বর্তমানে স্মার্টফোন হাতে পাওয়ার পর সবাই টেলিভিশনে বসে কিছু দেখা যেন ভুলতেই বসেছি। আর সত্যি বলতে, আমরা হাতে মোবাইল ফোন পেয়ে নিজেদের ফ্রি সময়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে সাচ্ছন্দ্যবোধ করি। তাছাড়া এখনকার স্মার্টফোনগুলোতে আছে ইউটিউব সহ বিভিন্ন অ্যাপস আর ফিচার তাই কোনোভাবেই যেন আমরা স্মার্টফোন ছাড়া নিজেদের কল্পনাও করতে পারিনা। আর বিনোদনের জন্য ত আছেই ইউটিউব তাই সেখান থেকে নাটক, সিনেমা, ওয়েব সিরিজ, সংবাদ, খেলাধুলার খবর সহ বিভিন্ন তথ্যবিত্তিক অনেক কিছু দেখা ও জানা যায়। তাই এতো সব পেয়ে স্মার্টফোনকে কিভাবে মানুষ হাত ছাড়া করবে সেটাই বলুন? তবে প্রযুক্তি আবারও টেলিভিশন দেখার নতুন কিছু উপায় করেই দিয়েছে।
বাজারে স্মার্ট টিভি চলে এসেছে। যার মাধ্যমে সহজেই আমরা স্মার্টফোনে পাওয়া সকল ইউটিউবের নাটক, মুভি ওয়েব সিরিজ এখন টিভিতেই দেখতে পারি। কিন্তু সবকিছুতে প্রযুক্তি নতুনত্ব নিয়ে আসছে এই যে ধরেন স্মার্ট টিভি থেকেও প্রযুক্তি এগিয়ে আছে এন্ড্রয়েড টিভির মাধ্যমে। এখন কথা হচ্ছে, অ্যান্ড্রয়েড টিভির কাজ বলাবাহুল্য অনেক এগিয়ে থাকে। তা কিভাবে? এই যে ধরেন আপনি অ্যান্ড্রয়েড টিভিতে আপনার সকল প্লেস্টোরের অ্যাপস চালু করতে পারবেন। পুরো মোবাইল ফোনই টিভিতে কানেক্টেড করতে পারবেন। অর্থাৎ, টিভিতে বসে মোবাইলের গেইমস দেখতে পারবেন আরও অনেক সুবিধাতো থাকছেই।
এবার বলি এতোসব কেন বলছি?
Xiaomi 4k Tv Box S 2nd Gen হচ্ছে যার মাধ্যমে সহজে ঘরের পুরানো টিভিকেই অ্যান্ড্রয়েড টিভিতে পরিনত করা যায়। এটি বর্তমানে সাম্প্রতিক অ্যান্ড্রয়েড ১১ আপডেট হয়েছে। এটিতে ২ জিবি র্যাম পাওয়া যাচ্ছে। যেখানে নতুন ১ লাখ দামের টিভিতেও ১-১.৫ জিবি র্যামই পাওয়া সম্ভব। আর এসব টিভিতে অ্যান্ড্রয়েড ৯ ই চালু আছে। তাতে বলা যেতে পারে, নতুন অ্যান্ড্রয়েড টিভি না কিনে বরং শাওমি টিভি বক্স নিয়ে ফেলা ভালো হবে। তাতে খরচ প্রায় ৬০০০ এর চেয়েও কম হতে পারে।
টিভি বক্সের সাথে কি কি পাচ্ছি তা জেনে নিলে সুবিধে হবে।
১. টিভি বক্স - এটি প্লাস্টিক ধরনের হয়ে থাকে। কিন্তু ম্যাট ফিনিশিং হয়ে থাকে। পোর্টস ও বাটন হিসেবে কয়েকটা পোর্টস থাকে। যেমন ৩.৫ মিমি হ্যান্ডফোন জ্যাক থাকে। USB পোর্ট থাকে। যেখানে ইচ্ছে করলেই মেমোরি কার্ড আর পেনড্রাইভ থাকে।
২. রিমোট : এটির রিমোটও স্মার্ট হয়ে থাকে। যার কারনে এটি দেখতেও প্রচুর প্রিমিয়াম। রিমোটে পেয়ে যাবেন ভয়েস এসিস্ট্যান্ট বাটন আছে। অর্থাৎ, ভয়েজ বাটন চেপে ধরে নিজের পছন্দসই নাটক, সিনেমা সহ আরও অনেক কিছু সার্চ করে দেখতে পারবেন। রিমোটটি IR সিস্টেম না। তাই যেকোনো দিক থেকেই কন্ট্রোল করা যাবে। আর এখানে রিমোটে ব্লুটুথ সিস্টেম চালু করা যাবে।
৩. HDMI ক্যাবল : HDMI পাওয়ার ইনপুট আছে এবং আউটপুট আছে।
৪. চার্জার : চার্জ দেওয়ার জন্যই চার্জার ত লাগেই। তাই সেটিও পেয়ে যাবেন।
