শুভাঙ্করের ফাঁকি আসলে কি? {পর্ব-২}

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম। আসসালামুআলাইকুম । সবাইকে আমার আন্তরিক প্রীতি, সম্মান, শুভেচ্ছা ও ভালবাসা জ্ঞাপন করছি। আশাকরি আল্লাহ্‌র অশেষ রহমতে সবাই ভালো আছেন।

অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে বর্ধমান জেলায় আরার কারও মতে বাকুড়ায় ভৃগুরাম দাস জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পাটীগণিতের অনেক জটিল নিয়ম শিশুদের জন্য সরল আর্যায় অর্থাৎ এক প্রকার বিশেষ কবিতা রচনা করেন। এই জন্য তিনি “শুভঙ্কর” উপাধী লাভ করেছিলেন। আগে কয়েকটি দিয়েছিলাম আজ দু'টি উত্তর সহকারে দিলাম। তিনিই মূলত এই বঙ্গে ঐকিক নীয়মকে জনপ্রিয় করেন। তবে হতাশার কথা হলো শুভা্ঙ্করের তেমন বড় কোনো সংগ্রহ আমি পাইনি।

আগের টিউনটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।

১. চার কারিগর:

অল্প দিনে রথ দিতে মন কৈল যায়,

চারি  কারিগর এল রাজার সভায়।।

কেহ বলে পারি আটচল্লিশ দিবসে,

কেহ কহে পারি আমি দিবস চব্বিশে।।

কেহ বলে ষোল দিনে যদি পাই কাঠ,

অন্য বলে তবে মোর লাগে দিন আট।।

একেবারে দিল রাজা সহস্রেক ধন,

একযোগে কর্মেতে লাগিল চারিজন।।

কতদিনে রথখানি তৈয়ার হইবে,

বল দেখি কেবা কত বেতন পাইবে।।

উত্তর : চারজন এক সঙ্গে এক দিনে করে 1/48 + 1/24 + 1/16 + 1/8

অর্থাৎ ¼ অংশ।

সুতরাং রথটি তৈরি হবে 4 দিনে। এই চারদিনে উক্ত চার কারিগর কাজের 1/12, 1/6, 1/4  ও 1/2 অংশ করে। তাদের প্রাপ্য হবে যথাক্রমে 1000 মুদ্রার 1/12, 1/6, 1/4  ও 1/2 অর্থাৎ (1/2 * 100),(1/2 * 100),(1/2 *1000) ও (1/2 * 1000) মুদ্রা বা 83.33, 166.66, 250 মুদ্রা ও 500 মুদ্রা।

২. চার বুড়ি:

একদিন চার বুড়ি আহারে বসিয়া।

বয়স গণনা করে হাসিয়া হাসিয়া।।

প্রথম বুড়িটি বলে আমি স্বামী হতে।

দ্বাদশ বৎসর কম হই বয়সেতে।।

শুনিয়া দ্বিতী বলে, শুনেছি শ্রবণে।

যবে তোর তিনি হন হয়েছি সে দিনে।।

উভয়ের বয়ঃক্রম দু-ভাগ করিলে।

পাইবে বয়স মোর, তৃতীয়টি বলে।।

বয়সে দ্বিতীয় চেয়ে হই বড় কুড়ি।

শেষ জনা বলে, আমি সকলের বুড়ি।।

বিচারিয়া বল মল কত বয়স কাহার।

দু’শত পঞ্চাশ হয় মোট সবাকার।।

উত্তর: প্রথম বুড়ির বয়স x হলে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বুড়ির বয়স হবে যথাক্রমে x+12, x+(x+12) এর অর্ধেক, (x+2) + 20

প্রশ্নানুসারেঃ

সবার টা যোগ করলে হয়-

= > 4x=250-50

= > x=50

.: প্রথম বুড়ির বয়স 50 হলে, দ্বিতীয় বুড়ির বয়স 50+12=62 বছর, তৃতীয় বুড়ির বয়স 56 এবং চতুর্থ বুড়ির বয়স 50+12+20=82 বছর।

 

আসুন আমরা আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের কথা চিন্তা করে অতীতের আমাদের টেকনোলজিতে সমৃদ্ধি গুলো তুলে ধরি। না হলে অনেক কিছুই হারিয়ে যাবে এজন্য আমরাই দায়ী থাকবো।

কষ্টকরে আমার এই টিউনটি দেখার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমি আপনাদের ভালবাসায় সিক্ত ও পরিতৃপ্ত। আপনাদের ব্যাপক সাড়া আমার নিত্যদিনের প্রেরণা।

Level 2

আমি মোঃ আসিফ- উদ-দৌলাহ্। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 115 টি টিউন ও 1147 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

মা ও বাংলা ভাষার কাঙ্গাল


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

আচ্ছা এগুলা কি পল্লীসাহিত্য?

