অংকের ধাঁধাঁ :: চলুন কিছুক্ষনের জন্য ছেলেবেলা থেকে ঘুরে আসি!!!

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম। আসসালামুআলাইকুম । সবাইকে আমার আন্তরিক প্রীতি, সম্মান, শুভেচ্ছা ও ভালবাসা জ্ঞাপন করছি। আশাকরি আল্লাহ্‌র অশেষ রহমতে সবাই ভালো আছেন।

সেই ছোটবেলায় আমাদের মনের অজান্তেই কতো কতো টেকি কাজ করেছি। যখন দেখছি এগুলোর আসলে দমি কাজ আর কাজ গুলোর সুন্দর সুন্দর নামও আছে। যেমন ওরিগামি নিয়ে কয়েকটি টিউন করেছিলাম। নজরুলের একটা গান-

“শুন্যে মাহা আকাশে। তুমি মগ্ন লিলা বিলাশে।।

হাসিছো খেলিছো প্রভু। আপন সনে।।

নিরজনে প্রভু, নিরজনে খেলিছো।।

খেলিছো এ বিশ্বলয়ে, বিরাটও শিশু। আনোমনে খেলিছো।।

প্রলয় সৃষ্টি তব, পুতুলো খেলা, নিরজনে খেলিছো।।”

আসলেই শিশু বেলায় “নো টেনশন ডু ফুর্তি + সবার ভালোবাসা আর আদর” পাওয়া যায়।

যাই হোক, আজকের টিউন স্কুল জীবনের কয়েকটি অংকের ধাঁধাঁ নিয়ে। আমি জানি বেশিরভাগ মানুষই স্কুল জীবনে এগুলো নিয়ে বেশ মাতামাতি করেছেন। হোক না একটু স্মৃতি মন্থন আর খানিকটা সময় জটিল পৃথিবী থেকে স্কুল জীবনে হারিয়ে যাই-

ধাঁধাঁগুলো আপনাদের সামনে ভালোভাবে পরিবেশনের জন্য টিউনে কিছুটা ডায়ালোগের মাধ্যমে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি, আশাকরি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

অংকের ধাঁধাঁ-১

আসিফ: মনে মনে একটি সংখ্যা ধরুন। আপনার মনের মতো করে , যা ইচ্ছে তাই,  যে কোনো সংখ্যা।

মিঃ“ক”: ধরলাম

আসিফ: এবার যে সংখাটি আপনি মনে মনে ধরেছেন ঐ সংখ্যাটাই মি:“খ” এর কাছ থেকে এনে দু’টো যোগ করুন। মানে সংখ্যাটি ডাবোল করুন।

মিঃ“ক”: করেছি

আসিফ: আমি আপনাকে দিলাম ৭। যে সংখ্যাটি হয়েছে তার সাথে আমার দেয়া ৭ সংখ্যাটি যোগ করুন।

মিঃ“ক”: করেছি

আসিফ: সব যোগ করে যা হয়েছে তার অর্ধেক ফেলে দিন। অর্থাৎ ২ দিয়ে ভাগ করুন।

মিঃ“ক”: করেছি

আসিফ: এবার মি:“খ” এর কাছ থেকে যে সংখ্যাটি এনেছিলেন তা দিয়ে দিন।

মিঃ“ক”: দিয়ে দিলাম

আসিফ: আপনার এখন মনের সংখ্যাটি হল সারে তিন (৩.৫) হয়েছে?

মিঃ“ক”: হুঁ(!) হয়েছে।

[ব্যাখ্যাঃ এখানের চালাকিটা বেশিরভাগ লোক একটু হিসেব করলেই বেড় করতে পারবেন। তারপরও বলছি। প্রথম সংখ্যাটিকে ডাবোল করা হয়েছে। তারপর ইচ্ছেমত একটা সংখ্যা যোগ করার জন্য দেয়া হয়েছে। সেখান থেকে অর্ধেক ফেলে দিতে বলা হয়েছে। এখন মনে মনে ধরা সংখাটি আর দেয়া সংখ্যাটির অর্ধেক আছে। এবার মনের সংখ্যাটি সরালেই থেকে যাবে দেয়া সংখ্যাটির অর্ধেক। তার মানে আপনি যে সংখ্যাটি দিবেন তার অর্ধেক বললেই মিলে যাবে। ১০০০দিলে বলবেন ৫০০, ৪ দিলে ২, আড়াই দিলে শোয়া এক ইত্যাদি ইত্যাদি। ]

