ফেসবুক মার্কেটার হিসেবে একটা কোম্পানী লোক চেয়েছিল। বেতন ২০,০০০টাকা- ৩০,০০০টাকা দিবে। সেখানের জন্যে উপযুক্ত লোক খুজতে গিয়ে ফেসবুকে টিউন করি। যারা চাকুরিটির জন্য যোগাযোগ করেছেন, সেই ঘটনার কিছু কেসস্টাডি এখানে শেয়ার করছি। বিষয়টি কাউকে ছোট করার জন্য না, শিক্ষনীয় এবং দিক নির্দেশনামূলক টিউন হিসেবে দেখবেন।
চাকুরির ধরণ: একটা স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের ব্রান্ডিংয়ের কাজে ব্যবহৃত ফেসবুক পেজকে মেইনটেইন করতে হবে। ব্রান্ডিংয়ের জন্য ক্রিয়েটিভ আইডিয়া সম্পন্ন মার্কেটার দরকার। উল্লেখ্য, অনেকগুলো সিভি তাদের দিয়েছি, এগুলোর মধ্য থেকে একজনকে হয়ত তারা বেছে নিবে।
উত্তর: মাত্র ৩মাসের কোর্স সম্পন্ন করার পর পরই ৩০,০০০টাকা বেতনের চাকুরির উপযুক্ত কেউ হয়ে উঠতে পারেনা। কোর্স করলে রাস্তাঘাট চিনা যায়। সেই রাস্তাঘাটে হেটে নিজের স্কীলটা অর্জন করতে হয়। এরপরই চাকুরি করার মত উপযুক্ত কেউ হতে পারে। তাউ শুরুতে কম বেতনের চাকুরি প্রত্যাশা করা যেতে পারে।
কিভাবে নিজেকে প্রস্তুত করবেন, সেই গাইডলাইন পেতে আমার এ লেখাটি পড়ে দেখুন: https://www.techtunes.io/freelancing/tune-id/427428
উত্তর: এখানে উত্তর দুই রকম।
ক) আপওয়ার্কে সাধারণত কোন পুরো এসইও প্রজেক্টের কিছু অংশ করার কাজ পাওয়া যায়। অর্থাৎ হয় লিংক বিল্ডিং কিংবা আর্টিকেল মার্কেটিং কিংবা কীওয়ার্ড রিসার্চ। কোন এসইও প্রজেক্টের অল্প একটা পার্ট করেই নিজেকে এসইও কাজে পুরো দক্ষ ব্যক্তি ভাবার মত দু:সাহস দেখানো উচিত নয়। এসইও আরও বিশাল ব্যপার।
খ) যদি ধরি আপওয়ার্কে ফুল এসইও প্রজেক্ট সম্পন্ন করেছেন, সেটা ধরে নিয়েই বলছি, এসইওর প্রজেক্ট করেছেন মানে গুগলে টপ র্যাংকিংয়ের কাজ করেছেন। গুগলে র্যাংকিং করা আর ফেসবুকের মাধ্যমে কোন প্রোডাক্ট ব্রান্ডিং করা এক বিষয় নয়। প্রোডাক্ট ব্রান্ডিংয়ের জন্য অনেক ক্রিয়েটিভ মার্কেটার হতে হয়।
প্রোডাক্ট ব্রান্ডিংয়ের জন্য আপনাকে যে যে বিষয়ে দক্ষ হতে হবে: ১) লিড সংগ্রহ: ২) লিড পরিচযা: ৩) সেলস ফানেল: ৪) কনটেন্ট ডেভেলপ: ৫) সম্ভাব্য কাস্টমারের আচরণ বুঝা: ৬) নিউজ ফিড অ্যালগরিদম: ৭) সঠিক অডিয়েন্স টার্গেট করা: ৮) পেইড অ্যাডভার্টাইজিং ৯) রিমার্কেটিং টেকনিক ১০) ইনফ্লুয়েন্সার হওয়া: ১১) মাসিক মার্কেটিং রিপোর্ট পযবেক্ষণ: ১২) রিপোর্ট অনুযায়ি মার্কেটিং প্লান তৈরি: ১৩) কম্পিটিটরদের অ্যানালাইস করা
উত্তর: ফেসবুকের ২টা পেজ চালানো আর একটা কোম্পানীর ব্রান্ডিংয়ের জন্য পেজ চালানো দুইটার মধ্যে আকাশ আর পাতাল পার্থক্য রয়েছে। যখন কোন কোম্পানীর ব্রান্ডিংয়ের জন্য পেজ চালাবেন, ধরে নিতে হবে, সেই পেজের মাধ্যমে কোম্পানীর ম্যাক্সিমাম আয়। যেহেতু তারা বেতন অফার করেছে ৩০০০০টাকা, ধরে নিতে পারি, তাদের মাসিক আয় মিনিমাম ১০লাখ টাকা। তার মানে যে পেজটি মেইনটেইন করবেন, সেই পেজের মেম্বারদেরকে সেলে কনভার্ট করার কঠিন কাজটি আপনাকে করতে হবে। পেজে লিড বৃদ্ধি এবং লিড নার্সিংয়ের কাজটি খুব ভাল একটি সেলস ফানেল তৈরি করতে হবে, যাতে কোম্পানীর মাসিক আয় ১০লাখ টাকা হয়। আপনার যে পেজ চালানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে, সেটি থেকে ইনকাম করেছেন? অবশ্যই যদি এফ-কমার্স ব্যবসা চালানোর অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে মোটামুটি আপনার দক্ষতা আছে ধরে নেওয়া যায়। তাও ৩০,০০০টাকার উপযুক্ত কিনা বলা যাচ্ছেনা।
