ভাল ফল পেতে ‘Lookalike Audience’ দিয়ে ফেসবুকে এড বুস্ট করুন

‘লুক-এ-লাইক অডিয়ান্স’ এমন একটি অডিয়ান্স যার মাধ্যমে নতুন কিছু মানুষ আপনার পণ্য, সেবা বা ব্যবসার ব্যাপারে আগ্রহী হতে পারে। কেননা তাঁরা আপনার বর্তমান ক্রেতার আগ্রহ, আচরণ এবং ডেমোগ্রাফিক ইনফোর সঙ্গে সবচেয়ে বেশী সামঞ্জস্যপূর্ণ বা তার খুব কাছাকাছি।

যখন ‘লুক-এ-লাইক অডিয়ান্স’ তৈরি করা হয় তখন একটা সোর্স অডিয়ান্স থেকে ডাটা সংগ্রহ করে তার ওপর ভিত্তি করে তা তৈরি করা হয়। এটাকে Seed Audience বলতে পারেন। মূলত কাস্টম অডিয়ান্স থেকে ডাটা নিয়ে ‘লুক-এ-লাইক’ অডিয়ান্স তৈরি করা হয়। এই যে কাস্টম অডিয়ান্স এর কথা বললাম এটা আবার কি জিনিস। কাস্টম অডিয়ান্স হলো সেই অডিয়ান্স যারা আগে থেকেই আপনার ব্যবসা সম্বন্ধে কিছু জানে বা আগ্রহ দেখিয়েছে। যেমনঃ যারা আপনার ওয়েবসাইট ভিজিট করেছে, মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড করেছে কিংবা আপনার ফেসবুক বিজনেস পেজে লাইক দিয়েছে। এটা যেমন অনলাইন ডাটা হতে পারে তেমনিভাবে কিছু অফলাইন ডাটা হতে পারে। যেমনঃ আপনার দোকান থেকে যারা কেনাকাটা করেছে বা কোন ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেছে। ফেসবুক মানসম্পন্ন এই ধরনের কমন কিছু তথ্যের ওপর ভিত্তি করে অডিয়ান্স চিহ্নিত করে এবং তাঁদেরকে খুঁজে বের করে যারা আপনার বর্তমান ক্রেতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বা খুব কাছাকাছি।

আপনি যখন ‘লুক-এ-লাইক অডিয়ান্স’ তৈরি করবেন তখন এর অডিয়ান্স সাইজ পছন্দ করে দিতে হয়। এর জন্য একটা স্কেল আছে যাতে ১ থেকে ১০ পর্যন্ত ইনডিকেটর আছে। ১-৫ হল ক্ষুদ্র অডিয়ান্স এবং ৬-১০ হল বড় অডিয়ান্স। ক্ষুদ্র অডিয়ান্স যদি সেট করা হয় তাহলে সেটা খুব বেশী সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে আপনার সোর্স অডিয়ান্স এর সঙ্গে। আবার যদি বড় অডিয়ান্স সেট করেন তাহলে সম্ভাব্য রিচ বাড়বে কিন্তু আপনার সোর্স অডিয়ান্স এর সঙ্গে মিলে যাওয়া অডিয়ান্সের হার কমে যাবে। সোর্স অডিয়ান্স এর জন্য ন্যূনতম ১০০ মানুষের ডাটা থাকতে হবে। তবে ফেসবুকে রিকম্যান্ড করে ১, ০০০ থেকে ৫০, ০০০ মানুষের ডাটা। ভাল ফলাফল পেতে হলে সোর্স ডাটার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। ভাল বীজ থেকে যেমন ভাল চারা হয় এবং ভাল ফলন পাওয়া যায় সোর্স ডাটাও ঠিক একইভাবে কাজ করে। অনেকেই আছেন কম পয়সা খরচ করে ফেক লাইক ক্রয় করেন। ঐ সব ডাটা ব্যবহার করে আপনি কাঙ্ক্ষিত ফল পাবেন না বরং হিতে বিপরীত হবে। তাই ফেক লাইক কেনা থেকে বিরত থাকুন।

‘লুক-এ-লাইক অডিয়ান্স’ তৈরি করার আগে জেনে নিন কিছু তথ্য

১। যে পেজ বা পিক্সেল ডাটা ব্যবহার করে আপনি ‘লুক-এ-লাইক অডিয়ান্স’  তৈরি করবেন তার এডমিন এর ভূমিকা আপনার থাকতে হবে।

২। আপনি যদি কাস্টম অডিয়ান্স থেকে ‘লুক-এ-লাইক অডিয়ান্স’ তৈরি করতে চান তাহলে আপনাকে ঐ কাস্টম অডিয়ান্স এর নির্মাতা হতে হবে।

৩। আপনি যদি মোবাইল অ্যাপ ডাটা ইন্সটল থেকে ‘লুক-এ-লাইক অডিয়ান্স’ তৈরি করতে চান তাহলে আপনাকে তার প্রশাসক বা ডেভেলপার হতে হবে।