অংকের ধাঁধাঁ-২

আসিফ: মিঃ“ক” আপনি কাগজে তিন সংখ্যার একটি অংক লিখুন। তিন সংখ্যা ওয়ালা যে কোনো অংক।

মিঃ“ক”: লিখেছি

আসিফ: মিঃ“ক” এবার কাগজটি মিঃ“খ” কে দিন।

মিঃ“ক”: দিয়ে দিয়েছি

আসিফ: মিঃ“খ” যে সংখ্যাটি লেখা আছে ঠিক ঐ সংখ্যাটিই সংখাটির ডান অথবা বাম পাশে পাশাপাশি বসান। পাশাপাশি বসালে সংখ্যাটি ৬ সংখ্যার হবে। এবার কাগজটি মিঃ“গ” কে দিন।

মিঃ“খ”: পাশাপাশি ঐ সংখ্যাটিই লিখে মিঃ“গ” কে কাগজটি দিয়ে দিলাম।

আসিফ: মিঃ“গ” সংখ্যাটিকে ৭ দিয়ে ভাগ করে মিঃ“ঘ” কে কাগজটি দিন।

মিঃ“গ”: দারুন তো! একদম মিলে গেছে কোনো ভাগশেষ নেই। কাগজটি মিঃ“ঘ” কে দিয়ে দিলাম।

আসিফ: মিঃ“ঘ” যে ভাগ ফলটি এসেছে তাকে আপনি ১১দিয়ে ভাগ করুন। এরপর কাগজটি মিঃ“ঙ” কে দিয়ে দিন।

মিঃ“ঘ”: ভাগ করা হয়েছে। এটাও একদম মিলে গেছে কোনো ভাগশেষ নেই। কাগজটি মিঃ“ঙ” কে দিয়ে দিলাম।

আসিফ: মিঃ“ঙ” আপনি ভাগ ফলটিকে ১৩ দিয়ে  ভাগ করুন। তারপর মিঃ“ক” কাগজটি ফেরৎ দিয়ে দিন।

মিঃ“ঙ”: ভাগ করেছি। অদ্ভুত ব্যাপার তো খুব কম সংখ্যাই আছে যাকে ১৩ দিয়ে ভাগ করা যায়। আমি ভেবেছিলাম মিলবে না কিন্তু এখানেও কোনো অবশিষ্ট নেই। মিঃ“ক” কে কাগজটি দিয়ে দিলাম।

আসিফ: দেখুন তো মিঃ“ক”!!! আপনার সংখ্যাটি ঠিক আছে কিনা। আপনি তো এই সংখ্যাটিই প্রথম লিখেছিলেন তাই না?

মিঃ“ক”: বাহ্(!) দারুন(!)

[ব্যাখ্যাঃ এখানের চালাকিটা খুব সহজ তিন সংখ্যওয়ালা অংকটি পাশাপাশি বসিয়ে ৬ অংক করা মানে তিন সংখ্যাওয়ালা সংখ্যাটিকে ১০০১ দিয়ে গুন করা। পরবর্তিতে ৭ x ১১ x ১৩ = ১০০১ দিয়ে ভাগ করা হয়েছে। মানে যে লাউ সেই কদু।]

অংকের ধাঁধাঁ-৩

১,২,৩,৪,৫,৬,৭,৮ ও ৯ সংখ্যা গুলোকে ছকের একটি ঘরে শুধু মাত্র একবার বসাতে পারবেন এবং ছকের চারিদিকে সবগুলোর যোগফল ১৫ হবে।