উত্তর: ৩০,০০০টাকা বেতন মানে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে হাই স্যালারী হিসেবে ধরা যায়। আগে চাকুরির অভিজ্ঞতা ছাড়াই আপনি হাই স্যালারীর চাকুরি আশা করছেন এটাই দক্ষ আর অদক্ষ ব্যক্তির মধ্যে পার্থক্য ধরিয়ে দিচ্ছে। কারণ দক্ষ ব্যক্তিরা খুব ভাল ভাবে জানে একদম উপরের সিড়িতে যেতে হলে নিচের প্রতিটা স্টেপকে পাড় হয়ে উপরে উঠতে হবে। সিড়ির প্রতিটা স্টেপে পা না ফেলে এক লাফে উপরেরর স্টেপে উঠে যাওয়া সম্ভব না। অদক্ষ মানুষরা কল্পনা প্রিয়াসী বেশি। তারা কল্পনা করে কোন স্টেপ না পার হয়েই একদম উপরের স্টেপে চলে যাওয়া যায়।
এরকম কল্পনা প্রবণ হওয়ার কারনেই অদক্ষরা পরিশ্রমী হয়না। সেজন্য নতুন কাউকে সাধারণত কেউ নেওয়ার মত রিস্ক নিতে চায়না। একটা কোম্পানী কাউকেই বসিয়ে বসিয়ে কল্পনা করার জন্য নিবেনা। পরিশ্রমের মানে বুঝে, চ্যালেঞ্জ নিতে পারে, কল্পনা আর বাস্তবতার পার্থক্য বুঝতে পারে এরকম ব্যক্তিকেই সকল কোম্পানী চায়। অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা অনেকগুলো বাস্তবভিত্তিক প্রজেক্ট করার কারনে কল্পনা আর বাস্তবের পার্থক্যটি অনুধাবন করে ফেলে।
আচ্ছা ধরুন, আপনার কম্পিউটারটি নষ্ট হয়ে হয়েছে। ঠিক করাতে নিয়ে এসেছেন। খরচ করতে হবে মাত্র ৫০০টাকা। যে ঠিক করবে, সে জানালো ১ম বারের মত সে কোন কম্পিউটার ঠিক করতে যাচ্ছে। এর্ আগে সে কিভাবে ঠিক করতে হয়, তা শুধু ইউটিউবে দেখেছে। কখনও বাস্তবে ঠিক করেনি। এটা জানার পর কি আপনি আপনার দামী কম্পিউটারটি তাকে ঠিক করানোর মত রিস্ক নিবেন? জীবনে ১ম সে বাস্তবে কম্পিউটার ঠিক করছে। কাজ করতে গিয়ে কম্পিউটার কি পুরোই ধ্বংস হয়ে যায় কিনা এ ভয়ে তাকে বিদায় দিয়ে দিবেন। সে বিনামূল্যে কাজটি করে দিতে চাইলেও হয়ত জীবনে কেউ রিস্কটি নিবেন না। আপনি যে কাজটি করছেন, একই কাজই প্রতিটা কোম্পানী করবে। নতুন কাউকে কাজে নিয়ে সে পথে বসতে আগ্রহী না।
আশার কথা হচ্ছে, অনলাইনে বিভিন্ন প্রজেক্ট করেই বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন সম্ভব। এফ কমার্স বিজনেস সেটআপ করেন। সেখান হতে মাসে ৩০,০০০টাকা ইনকামের ব্যবস্থা করেন। তাহলেই কাজটি করতে গিয়ে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন হয়ে যাবে।
এসইও যারা শিখেছেন তাদের অভিজ্ঞতা অর্জনের গাইডলাইন: https://www.techtunes.io/freelancing/tune-id/429855
গ্রাফিক ডিজাইন যারা শিখেছেন, তাদের অভিজ্ঞতা অর্জনের গাইডলাইন: http://genesisblogs.com/freelancing-2/19846
মনে রাখবে অভিজ্ঞ কাউকে না নিয়ে যদি অনভিজ্ঞ কাউকে চাকুরিতে নেওয়া হয়, তাহলে সেখানে অভিজ্ঞ ব্যক্তির জন্য বেইনসাফ করা হবে। কারণ সে অনেক পরিশ্রম, সেক্রিফাইস, ধৈয্য ধরে এটুকু অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। তাকে আল্লাহ পুরস্কৃত না করে, যে এখনও পরিশ্রমই করলোনা, তাকে পুরস্কৃত করলে বিষয়টা কেমন বেইনসাফি হয়ে গেলনা? নিশ্চয়ই আল্লাহ বেইনসাফি কাজ করতে পারেননা।
যেকোন পরামর্শের জন্য যোগাযোগ করতে আমার ফেসবুক পেজ: https://www.facebook.com/ekram07/
আমি মোঃ ইকরাম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 102 টি টিউন ও 130 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
নিজেকে অনলাইন ব্রান্ড এক্সপার্ট হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করলেও গ্রাফিকস, ওয়েবডিজাইন এবং অ্যানিমেশন বিষয়েও প্রচুর কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। লার্নিং এন্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। ব্লগিংটা নেশার কারনে করি। নিজের ব্লগের লিংকঃ http://genesisblogs.com/
awesome post……darun likhecen….
join http://www.facebook.com/groups/techteamsbd