জীবনে সফল হতে চায় না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমাদের সবারই একটা আকাঙ্ক্ষা থাকে জীবনে সফল হওয়ার। একটা অবাক করা কথা হল আপনি যদি জীবনের সফল হতে চান তাহলে আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাতে হবে। জীবনে উন্নতি করতে হলে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের কোনো বিকল্প নেই। এই অভ্যাস আপনাকে ধীরে ধীরে ধনবান ব্যক্তিতে রূপান্তরিত করবে। নিয়মিত বেশি পরিমাণ ঘুমালে আপনার শরীরের চর্বি কমে যাবে যার ফলে আপনার মস্তিষ্ক আরো সক্রিয় হয়ে উঠবে। যে কারণে আর আপনি সুখী হয়ে উঠবেন। আজকের আর্টিকেলটিতে আমরা আলোচনা করব কিভাবে জীবনে উন্নতি করা যায় অথবা জীবনে সফল হওয়ার কিছু টিপস ও ট্রিক্স নিয়ে।
বন্ধুরা আমরা আপনাদের কাছ থেকে জীবন সম্পর্কিত নানা রকম প্রশ্ন পেয়ে থাকি। যেমন: সফল হওয়ার উপায়, জীবনে সফল হওয়ার উপায়, জীবনে উন্নতি করার উপায়, কিভাবে জীবনে সফল হবো, জীবনে সফল হওয়ার টিপস ও ট্রিকস, জীবনে সফল হওয়ার গোপন কৌশল, কিভাবে সফলতা পাব ইত্যাদি।
আজ আমরা জীবনে সফল হওয়ার কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।
সফল হওয়ার উপায়
১. বুদ্ধি বাড়াতে ঘুম
একটি গবেষণায় পাওয়া গেছে প্রয়োজনের তুলনায় কম ঘুমালে মস্তিস্কের ক্ষমতা কমে। ফলে আমরা কোন কাজে যথেষ্ট পরিমাণ মনোযোগ দিতে পারিনা। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের অভাবে আমাদের মস্তিষ্ক সঠিকভাবে তথ্য প্রক্রিয়াকরণ করতে পারে না ফলে আমাদের মস্তিষ্কের সমস্যা হয়ে থাকে। সুতরাং আমাদের মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখতে হলে যথেষ্ট পরিমান ঘুমের কোনো বিকল্প নেই। এছাড়া আরও ঘুমের অনেক উপকারিতা রয়েছে। সুতরাং নিয়মিত যথেষ্ট পরিমান গভীর ঘুমের অভ্যাস গড়ে তুলুন।
২. ঘুমের সাথে টাকার সম্পর্ক
গরিব মানুষগুলো ভালভাবে ঘুমাতে পারে না। একটা গবেষণায় পাওয়া গেছে যে অধিকাংশ দরিদ্র মানুষের ঘুম নিয়ে সমস্যা রয়েছে। আয় বৃদ্ধির সাথে সাথে ঘুমের একটা নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। আমাদের যদি কোন বিষয়ে দুশ্চিন্তা অথবা বিষন্ন থাকে তাহলে আমাদের ঘুমের সমস্যা হয়। আপনার যদি এমনিতেই মেজাজ খারাপ হয় তাহলে বুঝে নিবেন আপনার ঘুমের ঘাটতি রয়েছে।
অতিরিক্ত বিষন্নতার কারণ এই কর্ম ক্ষেত্রে কার্যদক্ষতা কমে যায়। যেটার খুব বড় নেতিবাচক প্রভাব জীবনে পড়ে। এজন্য আপনাকে কিছু টেস্ট দিবে যেগুলো অনুসরণ করলে আপনি গভীর নিদ্রায় যেতে পারবেন। ঘুমানোর পূর্বে অ্যালকোহল জাতীয় দ্রব্য পরিহার করুন। ঘুমানোর পূর্বে অবশ্যই ঘর অন্ধকার করে নিবে।
কারণ আলো আমাদের অনেক সময় ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। ঘুমানোর এক ঘণ্টা পূর্বে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। এছাড়া ঘুমানোর পূর্বে আপনি চাইলে গ্রিন টি অথবা গরম গরম দুধ খেয়ে নিতে পারেন। এবং সর্বশেষ আপনাকে যে কাজটি করতে হবে সেটা হল কমান্ডো গ্রুপে উপরেও পাওয়াতে কোন আজেবাজে অথবা দুশ্চিন্তা করার চেষ্টা করবেন না।
