলে অবশ্যই আপনি ব্যক্তিগতভাবে সেখানে গিয়ে বিষয়টি চেক করুন এবং আপনার পরিচিতজন দ্বারা পরীক্ষা করার মাধ্যমে ভাড়া নিন। আর তা না হলে, এরকমভাবে ভাড়ার জন্য অগ্রিম পেমেন্ট করার কারণে আপনি প্রতারিত হতে পারেন।
স্ক্যামাররা কোন একজন ব্যক্তির সাথে প্রতারণা করার মাধ্যম হিসেবে অগ্রিম পেমেন্ট পাঠানোর মাধ্যমটি ও ব্যবহার করে। এক্ষেত্রে তারা নির্দিষ্ট কিছু পণ্যে বা আইটেমের জন্য অতিরিক্ত ছাড় অফার করে। আর এজন্য সেই পণ্যটির সাথে এরকম শর্ত জুড়ে দেয় যে, পণ্যটি কেনার ক্ষেত্রে ডিসকাউন্ট উপভোগ করার জন্য আপনাকে অবশ্যই অগ্রিম পেমেন্ট করতে হবে।
যদিও, ট্রাস্টেড অনলাইন শপ এবং ওয়েবসাইট গুলোতে এরকম ক্যাম্পেইন নিয়মিত চলে এবং এটি তাদের জন্য স্বাভাবিক। কিন্তু, আপনি যে সমস্ত ফেসবুক পেজগুলো চেনেন না এবং যেগুলো খুবই কম জনপ্রিয়, সেগুলো থেকে প্রথমবার প্রোডাক্ট কেনার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই এ ধরনের স্ক্যামিং বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।
এক্ষেত্রে আপনার অবশ্যই এটি চেক করে নেওয়া উচিত যে, তারা কতদিন থেকে ব্যবসা করছে এবং এর আগেও তারা এরকম ক্যাম্পেইন করেছে কিনা। মোটকথা, এ ধরনের ফেসবুক পেজ থেকে প্রোডাক্ট কেনার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা চেক করে নিতে হবে। আর তা না হলে, আপনি তাদের অগ্রিম পেমেন্ট করার কারণে প্রতারিত হতে পারেন এবং আপনার কেনাকাটার স্বপ্নদোষ স্বপ্নে পরিণত হতে পারে।
এটি আপনার জন্য বিপদজনক হতে পারে যে, যদি কোন বিক্রেতা আপনার পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য কিংবা অন্য কোন কারণে Confirmation Code জানতে চান। যদি সেই ফেসবুক মার্কেট থেকে বিক্রেতা আপনার কাছ থেকে যেকোন মাধ্যমে পাওয়া Confirmation Code জানতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই এটি ধরে নিতে হবে যে, সে অবশ্যই স্ক্যামার এবং তিনি আপনার সাথে স্ক্যাম করতে চাচ্ছেন।
আপনাকে অবশ্যই কখনো ভেরিফিকেশন কোন অন্য কোন ব্যক্তিকে বলা উচিত নয়।
এক্ষেত্রে কোন একজন বিক্রেতা যদি আপনাকে এমনটি বোঝানোর চেষ্টা করে যে, আপনার কাছে যাওয়া কনফরমেশন কোড দিলে আমরা আপনার অর্ডারটি কনফার্ম করতে পারব, তাহলে আপনি অবশ্যই তার কথায় ভুলে যাবেন না। ফেসবুক মার্কেটপ্লেস থেকে কোন পণ্য অর্ডার দেওয়ার ক্ষেত্রে কিংবা পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য কখনোই Confirmation Code এর প্রয়োজন হয় না।
তাই, ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে কেনাকাটা করার সময় আপনার অবশ্যই এই ধরনের স্ক্যাম সম্পর্কে জানা জরুরী। আর তা না হলে, আপনি হয়তোবা অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হারাতে পারেন কিংবা আপনার ব্যাংক একাউন্ট শূন্য হয়ে যেতে পারে।
বর্তমানে ফেসবুক মার্কেট প্লেসে শুধুমাত্র ছোট ছোট প্রোডাক্ট বিক্রির মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং, বর্তমানে ফেসবুকে বিজ্ঞাপণ দিয়ে বাড়ি, গাড়িসহ অনেক বড় বড় পণ্য এবং সার্ভিস বিক্রি করা হচ্ছে। আর এই পরিস্থিতিতে আপনিও কিছু স্প্যামিং এর শিকার হতে পারেন। যদিও তারা আপনাকে বিশ্বাসযোগ্যতার জন্যই প্রথমে কিছু অগ্রিম টাকা পাঠাতে বলবে এবং তারপর বাকি টাকা তাদের নির্ধারিত প্লেসে এগিয়ে জমা দিতে বলবে। কিন্তু, তাদের এমনটি করার মাঝেই রয়েছে একটি সূক্ষ্ম প্রতারণা।
এসব স্ক্যামাররা আপনাকে যখন কিছু টাকা অগ্রিম পাঠাতে বলে এবং বাকি টাকা তাদের শোরুমে গিয়ে দিতে বলে, তখন আপনি নির্দ্বিধায় তাদের কথা বিশ্বাস করতে পারেন। কিন্তু, তারা প্রথমে অর্ডার বুক করার জন্য আপনার কাছ থেকে যে টাকাটি নিবে, এটি ছিল তাদের প্রতারণার অংশ। অপরদিকে, আপনি তাদের সেই নির্ধারিত প্লেসে গিয়ে সেই মূল অফিস বা প্রতিষ্ঠান খুঁজে পাবেন না।