    @নিয়াজ মেহেদী খান ভাই: আসলে এগুলো ঠিক কতখানী পল্লী সাহিত্যের মধ্যে পড়ে আমি জানি না। তবে এগুলো পল্লী সাহিত্যের মধ্যে পড়লে ড. দিনেশ চন্দ্র সেন এর বইতে পেতাম।
    আমাদের উপমহাদেশ শুধু সম্পদেই পরিপুর্ণ ছিলো না তার সাথে মেধায়ও। অনেকেই ধারণা করে জিওমেট্রি, ত্রিকোনমিতি এগুলোর আবিস্কার হয়েছে ভরতবর্ষে।
    খনার বচন গুলোকে যদি যথাযথ ভাবে / ইংরেজী করে প্রচার করা যেতো তা হতো বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপদেশ ও শিক্ষামূলক বাণী। আমি মনে করি । ঈশপের গল্পের চেয়েও খনার বচন অনেকাংশে বেশী পরিপুর্ণ। ধন্যবাদ ও শুভকামনা।

🙂

আসিফ ভাই নতুন করে কিছু বলব না… এক কথায় অসাধারন। আপনের পোস্ট টার জন্য আমি অপেক্ষা করছিলাম তাই আবারো ধন্যবাদ। শুধু মাত্র পোস্ট তায় কমেন্ট করতেই লগিন করলাম। 🙂

যদি পুরো কালেকশন পাওয়া যেত খুব ভাল হত… আচ্ছা বলেন তো কোথায় পাওয়া যেতে পারে?

আর ক্ষণার বচনের কোন কালেকশন কি আছে? 🙂

আপনার সাথে যোগাযোগ করা জরুরি মনে হচ্ছে বিশেষত আপনের লাইব্রেরির কথা জানার জন্য 🙂
ভাল থাকবেন। আর অবশ্যই উত্তর দিবেন।

    @মহিউদ্দিন ভাই: খনার কিছু কালেকশন আছে। তবে আমাদের ভাষার বিকৃতী টা খুব তারাতারি হয়েছে। ওলন্দাজ, আর্মেনীয়, ফরাসী, পর্তুগীজ ও ইংরেজরা এখানে আসার পর অনেক নতুন নতুন শব্দ যোগ হয়। আগের জিনিস খুলোকেই একটু বর্তমান ভাষায় রুপান্তর জরুরি, তার সাথে ইংরেজীও করে প্রচার করা উচিৎ। খনার বচনের কিছু কালেকশন আছে।
    নজরুল প্রায় সারে চার হাজার গান লিখেছেন তার মধ্যে দুই হাজারের মতো সুর দেয়া হয়েছে। বাকিগুলোর কি হবে। আসলে বর্তমানের সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম ইন্টারনেটে এখন থেকেই এগুলো স্টোরেজ করার দরকার হয়ে পড়েছে। বাংলা ভাষায় যত বেশী কনটেন্ট বাড়বে ততো বেশী বাংগালীরা বাংলা ব্যবহার করবে। আমি মেইলে আমার কন্টাক দিয়ে দেবো। ধন্যবাদ!!!

ধন্যবাদ । আমার মেইলঃ [email protected]

চলুন না আমরাই শুরু করি সেই যাত্রা… ক্ষণার বচন , লোক বাগধারা , শুভংকরের ফাকি… বাংলার আরো কত কি 🙂

    @মহিউদ্দিন ভাই: আমি আপনার সাথে একমত। তবে কোনো কাজে নামলে ভাল ভাবেই নামা উচিৎ নইলে না করাই ভালো।
    একটা গল্প শুনুন:
    স্বামী বিবেকান্দের কাছে এক ঋষি এসে বললেন, “স্বামীজি আমি ৮০বছর সাধনা করে এখন জলের উপরে হাঁটতে পারি”
    বিবেকানন্দ বললেন- “তুই যে বিদ্যাটা শিখেছিস তার দাম ২ আনা”
    লোকটি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলেন এবং বিবেকানন্দ বললেন- “তুই তো ২ আনা দিয়ে খেয়া দিয়েই পাড় হতে পারতিস, অহেতুক ৮০ বছর নষ্ট করার কি দরকার ছিলো?”
    এখানে শিক্ষাটি হলো আমাদের বুঝতে হবে কতো তাড়াতাড়ি ভালো কিছু করা যায় আর তার মূল্য কেমন। ধন্যবাদ