আসসালামু আলাইকুম । সবাই কেমন আছেন । আশা করি আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো। ভালো থাকাটাই সবসময়রে প্রত্যাশা । আজ আরেকটি সাবধানতা মূলক পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি । আশা করি কিছুটা হলেও কাজে আসবে । সবাই পোস্টটি পড়ার পর চেষ্ঠা করবেন নিজের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র / সার্টিফিকেটগুলো যেন যত্ন করে রাখেন । অসাবধানতা বশত যেন হারিয়ে না ফেলেন । চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করি ।
জীবনে চলার পথে অনেক সমস্যার সম্মুক্ষীন হতে হয় । সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি সমস্যা কিছু হারিয়ে ফেলা। হারিয়ে ফেলা জিনিস যদি গুরুত্বপূর্ণ না হয় তাহলে পুনরায় খুজে পাওয়ার জন্য প্রচেষ্টা থাকে না । কিন্তু হারিয়ে ফেলা জিনিস যদি হয় সার্টিফিকেট । শিক্ষা জীবনের অধ্যয়নের ফল হিসাবে পাওয়া চরম ও পরম স্বার্থকতা স্বরূপ সনদপত্র । সনদপত্র হারিয়ে গেলে কি করবেন চলুন ধারাবিাহিকভাবে জেনে নেই ।
আপনার হারাতে পারে এসএসসি সার্টিফিকেট, হারাতে পারে এইচএসসি সার্টি ফিকেট, হারাতে পারে অনার্স কিংবা মাস্টার্স এর সার্টিফিকেট এছাড়াও হারাতে পারে অন্যান্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও সার্টিফিকেট ।
যেকোন সার্টিফিকেট হারালে তা পাওয়ার জন্য আপনাকে কয়েকটি কাজ করতে হবে । তবে ধাপে ধাপে যদি আপনি কাজগুলো করেন তবে সেটি বুঝতে সুবিধা হবে ।
এখন এক নজরে ধাপ ধাপে জেনে নিন সার্টিফিকেট/রেজিষ্ট্রেশন কার্ড/এডমিট কার্ড হারালে কি করবেন-
প্রথম ধাপ :
উপরোক্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সমূহের যেকোন একটি হারালে আপনাকে সর্বপ্রথম থানায় ১টি জিডি করতে হবে । যেকোন ইস্যু ধানায় ডায়েরীভুক্ত করাকেই জিডি বলা হয় । জেনারেল ডায়েরীকেই সংক্ষিপ্ত রূপে জিডি বলা হয় । এজন্য আপনাকে বাড়তি কোন চার্জ দিতে হবে না । জিডি’র ১ কপি আপনার সাথে রাখবেন এবং অপর কপি আপনার সাথে সংরক্ষিত রাখবেন । প্রয়াজনীয়তার নিরীখে জিডির কয়েকটি মেইনকপি নিজের সংগ্রহে রাখুন । কেননা প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট এর সংখ্যা যদি একাধিক হয়, তবে আপনাকেও একাধিক জিডি’র মেইন কপি সাবমিট করা হতে পারে । সকল প্রতিষ্ঠান ফটোকপি গ্রহণ করেনা । এছাড়া আপনার হারানো সার্টিফিকেট এর রেজিষ্ট্রেশন নং, পাশের সন, রোল নম্বর, হারানোর তারিখ ও স্থান সম্বলিত তথ্য জিডিতে উল্লেখ থাকতে হবে । অন্যান্য ডকুমেন্ট এর ক্ষেত্রেও প্রয়োজনীয় তথ্য সাথে রাখতে হবে । তাই বিষয়টি মনে রাখা জরুরী । আপনার ডকুমেন্টটি যে স্থানে হারিয়েছে সে স্থানের নিকটবর্তী থানায় জিডি করবেন এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার স্বাক্ষর, সীল ও জিডি নাম্বার সম্বলিত ডকুমেন্টটি সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করুন ।
দ্বিতীয় ধাপ :
অতপর পরবর্তী কাজ পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া । পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়ার জন্য আপনাকে আপনার হারানো ডকুমেন্ট এর রেজিষ্ট্রেশন নং, পাশের সন, রোল নম্বর এবং জিডি নাম্বার নিয়ে পত্রিকা অফিসে যেতে হবে । নূন্যতম ২০ শব্দের একটি বিজ্ঞাপন দিতে আপনার খরচ হতে পারে ৩৫০-৫৫০, পত্রিকা ভেদে এ রেট আরো কম বা বেশী হতে পারে । বিজ্ঞাপনে হারানো সার্টিফিকেটি এর রেজিষ্ট্রেশন নং, পাশের সন, রোল নম্বর এবং জিডি নাম্বার উল্লেখ থাকতে হবে ।
তৃতীয় ধাপ :
এখণ আপনার কাজ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্টানের আবেদনপত্র সংগ্রহ করা । ধরুন আপনি এসএসসি সার্টিফিকেট হারিয়েছেন । সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বোর্ড থেকে আপনাকে আবেদন পত্র বা ফরম সংগ্রহ করতে হবে ।
দ্বি নকল রজিষ্ট্রেশন কার্ড তোলার জন্য নিচের লিংক থেকে ফর্মটি ডাউনলোড করে নিন :
উদাহরণ স্বরুপ এখানে চট্টগ্রাম বোর্ড এর ফরম এর লিংক দেয়া হলো ।
দ্বিনকল পরিচ্ছন্ন / রেজিষ্ট্রেশন কার্ড এর জন্য আবেদন
