আমাদের মতো অনুন্নত দেশে সাধারণ মানুষের দৃষ্টিতে “ক্যান্সার” একটি ভিতিকর রোগের নাম।যার মূল কারণ রোগ সম্পর্কে অজ্ঞতা এবং কুঃসংস্কার।স্তন ক্যান্সার সম্পর্কে কথাটি বিশেষভাবে প্রযোজ্য।সারাবিশ্বে স্তন ক্যান্সার মহিলাদের অন্যতম প্রাণঘাতী রোগ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে মনঘড়া ধারনা বা বিভিন্ন ধরনের কুঃসংস্কার এ আক্রান্ত হবার প্রবণতা রোগীদের মাঝে সচরাচর পরিলক্ষিত হয়।এজন্য প্রয়োজন এ সম্পর্কে যথাযথ ধারনা এবং প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জন।আশার কথা। সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের নারীরা স্তন ক্যান্সার সম্পর্কে আগ্রহী হচ্ছেন এবং সময় থাকতেই সচেতন হচ্ছেন।
আজকেই স্পেট এ আমরা স্তন ক্যান্সারকে কিভাবে মোকাবিলা করতে হয় এবং প্রাথমিক অবস্থায় একে শনাক্ত করে এর ভয়াবহতা হতে কিভাবে পরিত্রান লাভ করা যায় সেটি দেখব।
প্রায় কোটি কোটি কোষ নিয়ে মানবদেহ গঠিত।“কোষ” হচ্ছে জীবন ধারনের একক।শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কোষ দ্বারা গঠিত।এককথায় পুরো মানবদেহ হচ্ছে কোষের সমষ্টি।শরীরে গঠন, বৃদ্ধি, বিভাজন সর্বক্ষেত্রে কোষের আকৃতি-প্রকৃতির ভিন্নতা রয়েছে।যদি কোনভাবে কোষ বিভাজন তথা কোষের কার্যপদ্ধতিকে অস্বাভাবিক অবস্থা কিংবা অনিয়ন্ত্রিতভাবে কোষের বৃদ্ধি পুনরাবৃত্তি হারে চলতে থাকে তখন সেই “দশা” কে টিউমার বলে।
“বিনাইন” এবং “ম্যালিগনেন্ট”
আমাদের দেশে যথাযথ তথ্য সংরক্ষন না হলেও কিছু বেসরকারী সংস্থা, গনমাধ্যম এবং কিছু গবেষনায় এরোগের প্রবণতা ও ভয়াবহতা লক্ষ্য করা যায়।আহসানিয়া ক্যান্সার হাসপাতালের সুত্র অনুযায়ী দেশে প্রতিবছর ৩৫ হাজার নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করছেন।দেশের বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকার রিপোর্টে বলা হয়েছে, ১০ লাখ ক্যান্সার রোগীর মধ্যেস্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে রোগীর সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার।
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৯৯০ হতে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত প্রায় ৯ হাজার রোগীর মধ্যে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা শতকরা ১৫.৮৫%, এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৭%।যদিও আমাদের দেশে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর সার্বিক চিত্র যথযথভাবে সংরক্ষন করা হয়নি, কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এরোগে আক্রান্তের হার দিন দিন বাড়ছে।
এ সংক্রান্ত ব্যাপারে বিস্তারিত চিত্রসহ লেখা পাবেন এইখানে।সময় সল্পতার কারণে এবং কপিরাইটের কারণে এখানে দিতে পারলাম না।
১। মেমোগ্রাম বা স্তনের বিশেষ ধরনের এক্সরে।
২। স্তনের আলট্রাসনোগ্রাম
৩। চাকা বা টিউমার থেকে রস বা কোষ নিয়ে পরীক্ষা করলে এই রোগ ধরা
চিকিৎসা হিসেবে সার্জারী করাটাই উত্তম এবং বাংলাদেশে অনেক হাসপাতাল ও ক্যান্সার ইনিষ্টিটিউট এ তা করা ব্যবস্থা আছে। এছাড়া কেমোথেরাপি, রেডিও থেরাপি, হরমোন থেরাপি এ দেয়া হয় এই রোগের চিকিৎসা হিসেবে।
যেহেতু রোগটির নির্দিষ্ট কোন কারণ জানা যায়নি। তাই এই রোগ এড়ানোর জন্য কয়েকটি নিয়ম মেনে চলার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়ঃ
শেষকথাঃ এই লেখাটা লিখার উদ্দেশ্য সবাইক এটি সম্পর্কে সচেতন করা।কিছুদিন আগে আমার মায়ের এই ক্যান্সার ধরা পড়েছে। ভাল খবর এইযে প্রাথমিক পর্যায়ে এটি ধরা পড়েছে।অপারেশান হয়ে গেসে এখন কেমোথেরাপী নিচ্ছেন ডেল্টা হাসপাতালে।কারো পরিবারের কেউ যদি এই রোগে আক্রান্ত হন তাহলে যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি অপারেশান করানোর চেষ্টা করুন।ঢাকায় সবচেয়ে ভাল হবে ডেলটা হাসপাতাল,মিরপুর এ।আর চট্টগ্রামে সিএসসিআর এ ডাঃ এ কে আজাদ এর cansup clinic এ দেখাতে পারেন।আমার মায়ের জন্য দোয়া করবেন যাতে শীঘ্রই উনি সুস্থ হতে পারেন। আর আপনি সচেতন হোন আপনার পরিবারের মহিলা সদস্যদের এটির ব্যাপারে সচেতন করুন। প্রাথমিক অবস্থায় এটি ধরা পড়লে সম্পুর্ণ নিরাময় সম্ভব। লজ্জা পাওয়ার কিছুই নেই রোগবালাই এর ব্যাপারে। পারলে ফেসবুকে এই লেখা শেয়ার দিন যাতে অন্যরা জানতে পারে।
এছাড়া হার্নিয়া নিয়ে দিহান ভাইয়ের একটা লেখা আছে। হার্নিয়া: কারণ, লক্ষণ, প্রতিকার নিয়ে লেখাটি দেখে আসতে পারেন।
১। ডাঃ খন্দকার এ কে আজাদ, MBBS,FCPS,FRCS,ই-মেইলঃ [email protected]
আমি নিশাচর নাইম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 8 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 47 টি টিউন ও 1182 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
তেমন কিছু জানি না, কিছু জানলে তা অন্যদের শিখানোর চেষ্টা করি যতটুকু সম্ভব।জ্ঞান নিজের মাঝে সীমাবদ্ধ না রেখে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়াই প্রকৃত সার্থকতা।
নাইম ভাই সত্যিই বিষয়টি শেয়ার করার মতো। ধন্যবাদ ……এখনি সময় সচেতন হবার । লজ্জা করলে তো আর রোগ ভাল হবে না । আবারো অসংখ্য ধন্যবাদ । ভাল থাকবেন ভাই আর দোয়া করি সকলেই যেন পরিবার সহ সুখে শান্তিতে থাকে।