৩. ঘুম থেকে ভোরে ওঠা
প্রতিদিন ঘুম থেকে দেরি করে না ওঠে অবশ্যই চেষ্টা করবেন এক ঘন্টা আগে উঠার। এতে করে আপনি সারাদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় পাবেন । অনেকে ঘুম থেকে দেরি করে উঠে বলে থাকে যে সারাদিন পর্যাপ্ত সময় পায় না। আপনি যদি প্রতিদিন এক ঘণ্টা আগে ঘুম থেকে ওঠেন তাহলে আপনার কাজগুলো সম্পাদন করার জন্য অনেক বেশি সময় পাবেন। প্রথমে খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠা আপনার জন্য কষ্টকর হয়ে পড়েন ধীরে ধীরে এটা আপনার অভ্যাসে পরিণত হবে তখন সমস্যা হবে না।
৪. ব্যর্থ হয়ে পুনরায় চেষ্টা না করা
অনেকে কোন একটা কাজে দু একবার চেষ্টা করে সফল হতে না পেরে নিজেকে গুটিয়ে ফেলে। জীবনে সফল হওয়ার পথে সবচেয়ে বড় বাধা হলো এটা। এ কাজটি বার বার করলে আপনি কখনো জীবনে সফল হতে পারবেন না। সুতরাং এরপর থেকে কোন একটা কাজে দু'একবার ব্যর্থ হলে সেটা বার বার চেষ্টা করে সফল হওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন। কারণ আমরা সবাই জানি যে ব্যর্থতায় হলো সফলতার সোপান। তাই কোন কাজে প্রথমবার ব্যর্থ হলে হতাশায় নিমজ্জিত না হয় ভুলভ্রান্তি সমাধান করে পুনরায় কাজটি চালিয়ে যাবেন।
৫. সঠিক সময়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া
আমরা অনেকেই এমন আসে যে যেকোন সমস্যার সমাধানে সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে। এটা প্রায় সাধারণ সমস্যা। সব মানুষই এই সমস্যায় কমবেশি আক্রান্ত। আপনি যদি কোনো সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেন অথবা সিদ্ধান্তহীনতায় হবেন তাহলে আপনি বড় ধরনের সুযোগ হারাতে পারেন। তাই এখন থেকে যেকোনো বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব করবেন না। জীবনে সফল হওয়ার অন্যতম সেরা একটা উপায় হল সঠিক সময়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া।
৬. কাজকে জীবনের অংশ করে নেওয়া
আপনি যদি কাজকে নিজের জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে না নেন তাহলে অনেক সময় কাজ করার ক্ষেত্রে কাজের প্রতি আগ্রহ হ্রাস পাবে ও বিরক্তি সৃষ্টি হয়। এ কাজটি করলে আপনি আপনার জীবনে সফল হওয়ার ক্ষেত্রে অনেক বেশি এগিয়ে থাকবেন। সুতরাং সবসময় চেষ্টা করবেন কোন কাজকে নিজের জীবনের একটা অংশ বানিয়ে নেওয়া। তাহলে এটা আপনার সফলতার সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।
৭. সঠিক সময়ে ঝুঁকি গ্রহণ করা
আপনি যদি সঠিক সময়ে ঝুঁকি গ্রহণ করার সাহস না করেন তাহলে সফলতা পেতে বেশ অপেক্ষা করতে হবে আপনাকে। সঠিক সময়ে ঝুঁকি গ্রহণ করার ক্ষমতা না থাকলে আপনাকে অনেক সময় অনেক সুযোগ হারাতে হবে। এখন আপনি যেকোন পরিস্থিতিতে সঠিক সময়ে ঝুঁকি নেওয়ার চেষ্টা করবেন। ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষেত্রে আবেগ দিয়ে চিন্তা না করে যুক্তি দিয়ে চিন্তা করে ঝুঁকি নেওয়ার চেষ্টা করবেন।
৮. আত্মবিশ্বাসী হওয়া
