ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফিক্সচার 2015 এবং বাংলাদেশ স্কোয়াড এবং সংশপ্তক মাশরাফি।

ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফিক্সচার 2015

ডাউনলোড 

স্কোয়াড

তামিম ইকবাল, এনামুল হক, মমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদ উল্লাহ, নাসির হোসেন, মাশরাফি বিন মর্তুজা, তাসকিন আহমেদ, তাইজুল ইসলাম, আরাফাত সানি, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান, আল-আমিন হোসেন ও রুবেল হোসেন।
প্রথম ম্যাচের একাদশ : তামিম, এনামুল, মমিনুল, মুশফিক, সাকিব, মাহমুদ, নাসির, মাশরাফি, তাসকিন, তাইজুল ও আরাফাত
🙂

সংশপ্তক মাশরাফি (বিশেষ আয়োজন)

‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ মাশরাফি বিন মুর্তজা বাংলাদেশের ক্রিকেটের এক সংশপ্তকের নাম। কতবার যে দল থেকে বাদ পড়েছেন আর কতবার যে দলে ফিরেছেন, তার হিসাব মেলা ভার। সংশপ্তক বলা হয় তাকেই, যিনি নিশ্চিত পরাজয় জেনেও জয়ের লক্ষ্যে লড়ে যান।
২০০১ সালের নভেম্বরে এ দেশের ক্রিকেটে ধূমকেতুর মতোই আবির্ভূত হয়েছিলেন এই মাশরাফি। বারবার চোটগ্রস্ত হয়েছেন। ক্রিকেট থেকে দূরে সরে গেছেন, আবার লড়াই করে ফিরে এসেছেন। তিনি পৃথিবীর বিরল ক্রীড়াবিদদের একজন, যিনি সাতবার শল্যচিকিৎসকের ছুরির তলায় হাঁটু পেতে দিয়েছেন। দুই হাঁটুতে তাঁর আক্ষরিক অর্থেই তো আর কোনো জায়গা থাকার কথা নয়। সাতটি অস্ত্রোপচার আর চোটের সঙ্গে অসংখ্য লড়াই তাঁর ক্রীড়াশৈলীতে একটুকু আঁচড় ফেলে যায়নি। অনেকেই বলেন, বাংলাদেশের অন্য যেকোনো ক্রীড়াবিদই মাশরাফির মতো চোটগ্রস্ত হলে এত দিনে হয়তো খেলাই ছেড়ে দিতেন। কিন্তু তার পরও তিনি খেলে চলেছেন। যিনি অধিনায়ক হিসেবে এ দেশের ১৬ কোটি মানুষের স্বপ্নসারথি হয়ে উড়ে যান অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে ক্রিকেটের বিশ্ব আসরে। মাশরাফি সামনে থেকে দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাঁর নেতৃত্বেই বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে।
মাশরাফি এখন ক্রিকেট খেলা চালিয়ে যেতে ব্যথানাশক ওষুধ আর ইনজেকশনকে বানিয়ে ফেলেছেন জীবনেরই অনুষঙ্গ। অস্ত্রোপচার হওয়া দুই হাঁটু অনেক সময়ই খেলা চলাকালে ফুলে যায়, ইনজেকশন দিয়ে তখন কমাতে হয় সেই ফোলা।
গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময় একপর্যায়ে তাঁর দুই হাঁটুতে পানি চলে আসায় তা সিরিঞ্জ দিয়ে ফেলে মাঠে নামতে হয়েছে তাঁকে। চোটের কারণে মাঠের বাইরে থাকার সময় শরীরের ওজন বেড়ে যায় সবারই। চোট কাটিয়ে দলে ফেরার সময় একজন খেলোয়াড়কে যে কী অমানুষিক পরিশ্রম করতে হয়, সেটা কে না জানে। কিন্তু মাশরাফি বিন মুর্তজাকে জীবনে মোট কয়বার এই কষ্টকর অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে, সেটা ভেবে দেখুন তো!
২০১১ বিশ্বকাপের আগে প্রিমিয়ার লিগের একটি ম্যাচ খেলতে গিয়ে আহত হয়েছিলেন মাশরাফি। সেই চোটের হাত থেকে রেহাই পেতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছিলেন তিনি। ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ বলে কথা! ওতে যে তাঁকে থাকতেই হবে। শেষ পর্যন্ত ৯০ শতাংশ সুস্থ হয়েও সেবার বিশ্বকাপ খেলা হয়নি তাঁর। দল ঘোষণার দিন তিনি নিজে কেঁদেছিলেন, কাঁদিয়েছিলেন গোটা দেশকে। সিংহ-হৃদয়ের মাশরাফির বিশ্বকাপ খেলতে না পারাটা মেনে নিতে পারেননি কেউ-ই।
মাশরাফি কিন্তু পদ্ধতিগত উপায়ে জাতীয় দলে সুযোগ পাননি। কোনো বয়সভিত্তিক পর্যায় থেকে তাঁর উঠে আসা নয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের অন্যতম বোলিং গ্রেট অ্যান্ডি রবার্টসের একটি পেস বোলিং ক্যাম্প থেকে তাঁর উত্থান। মাশরাফির বোলিং দেখে একবাক্যে রবার্টস লিখে দিয়েছিলেন তাঁর ভবিষ্যতের কথা, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেটকে অনেক দূর এগিয়ে নেওয়ার জন্যই ছেলেটির আবির্ভাব।’ রবার্টসের কথাতেই তাঁর জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া। এরপর পেরিয়ে গেছে ১৪ বছর।
নানা বাধা পেরিয়ে এবারের বিশ্বকাপে অধিনায়ক হিসেবে তাঁর হাতেই তো এগিয়ে চলার ঝান্ডা। ‘সংশপ্তক’ মাশরাফির হাতে এই পতাকা কী দারুণভাবেই না মানিয়ে যায়।
এ দেশের ক্রিকেটারদের দেশপ্রেমের উদাহরণ দিতেও যে সবচেয়ে আগে চলে আসে এই মাশরাফির নামই। জানেন কি, এই মাশরাফি এবারের বিশ্বকাপ খেলতে গেছেন টাইফয়েডে আক্রান্ত তাঁর শিশুপুত্রকে দেশে রেখেই।
রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে দুধের শিশুটি ভর্তি। গুনে গুনে ২১টি ইনজেকশন দিতে হচ্ছে তার কচি ধমনিতে আর মাশরাফি বিদেশ-বিভুঁইয়ে খেলে যাচ্ছেন ক্রিকেট। ভয়াবহ মানসিক শক্তির অধিকারী না হলে কি এমনটি করা সম্ভব? কিন্তু মাশরাফি তো এমনই। নড়াইলের পাগলা ‘কৌশিক’ না এ দেশের মানুষের স্বপ্নসারথি? তাঁকে তো আবেগ-উচ্ছ্বাসের ঊর্ধ্বে উঠতেই হয়। তিনি এসবের ঊর্ধ্বে ওঠেন দেশের কথা চিন্তা করেই। তাই তো বাংলাদেশ ইংল্যান্ডকে হারালে তিনি ধারাভাষ্যকার নিক নাইটের সামনে চলে আসেন মাথায় লাল-সবুজ পতাকা বেঁধে! নিখাদ ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে প্রশ্ন, আর কি কোনো ক্রিকেটারকে দেখেছেন মাথায় নিজ দেশের পতাকা বেঁধে টেলিভিশনে সাক্ষাৎকার দিতে! এই জায়গায় মাশরাফি ব্যতিক্রম। পৃথিবীর আর সব ক্রিকেটারের চেয়ে ব্যতিক্রম! তিনি অনন্য, অসাধারণ।

(প্রথম আলো থেকে সংগৃহীত)

শেয়ার করতে ভুলবেন না। 🙂

Level 2

আমি আইটি সরদার। Web Programmer, iCode বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 261 টি টিউন ও 1750 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 22 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

আমি ইমরান তপু সরদার (আইটি সরদার),পড়াশুনা করেছি কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি নিয়ে; পেশা কন্টেন্ট রাইটার এবং মার্কেটার। লেখালেখি করি নেশা থেকে ফেব্রুয়ারি ২০১৩ থেকে। লেখালেখির প্রতি শৈশব থেকেই কেন জানি অন্যরকম একটা মমতা কাজ করে। আর প্রযুক্তি সেটা তো একাডেমিকভাবেই রক্তে মিশিয়ে দিয়েছে। ফলস্বরুপ এখন আমার ধ্যান, জ্ঞান, নেশা সবকিছু...


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

Wrong Information.
Cricket World Cup 2015