হ্যাল্লো টেকটিউন্স,
কি অবস্থা ? মার্কেটিং এমন একটা টপিক যেটা ছোট বড় আর সব পেশার মানুষের ই দরকার হয়। তো টাইটেল যার চোখে পড়তেছে টিউন টা তার জন্য ও গুরুত্বপুর্ন। আসেন শুরু করা যাক।
মার্কেটিং কি ?
আমি একগাদা লাইন লিখতে পারবো, বিভিন্ন ব্যাক্তি এ নিয়ে কি বলছেন, কেমনে কি সবি, বাট আমি চেষ্টা করি আপনাকে বুঝিয়ে বলতে।
ধরা যাক আপনার কোন পন্য বা সেবা আপনি গ্রাহক ,ভোক্তা বা কাস্টোমারের কাছে পৌছাতে চান। সেজন্য আপনি যা যা করবেন প্রায় সব কিছুকেই মার্কেটিং বলা যায়। আপনি পন্যের বিজ্ঞাপন দিতে পারেন, মাইকিং করতে পারেন, পোস্টার লাগিয়ে শহর ভরিয়ে ফেলতে পারেন। এগুলো সবি মার্কেটিং। অল্প কথায় আমি বোধহয় বুঝিয়ে ফেলতে পারলাম ?
এবার চলেন মার্কেটিং কেনো করতে হয় সে বিষয়েঃ
আপনার মাথায় হুট করে আইডিয়া আসলো আপনি সাবান বানাবেন। সেরা কাচামাল (চন্দ্রবিন্দু হবে) , সেরা যন্ত্রপাতি সেরা কর্মী আর প্রচুর টাকা দিয়ে আপনি সাবান বানাইলেন। প্যাকেট টা আরো সুন্দর, নামো সেইরকম, কমলা সুন্দরী সোপ। 😀
এবার কি করা উচিত ? আপনার সামনে অপশন বেশ কয়টা আছে,
চার টাই থাক, সিরিয়াস টপিকে লিখতে বসে পাঠক কে হাসানো আমার বাজে অভ্যাস হয়ে গেছে। তো আপনি কোন টা চাইবেন ? মানে কোন টা আপনার সবথেকে বেশী দরকার ?
হুম আমিও জানি, আপনি চাইবেন আপনার সাবান মানুষ ব্যাবহার করুক। এখন আমার প্রশ্ন, আপনার সাবানের কারখানা নাইজেরিয়াতে, বাসা সৌদি আরবে, আমি থাকি এইখানে, আমি আপনার সাবান রে চিনবো কিভাবে, এটার নাম ই বা শুনবো কিভাবে ?
হ্যা এখানেই আসতেছে মার্কেটিং এর ব্যাপার টা। আপনাকে কোনভাবে আমার কাছে আপনার পন্য টা, এটলিস্ট সেটার নাম পৌছে দিতে হবে।তারপরেই না আমি দোকানে যায়া বলবো “আঙ্কেল কমলা সুন্দরী সোপ দেন” ।
আর কোন উপায় কি আছে ? হ্যা আছে একটা রাস্তা। সেটা হলো কোয়ালিটি মার্কেটিং, সেটাও একরকম মার্কেটিং ই, কিন্তু এক্ষেত্রে আপনার এক্সট্রা টাকা খরচ করতে হবে না, এমন পন্য বানান যেটা খুবি ইউনিক। তারপর কজন কে ব্যাবহার করতে দেন , তারা ব্যাবহার করে খুশী হলে আর কজন কে বলবে। এভাবে এই এক হাজার বছর পর আপনার পন্য সবাই চিনবে । (কাদবেন না)
এবার আসেন আমাদের মুল টপিক অনলাইন মার্কেটিং এ ঢু মারা যাক।
অনলাইন মার্কেটিং কি ?
আপনার একটা ওয়েবসাইট বানাইছেন, যেখানে যেয়ে টাকা দিয়ে মেম্বারশীপ কিনে অনলাইনে আড্ডা মারা যায়। ( আবার কাদেন ! )। কথার কথা বলছি, আচ্ছা বাবা ধরলাম একটা সাইট যেখানে জুতা মুজা কিনতে পাওয়া যায়। সেটাকে একজন ইন্টারনেট ব্যাবহার কারীর কাছে পৌছাতে তো হবে আপনার, তাই না ? আপনার সাইটের ভিজিটর যদি সুধু আপনি একাই হন তাহলে লাভ কি হইলো ! হইলো হয়তো,আপনি একটু পর পর জিরো ফলোয়ার ওয়ালা টুইটার থেকে টুইট করতে পারেন “কি বানাইলাম রে” কিন্তু আধুনিক অর্থনীতি সেটারে লাভ হিসেবে দেখবে না। আপনি তখন সফল যখন কাঙ্খিত পরিমান ভিজিটর পাচ্ছেন, আপনার পন্য বিক্রি হচ্ছে, আর তা থেকে আপনি লাভবান হচ্ছেন। তার আগ পর্যন্ত আপনি ব্যার্থ।
থামেন , রাগ হবেন না। আপনাকে ব্যার্থ বলার পেছনে কারন আছে । টিভি দেখেন ?
ইন্ডীয়ার টিভিসি স্কাই সপ এর নাম শুনে , দেখে থাকবেন। এদের একটা প্রোডাক্ট আমার চোখে পড়লো, খোজ খবর নিলাম, এন্ড ব্যাপার টা ভুয়া। পন্য টার নাম মনে নাই, এটার কাজ আপনার শরীরে মাসল বানানো। মানে শুকনা পাতলা আপনাকে নায়ক শুভ বানানো আরকি। এই পন্য যে আপনার জন্য ই তা বুঝানোর জন্য বেশ কজন সেরকম মডেল টানা আধাঘন্টা ধরে এদের টিভি বিজ্ঞাপনে এসে নানা রকম প্রলোভন, নানা বয়ান দিয়েই যাচ্ছে, আপনি বিশ্বাস করবেন না, আপনারে করায় ই ছারবে, বুঝেন ঠ্যালা !