১৫১৫১৫১৫১৫
১৫ABC১৫
১৫DEF১৫
১৫GHI১৫
১৫১৫১৫১৫১৫

[ ব্যাখ্যা:A, B, C, D, E, F, G, H ও I দ্বারা ঘর গুলোকে পূর্ণ করে দিলাম। আপনারা চেষ্টা করুন। অবশ্যই পারবেন। এর উত্তরটি টিউমেন্টে দিয়ে দিবেন। আর না দিলে আমিই দিয়ে দিবো।]

স্কুল জীবনের আর একটি কথা মনে পড়ে গেলো। ক্যালকুলেটর হাতে নিয়ে টিপতে টিপতে বলতাম-

11110000 (৪টা ছেলে আর ৪টা মেয়ে গেছে সিনেমা দেখতে) তারপর বিয়োগে (-) চাপ দিয়ে বলতাম-

মোট সিনেমা দেখাবে একশ মিনিট ঊননব্বই মিনিটের সময় কারেন্ট চলে গেল আসলো নব্বই মিনিটে মানে 1008990

তারপর = দিয়ে বলতাম-

10101010 দেখলেন ছেলে মেয়ে গুলো কেমন পাশাপাশি হয়ে গেছে।

সেই দিনগুলো খুব মনে পড়ে। দুঃখ লাগে আর কখনও ফিরবে না ছাত্র জীবন। একটা প্রশ্ন- “ আমরা ছেলেবেলায় সবুজের মাঝে যে নির্ভেজাল আনন্দটুকু পেয়েছি, টেকনোলজির চরম উন্নতির এই সময়ের গৃহবন্দি বাচ্চাগুলোর ছেলেবেলা কি আমাদের মতো হবে?

আমার সবগুলো টিউন

কষ্ট করে আমার এই টিউনটি দেখার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমি আপনাদের ভালবাসায় সিক্ত ও পরিতৃপ্ত। আপনাদের ব্যাপক সাড়া আমার নিত্যদিনের প্রেরণা।

Level 2

আমি মোঃ আসিফ- উদ-দৌলাহ্। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 115 টি টিউন ও 1147 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

মা ও বাংলা ভাষার কাঙ্গাল


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

Level 0

moja to

অংকের ধাঁধাঁ-৩ এর সমাধান :

৪ ৯ ২

৩ ৫ ৭

৮ ১ ৬ .

আপনার টিউনগুলো সবসময় একটু অন্যরকম সুন্দর হয়. আপনি নিজেও মনে হয় একইরকম.

Level 0

ধন্যবাদ । অনেক মজার টিউন।।

খুব সুন্দর টিউন হয়েছে। ছেলেবেলার কথা মনে করিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
স্কুল জীবনেও এরকম করে সূত্র মুখস্থ করতাম। যেমন- ‍”কিলাইয়া হাকাইয়া ডাকাত মারিলে দেশে শান্তি মিলিবে।”
…………………………ধন্যবাদ আসিফ ভাই…………………………………………………………………….
>>>>>>>>>>>>>>ঈদের অগ্রীম শুছেচ্ছা রইল।<<<<<<

    @সুমন ভাই: আমার এই সূত্রটি জানা নেই। একটু বর্ণনা করলে উপকৃত হব। ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা!!!

      @মোঃ আসিফ- উদ-দৌলাহ্: এটা পরিমাপের জন্য মজার একটা সুত্র

      কিলাইয়া= কিলোমিটার
      হাকাইয়া=হেক্টোমিটার
      দাকাত=ডেকোমিটার
      মারিলে=মিটার
      দেশে=ডেসিমিটার(সম্ভবত,ক্লাস ৪ এ পরেছিলাম,এটা তাই মনে পরছে না)
      শান্তি=সেন্টিমিটার
      মিলিবে=মিলিমিটার

      এমন সরল অংকের জন্যও আছে।এমনকি নবম দশম শ্রেণীর ত্রিকোণমিতি সহজ করে দেওয়া যায় মাত্র ৩ লাইন দ্বারা!!!

Thanks.
Khub maja pelam.

চমৎকার টিউন

ভাল হইছে আর কালেক্সন থাকলে দিবেন