গ্যালিয়াম আর্সেনাইড ও গ্যালিয়াম ফসফাইড সম্পর্কে জানুন বিস্তারিত

টিউন বিভাগ ইলেক্ট্রনিক্স
প্রকাশিত
জোসস করেছেন
Level 2
মাস্টার ইলেকট্রিশিয়ান, হোভার ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড, চট্টগ্রাম

গ্যালিয়াম আর্সেনাইড  গ্যালিয়াম ফসফাইড

গ্যালিয়াম আর্সেনাইড:

গ্যালিয়াম এবং আর্সেনিকের কম্বিনেশনে তৈরি হয় গ্যালিয়াম আর্সেনাইড। এটি এক ধরনের সেমিকন্ডাকটর। এর ফরবিডেন এনার্জি গ্যাপ অন্যান্য সেমিকন্ডাটরের তুলনায় বেশি হয়। তবে এতে ভেজাল মিশ্রিত করা হলে ভেজাল পরমাণুর দ্বারা সৃষ্ট ডোনার ও অ্যাকসেপ্টর লেভেল কন্ডাকশন লেভেল এর কাছাকাছি অবস্থান করে। ফলে গ্যালিয়াম আর্সেনাইড কম তাপমাত্রাতেই নিঃশেষিত অবস্থায় থাকে। আবার এনার্জি গ্যাপ বেশি বলে এটি উচ্চ তাপমাত্রায় সঠিকভাবে কাজ করতে পারে। উচ্চ তাপমাত্রায় গ্যালিয়াম আর্সেনাইডের স্বাভাবিক পরিবাহিতা বৃদ্ধি পায়।

 

 

গ্যালিয়াম আর্সেনাইডের বৈশিষ্ট্য:

১। অন্যান্য সেমিকন্ডাকটরের তুলনায় গ্যালিয়াম আর্সেনাইডের ফরবিডেন এনার্জি গ্যাপ বেশি, প্রায় 1.4eV.

২। এর বিচ্ছুরণ তরঙ্গ দৈর্ঘ্য (Wave Length of Emission) প্রায় 900nm.

৩। এ ধরনের পদার্থে ইলেকট্রনের চলনশীলতা (Electron Mobility) 8500 / Cm2 / Volt / sec.

৪। এতে হোল চলাচল (Hole Mobility) 450 / cm 2 / volt / sec.

৫। এতে আন্তঃপারমাণবিক দূরত্ব (Inter Molecular Distance) 2.44u.m. গ্যালিয়াম আর্সেনাইডকে ধনাত্মক বা ঋণাত্মক সেমিকন্ডাকটরে রূপান্তরিত করা যায়।

৬। গ্যালিয়াম আর্সেনাইড কম তাপমাত্রাতেই নিঃশেষিত অবস্থায় থাকে ৷ ৭। এটি জার্মেনিয়াম ও সিলিকনের তুলনায় বেশি তাপ সহ্য করতে পারে।

৮। গ্যালিয়াম আর্সেনাইড দ্বারা তৈরি লাইট ইমিটিং ডায়োড (LED) থেকে লাল রংয়ের আলো পাওয়া যায়৷

 

 

গ্যালিয়াম আর্সেনাইডের ব্যবহার:

১। লাইট ইমিটিং ডায়োড বা LED তৈরিতে।

২। ফটো ডিটেক্টরে।

৩। ফটো ক্যাথোডে।

৪। গ্যালিয়াম আর্সেনাইড ল্যাম্পে।

৫। গ্যালিয়াম আর্সেনাইড ডায়োড তৈরিতে।

৬। গ্যালিয়াম আর্সেনাইড ল্যাজার (LASER) তৈরিতে।

এখানে LASER শব্দটি দ্বারা Light Amplification by Stimulated Emission of Radiation বুঝায়।

 

 

সিলিকনের তুলনায় গ্যালিয়াম আর্সেনাইডের সুবিধা:

১। গ্যালিয়াম আর্সেনাইড সিলিকনের তুলনায় কম তাপমাত্রাতেই নিঃশেষিত অবস্থায় থাকে।

২। গ্যালিয়াম আর্সেনাইড সিলিকনের তুলনায় বেশি তাপ সহ্য করতে পারে।

৩। বিদ্যুৎ পরিবাহক হিসেবে গ্যালিয়াম আর্সেনাইড সিলিকনের তুলনায় বেশি নির্ভরশীল।

৪। গ্যালিয়াম আর্সেনাইডকে ধনাত্মক বা ঋণাত্মক অর্ধপরিবাহীতে রূপান্তর করা যায় কিন্তু সিলিকনে যায় না।

৫। গ্যালিয়াম আর্সেনাইড বেশি তাপমাত্রায় সঠিকভাবে কাজ করতে পারে বলে সিলিকনের তুলনায় এর ব্যবহারিক গুরুত্ব অনেক বেশি।

৬। ফটো ইলেকট্রিক ডিভাইস তৈরিতে গ্যালিয়াম আর্সেনাইড ব্যবহার করা যায় কিন্তু সিলিকন ব্যবহার করা চলে না।

 

 

গ্যালিয়াম ফসফাইডের ব্যবহার:

লাল বা সবুজ রংয়ের আলো পাওয়ার জন্য লাইট ইমিটিং ডায়োড (LED) তৈরিতে গ্যালিয়াম ফসফাইড ব্যবহার করা হয়।

 

গ্যালিয়াম ফসফাইডের বৈশিষ্ট্য:

১। গ্যালিয়াম ফসফাইড গ্যালিয়াম (Ga) এবং ফসফরাস (P) এর একটি যৌগ। যার সংকেত GaP.

২। GaP এর এনার্জি গ্যাপ 2.26 ev.

৩। বিশুদ্ধ গ্যালিয়াম ফসফাইড পরিষ্কার কমলা লেবুর রং বিশিষ্ট উচ্চ ডোপিং বিশিষ্ট গ্যালিয়াম ফসফাইড গাঢ় কমলা রংয়ের।

৪। সালফার বা টেলুরিয়াম ডোপিং করলে ইহা p টাইপ এবং দস্তা ডোপিং করলে ইহা n টাইপ পদার্থে পরিণত হয়।

৫। ইহা গন্ধবিহীন এবং পানিতে অদ্রবণীয়।

৬। ইহার গলনাংক 1480 ° C।

৭। গ্যালিয়াম ফসফাইড দ্বারা সবুজ, কমলা ও লাল রংয়ের LED তৈরি করা যায়।

৮। ঘনত্ব 4.14gm / cm3.

৯। পারমাণবিক ঘনত্ব 4.94 × 102m - 3.

১০। ডাই - ইলেকট্রিক কনস্ট্যান্ট 11.1.

 

আজকের মতো এই পর্যন্তই, আশাকরি আপনাদের ভাল লেগেছে। ভালো লাগলে আপনাদের আপনাদের মতামত জানাবেন। পরবর্তী টিউন পর্যন্ত ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ!

Level 2

আমি মোঃ মোজাহেদুল ইসলাম মিয়া। মাস্টার ইলেকট্রিশিয়ান, হোভার ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড, চট্টগ্রাম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 13 টি টিউন ও 6 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 5 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।

আমি স্পষ্টভাবে নিখুঁত নই, তবে সীমিত সংস্করন।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস