অতৃপ্ত আত্মকাহন-১ (জীবনটা একটা শুকনো কাঠের টুকরোর মত)

আমার জীবনটা একটা শুকনো কাঠের টুকরোর মত অথৈ সাগরে ভেসে চলেছে সময়, স্রোত, প্রকৃতি আর পরিবেশের নির্দেশে। কখনো ভেসে চলেছে বিশাল ঢেউ এর মধ্যে দিয়ে আবার কখনো আঁকাবাঁকা পাড়ের কোল ঘেঁষে। আমি ছুটে চলেছি মুক্তমনে, আমার কোন ঠিকানা নেই, কোন গন্তব্যও জানা নেই। আমার কৌতহলী মন সরাক্ষণ প্রতীক্ষায় থাকে পরবর্তী মূহর্তের রোমাঞ্চ উপভোগ করার জন্য। হতে পারে সেটা কোন অপরূপ সুন্দর একটা দ্বীপে কিছুক্ষণের বিশ্রাম, আবার হতে পারে কোন পাথরের সাথে ধাক্কা খাওয়ার মত ভয়ংকর ট্রাজেডি।

আমার সূচনা কোথায়? মনে করতে পারি না, শেষ কোথায় তাও জানা নেই। একটা আতংক সব সময় আমাকে তাড়া করে বেড়ায়। কষ্ট করে এতটা পথ পাড়ি দিয়ে এসেছি। হয়তবা সামনের চলার পথটা মসৃণ হতে পারে, আমি এখনই পোড়া ভষ্ম হয়ে যেতে চাই না, কষ্ট করে হলেও আরো অনেকটা পথ আমি পাড়ি দিতে চাই, পৌছে যেতে চাই কোন সুখের রাজ্যে।

অনেকেই ভাবছেন আজ কি এমন হলো যে একটা কাঠের টুকরোর জীবন কাহিনী লেখতে শুরু করলাম। আসলে আমাদের সমাজে অনেকের জীবনের চালচিত্র ঠিক ঐ কাঠের টুকড়োর মতই। তারা জানেনা তাদের কি করা উচিৎ, কোন পথে চলা উচিৎ, কার নির্দেশে চলা উচিৎ, তাদের গন্তব্য কোথায়? তাদের সামর্থ কতখানি? কি ঘটবে অদূর ভবিষ্যতে? এমন কি ওরা স্বপ্ন দেখতে পর্যন্ত জানে না।

নিলয়ের জন্ম একটা ছোট্ট পরিবারে। বাবা সারাদিন মাঠে কাজ করে, মাও সাধ্যমত চেষ্টা করে পরিবারের জন্য কিছু করার, আর এভাবেই ওদের জীবন চলে। নিলয় লেখাপড়ায় বেশ মনোযোগী, তার অনেক স্বপ্ন জীবনে অনেক বড় হবে। কিন্তু ও জানেনা কিভাবে সে একজন পরিপূর্ণ সফল মানুষ হয়ে উঠা যায়। ওদের পরিবারে এমন কেউ নেই যে ওকে সঠিক পথ নির্দেশনা দিতে পারে। বাবা কোন একদিন নিয়ে গিয়ে গ্রামের প্রাইমারী স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিয়েছিল।

নিলয় ছোটবেলা থেকেই ক্লাসে বেশ মনোযোগী থাকলেও প্রথম দ্বিতীয় বা তৃতীয় কখনো হতে পারে নি। পঞ্চম শ্রেণী পাশ করার পর নিলয়ের অনেক বন্ধুরাই ঠিক করেছে পার্শবতী কয়েক মাইল দূরে জেলা স্কুলে ভর্তি হবে। নিলয়েরও ইচ্ছাও সেরকমই। কিন্তু নিলয় কখনো শহরে যায় নি। শহরের স্কুল সম্পর্কে ওর তেমন কোন ধারণা নেই। আসলে বন্ধুরা যা ভাল বলছে ওর নিজের ইচ্ছটাও সেভাবেই গড়ে উঠছে। বাবা মাকে তার আগ্রহের কথা বললে, ওর বাবা মা গ্রামের হাইস্কুলে পড়ার জন্য বলে। তারপর নিলয়ের মাধ্যমিক পর্যায়টাও গ্রামের স্কুলেই পার হয়। এস এস সি পরীক্ষার রেজাল্টটাও নিলয়ের আশা অনুরূপ হয়নি।

প্রিয় পাঠক বলতে পারেন কেন নিলয় ক্লাসের খুব মনোযোগী এবং নিয়মিত ছাত্র হওয়ার পরেও কেন সে আশা অনুরূপ ফলাফল করতে পারে নি? তার নিজের ইচ্ছা অনিচ্ছাটা কতখানি যৌক্তিক ছিল? তার বন্ধুরা কেন সিদ্ধান্ত নিল, এবং কাদের কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছিলো, যে তাদের কয়েক মাইল দূরে জেলা স্কুলে পড়তে হবে? নিলয়ের বাবা মায়ের সিদ্ধান্তের ভিত্তি কি ছিলো? আর তাদের সিদ্ধান্ত কি সঠিক ছিল?

প্রিয় পাঠক এই নিলয় আর কেউ নয়, আমি, আপনি, আপনার কোন ছোট ভাই অথবা আপনার খুবই কাছের কোন মানুষ।এই নিলয়রা অতীতে ছিলো, আজো আছে আর ভবিষ্যতেও থাকবে। আমরা কি পারি না ওদের জন্য একটু চিন্তা করতে? আপনার নিজস্ব মতামত আমাদের সাথে বিনিময় করুন। হয়তবা আমাদের সম্মিলিত আলোচনা খুজেঁ আনতে পারে এই নিলয়দের জন্য উপযুক্ত সমাধানটি।

বেশ অনেক দিন হয়ে গেল শুধু টিউটোরিয়ালই লিখে যাচ্ছি। আমার মুক্তচিন্তার চর্চাটা ঠিক সেভাবে হচ্ছে না। জানিনা ঠিক কি লিখলাম। আমার মুক্তমনে যা এল তাই সকলের সাথে বিনিময় করলাম। জানি অনেকেরই মনে হবে এধরণের লেখা কেন লেখলাম? ক্ষমা চাইছি, এই ছোট্ট মানুষটিকে কাঠগড়ায় তুলবেন না………………..। আপনাদের ভালবাসা নিয়েই বেঁচে আছি, আজো স্বপ্ন দেখি একটা গন্তব্যহীন সুন্দর আগামীর।

…………………………………………………………………………………..

আজ তাহলে এ পর্যন্তই। বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিকে সঙ্গী করে শিক্ষা গ্রহণ, বিতরণ আর প্রচারের মাধ্যমে একসাথে কাজকরে, আসুন দক্ষতা প্রমানের মাধ্যেমে গড়ে তুলি একটা সুখী, সমৃদ্ধ, সুন্দর পৃথিবী। সকলের জন্য শুভকামনা রইল

পোস্টটির মূল লেখক: টিউটোহোস্ট টিম সদস্য  "অসিম কুমার"
পোস্টটি ইতোপূর্বে: খানে প্রকাশিত

Level 0

আমি টিউটোহোস্ট। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 162 টি টিউন ও 69 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

টিউটোহোস্ট বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় ওয়েব হোস্টিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। যুক্তরাস্ট্র এবং যুক্তরাজ্য ভিত্তিক দ্রুতগতির বেশ কিছু ওয়েব সারভারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো নিরাপদে সংরক্ষণ করা হয়। আমরা এদেশে ২৪ ঘন্টা এবং বছরে ৩৬৫ দিন অনলাইন এবং ফোন সাপোর্টের ব্যবস্থা রেখেছি। বাংলেদশসহ অনেক দেশের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট আমাদের সারভার ব্যবহার করছে।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

খুব ভাল লিখেছেন ভাই ।

ধন্যবাদ

Level 0

Chinta ta Chalo Rakhon Brother Adese mokto chintar manuser khub Ovab..

ভালো লাগল। খুব ভাল লিখেছেন।

Level 0

ভাই
শুন্দর পোস্ট হইছে । এভাবে চালিয়ে যান আমরা আছি আপনার সাথে ।
http://techorb4u.blogspot.com/ ব্লগ সাইট তা দেকতে পারেন ভালো লাগবে ।