আসসালামুআলাইকুম, সবাইকে আগাম Happy New Year 2012 এর শুভেচ্ছা। একটি কথা বলি আমরা যারা জব করি তাদের টিউন লেখার মত সময় হয়ে উঠে না। তাই একটি টিউন করার পর পরবর্তী টিউন করতে সময় লেগে যায় অনেক তাই আপনাদের কাছে আন্তরিক ভাবে ক্ষমা চেয়ে চাইছি। যাই হোক এবার শুরু করি---
আজ তুলে ধরব “মজার হবি ইলেক্ট্রনিক্স” এর ২য় পর্ব যার টাইটেল হবে “রেজিস্টরের কালার কোড ”। এতে আমরা রেজিস্টরের কালার কোডের মাধ্যমে কিভাবে রেজিস্টরের মান বের করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করব।
এখানে একটি 1k (1000 Ω) রেজিস্টর আছে। চিত্রে লক্ষ করুন রেজিস্টরে মোট ৪টি ব্যান্ড দেখানো হয়েছে (প্রতিটি কালারকে এক একটি ব্যান্ড বলা হয়)।
এখন খেয়াল করুন উপরে কালার কোডের চার্ট দেয়া আছে। তাতে ১ম ও ২য় ব্যান্ড কে পাশাপাশি রেখে ৩য় ব্যান্ড (এটা ৪ ব্যান্ড এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য) অথবা ৪ নম্বর ব্যান্ড (এটা ৫ ব্যান্ড এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য) এর সাথে গুন করতে হবে অর্থাৎ চার্টে Multiplier খেয়াল করুন ১ম হতে ২য় অথবা ৩য় ব্যান্ড পর্যন্ত পরিষ্কার ভাবেই বুঝতে পারছেন কারন প্রতিটি ব্যান্ডের পাশেই কালার-এর জন্য নির্দিষ্ট মান দেয়া রয়েছে। Multiplier ব্যান্ডটি যা হবে তা দিয়ে গুন করে নিতে হবে।
অর্থাৎ উদাহরণ সরূপ চিত্রে চার্টের উপরের 4 band রেজিস্টর খেয়াল করুন এখানে ৪টি ব্যান্ড বা কালার দেয়া আছে । তাতে ১মে আছে Green = 5, ২য় তে আছে Blue = 6 এবং Multiplier আছে Yellow = 10k/10000 Ω অতএব রেজিস্টর এর মান দাড়ায় 560kΩ ।
আবার চিত্রে চার্টের নিচের 5 band রেজিস্টর খেয়াল করুন এখানে ৫টি ব্যান্ড বা কালার দেয়া আছে । তাতে ১মে আছে Red = 2, ২য় তে আছে Orange = 3 , ৩য় তে আছে Violet = 7 এবং Multiplier আছে Black = 1 Ω অতএব রেজিস্টর এর মান দাড়ায় 237Ω । সুতরাং ভয় পাওয়ার কোন কারণ নাই এখন যদি 5/4 Band যাই থাকুক না কেন কালার কোড কোন ব্যাপার না।
এখন লক্ষ করুন ৪(চার) [এটা ৪ ব্যান্ড এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য] অথবা ৫(পাচ) [এটা ৫ ব্যান্ড এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য] নম্বর ব্যান্ডটি ব্যবহার করা হয় টলারেন্স নির্ণয়ের জন্য। আপনাদের এবার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে টলারেন্স কি এটা খায় না মাথায় দেয়। তাহলে এবার আমরা জানি টলারেন্স কি?