হুম আমি খোজ নিতে গেলাম, আমি জানলাম আসল ঘটনা, কিন্তু আমার এই খোজ নেবার সময় টুকুতেই কিন্তু এরা হাজার হাজার কপি ঐ মাসল বানানোর টনিক বিক্রি করে ফেলছে !
বিশ্বাস হলো না আমার কথা ? করা উচিত, লাভ না হইলে একটা কম্পানী লাখ লাখ টাকা খরচ করে বিজ্ঞাপন দেয় টিভিতে ?
তো এটাই হলো মার্কেটিং, আর মার্কেটিং এর ক্ষমতা, মার্কেটিং করে এক কেজী আটার সাথে আধা কেজি চিনি মিষিয়ে সেটা কৌটায় ভরে ৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা যায়। ওরা তা পারলে , আপনি আপনার ভালো পন্য বা ওয়েবসাইট ভোক্তা বা ভিজিটরের কাছে পৌছাতে না পারা টা কি আপনার ব্যার্থতা না ?
অনলাইন মার্কেটিং কিভাবে করা যায় ?
১। বিজ্ঞাপন দিয়েঃ ব্যানার এড, লিঙ্ক এড এগুলো দিয়েই একটা নতুন সাইট মানুষের কাছে পৌছায়। ধরা যাক আপনি আজ সাইট বানাইলেন, কেউ না চেনা টাই স্বাভাবিক । তো একটা পপুলার সাঈটে সেটার এড দিয়া দেখেন পরদিন কেউ চেনে কিনা আপনারে।
২। মুখে মুখেঃ মুখে মুখে বললে কি সেটারে অনলাইন ক্যাটাগরীতে ফেলানো যাবে কিনা সন্দেহ আছে আমার। তবে এমন একটা সময়ের কথা চিন্তা করেন যখন আপনার সহ হাতে গোনা কয়েক টা সাইট আছে অনলাইনে। তখন কিন্তু এই মানুষের মুখে মুখে, একজন থেকে ৫ জন শূনেই একটা সাইট বড় হতো। এমন কি ইকমার্স জায়ান্ট “এ্যামাজন” এর শুরুটাও কিন্তু ঠিক এভাবেই।
৩। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনঃ বড় সাইট গুলো ( সোসাল ইঞ্জিন গুলো বাদ দিয়ে) এমনকি আমার সাইটে আমিও দিনের শতকরা এই ধরুন ৭০ ভাগ ভিজিটর পাই সার্চ ইঞ্জিন থেকে। আর একটা সাইটের কোয়ালিটির পরে এটা সবথেকে বড় ব্যাপার। এ নিয়ে অনেকেই লেখেন টেকটিউন্সেই, খুজে দেখুন অনেক লেখা পাবেন। ( যদিও আমার ভয়, কজন যে পুরোটা জেনে লেখেন, কজন তো লিঙ্ক সাবমিট করার বুদ্ধি দিয়েই খালাস, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন খুবি সেন্সিটিভ ব্যাপার, না বুঝলে সাবধান । একটা ভুল ব্যাকলিঙ্ক ও পিছিয়ে দিতে পারেন আপনাকে অনেকখানি)
আরো বেশ কটা দিক আছে, পরে লিখবোক্ষন। এখন দুলাইন নেগেটিভ মার্কেটিং নিয়া লিখি।
নেগেটিভ মার্কেটিং কি ?
এ নিয়ে অনেকের ই কোন ধারনা নাই।যে ধরনের মার্কেটিং আপনার লাভের বদলে ক্ষতি করতেছে সেটা একরকম নেগেটিভ মার্কেটিং। অনলাইনে এটা মারাত্বক সেন্সিটিভ ব্যাপার।
একটা উদাহারনঃ
মন খারাপ করবেন না, ভালোর জন্য ই বলতেছি। ধরেন আমার এই টিউনে আপনি আপনার সাইটের মার্কেটিং করলেন। মানে কোন কমেন্টের ফাকে লিঙ্ক দিয়া অন্যদের বললেন ভিজিট করতে। এটা একরকম নেগেটিভ মার্কেটিং। আমি কিন্তু মনে করবো এরকম “ কি সাইট বানাইছে, কেউ যায় না,আমার টিউনে আসছে ভিজিটর খুজতে “
বুঝেন নি ? এরপর আপনার সাইট যতটাই ভালো হোক না, যেহেতু আমি ভেবে নিছি ওটা আজাইরা কিছু, সেকেন্ড টাইম আমি আপনার সাইটে যাবো এটা ভাবাই ভুল হবে। আপনি লাইফ টাইমের জন্য একজন ভিজিটর হারাইলেন সুধু মাত্র একবার পেইজ ভিউ পাবার জন্য।
এ নিয়ে আরেকদিন লিখবো, আপাতত সময় শেষ, সাপোর্টে বসতে হবে। ভালো থাকবেন ভাইলোগস।
আমি ফেইসবুক , ফাজলামি ডট কম, টুইটার ।
আমি শিমুল শাহরিয়ার। Founder, WebSea Internet Solutions, Dhaka। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 90 টি টিউন ও 497 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
ব্র্যান্ড কনসাল্টেন্ট, ফুলস্ট্যাক ডেভেলপার/ডিজাইনার। আমাকে পাওয়া যাবে @ https://ShimulShahriar.com
ভাল্লাগছে ভাউ। বাকি টিউনগুলা ও জলদি লেইখা পালান…