জীবনে সফল হওয়ার সবচেয়ে বড় মন্ত্র হলো আত্মবিশ্বাস। আপনি যদি কোনো কাজের প্রতি আত্মবিশ্বাসি হন তবে সেই কাজের অর্ধেকটা মনে করেন সফল করে ফেলেছেন। এছাড়া আত্মবিশ্বাসী লোকজন যেকোনো বিষয়ে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার ক্ষমতা রাখে। সুতরাং আপনাকেও সফল হতে হলে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী হতে হবে।
৯. কথা কম বলা
জীবনে সফল হতে হলে আপনাকে কথার চেয়ে কাজ বেশি করতে হবে। আমরা ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি যে কথা কম কাজ বেশি তবে এটা চিরন্তন সত্য একটা কথা। জীবনে সফল হতে হলে অবশ্যই এই কথা আপনাকে অনুসরণ করতে হবে। সব সময় চুপ থেকে নিজের সাথে কথা বলার চেষ্টা করবেন তাহলে আপনার কাজের প্রতি অনেক বেশি একাগ্রতা বৃদ্ধি পাবে যেটা আপনাকে সফল হতে জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
১০. নিজেকে মোটিভেট করা
যেকোনো কাজে যদি আপনি খুব সহজেই সফলতা অর্জন করতে চান এবং কাজের প্রতি মনোযোগ বহুগুণে বৃদ্ধি করতে চান তবে আপনাকে অবশ্যই কাজের প্রতি মোটিভেট হতে হবে। আপনি বিখ্যাত বিখ্যাত কবি-সাহিত্যিকদের মোটিভেশনাল বই পড়ে আপনি নিজেকে মোটিভেট করতে পারেন। ইসলাম বর্তমানে গুগল ও ইউটিউবে প্রচুর পরিমাণ মোটিভেশনাল ভিডিও আর্টিকেল খুঁজে পাবেন। সেগুলো দেখে নিজেকে মোটিভেট করার চেষ্টা করবেন।
১১. সক্রিয় থাকা
ঘুম থেকে উঠে কাজ তাড়াতাড়ি শুরু করা খুবই কষ্টকর। কাজ না করার বিভিন্ন রকম অজুহাত আপনার মাথায় আসবে। তখন সেই অজুহাত গুলো আপনার করলে চলবে না। আপনি তাৎক্ষণিক ঘুম থেকে উঠে হালকা ব্যায়াম করে কাজের প্রতি সক্রিয় হতে পারেন। এতে করে আপনার জীবনে সফল হতে কম সময় লাগবে। কখনোই অলসতাকে প্রশ্রয় দিবেন না। এটাকে প্রশ্রয় দিলে আপনার জীবনকে সে তিলে তিলে শেষ করে দিবে।
১২. চেকলিস্ট তৈরি করা
আপনি ঘুম থেকে উঠে সারা দিন কোন কোন কাজ করবেন সেই কাজগুলোর একটা চেক লিস্ট তৈরি করে নিতে পারেন। চেকলিস্ট তৈরি করার পূর্বে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোকে প্রাধান্য দেওয়ার চেষ্টা করবেন । বুদ্ধিমান মানুষ এরা সবসময় চেকলিস্ট ভিতরে পরিকল্পনার মাধ্যমে তাদের কাজগুলো শেষ করে থাকে। এছাড়া আপনাকে আপনার শরীরের প্রতি যত্নবান হতে হবে। নিজের শরীরকে সুস্থ রাখতে হলে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে হবে।
সারকথা
তো এই ছিল বন্ধুরা, জীবনে সফল হওয়ার কিছু টিপস। আশাকরি আপনি আর্টিকেলটা মনোযোগ দিয়ে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েছেন। এই টিপসগুলো আপনার জীবনে সফলতার সহায়ক হিসেবে কাজ করবে বলে আমি মনে করি। আপনি যদি জীবনে সফল হতে চান তাহলে উপরের টিপসগুলো নিজের জীবনে প্রয়োগ করতে পারেন। আশাকরি আপনার ক্ষতি হবে না। কিঞ্চিৎ হলে আপনার উপকার হবে।
পড়াশোনাসহ যেকোনো বিষয়ে টিপস পেতে ভিজিট করুন - Bongoupdate.com
আমি আবরার শাহরিয়ার। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 3 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 5 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।