রেজিস্টর প্রস্তুতকারক যখন রেজিস্টর তৈরী করে থাকে,তখন তারা রেজিস্টরের সঠিক ভ্যালু বজায় রাখতে পারে না। এগুলোর মান সবসময় কিছু কম বেশি হয়ে থাকে। তাই একে অনেক সময় +/- ভ্যালুও বলা হয়। ভ্যালুর এই কম বেশি হওয়ায়ই টলারেন্স। কোন সার্কিট ডিজাইন করার সময় টলারেন্সের ব্যাপারটা মাথায় রেখে সার্কিট ডিজাইন করা হয়। আপনি রেজিস্টর এর যত মান পাবেন তার সাথে টলারেন্স যা থাকে সেটা 5% or 10% থাকুক তা +/- করে নিয়ে মান ধরবেন।
রেজিস্টর কালার কোড দেখে যাদের রেজিস্টরের মান বের করতে অসুবিধা হয় তারা রেজিস্টর ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারেন। এটা দেখতে নিচের চিত্রটা দেখুন-
এটি ব্যবহার করা খুব সহজ Windows 95/98/2000/XP/2007/2008 উভয় অপারেটিং সিস্টেমে এটি কাজ করে। ১মে লক্ষ করুন নিচে মোট ৪টি ড্রপ ডাউন মেনু রয়েছে, বা দিক থেকে ১মটি রেজিস্টরের ১ম কালার ব্যান্ড, এরপর ২য় তারপর ৩য় এবং সর্বশেষ কালার ব্যান্ডটি হলো রেজিস্টরের টলারেন্স। রেজিস্টরের ৪ নম্বর কালার ব্যান্ডটি সাধারণত ৩টি রং এর হয়ে থাকে (Gold, Silver, Brown) এবং মেনু থেকে কালার পরিবর্তন করা হলে এর উপরের মেনুতে যে মান থাকে তার পরিবর্তন হবে। উপরে, মাঝখানে যে R Unit রয়েছে, এটি রেজিস্টরের ইউনিট (ohms, kilo ohms, mega ohms)। উপরে সবচেয়ে বামপাশে যে ড্রপ ডাউন মেনু রয়েছে এর কাজ হলো রেজিস্ট্ররের কোন একটি ভ্যালু দেয়া। মনে করুন আপনার 100 ওমসের একটি রেজিস্ট্রর দরকার, কিন্তু আপনি জানেন না এই মানের জন্য রেজিস্ট্ররের কি কি কালার থাকবে। এক্ষেত্রে আপনি ড্রপ ডাউন মেনু থেকে 100 Select করে Convert button কিল্ক করুন, দেখবেন নিচের ড্রপ ডাউন মেনু গুলোতে পর্যায়ক্রমে তিনটি কালার এর নাম সহ রং দেখাচ্ছে। E12/E24 হচ্ছে রেজিস্ট্রর সিরিজ, বেশীরভাগ ইলেক্ট্রনিক্স সার্কিটে এই সিরিজের রেজিস্ট্রর ব্যবহার করা হয়ে থাকে, সুতরাং এটা যেরকম আছে সেভাবেই থাকবে। রেজিস্ট্রর কালার বের করার জন্য এখন আর কোন ডিজিটাল অথবা এনালগ মাল্টিমিটার কিংবা কালার কোড মুখস্থ করারও দরকার নেই। শুধু মাত্র রেজিস্ট্রর ক্যালকুলেটর সফটওয়্যার টি ডাউনলোড করে নিন যার ফাইল সাইজ মাত্র 209KB । আর একটি মজার ব্যাপার হলো এটি পোর্টেবল সফট ফলে ইন্সটল করার ঝামেলা মুক্ত। নীচে এর মিডিয়াফায়ার ডাউনলোড লিংক টি দিয়ে দিলাম।
(চলবে......)
পরবর্তী টিউন হবে ক্যাপাসিটর নিয়ে ।
টিউনে কোন ভুল হলে জানাবেন এবং ক্ষমার চোখে দেখবেন।
বিঃদ্রঃ এই টিউনটি আমার লিখিত ইলেক্ট্রনিক্সে হাতে খড়ি (শিগ্রি প্রকাশ হবে) নামক বই হতে সংকলিত।
কোন কিছু বুঝতে অসুবিধা হলে তা কমেন্টস অথবা বিডি-ইলেক্ট্রনিক্স গ্রুপ এ জানাবেন।
আমার জন্য দোয়া করবেন যাতে আপনাদের ভাল কিছু উপহার দিতে পারি।
ধন্যবাদ ।আল্লাহ হাফেজ।
আমি মিথুন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 10 টি টিউন ও 124 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
সুন্দর একটি টিউন 🙂 দেখে ভালো লাগলো