কন্ডাক্টর, সেমিকন্ডাক্টর ও ইনসুলেটর।
কন্ডাকটর (পরিবাহী)
পরিবাহী পদার্থের সংজ্ঞা:
যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে খুব সহজেই বিদ্যুৎ প্রবাহিত হতে পারে, অর্থাৎ খুব কম পরিমাণ বাধার সম্মুখীন হয়, সেগুলোকে কণ্ডাকটর বা পরিবাহী বলে। যেমন রূপা, সোনা, তামা, অ্যালুমিনিয়াম, পারদ ইত্যাদি।
পরিবাহী পদার্থের বৈশিষ্ট্য:
১। উচ্চ পরিবাহিতা।
২। তাপ গুনাংক কম।
৩। ক্ষয়রোধক ক্ষমতা সম্পন্ন।
৪। নিম্ন রেজিস্টিভিটি।
৫। অধিক নমনীয়তা।
৬। ঝালাই উপযুক্ততা।
৭। মরিচা প্রতিরোধক ক্ষমতা।
৮। টানসহন ক্ষমতা, ইত্যাদি।
পরিবাহী পদার্থের তালিকা:
১। রূপা (Silver)
২। সোনা (Gold)
৩। টাংস্টেন (Tunstan)
৪। পিতল (Brass)
৫। লোহা (Iron)
৬। পারদ (Mercury)
৭। সীসা (Lead)
৮। তামা (Copper)
৯। অ্যালুমিনিয়াম (Alluminium)
১০। দস্তা (Zinc)
১১। নিকেল (Nickel)
১২। প্লাটিনাম (Platinum)
১৩। নাইক্রোম (Nicrom) ইত্যাদি।
পরিবাহী পদার্থের ব্যবহার:
বিভিন্ন ধরনের পরিবাহী পদার্থ বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়। যেমন-
তামা বৈদ্যুতিক মোটর, ট্রান্সফরমার, হাউজ ওয়্যারিং, ওভারহেড লাইন ইত্যাদিতে।
অ্যালুমিনিয়াম ওভার হেড লাইনে,
রূপা বিভিন্ন ধরনের কন্টাকট পয়েন্টে, সুপার এনামেল তার ফ্যান, মোটর ইত্যাদিতে।
ওয়াইন্ডিংয়ের কাজে, লোহা ও স্টীল ওভারহেড লাইনে গার্ড ওয়্যার ও স্টে ওয়্যার হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
পরিবাহির Forbidden Engersy gap = 0 ভ্যালেন্স ব্যান্ড এবং কন্ডাকশন ব্যান্ড ওভার ল্যাপিং অবস্থায় থাকে।
ইনসুলেটর (অপরিবাহী)
অপরিবাহী পদার্থের সংজ্ঞা:
যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহ একেবারেই হতে পারে না, অর্থাৎ প্রবাহের সময় প্রচন্ড বাধার সম্মুখীন হয়, সেগুলোকে অপরিবাহী বা অন্তরক বলে। যেমন- রাবার, কাঁচ, এবোনাইট, কাগজ, চীনামাটি ইত্যাদি।
অপরিবাহী পদার্থের বৈশিষ্ট্য:
১। উচ্চ রেজিস্টিভিটি।
২। উচ্চ ডাই - ইলেকট্রিক স্ট্রেংথ।
৩। উন্নতমানের থার্মাল কন্ডাকটিভিটি।
৪। নিম্নমানের ডাই - ইলেকট্রিক হিস্টেরেসিস।
৫। থার্মাল স্ট্যাবিলিটি বেশি।
৬। কন্ডাকশন ব্যান্ড ও ভ্যালেন্স ব্যান্ডের মধ্যে দূরত্ব সবচেয়ে বেশি।
৭। মরিচা প্রতিরোধক ক্ষমতা, ইত্যাদি।
অপরিবাহী পদার্থের তালিকা:
১। ব্যাকেলাইট (Bakelite)
২। অ্যাম্বার (Amber).
৩। গন্ধক (Sulphar).
৪। এবোনাইট (Ebonite).
৫। শুস্ক কাঠ (Dry wood).
৬। প্লাস্টিক (Plastic).
৭। কাঁচ (Glass).
৮। অভ্র বা মাইকা (Mica).
৯। রাবার (Rubber).
১০। চীনামাটি (Porcelain).
১১। বাতাস (Air).
১২। অ্যাসবেস্টস (Asbests).
অপরিবাহী পদার্থের ব্যবহার:
বিভিন্ন ধরনের অপরিবাহী পদার্থ বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়। যেমন-
ব্যাকেলাইট সুইচ, সার্কিট ব্রেকার ইত্যাদির কভারে, এবোনাইট সুইচ বোর্ডে, চীনামাটি ফিউজ, কাট - আউট ইত্যাদিতে, মাইকা বৈদ্যুতিক ইস্ত্রিতে ইনসুলেশন হিসেবে, অ্যাসবেস্টস বৈদ্যুতিক চুল্লীতে ব্যবহার করা হয়।
সেমিকভাকটর (অর্ধপরিবাহী)
অর্ধপরিবাহী পদার্থের সংজ্ঞা:
যে সকল পদার্থ পরিবাহী ও অপরিবাহী এ দু'ধরনের পদার্থের মাঝামাঝি গুণ সম্পন্ন সে সকল পদার্থকে অর্ধ - পরিবাহী বা সেমিকন্ডাক্টর বলে। যেমন— জার্মেনিয়াম, সিলিকন, কার্বন, সিলিকন কার্বাইড, ভিজা কাঠ, ইত্যাদি।
সেমিকন্ডাকটরের বৈশিষ্ট্য:
১। এদের পরিবাহিতা প্রায় কন্ডাকটরের মত।
২। রেজিস্টিভিটি পরিবাহী ও অপরিবাহী পদার্থের মাঝামাঝি।
৩। এদের তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে রেজিস্ট্যান্স হ্রাস পায়।
৪। এদের সাথে ভেজাল পদার্থ মিশ্রিত করে পরিবাহিতা বৃদ্ধি করা যায়।
৫। পরম শূন্য তাপমাত্রায় এরা ইনসুলেটরের ন্যায় আচরণ করে।
৬। এনার্জি গ্যাপ কম।
সেমিকন্ডাকটরের ব্যবহার:
প্রায় সব ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস তৈরিতেই সেমিকন্ডাকটর ব্যবহৃত হয়। যেমন- ডায়োড, ট্রানজিস্টর, ডায়াক, ট্রায়াক, থাইরিস্টর, বিভিন্ন ধরনের আই.সি ইত্যাদি তৈরিতে সেমি - কন্ডাকটর ব্যবহৃত হয়।
আজকের মতো এই পর্যন্তই, আশাকরি আপনাদের ভাল লেগেছে, ভালো লাগলে আপনার মতামত অবশ্যই জানাবেন। পরবর্তী টিউন পর্যন্ত ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ!
আমি মোঃ মোজাহেদুল ইসলাম মিয়া। মাস্টার ইলেকট্রিশিয়ান, হোভার ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড, চট্টগ্রাম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 13 টি টিউন ও 6 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 5 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
আমি স্পষ্টভাবে নিখুঁত নই, তবে সীমিত সংস্করন।