জেনিটিক ইন্জিনিয়ারিং প্রয়োগ করে এক গাছে ৪০ ধরনের ফল।

Amazing-Tree-of-40-Fruit-pic3
আম গাছে আম ধরবে, জাম গাছে জাম ধরবে এমনটাই নিয়ম। কিন্তু একই গাছে যদি ৪০ ধরনের ফল ধরে সেটা কেমন করে সম্ভব? হ্যা তেমনটাই সম্ভব করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সিরাসিউজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক স্যাম ভ্যান অ্যাকেন। তার উদ্ভাবিত এই গাছটির নাম ৪০ ফলের গাছ বা কাগজী বাদাম, বরই, এপ্রিকট, চেরী, পীচ জাতীয় ফলের সন্ধান পাওয়া যায় এ গাছে। 

যেভাবে গাছটি তৈরি করা হয়:

অদ্ভুত ধরনের এই গাছটি নিয়ে ভ্যান অ্যাকেনকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। নয় নয়টি বছর তাকে অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হয়েছে তাকে। এই গাছটি সৃষ্টি করার জন্য তিনি বিভিন্ন জাতের গাছের বীজ ব্যবহার করেন। ভ্যান অ্যাকেন গাছটি তৈরি করতে গ্রাফটিং পদ্ধতি প্রয়োগ করেন। নারী ও পুরুষের মিলনের মাধ্যমে যেমন নতুন শিশুর জন্ম হয় ঠিক তেমনি এক গাছের সাথে অন্য গাছের মিলন ঘটিয়েছেন তিনি। এ পদ্ধতিতে দুটি গাছের ডালকে এমনভাবে জুড়ে দিয়েছেন যাতে উভয় গাছের শিরা-উপশিরা পরস্পরের মধ্যে প্রবাহিত হয়। ঠিক দুটি রক্তনালিকে মিলিয়ে দেওয়ার মতোই। এই নালি দুটিকে বলা হয় লোয়েম এবং জাইলেম। এই পদ্ধতিতে দুটি গাছ তাদের পানি, চিনি এবং খনিজ পদার্থ বিনিময় করে। গ্রাফটিংয়ের মাধ্যমে দুর্বল গাছ শক্তিশালী গাছের বিভিন্ন উপাদান গ্রহণ করে শক্তিশালী হয়ে ওঠে। যদিও গ্রাফটিংয়ের মাধ্যমে একাধিক গাছ জুড়ে দেওয়া যায়, তবে ৪০টি গাছকে এক করা প্রায় অসম্ভব। এর জন্য বছরের পর বছর সময় দেওয়ার পরও ব্যর্থতা আসতে পারে।

পরবর্তী পরিচর্যা:

গ্রাফটিং পদ্ধতিতে তিনি ৩-৪ বছর গাছটির পরিচর্যা করেছেন। কিছু ডালপালা পরিপুষ্ট হলে ৪-৫টি ডাল কেটে নিয়ে নতুন প্রজাতির আরও গাছের ডাল গ্রাফট করেন। এভাবে ২৫ প্রজাতির ভিন্ন ভিন্ন গাছের অংশ জোড়া লাগিয়ে পরিচর্যা করে গেছেন। বছর দুয়েকের পরিচর্যায় নতুন ডালগুলো একে-অন্যের সাথে খনিজ পদার্থ আদান-প্রদানে সমর্থ হয়। ভিন্ন ভিন্ন জাতের গাছের ডালগুলোর মধ্যে গড়ে ওঠে দারুন সখ্যতা। ভ্যান অ্যাকেন এভাবে ধীরে ধীরে ৪০টি ফলের গাছ জোড়া লাগান।

গাছটির বৈশিষ্ট্য:

সারা বছর জুড়েই এ গাছ দেখতে অন্য যেকোনো গাছের মতই মনে হয়। তবে বসন্তকালে এর ভিন্নরূপ খুঁজে পাওয়া যায়। ফুলের প্রস্ফুটনে গাছটি গোলাপি, লালচে আর সাদা রঙের সংমিশ্রণে এক অপূর্ব রূপ ধারণ করে। আর এর ফল পাওয়া যায় জুলাই থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যে।

গাছটি তৈরির উপকরণের উৎস:

গাছটির কলমের জন্য যেসব গাছ ভ্যান অ্যাকেন ব্যবহার করেন তার মূল উৎস ছিল নিউইয়র্ক স্টেট এগ্রিকালচারাল এক্সপেরিমেন্ট স্টেশনের একটি বাগান। এই বাগানটি নষ্ট করা হবে এমন খবর পেয়ে ভ্যান অ্যাকেন বাগানটির ইজারা বা লীজ নেন। বাগানে প্রায় ২৫০ প্রজাতির গাছ ছিল। তিনি এই গাছগুলির কখন ফুল ফোটে এ তথ্য বের করেন। এর ভিত্তিতে তিনি একটি গাছের মূল গঠনে আরও কয়েকটি গাছের কলম স্থাপন করেন। তার এ গাছের বয়স দুই বছর হলে তিনি গাছের শাখাতে আরও কিছু গাছের কলম স্থাপন করেন। এভাবে করতে করতে তিনি বর্তমানে এ ধরণের ১৬টি গাছ উৎপন্ন করেছেন। তবে একেকটি গাছ উৎপন্ন করতে প্রায় ৫ বছরের মতো সময়ের প্রয়োজন হয়।

Level 0

আমি রেজানুর উল্লাহ্। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 4 টি টিউন ও 6 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

😈 😈

অসাধারণ! ভালো লাগলো

ট্রাস্টেড একটা লিংক না দিলে !

বিশ্বাস হইলো না রে ভাই ।