৪। একটা ‘লুক-এ-লাইক অডিয়ান্স’  তৈরি করার পর তা কার্যকর হতে ৬ থেকে ২৪ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। এর পর প্রতি তিন থেকে সাতদিনে এটা রিফ্রেশ হবে যতক্ষণ না আপনি কার্যকরভাবে এড টারগেটিং করবেন।

৫। ‘লুক-এ-লাইক অডিয়ান্স’ ব্যবহার করার জন্য এটার এড টারগেটিং আপডেট হওয়ার জন্য আপনাকে অপেক্ষা করার দরকার নেই।

৬। ‘লুক-এ-লাইক অডিয়ান্স’ যখন আপডেট হবে সেটা আপনি ‘অডিয়ান্স ম্যানেজার’ পেজ থেকেই জানতে পারবেন এবং সহজলভ্যতা কলামের নিচে এটার তারিখ দেখতে পারবেন।

অতিরিক্ত কিছু তথ্য  ‘লুক-এ-লাইক অডিয়ান্স’ তৈরি করার সময় বিবেচনায় রাখতে হবে

১। আপনার ‘লুক-এ-লাইক অডিয়ান্সে এক বা একাধিক দেশের মানুষ অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন। এটা তৈরি করার সময় সেইসব দেশের নাম সেট করে দিবেন যে সব দেশের অডিয়ান্স আপনি পেতে চান।

২। আপনার সোর্স অডিয়ান্সে একটা দেশ থেকে ন্যূনতম ১০০ মানুষের ডাটা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

৩। একটা সিঙ্গেল সোর্স অডিয়ান্স থেকে আপনি ৫০০ টা পর্যন্ত ‘লুক-এ-লাইক অডিয়ান্স’ তৈরি করতে পারবেন।

৪। আপনি যদি ওয়েবসাইট ভিজিটরদের ‘পিক্সেল’ ডাটা ব্যবহার করেন তাহলে ‘লুক-এ-লাইক অডিয়ান্স’ থেকে আপনার সোর্স ডাটার মানুষগুলোকে বাদ দেয়া হবে।

৫। একটা সিঙ্গেল এড সেটে একই সময়ে একাধিক ‘লুক-এ-লাইক অডিয়ান্স’ ব্যবহার করতে পারবেন। এড সেটগুলোর এড সেইসব মানুষগুলোকে টার্গেট করবে যারা নির্বাচিত ‘লুক-এ-লাইক অডিয়ান্স’ এর সঙ্গে মিলে যাবে বা কাছাকাছি থাকবে।

‘লুক-এ-লাইক অডিয়ান্স’ কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?

আমি আগেই বলেছি এই অডিয়ান্সের মাধ্যমে একদম ব্রান্ড নিউ কাস্টমার আপনি খুঁজে পেতে পারেন। বার বার একই টারগেটিং সেটিংস করে এড রান করার ফলে প্রথম দিকে ভাল ফলাফল পেলেও একটা পর্যায়ে এসে তা কমতে থাকবে। কেননা, পুরাতন অডিয়ান্স আর রেসপন্স করবে না অথবা এটার হিতে বিপরীতও হতে পারে। যেমন ধরুন কেউ আপনার একই ধরনের এড বার বার দেখতে দেখতে বিরক্তবোধ করতে পারে। কেউ যদি আপনার এড হাইড করে দেয় তখন ফেসবুক এটাকে নেগেটিভ ফিডব্যাক হিসাবে গণ্য করবে। তখন আপনার এড ভাল পারফর্ম করবে না। সুতরাং ‘লুক-এ-লাইক অডিয়ান্স’ এর মাধ্যমে আপনি নতুন অডিয়ান্স এর কাছে আপনার পণ্য বা সেবা পোঁছে দিতে পারবেন।

নিজের কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ারিং

আমি আমার কিছু কাস্টমারের টার্গেট অডিয়ান্স অর্থাৎ ইন্টারেস্ট, ডেমগ্রাফিক ইনফো এবং আচরণগুলো ম্যানুয়ালি সেটিংস করে এতদিন ধরে এড বুস্ট করে আশাকরি। এর ফলে এখন কেউ কেউ অনেক ভাল সেল পাচ্ছেন। তাঁদের পেজ লাইকও অনেক বাড়ছে। কেউ কেউ হয়ত রিচ কম পাচ্ছে কিন্তু ফলাফল ভাল পাচ্ছে।

উপসংহার

‘লুক-এ-লাইক অডিয়ান্স’ একটা যুগান্তকারী অডিয়ান্স। কেউ যদি তাদের টার্গেট অডিয়ান্সগুলো নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষণ করে সঠিকভাবে এটাকে কাজে লাগাতে পারে তাহলেই ভাল ফলাফল পাবে। যেমন বীজ তেমন ফল। তাই সবার আগে সিড অডিয়ান্স বা সোর্স অডিয়ান্সটা খুব ভালমানের হতে হবে। আর তাহলেই কাঙ্ক্ষিত ফলাফল হয়ত পেতে পারেন।

 

 

Level 4

আমি আব্দুল্লাহ আল ফারুক। Digital Marketer, Self Employed, Bogura। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 34 টি টিউন ও 20 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 23 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস