ফেসবুকের কনটেন্ট মডারেশন-সংক্রান্ত তথ্য ফাঁস

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক সন্ত্রাসবাদ, পর্নোগ্রাফি, প্রতিহিংসামূলক বক্তব্য ইত্যাদি কনটেন্ট মডারেট করে থাকে। কিন্তু এসব কনটেন্ট মডারেশনে ফেসবুক ঠিক কী ধরনের পদ্ধতি অনুসরণ করে, তা সম্পর্কে কোনো ধারণা এত দিন ছিল না। সম্প্রতি ফেসবুকের কনটেন্ট মডারেশন-বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানে। নিজেদের এক প্রতিবেদনে এ-সম্পর্কিত ফাঁস হওয়া বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির কনটেন্ট মডারেট করার অভ্যন্তরীণ নির্দেশনাগুলো তাদের হাতে পৌঁছেছে। খবর রয়টার্স ও গার্ডিয়ান।

গার্ডিয়ানের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ফেসবুকে কনটেন্ট মডারেট করার অনেক নীতিমালাই অসঙ্গতিপূর্ণ ও অদ্ভুত। বিশেষত যৌনতা-সংশ্লিষ্ট কনটেন্ট মডারেশনের পদ্ধতি সবচেয়ে জটিল ও বিভ্রান্তিমূলক। ফলে ‘প্রতিশোধমূলক পর্নো’ প্রকাশের বিষয়টি এখন ফেসবুকের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে।

এছাড়া অনেক ব্যবহারকারী আত্মহত্যার মতো আত্মবিধ্বংসী বিভিন্ন বক্তব্য বা কার্যক্রম সরাসরি ফেসবুকে প্রকাশ করে থাকে। কিন্তু ফেসবুক এ ধরনের টিউন সেন্সর করে না বা এর বিরুদ্ধে কোনো ধরনের শাস্তির ব্যবস্থাও নেয় না। ফলে এ ধরনের টিউন প্রায়ই চোখে পড়ছে।

ফেসবুকে কোনো ব্যক্তির আত্মবিধ্বংসী কার্যক্রমের সরাসরি ভিডিও প্রকাশ করার হার গত ছয় মাসে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বেড়ে গেছে বলে গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। গত গ্রীষ্মে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দুই সপ্তাহে এ ধরনের ৪ হাজার ৫৩১টি কনটেন্ট মডারেশন পেরিয়ে ফেসবুকে প্রকাশ হয়েছে। চলতি বছর এটি বেড়ে ৫ হাজার ৪৩১-এ পৌঁছেছে। ফাঁস হওয়া নথিতে আরো দেখা গেছে, যখন কোনো ব্যক্তি আত্মহত্যা বা অনুরূপ আত্মবিধ্বংসী কোনো কিছুর ভিডিও প্রকাশ করে, তখন ‘ওয়েলফেয়ার চেকের’ জন্য বিভিন্ন এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করে ফেসবুক।

এর কারণ ব্যাখ্যা করে ফেসবুকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইদানীং দেখা যাচ্ছে, আত্মহত্যাসহ নানা ধরনের ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার করা হচ্ছে। আমরা এসব ভিডিও সেন্সর বা আত্মঘাতী হতে যাওয়া ব্যক্তিকে কোনো ধরনের শাস্তি দিই না। বিশেষজ্ঞরা আমাদের বলেছে, এসব ব্যক্তি যখন সরাসরি প্রচারের মাধ্যমে দর্শকদের সঙ্গে যুক্ত থাকে, তখন তারা নিরাপদ। এছাড়া প্রকাশিত ভিডিওর সংবাদের গুরুত্বও মেপে দেখতে হয় আমাদের। খুব একটা সংবাদমূল্য না থাকলে, তা মুছে দিতে বলেন মডারেটররা।

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে ফেসবুকের কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অনুসৃত পন্থা বিষয়ে ফাঁস হওয়া বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের বিভিন্ন ম্যানুয়াল, স্প্রেডশিট ও ফ্লোচার্ট। এতে দেখা গেছে, বিভিন্ন গ্রাফিক্যাল কনটেন্ট মডারেশনের জন্য ফেসবুক যে বিশেষ সফটওয়্যারের কথা বলে আসছে, তা এখনো প্রাথমিক স্তরেই রয়েছে। এবং গোটা মডারেশন পদ্ধতিটি কোনোভাবেই ক্ষতিকর কনটেন্ট প্রকাশের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণের জন্য যথেষ্ট নয়।

ফেসবুকের পক্ষ থেকে গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন প্রসঙ্গে নির্দিষ্ট কোনো টিউমেন্ট করা হয়নি। তবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, নিরাপত্তার বিষয়টি তাদেরকে খুব ভাবাচ্ছে। ফেসবুকের গ্লোবাল পলিসি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রধান মনিকা বিকার্ট বলেন, ফেসবুক ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা দেয়ার বিষয়টিকে আমরা সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে থাকি। ফেসবুক একটি

উন্মুক্ত যোগাযোগ মাধ্যম। ফলে এখানে যথাসম্ভব নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি।

তিনি আরো বলেন, কোনো বড় ইস্যুর অংশ হিসেবে আমরা বিশেষ কিছু ঘটনা প্রকাশ করে থাকি। এ ধরনের ঘটনাগুলো বোঝার জন্য আমরা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও কাজ করেছি। যদি কেউ আত্মহত্যা বা নিজের ক্ষতি করা নিয়ে ফেসবুক লাইভে আসে, তাহলে তার পরিবার ও বন্ধুদের তা জানাতে এর অনুমোদন দেয়া হয়।

সূত্র: বণিক বার্তা

Level 0

আমি মোঃ ফাহাদ হোসাইন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 7 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 13 টি টিউন ও 1 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস