ম্যাক্সিম গোর্কি বিখ্যাত উপন্যাস মা নিয়ে কিছু কথা শেয়ার। এবং বইটার পিডিএফ টাও দিলাম।
বিখ্যাত রুশ ঔপন্যাসিক ম্যাক্সিম গোর্কি ১৮৬৮ সালের ২৮ মার্চ রাশিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ম্যাক্সিম গোর্কি তাঁর ছদ্মনাম। তার আসল নাম অ্যালেক্সি ম্যাক্সিসোভিচ পেশকভ। সোভিয়েত ইউনিয়নে ‘সোশ্যাল রিয়েলিজম’ নামে যে সাহিত্যিক ধারার সূচনা হয়েছিল তার প্রতিষ্ঠাতা তিনি। ১৯০৬-১৯১৩ এবং ১৯২১-১৯২৯ সাল পর্যন্ত তিনি ইতালির ক্যাপ্রিতে প্রবাস জীবন কাটান। ম্যাক্সিম গোর্কিকে নিয়ে লিখেছেন ওবায়দুল গনি চন্দন
নয় বছর বয়সে গোর্কি অনাথ হয়ে যান। ১৮৮০ সালে তিনি বাড়ি ছেড়ে যান দাদির কাছে। পরে তিনি দাদির কাছেই বেড়ে ওঠেন গল্প শুনতে শুনতে। দাদির মৃত্যু তাকে শোকবিহ্বল করে তোলে। এ কারণে তিনি একবার আত্মহত্যার চেষ্টাও করেন। পরবর্তী পাঁচ বছর তিনি পদব্রজে রাশিয়ার বিভিন্ন স্থান ভ্রমণ করেন। এ সময় বিভিন্ন চাকরির অভিজ্ঞতা ও নানা ঘটনার স্মৃতি তার পরবর্তী সময়ের লেখালেখিতে প্রভাব ফেলে। রাজনৈতিক কারণে তাকে একাধিকবার কারাবরণ করতে হয়। ১৯০২ সালে লেনিনের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সখ্য গড়ে ওঠে। জীবনে বহু তিক্ত অভিজ্ঞতার অধিকারী গোর্কি চাকরি করতে গিয়ে প্রহৃত, লাঞ্ছিত হয়েছেন অনেক সময় খাবারও জুটত না। এ তিক্ত অভিজ্ঞতার আলোকেই ছদ্মনাম ম্যাক্সিম গোর্কি যার বাংলা অর্থ তিক্ত কিছু বেছে নিয়েছিলেন। ‘মা’ তার বিখ্যাত উপন্যাস। গোর্কি শব্দের অর্থ তিক্ত। আক্ষরিক অর্থে ম্যাক্সিস গোর্কি তাই ছিলেন। তার লেখায় সব সময় ফুটে উঠেছে তিক্ত সত্য। রাশিয়ার জীবনযাত্রার বিরুদ্ধে তার সঞ্চিত রাগের প্রকাশ দেখি তার লেখায়। ১৮৯৮ সালে গোর্কির প্রথম বই ‘এসেস অ্যান্ড স্টোরিস’ প্রকাশিত হয়। প্রথম বইটি সারাদেশে সাড়া জাগায়। লেখক হিসেবে ম্যাক্সিম গোর্কির জয়যাত্রা শুরু হয়। রাশিয়ার সমাজের নিুতম স্তরের মানুষগুলোর জীবনের প্রতিচ্ছবি এঁকেছেন গোর্কি। রাশিয়ার সামাজিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের বাঁকগুলো নিখুঁতভাবে এঁকেছেন তিনি। জারের শাসনামলে বেশ ক’বার কারাবাস হয়েছিলেন। শ্রমিকদের সঙ্গে গোর্কির ছিল ঘনিষ্ঠতম সম্পর্ক। ১৯০২ সাল থেকে গোর্কি ছিলেন লেনিনের ঘনিষ্ঠতমদের একজন। ১৯০০ থেকে ১৯০৫ সাল পর্যন্ত গোর্কির লেখায় আশাবাদের ব্যঞ্জনা উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। ১৯০৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে যান গোর্কি। সেখানে তিনি রচনা করেন বিখ্যাত উপন্যাস ‘মা’। ১৯০৬ থেকে ১৯১৩ সাল পর্যন্ত গোর্কি ছিলেন ক্যাপ্রিতে। ১৯১৩ সালে সাধারণ ক্ষমার আওতায় তিনি রাশিয়ায় ফিরে আসেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় গোর্কির গৃহ বলশেভিকদের অফিসঘর হয়ে উঠেছিল। রুশ বিপ্লবের পর গোর্কি ছিলেন ইতালিতে। ১৯৩২ সালে স্টালিনের আহ্বানে গোর্কি রাশিয়ায় ফিরে আসেন। তাকে অর্ডার অব লেনিন উপাধিতে ভূষিত করা হয়। ১৯৩৬ সালের ১৮ জুন সাধারণ মানুষের অসাধারণ লেখক ম্যাক্সিম গোর্কি পরলোকগমন করেন। মা উপন্যাসের জন্য তিনি জগদ্বিখ্যাত। যদিও মা ছেলের সম্পর্কই উপন্যাসটির মূলবিষয়। একটি সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের জন্য তৈরি হতে থাকা রাশিয়ার রাজনীতির পরিস্থিতি বস্তুনিষ্ঠভাবে উপস্থাপন করার কারণে এই ঔপন্যাসিক বিশ্বসাহিত্যে বিশেষ স্থান ও প্রশংসার পাওয়ার দাবি রাখেন, যা তিনি ন্যায্যভাবেই পেয়েছেন। মা" উপন্যাসটির সামাজিক মূল্য এক কথায় তুলনাহীন। একটি উপন্যাস একটি জাতির বিবেককে ব্যাপকভাবে বদলে দিয়েছে। তুমুলভাবে আলোড়িত আলোকিত করেছে এমন উদাহরণ বিশ্বসাহিত্যে আর আছে বল মনে হয় না। পেলাগেয়া নিলভনা নামের একজন অতিসাধারণ ‘মেয়ে মানুষ’ কি করে সময়ের প্রয়োজনে আস্তে আস্তে রূপান্তরিত হন একজন রাজনীতিসচেতন ‘ব্যক্তি’তে। বুঝতে শেখেন সারাজীবন কি করুণ কাটিয়েছেন শ্রেণীতে নির্যাতন কাটিয়েছেন শ্রেণীগত নির্যাতন ও লিঙ্গগত অবস্থানের অসহায় শিকার, তা চমৎকার বর্ণনা করেছেন গোর্কি তার দুর্দান্ত ভাষারীতিতে লেখা এই উপন্যাসটিতে।
বইটির বাংলা অনুবাদ চাইলে পিডিএফ আর্কাইভ লিঙ্ক থেকে ডাউনলোড করে নিন
এখান থেকে আমার সাইট টি ঘুরে আসতে পারেন
এখানে
thnx