এবার একটু চালু করার সিস্টেমটা বলি: এটিতে HDMI পাওয়ার ইনপুট আর আউটপুট আছে। প্রথমে চার্জার দিয়ে পাওয়ার দিতে হবে। এরপর HDMI ক্যাবল দিয়ে টিভি বক্স এর HDMI ইনপুটে সংযুক্ত করবেন। এবং অন্যপাশটি কানেক্ট করবেন যেকোনো পুরাতন টিভি কিংবা মনিটরে। সহজ ভাষায়, HDMI আছে এমন কিছুর সাথেই কানেক্ট করতে পারবেন। এছাড়াও প্রজেক্টরেও কানেক্ট করতে পারবেন। এরপর টিভির রিমোট দিয়ে কন্ট্রোল করতে পারবেন। তবে আরও কিছু কাজ ত থাকেই, তা হচ্ছে বাসার ওয়াইফাইয়ের সংযুক্ত করে নেওয়া। এসব কিছু নিজেরাই পেরে যাবেন।
অ্যান্ড্রয়েড টিভিতে যা যা থাকে সবই এখানেই পেয়ে যাবেন। এখানে গুগল প্লে স্টোর চালু করলে সব অ্যাপসও পেয়ে যাবেন। এছাড়াও রিমোর্টের সরাসরি ক্লিক করে যাওয়া যাবে কিছু অপশন ত থাকেই। যেমন নেটফ্লিক্স, ইউটিউব সহ আরও ১-২ টি এক্সট্রা অপশন পেয়েই যাবেন।
রেজুলেশন : টিভিতে 4k রেজুলেশন আছে। টিভি যদি 4k রেজুলেশন সাপোর্ট করে তবে খুব পরিস্কারভাবে ছবি দেখা যাবে।
কালার এবং কন্ট্রাস্ট : এই টিভিতে কালার এবং কন্ট্রাস্ট সবগুলো ম্যানুয়ালি ঠিক করা যাবে।
ডিসপ্লে এবং সাউন্ড : নিজের মত করেই ডিসপ্লে আর সাউন্ড সিস্টেম ঠিক করা যাবে। সবচেয়ে বড় যে সুবিধা পাওয়া যায় সেটা হচ্ছে এখানে এক্সট্রা সাউন্ড বক্স ব্যবহার করা যাবে। কারন এখানে ৩.৫ মিমি জ্যাক থাকে। যেটি কখনো টিভি স্টিকে সম্ভব হয়না।
USB পোর্ট: এটিতে USB পোর্ট থাকায় মেমোরি কার্ড কিংবা পেনড্রাইভ ব্যবহার করা যাবে। অথচ অনেক দামী স্মার্ট টিভিতে USB পোর্ট থাকেওনা।
স্টোরেজ : এখানে স্টোরেজ প্রায় ৮ জিবি থাকে। অর্থাৎ প্রচুর স্টোরেজ পাওয়া যাবে।
স্ক্রোল :পুরো টিভিটি স্মুথলি স্ক্রোলিং করা যাচ্ছিল।
এবার একটু ভিন্ন তথ্য দিয়েই ফেলি। সব স্মার্ট টিভি কিংবা স্টিকে দেখা যেত পাওয়ার ইনপুট দেওয়ার পর যতক্ষন টিভি চালুন থাকতো ততক্ষণের মধ্যে আশেপাশের চার্জার বা পোর্টগুলো গরম হয়ে যেত। কিন্তু এটির ক্ষেত্রে তেমনটি হয়নি। খুব বেশী গরম হয়না। যেহেতু টিভি বক্স অনেকক্ষণ ধরেই চলার সম্ভাবনা থাকে তাই এটির এই সুবিধা অনেক কার্যকর।
Xiaomi 4K TV Box S 2nd gen আসলেই সেরা পারফরম্যান্স দিচ্ছে। নতুন টিভি কেনার চেয়েও এমন কিছু নেওয়া হয়তো সুবিধাজনক হবে। তবে মূল্য আরেকটু কম হলেই ভালোই হতো। কিন্তু কোম্পানি ৬ মাসের ওয়ারেন্টি যেহেতু দিচ্ছে তাই ৬০০০ টাকায় কিনে সত্যিই ঠকবেন না। তাহলে আপনারা নিজের পছন্দসই গ্যাজেটসের দোকান থেকে কিনতে পারেন Xiaomi 4K TV Box S 2nd gen।
আমি আত্তিয়া ফারাহ। পেইজ মোডারেটর ও কন্টেন্ট রাইটার, টটেজা, চট্টগ্রাম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 মাস 3 সপ্তাহ যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 10 টি টিউন ও 2 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 2 টিউনারকে ফলো করি।