উদাহরণস্বরুপ সনদপত্র তোলার জন্য রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের ১টি ফরমের লিংক দেয়া হলো ।
মাধ্যমিক / উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সাময়িক সনদ এর আবেদনপত্র ।
এছাড়াও আপনার প্রয়োজনীয় ফরম ডাউনলোড করে নিতে পারেন সরকারী এ সাইট থেকে । এখানে প্রায় সকল ফরম দেয়া আছে ।
ডাউনলোড করে নিন সরকারী ফরম এর ওয়েবসাইটটি থেকে ।
চতুর্থ ধাপ :
আবেদন ফরম সংগ্রহ করার পর এখন কাজ তা যথাযথভাবে পূরণ করা । পূরণ করার পর সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিষ্ঠান প্রধানের স্বাক্ষর নিয়ে আসতে হবে । তারপর বোর্ড কিংবা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ফি সোনালী ব্যাংকে বা উল্লেখিত ব্যাংকে জমা দিতে হবে । জমা দেয়ার কপি সংশ্লিষ্ট স্থানে এবং অপর কপি আবেদনের সাথে সংযুক্ত করতে হবে । সাথে হারানো ডকুমেন্টস এর ফটোকপি এবং পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ও থানার জিডির মেইন কপিও থাকতে হবে । নির্ধারিত ফি এর জমা দেয়ার রশিদ সহ সকল কাগজপত্র জমা দিলেই আপনার কাজ শেষ ।
এখন আপনার কাজ শেষ কিছুদিন অপেক্ষা করুন । মাসখানের এর মধ্যে আপনি আপনার কাঙ্খিত ডকুমেন্টস পেয়ে যাবেন । আপনি চাইলে বাড়তি ফি দিয়ে জরুরীভাবেও আপনার ডকুমেন্ট ১-৭ দিনের মধ্যে উঠাতে পারবেন ।
আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোন পরীক্ষার প্রবেশ পত্র হারিয়ে গেলে সেক্ষেত্রেও জিডি করার প্রয়োজন হতে পারে । অন্যথায় ডুপ্লিকেট প্রবেশপত্র পাওয়া যাবেনা । প্রতিষ্ঠান ভেদে পদ্ধতিগত দিক থেকে ভিন্নতা থাকতে পারে । তবে বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই উপরে উল্লেখিত পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে ।
আপনি যদি কারিগরী শিক্ষা বোর্ডের অধীনে কোন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এর সনদ কিংবা প্রয়োজনীয় অন্য কোন ডকুমেন্ট হারিয়ে ফেলেন তবে সেক্ষেত্রে পূর্বের একই নিয়ম ফলো করুন আর নিচের লিংক থেকে ফরমটি ডাউনলোড করে নিন । এই ফরমের মাধ্যমে আপনি সাময়িক সনদ / দ্বিনকল সনদ / মূল সনদ/ নম্বরপত্র / রেজিষ্ট্রেশন কার্ড / এডমিট কার্ড / ট্রান্সক্রিপ্ট ইত্যাদি তুলতে পারবেন । এটি সারা বাংলাদেশের যেকোন ডিপ্লোমা ডিগ্রীধারী ছাত্র/ছাত্রীদের জন্য প্রযোজ্য ।
মনে রাখবেন কারিগরী শিক্ষা বোর্ডের ক্ষেত্রে আপনার আবেদনের সাথে পত্রিকার বিজ্ঞাপনের মেইন কপি এবং থানায় জিডি করার মেইন কপি জমা দিতে হবে । তাছাড়া মূল রেজিষ্ট্রেশনের কপি এবং ১টি এ্ডমিট কার্ডের মূল কপিও জমা দিতে হবে । অন্যথায় আবেদন গ্রহণযোগ্য হবেনা । আর হারানো সার্টিফিকেট এর ফটোকপি ও ট্রান্সক্রিপ্টের সত্যায়িত ফটোকপিও সংযুক্ত করে দিতে পারেন ।
আপনি যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন মূল সনদ কিংবা অন্যান্য ডকুমেন্ট হারিয়ে থাকেন । তবে সেক্ষেত্রে পূর্বের একই নিয়ম ফলো করবেন আর ৩য় ধাপ হিসাবে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করবেন ।
আশা করি বিষয়গুলো আপনাদের কাজে আসবে...
সবশেষে একটি তথ্য জানাচ্ছি, আর সেটা হচ্ছে তোমাদের বন্ধু বান্ধব, আত্মীয় সজন কিংবা পাড়া প্রতিবেশীদের মধ্যে যদি এমন কেউ থাকে যারা এসএসসি পাশ করে বেকার বসে আছে, পড়াশোনা বাদ দিয়ে দিকবিদিক ঘুরছে, ছোটখাট চাকুরী হলেও করতে আপত্তি নেই, তারা বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের লাইনম্যান নিয়োগে অংশগ্রহণ করতে পারে । দেশব্যাপী নিয়োগ চলছে, পদের সংখ্যা প্রায় ৪০০ জন । দেশের সব জেলার মানুষ আবেদন করতে পারবেন । সার্কুলারটি সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন । সময় সীমিত ।
সবাই ভালো থাকবেন ।
এই ঈদে আমার বাড়ীতেতো গেলেননা,
আপাতত আমার ব্লগ সাইট থেকে ঘুরে আসতে পারেন ।
আমি ওবায়েদ উল্লাহ আইমান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 4 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 107 টি টিউন ও 350 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
Computer Science & Engineering www.facebook.com/aimanbd
ধন্যবাদ, আপনার চমৎকার টিউনের জন্যে…,