তাই, ফেসবুক মার্কেটপ্লেস থেকে গাড়ি কেনার আগে অবশ্যই তাদের বিষয়ে এনালাইসিস করে নিবেন। এক্ষেত্রে আপনি অবশ্যই বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে তাদের পূর্বের রিভিউ দেখে নিতে পারেন।
আর যদি কোন অচেনা বিক্রেতা আপনাকে অগ্রিম অর্থ প্রদানের জন্য অতিরিক্ত জোর করে, তাহলে অবশ্যই তাকে Ignore করা উচিত।
আপনি যখন অনলাইন থেকে কোন একটি প্রোডাক্ট অর্ডার করবেন, তখন স্বাভাবিকভাবে আপনাকে সেই পণ্যটির দাম এবং শিপিং ফি দিতে হবে। আবার অনেক সময় বিশেষ ছাড়ের কারণে, আপনি শিপিং ফি ছাড়াই পণ্য অর্ডার করতে পারেন। ফেসবুক থেকে কোন প্রোডাক্ট অর্ডার করার ক্ষেত্রে আপনাকে যদি এসবের বাহিরে ও অতিরিক্ত পেমেন্ট করতে বলে কিংবা আরো বিভিন্ন অজুহাতে পেমেন্ট চাওয়া হয়, তাহলে আপনাকে অবশ্যই সেই বিক্রেতা পরিহার করাই উচিত।
একজন প্রকৃত সেল আর কখনোই আপনার কাছ থেকে এমন অতিরিক্ত অর্থ চাইবে না।
ফেসবুক মার্কেটে কিছু অসাধু সেলার প্রতারণা করার উদ্দেশ্যেই মূলত এ ধরনের ব্যবহার করে থাকে। তাই, আপনিও ফেসবুক থেকে অর্ডার করার সময় এ ধরনের অসাধু সেলারদের পরিহার করে চলবেন।
ফেসবুক মার্কেটপ্লেসের জনপ্রিয় স্ক্যাম গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো Mailing items স্ক্যাম। এক্ষেত্রে সেই বিক্রেতা আপনাকে পণ্যটি না পাঠিয়েই শুধুমাত্র একটি জাল কুরিয়ার রশিদ আপনার কাছে শেয়ার করে। এক্ষেত্রে আপনি হয়তোবা মনে করেন যে, হয়তোবা পণ্যটি ডেলিভারির জন্য রয়েছে। আপনার যদি সেই বিক্রেতা সম্পর্কে শুরু থেকেই সন্দেহ থাকে, তাহলে প্রথমে সে বিক্রেতার পণ্যগুলো চেক করুন এবং তাদের ফেসবুক প্রোফাইলটিও চেক করতে পারেন।
সেখানে আপনি যদি দেখেন যে, ছবি ছাড়া কোন একজন ব্যক্তি অথবা সেই পেজটি খুব সম্প্রতি তৈরি করা হয়েছে, তাহলে পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে তাকে এড়িয়ে চলাই উচিত।
আর যদি সেই পেজটি পূর্ব পরিচিত হয়, তাহলে তো আপনাকে আর কোন অনুসন্ধান ই করতে হচ্ছে না।
ফেসবুক মার্কেটপ্লেস থেকে পণ্য ক্রয় অথবা যে কোন মার্কেটপ্লেস থেকে দুশ্চিন্তা মুক্তভাবে পণ্য ক্রয়য়ের একমাত্র উপায় হল ক্যাশ অন ডেলিভারি। এক্ষেত্রে সেই বিক্রেতা আপনাকে শুধুমাত্র জাল কুরিয়ার রশিদ দিয়েই টাকা নিতে পারবেনা। এভাবে করে আপনি পণ্যটি হাতে পাওয়ার পরই একমাত্র পেমেন্ট করবেন, এবং এতে স্প্যামিং হওয়ার সম্ভাবনা ও অনেক কম থাকে।
যদিও ফেসবুক মার্কেটপ্লেসের এরকম স্ক্যামিং অবশ্যই আপনাকে ফেসবুক থেকে কেনাকাটা করার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করবেনা। কেননা, ফেসবুকে আপনি কিছু কিছু সেলারের জন্য স্ক্যামিং এর শিকার হলেও, এখান থেকে আপনি অনেক পছন্দের প্রোডাক্ট বাছাই করার সুযোগ পাচ্ছেন।
সেই সাথে, একজন বিক্রেতা হিসেবে ও আপনাকে অবশ্যই ফেসবুক মার্কেটপ্লেসের স্ক্যাম গুলো সম্পর্কে জানতে হবে এবং এগুলো জেনেই আপনার ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে। তাহলে, আপনার যদি কোন একটি ছোট ব্যবসা থাকে এবং আপনি যদি এটির পরিসর আরো বৃদ্ধি করতে চান, তাহলে ফেসবুক আপনার জন্য একটি আদর্শ প্লাটফর্ম হতে পারে। এজন্য আপনি একটি ফেসবুক প্রোফাইল তৈরি করুন এবং সেখানে আপনার পণ্যের প্রচারণা চালানো। সেই সাথে, সম্ভব হলে বিজ্ঞাপণের মাধ্যমে আপনার প্রোডাক্টগুলো স্পেসিফিক কাস্টমারদের কাছে তুলে ধরুন। ধন্যবাদ।
আমি মো আতিকুর ইসলাম। কন্টেন্ট রাইটার, টেল টেক আইটি, গাইবান্ধা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 421 টি টিউন ও 93 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 62 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 3 টিউনারকে ফলো করি।
“আল্লাহর ভয়ে তুমি যা কিছু ছেড়ে দিবে, আল্লাহ্ তোমাকে তার চেয়ে উত্তম কিছু অবশ্যই দান করবেন।” —হযরত মোহাম্মদ (সঃ)